পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর ওজু শব্দটি আরবি ‘আল-ওয়াদাআ শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ: পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য। কেননা ওজু ব্যক্তিকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর করে। শরিয়তের পরিভাষায়:الْوُضُوءُ : اسْتِعْمَالُ مَاءٍ طَهُورٍ مُبَاحٍ فِي الأَعْضَاءِ الأَرْبَعَةِ، عَلَى صِفَةٍ مَخْصُوصَةٍ.”নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে (শরীরের) চারটি অঙ্গে পবিত্র ও বৈধ পানি ব্যবহার করাকে ওজু বলে। শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে ওজু করার দুটো পদ্ধতি রয়েছে।
❑ (ক). ফরয পদ্ধতি। সেটা হচ্ছে:
(১)। সমস্ত মুখমণ্ডল একবার ধৌত করা। এর মধ্যে গড়গড়া কুলি ও নাকে পানি দেয়াও অন্তর্ভুক্ত হবে। মুখমণ্ডলের পরিসীমা দৈর্ঘ্যে মাথার চুলের উৎস থেকে থুতনি পর্যন্ত এবং প্রন্থে দু কানের শাখা পর্যন্ত বিস্তৃত।
(২)। কনুই পর্যন্ত হাত একবার ধৌত করা।
(৩)। সমস্ত মাথা একবার মাসেহ করা। এর মধ্যে কানদ্বয় মাসেহ করাও অন্তর্ভুক্ত হবে।
(৪)। দুই পায়ের টাকনু পর্যন্ত একবার ধৌত করা।
পূর্বোক্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে ‘একবার’ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে সংশ্লিষ্ট অঙ্গের কোন অংশ যেন ধোয়া থেকে বাদ না পড়ে।
(৫)। এই ক্রমধারা বজায় রাখা। অর্থাৎ প্রথমে মুখমণ্ডল ধৌত করবে, এরপর হাতদ্বয় ধৌত করবে, এরপর মাথা মাসেহ করবে, এরপর পা দুইটি ধৌত করবে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ক্রমধারা বজায় রেখে ওযু করেছেন।
(৬)। পরম্পরা রক্ষা করা। অর্থাৎ উল্লেখিত অঙ্গগুলো ধৌত করার ক্ষেত্রে পরম্পরা রক্ষা করা; যাতে করে একটি অঙ্গ ধোয়ার পর অপরটি ধোয়ার মাঝখানে স্বাভাবিকের চেয়ে দীর্ঘ সময়ের বিরতি না পড়ে। বরং এক অঙ্গের পরপর অপর অঙ্গ ধারাবাহিকভাবে ধৌত করা। এগুলো হচ্ছে- ওজুর ফরয কাজ; ওজু শুদ্ধ হওয়ার জন্য যে কাজগুলো অবশ্যই করতে হবে।
.
উপরোক্ত কাজগুলো ওজুর ফরয হওয়ার পক্ষে দলিল হচ্ছে আল্লাহর বাণী:“হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও এবং তোমাদের মাথায় মাসেহ কর এবং পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও; এবং যদি তোমরা জুনুবী অবস্থায় থাক, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক বা তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসে, বা তোমরা স্ত্রী সহবাস কর এবং পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে: তা দ্বারা মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ করবে। আল্লাহ্ তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা করতে চান না; বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান এবং তোমাদের প্রতি তাঁর নেয়ামত সম্পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ৬] উপরোক্ত কাজগুলো পর্যায়ক্রম বজায় রাখার দলিল-এই হাদিস, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,ابْدَؤُوا بِمَا بَدَأَ اللَّهُ بِهِ “(কুরআনে) আল্লাহ যা দিয়ে শুরু করেছেন, তোমরাও তা দিয়ে শুরু করো।(নাসায়ি, হা. ২৯৬২) উপরোক্ত কাজগুলো বিরামহীনতা অটুট রাখার দলিল-ওজুর পরেও পা শুকনো থেকে যাওয়া ব্যক্তির হাদিস। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দেখলেন, এক ব্যক্তির পায়ে এক দিরহাম পরিমাণ স্থান জ্বলজ্বল করছে, (ওজুর সময়) তাতে পানি পৌঁছেনি; তখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পুনরায় ওজু করে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিলেন।(আবু দাউদ হা/১৭৫সনদ সহীহ; আরো বিস্তারিত জানতে দেখুন; ইবনে কাসিম এর হাশিয়াসহ ‘আল-রওযুল মুরবি’ খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ১৮১-১৮৮)
.
