Tuesday, December 3, 2019

সালাতুর রসূল (সাঃ)-মুহাম্মস আসাদুল্লাহ আল গালিব

সালাতুর রসূল (সাঃ)-মুহাম্মস আসাদুল্লাহ আল গালিব বইটি ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন-Download

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ-আরিফ আজাদ

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ-আরিফ আজাদ বইটি ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন- Download

Wednesday, September 18, 2019

আল্লাহ যাদের ভালোবাসেন ও অপছন্দ করেন ( কুরআনের আলোকে)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

আল্লাহ যাদের ভালোবাসেন
১. রাসূলুল্লাহ সা.-এর অনুসারীদের:
قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ
বল, ‘তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর। ফলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা আলে-ইমরান, ৩:৩১) অর্থ্যাৎ যারা রাসূলের সুন্নাত অনুযায়ী আমল করে।
২. আল্লাহর উপর ভরসাকারীদের:
فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ
অতঃপর তুমি কোন সংকল্প গ্রহণ করলে আল্লাহর প্রতি নির্ভর কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ (তাঁর উপর) নির্ভরশীলদের ভালবাসেন। ( সূরা আলে-ইমরান, ৩:১৫৯)
৩. যারা আল্লাহর পথে লড়াই করে:
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُمْ بُنْيَانٌ مَرْصُوصٌ
যারা আল্লাহর পথে সুদৃঢ় প্রাচীরের মত সারিবদ্ধভাবে যুদ্ধ করে, নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন। ( সূরা সাফ, ৬১:৪)
৪.সৎকর্মশীলদের:
وَأَنْفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ ۛ وَأَحْسِنُوا ۛ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং (ব্যয় না করে) নিজেরা নিজেদের সর্বনাশ করো না। আর তোমরা সৎকর্ম কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন। (সূরা বাকারা, ২:১৯৫) আরো দেখুন- সূরা মায়িদা, ৫:১৩
الَّذِينَ يُنْفِقُونَ فِي السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ ۗ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় দান করে, ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে থাকে। আর আল্লাহ (বিশুদ্ধচিত্ত) সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন। (সূরা আলে-ইমরান, ৩:১৩৪)
وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ “আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালোবাসেন।” (দ্রষ্টব্য: সূরা আলে-ইমরান,৩:১৪৮, সূরা মায়িদা, ৫:৯৩)
৫. ন্যায়পরায়ণ ও সুবিচারকারীদের:
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ
নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালবাসেন। ( সূরা মায়িদা, ৫:৪২) আরো দেখুন- সূরা হুজুরাত, ৪৯:৯, সূরা মুমতাহিনা, ৬০:৮
৬. তাওবাকারীদের:
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমা প্রার্থিগণকে এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। ( সূরা বাকারা, ২:২২২)
৭. ধৈর্যশীলদের:
وَاللَّهُ يُحِبُّ الصَّابِرِينَ
আল্লাহ ধৈর্যশীলদের পছন্দ করেন। ( সূরা আলে-ইমরান, ৩:১৪৬)
৮. আল্লাহভীরু/মুত্তাকী/ সংযমীদের:
بَلَىٰ مَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِ وَاتَّقَىٰ فَإِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِينَ
অবশ্যই যে তার অঙ্গীকার পালন করে এবং সংযত হয়ে চলে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সংযমীদেরকে ভালবাসেন। ( সূরা আলে ইমরান, ৩: ৭৬) আরো দেখুন- সূরা তাওবা, ৯: ৪, ৭ পুনশ্চ: যারা আল্লাহর ভয়ে তার নির্দিষ্ট বিষয়াবলী থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখে।
৯. পবিত্রদের:
وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِينَ
আর আল্লাহ উত্তমরূপে পবিত্রতা সম্পাদনকারীদেরকে পছন্দ করেন। (সূরা তাওবাহ, ৯:১০৮)
পুনশ্চ: যারা দৈহিক ও চরিত্রগতভাবে (পাপাচার থেকে) পবিত্র।
আল্লাহ যাদের অপছন্দ করেন
১. কাফির/অবিশ্বাসীদের:
قُلْ أَطِيعُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ ۖ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْكَافِرِينَ
বলো, ‘তোমরা আল্লাহ ও রসূলের অনুগত হও।’ কিন্তু যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখ নিশ্চয়ই আল্লাহ অবিশ্বাসীদেরকে ভালবাসেন না। ( সূরা আলে-ইমরান, ৩:৩২)
২. জালেমদর:
وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الظَّالِمِينَ
আর আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে পছন্দ করেন না। (দ্রষ্টব্য: সূরা আলে ইমরান, ৩: ৫৭, ১৪০) আরো দেখুন, সূরা শূরা, ৪২:৪০
৩. সীমালঙ্ঘনকারীদের:
إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ বাড়াবাড়িকারীদেরকে পছন্দ করেন না’। ( সূরা বাকারা, ২: ১৯০)
“হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য যে সব উৎকৃষ্ট বস্তু বৈধ করেছেন, সে সকলকে তোমরা অবৈধ করো না এবং সীমালংঘন করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালংঘনকারীদেরকে ভালবাসেন না।” ( সূরা মায়িদা, ৫:৮৭)
৪. অকৃতজ্ঞ পাপীদের:
يَمْحَقُ اللَّهُ الرِّبَا وَيُرْبِي الصَّدَقَاتِ ۗ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ أَثِيمٍ
আল্লাহ সূদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বৃদ্ধি দেন। আল্লাহ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে ভালবাসেন না। ( সূরা বাকারা, ২:২৭৬)
৫. বিশ্বাসঘাতক পাপিষ্ঠদের:
وَلَا تُجَادِلْ عَنِ الَّذِينَ يَخْتَانُونَ أَنْفُسَهُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ مَنْ كَانَ خَوَّانًا أَثِيمًا আর তুমি তাদের পক্ষে কথা বলো না, যারা নিজেদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে। নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বাসঘাতক পাপিষ্ঠকে ভালবাসেন না। ( সূরা নিসা, ৪:১০৭)
وَإِمَّا تَخَافَنَّ مِنْ قَوْمٍ خِيَانَةً فَانْبِذْ إِلَيْهِمْ عَلَىٰ سَوَاءٍ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْخَائِنِينَ
যদি তুমি কোন সম্প্রদায়ের বিশ্বাসঘাতকতার আশংকা কর, তাহলে তোমার চুক্তিও তুমি যথাযথভাবে বাতিল কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদেরকে পছন্দ করেন না। ( সূরা আনফাল, ৮:৫৮) আরো দেখুন- সূরা হাজ্জ, ২২:৩৮
৬. অশান্তি/বিপর্যয় ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের:
وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الْفَسَادَ
আর আল্লাহ অশান্তি/ বিপর্যয় পছন্দ করেন না। (সূরা বাকারা, ২:২০৫)
وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُفْسِدِينَ
আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদেরকে পছন্দ করেন না। ( সূরা মায়িদা, ৫:৬৪) আরো দেখুন- সূরা কাসাস, ২৮:৭৬
৭. দাম্ভিক/অহঙ্কারীদের:
وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُورٍ
গর্বিত ও অহংকারীদেরকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। ( সূরা হাদীদ, ৫৭:২৩)
وَلَا تُصَعِّرْ خَدَّكَ لِلنَّاسِ وَلَا تَمْشِ فِي الْأَرْضِ مَرَحًا ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُورٍ
মানুষের জন্য নিজের গাল ফুলায়ো না (অবজ্ঞা করো না) এবং পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে বিচরণ করো না; কারণ আল্লাহ কোন উদ্ধত, অহংকারীকে ভালবাসেন না। ( সূরা লুকমান, ৩১:১৮)
আরো দেখুন- সূরা নিসা, ৪:৩৬
لَا جَرَمَ أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْتَكْبِرِينَ
এটা নিঃসন্দেহ যে, আল্লাহ জানেন যা তারা গোপন করে এবং যা তারা প্রকাশ করে; তিনি অহংকারীকে অবশ্যই পছন্দ করেন না। ( সূরা নাহল, ১৬:২৩)
إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْفَرِحِينَ
নিশ্চয়ই আল্লাহ দাম্ভিকদেরকে পছন্দ করেন না। ( সূরা কাসাস, ২৮:৭৬
৮. মন্দকথা প্রকাশ করাকে:
لَا يُحِبُّ اللَّهُ الْجَهْرَ بِالسُّوءِ مِنَ الْقَوْلِ إِلَّا مَنْ ظُلِمَ ۚ وَكَانَ اللَّهُ سَمِيعًا عَلِيمًا
মন্দ কথা প্রকাশ করাকে আল্লাহ পছন্দ করেন না; তবে যার উপর যুলুম করা হয়েছে তার কথা স্বতন্ত্র। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা নিসা, ৪:১৪৮