❑ (খ). অযুর মুস্তাহাব পদ্ধতি: যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহতে বর্ণিত হয়েছে; ওযুর বিস্তারিত পদ্ধতি নিম্নরূপ:
(১)। ব্যক্তি নিজে পবিত্রতা অর্জন ও হাদাস (ওজু না থাকার অবস্থা) দূর করার নিয়ত করবে। তবে নিয়ত উচ্চারণ করবে না। কেননা নিয়তের স্থান হচ্ছে অন্তর। সকল ইবাদতের ক্ষেত্রেই নিয়তের স্থান অন্তর।
(২)। বিসমিল্লাহ বলবে।(স্মরণ থাকলে ওজুর শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ করা ওয়াজিব।
(৩)। হাতের কব্জিদ্বয় তিনবার ধৌত করবে।
(৪)। এরপর তিনবার গড়গড়া কুলি করবে (গড়গড়া কুলি: মুখের ভেতরে পানি ঘুরানো)। বাম হাত দিয়ে তিনবার নাকে পানি দিবে ও তিনবার নাক থেকে পানি ঝেড়ে ফেলে দিবে। ‘ইস্তিনশাক’ শব্দের অর্থ নাকের অভ্যন্তরে পানি প্রবেশ করানো। আর ‘ইস্তিনসার’ শব্দের অর্থ নাক থেকে পানি বের করে ফেলা।
(৫)। মুখমণ্ডল তিনবার ধৌত করবে। মুখমণ্ডলের সীমানা হচ্ছে দৈর্ঘ্যে মাথার স্বাভাবিক চুল গজাবার স্থান থেকে দুই চোয়ালের মিলনস্থল ও থুতনি পর্যন্ত। প্রস্থে ডান কান থেকে বাম কান পর্যন্ত। ব্যক্তি তার দাঁড়ি ধৌত করবে। যদি দাঁড়ি পাতলা হয় তাহলে দাঁড়ির ওপর ও অভ্যন্তর উভয়টা ধৌত করবে। আর যদি দাঁড়ি এত ঘন হয় যে চামড়া দেখা যায় না তাহলে দাঁড়ির ওপরের অংশ ধৌত করবে, আর দাঁড়ি খিলাল করবে।
(৬)। এরপর দুই হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধৌত করবে। হাতের সীমানা হচ্ছে- হাতের নখসহ আঙ্গুলের ডগা থেকে বাহুর প্রথমাংশ পর্যন্ত। ওজু করার আগে হাতের মধ্যে আঠা, মাটি, রঙ বা এ জাতীয় এমন কিছু লেগে থাকলে যেগুলো চামড়াতে পানি পৌঁছাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সেগুলো দূর করতে হবে।
(৭)। অতঃপর নতুন পানি দিয়ে মাথা ও কানদ্বয় একবার মাসেহ করবে; হাত ধোয়ার পর হাতের তালুতে লেগে থাকা অবশিষ্ট পানি দিয়ে নয়। মাসেহ করার পদ্ধতি হচ্ছে- পানিতে ভেজা হাতদ্বয় মাথার সামনে থেকে পেছনের দিকে নিবে; এরপর পুনরায় যেখান থেকে শুরু করেছে সেখানে ফিরিয়ে আনবে। এরপর দুই হাতের তর্জনী আঙ্গুল কানের ছিদ্রতে প্রবেশ করাবে এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে কানের পিঠদ্বয় মাসেহ করবে। আর মহিলার মাথার চুল ছেড়ে দেয়া থাকুক কিংবা বাঁধা থাকুক; মাথার সামনের অংশ থেকে ঘাড়ের ওপর যেখানে চুল গজায় সেখান পর্যন্ত মাসেহ করবে। মাথার লম্বা চুল যদি পিঠের ওপর পড়ে থাকে সে চুল মাসেহ করতে হবে না।
(৮)। এরপর দুই পায়ের কা’ব বা টাকনু পর্যন্ত ধৌত করবে। কা’ব বলা হয় পায়ের গোছার নিম্নাংশের উঁচু হয়ে থাকা হাড্ডিদ্বয়কে। আরো সহজে বললে টাখনু বলতে উদ্দেশ্য পায়ের গোড়ালি থেকে একটু ওপরে অবস্থিত উঁচু হাড়। আর এক পায়ে দুটো টাখনু থাকে।
.