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুজেযা

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুজেযা 
জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা) রাসুল্লাহ সা.-এর প্রখ্যাত সাহাবী। তিনি বলেন: মদীনায় আমার কাছে বাস করত এক ইয়াহুদী। আমি তার কাছ থেকে ফলের মৌসুমে খেজুর দেয়ার শর্তে অগ্রীম কিছু অর্থ নিই ( বাইয়ে সালাম )। সেই বৎসর ভাল ফলন না হওয়াতে তিনি ইয়াহুদীর কাছে আগামী এক বৎসরের অবকাশ (সময় ) চাইলেন। ইয়াহুদী তা করতে অস্বীকৃতি জানাল। জাবের রা. এই বিষয়ে রাসুল (সা.)কে বললে ; তিনি কিছু সাহাবী নিয়ে জাবেরের ওখানে গিয়ে ইয়াহুদীর কাছে জাবেরের পক্ষে অবকাশ চাইলেন। সে পূর্বের মত অস্বীকার করল। রাসূল (সা) জাবেরের (রা) বাগান ঘুরে এসে আবারো ইয়াহুদীর কাছে এক বছরের সময় চাইলেন। ইয়াহুদী আবারো সময় দিতে অস্বীকার করল।
জাবের রা. এসময় কিছু তাজা-পাকা খেজুর এনে রাসূল (সা)-এর কাছে এনে রাখলেন। রাসূল সা. তা থেকে খেলেন এবং বললেনঃ হে জাবের. তোমার ঘরটি কোথায়?
জাবের (রা) ঘর দেখিয়ে দিলে তিনি তাকে বিছানা পাততে বললেন। তিনি বিছানা করে দিলে রাসূল (সা.) তাতে শুইয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন।
ঘুম থেকে উঠে রাসূল (সা) আবার ইয়াহুদীর কাছে গিয়ে সময়ের অবকাশ চাইলেন। সে তা করতে অস্বীকৃতি জানাল। রাসূল সা জাবের রা)-এর খেজুরের বাগানটি চক্কর দিয়ে জাবের রা.-কে বললেন, তিনি যে তার বাগানের অপর্যাপ্ত কাচা-পাকা খেজুর পেরে এখানে জমা করেন। জাবের রা. তাই করলেন। রাসূল সা. খেজুর স্তুপের উপর বসে জাবের (রা)কে নির্দেশ দিলেন তা থেকে  মেপে মেপে ইয়াহুদীর পাওনা মিটিয়ে দিতে। জাবের (রা.) তাই করলেন। তিনি বলেন: আমি ইয়াহুদীর পাওনা মিটিয়ে দিয়ে দেখি এখনো আমার কাছে ঐ পরিমাণ আছে যা আমি প্রথমে স্তুপ করেছি বা তারচে বেশি যা আমার প্রয়োজন পূরণের জণ্য যথেষ্ট।

হাবশী ক্রীতদাসী


আরবের এক উপকন্ঠে এক গোত্রের বাস। এ গোত্রে এক হাবশী ক্রীতদাসী ছিল। তার মালিক তাকে মুক্তি দিলেও সে তাদের সাথে থাকত। একদিন ওই গোত্রের এক বালিকা বাইরে বের হয়ে তার পড়নের অলঙ্কার হারিয়ে ফেলে বা কোথাও রেখে ভুলে যায়। এক চিল খাবার ভেবে তা নিয়ে যায়। গোত্রের লোকেরা ঐ ক্রীতদাসীকে সন্দেহ করে।
এক পর্যায়ে তারা মেয়েটিকে তল্লাশী করে, এমনকি তারা ওর লজ্জাস্থান পর্যন্ত অনুসন্ধান করে। হঠাৎ ওই চিলটি এসে ওদের সামনে হারানো অলঙ্কারটি ফেলে দেয়। তা দেখে ক্রীতদাসী বলল, তোমরা যেই হারের কারণে আমাকে অপদস্ত করলে এই দেখো ……তোমাদের কাছে আমি ভাল কিছু আশা করতে পারি না।
হাবশী ক্রীতদাসী পরবর্তিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে তার ক্ষোভের কথা বলল। সে ইসলাম গ্রহণ করলে থাকার জন্য তাকে মসজিদের পাশে তাবু করে দেয়া হয়।
আইশা রা. বলেন: এই মহিলার সাথে যখনই দেখা হত সে সুরে সুরে বলত, ওই হারানো অলঙ্কারে এরা আমাকে অপমান করেছে; মহান প্রভু এটা দ্বারা আমাকে পথ দেখিয়েছেন।