দলিল হচ্ছে ইতিপূর্বে উল্লেখিত উসমান (রাঃ) এর ক্রীতদাস হুমরান এর বর্ণনা যে, একবার উসমান বিন আফফান (রাঃ) ওযুর পানি চাইলেন। এরপর তিনি ওযু করতে আরম্ভ করলেন। (বর্ণনাকারী বলেন), উসমান (রাঃ) হাতের কব্জিদ্বয় তিনবার ধুইলেন, এরপর কুলি করলেন এবং নাক ঝাড়লেন। এরপর তিনবার তার মুখমণ্ডল ধুইলেন এবং ডান হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুইলেন। অতঃপর বাম হাত অনুরূপভাবে ধুইলেন। অতঃপর তিনি মাথা মাসেহ করলেন। এরপর তার ডান পা টাখনু পর্যন্ত তিনবার ধুইলেন। অতঃপর অনুরূপভাবে বাম পা ধুইলেন। তারপর বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমার এ ওযুর করার ন্যায় ওযু করতে দেখেছি এবং ওযু শেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার এ ওযুর ন্যায় ওযু করবে এবং একান্ত মনোযোগের সাথে দু’ রাকাআত সালাত আদায় করবে, সে ব্যক্তির পিছনের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।”[সহিহ মুসলিম, ত্বহারাত ৩৩১]
ওজু শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে- ইসলাম গ্রহণ করা, আকলবান হওয়া, বুঝদার হওয়া ও নিয়ত করা। এসব শর্তের কারণে কোন কাফের ওযু করলে ওযু হবে না। পাগলের ওযু হবে না। বুঝদার হয়নি এমন শিশুর ওযু হবে না। নিয়ত করেনি এমন ব্যক্তির ওযু হবে না; উদাহরণতঃ কেউ যদি ঠাণ্ডা উপভোগ করার নিয়তে এ অঙ্গগুলো ধৌত করে। ওযু শুদ্ধ হওয়ার জন্য পানি পবিত্রকারী হতে হবে। নাপাক পানি দিয়ে ওযু শুদ্ধ হবে না। অনুরূপভাবে ওযু শুদ্ধ হওয়ার জন্য যেসব বস্তু চামড়াতে ও নখে পানি পৌঁছতে বাধা দেয় সেসব জিনিস দূর করতে হবে; যেমন- মহিলাদের নখের মধ্যে ব্যবহৃত নেইল পলিশ।জমহুর আলেমের মতে, ওযুতে বিসমিল্লাহ পড়ার বিধান রয়েছে। তবে আলেমেরা মতানৈক্য করেছেন বিসমিল্লাহ পড়া ওয়াজিব নাকি মুস্তাহাব? ওযুর শুরুতে কিংবা মাঝখানে যে ব্যক্তির স্মরণে থাকে তার উচিত বিসমিল্লাহ পড়া। পুরুষ ও মহিলার ওযু করার পদ্ধতিতে কোন পার্থক্য নেই। ওযু সমাপ্ত করার পর এই দোয়া বলা মুস্তাহাব: ‘আশহাদু আনলা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহ। ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহ’। দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের কেউ যখন ওযু করে এবং পরিপূর্ণভাবে পানি পৌঁছায় কিংবা (বলেছেন) পরিপূর্ণভাবে ওযু করে এরপর বলে: ‘আশহাদু আনলা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহ। ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহ’ (অর্থ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। তিনি এক। তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল) তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজায় খুলে দেয়া হয়। সে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে”[সহিহ মুসলিম, ত্বহারাত ৩৪৫; সুনানে তিরমিযিতে আরেকটু অতিরিক্ত এসেছে যে, ‘আল্লাহুম্মাজ আলনি মিনাত্তাওয়্যাবীন ওয়াজ আলনি মিনাল মুত্বাতাহ্হিরীন’ (অর্থ- হে আল্লাহ! আমাকে আপনি তওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন, আমাকে পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন)[সহিহুত তিরমিযি গ্রন্থে হা/৪৮) আলবানী হাদিসটিকে ‘সহিহ’ আখ্যায়িত করেছেন]দেখুন শাইখ আল-ফাওযান লিখিত ‘আল-মুলাখ্খাস আল-ফিকহী’ ১/৩৬; ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১১৪৯৭)
.
❑ পরিশেষে সংক্ষেপে ওজুর বিশুদ্ধ সুন্নাতি পদ্ধতি:
.
সর্বাগ্রে ওজুর নিয়ত করবেন। ওজুর আগে মিসওয়াক করতে পারেন; যা একটি সুন্নাতি আমল। এরপর ‘বিসমিল্লাহ’ বলবেন। তারপর দু হাতের কব্জি ধৌত করবেন তিনবার। কব্জিদ্বয় তিনবার ধৌত করা, প্রথমে ডান হাতের কব্জি ধৌত করা এবং দু হাতের আঙুলসমূহ খিলাল করা সুন্নাত। এরপর ডান হাতে পানি নিয়ে তিনবার কুলি করবেন এবং ডান হাতে পানি নিয়ে তিনবার নাকে পানি দেবেন। এক অঞ্জলি পানি দিয়েই একসাথে কুলি করতে ও নাকে পানি দিতে পারবেন; আবার কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়ার জন্য আলাদাভাবেও পানি নিতে পারবেন। আর নাকে পানি দেওয়ার পর নাক ঝাড়বেন বাম হাত দিয়ে। এরপর তিনবার মুখমণ্ডল ধৌত করবেন। ঘন দাড়ি থাকলে দাড়ি খিলাল করবেন; এক অঞ্জলি পানি নিয়ে দাড়ি ঘষার মাধ্যমে খিলাল করবেন। এরপর তিনবার কনুই সহকারে দুই হাত যৌত করবেন, কনুই পর্যন্ত। এক্ষেত্রে ডান হাত আগে ধৌত করা সুন্নাত। এরপর দুই হাতে পানি নেওয়ার পর পানি ফেলে দিয়ে ভেজা দুই হাত দ্বারা সমগ্র মাথা একবার মাসেহ করবেন; মাথার সামনের দিকের চুল যেখানে শুরু হয়েছে সেখান থেকে নিয়ে মাথার পেছনে ঘাড়ের শেষভাগ পর্যন্ত মাসেহ করবেন। দুই কানের ওপরে থাকা চুলবিহীন সাদা অংশও মাসেহ করবেন। এরপর নতুন করে পানি নিয়ে পানিভেজ। হাত দিয়ে একবার দুই কান মাসেহ করবেন। একসাথে দুই কান মাসেহ না করে প্রথমে ডান কান এরপরে বাম কান মাসেহ করা সুন্নাত। কান মাসেহের সময় তর্জনী আঙুল দিয়ে কানের ছিদ্রের অংশ মাসেহ করবেন এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে কানের পৃষ্ঠদেশ মাসেহ করবেন। এরপর তিনবার টাখনু সহকারে দুই পা ধৌত করবেন, টাখনু পর্যন্ত। প্রথমে ডান পা ধৌত করা সুন্নাত। পা ধোয়ার সময় পায়ের আঙুলগুলো খিলাল করা সুন্নাত। সুতরাং বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙুল দিয়ে ডান পায়ের আঙুলগুলো খিলাল করবেন; ডান পায়ের কনিষ্ঠ আঙুল থেকে শুরু করে ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি পর্যন্ত, এরপর বাম পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি থেকে শুরু করে বাম পায়ের কনিষ্ঠ আঙুল পর্যন্ত খিলাল করবেন। তারপর বলবেন, “আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসুলুহ।” দ্রষ্টব্য: মারয়ি বিন ইউসুফ আল-কারামি, দালিলুত তালিব লি নাইলিল মাতালিব, তাহকিক: আবু কুতাইবা আল-ফারিয়াবি (রিয়াদ: দারু তাইবা, ১ম প্রকাশ, ১৪২৫ হি,/২০০৪ খ্রি.), পৃ. ১১-১২; মানসুর বিন ইউনুস আল-বুহুতি, আর-রওদুল মুরবি বি শারহি জাদিল মুস্তাকনি, তাহকিক খালিদ আল-মুশাইকিহ, আব্দুল আজিজ আল-ইদান ও আনাস আল-ইয়াতামা (কুয়েত দারু রাকায়িজ, ১ম প্রকাশ, ১৪৩৮ হি.), খণ্ড; ১,পৃষ্ঠা: ১১২-১১৪ ও ১২৪-১২৭; আল-কুআইমি, ফাইদুল জালিল, খণ্ড: ১,পৃষ্ঠা: ৬৬-৭৬)। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬▬
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।
No comments:
Post a Comment