Saturday, July 13, 2019

হাদিসের গল্পঃ ঈমানদার যুবক ও আছহাবুল উখদূদের কাহিনী

হাদিসের গল্পঃ ঈমানদার যুবক ও আছহাবুল উখদূদের কাহিনী

প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না
রহমান রহীম আল্লাহ্‌ তায়ালার নামে-
alone-boy-ocean-sunrise-favim-com-112915বহুকাল পূর্বে একজন রাজা ছিলেন। সেই রাজার ছিল একজন যাদকুর। ঐ যাদুকর বৃদ্ধ হ’লে একদিন সে রাজাকে বলল,‘আমি তো বৃদ্ধ হয়ে গেছি। সুতরাং আমার নিকট একটি ছেলে পাঠান, যাকে আমি যাদুবিদ্যা শিক্ষা দিব’। বাদশাহ তার নিকট একটি বালককে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি তাকে যাদুবিদ্যা শিক্ষা দিতে লাগলেন। বালকটি যাদুকরের নিকট যে পথ দিয়ে যাতায়াত করত, সে পথে ছিল এক সন্ন্যাসীর আস্তানা। বালকটি তার নিকট বসল এবং তার কথা শুনে মুগ্ধ  হ’ল। বালকটি যাদুকরের নিকট যাওয়ার সময় ঐ সন্ন্যাসীর নিকট বসে তাঁর কথা শুনত। ফলে যাদুকরের নিকট পৌছাতে বালকটির দেরী হ’ত বলে যাদুকর তাকে প্রহার করত। বালকটি সন্ন্যাসীর নিকট এ কথা জানালে তিনি বালককে শিখিয়ে দেন যে,তুমি যদি যাদুকর কে ভয় কর তাহ’লে বলবে, বাড়ীর লোকজন আমাকে পাঠাতে বিলম্ব  করেছে  এবং  বাড়ীর  লোকজনকে  ভয়  পেলে  বলবে, যাদুকরই আমাকে ছুটি দিতে বিলম্ব করেছে।
 বালকটি এভাবে যাতায়াত করতে থাকে। একদিন পথে সে দেখল,একটি বৃহদাকার প্রাণী মানুষের চলাচলের পথ রোধ করে বসে আছে। বালকটি ভাবল, আজ পরীক্ষা করে দেখব যে, যাদুকর শ্রেষ্ঠ, না সন্ন্যাসী শ্রেষ্ঠ? অতঃপর সে একটি প্রস্তর খন্ড নিয়ে বলল, ‘হে আল্লাহ্‌! যাদুকরের কার্যকলাপ অপেক্ষা সন্ন্যাসীর কার্যকলাপ যদি তোমার নিকট অধিকতর প্রিয় হয়, তবে এই প্রাণীটিকে এই প্রস্তরাঘাতে মেরে ফেল। যেন লোকজন যাতায়াত করতে পারে’। এই বলে প্রাণীটিকে লক্ষ্য করে সে প্রস্তরখন্ডটি ছুঁড়ে মারল। প্রাণীটি ঐ প্রস্তাঘাতে মারা গেল এবং লোক চলাচল শুরু হল।
 এরপর বালকটি সন্ন্যাসীর নিকট গিয়ে তাকে ঘটনাটি জানালে তিনি তাকে বললেন, বৎস! তুমি এখনই আমার চেয়ে শ্রেষ্ঠ হয়ে উঠেছ। তোমার প্রকৃত স্বরূপ আমি বুঝতে পারছি। শীঘ্রই তোমাকে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। যদি তুমি পরীক্ষার সম্মুখীন হও তাহলে যেন আমার কথা প্রকাশ করে দিও না। বালকটির দোআয় জন্মান্ধ ব্যক্তি চক্ষুষ্মান হতে লাগল, কুষ্ঠ ব্যাধিগ্রস্ত ব্যক্তি নিরাময় হতে লাগল এবং লোকজন অন্যান্য রোগ হতেও আরোগ্য লাভ করতে লাগল।
 এদিকে রাজার একজন সহচর অন্ধ হয়েছিল। সে বহু উপঢৌকন সহ বালকটির নিকট গিয়ে বলল, তুমি যদি আমাকে চক্ষুষ্মান করে দাও, তাহলে এ সবই তোমার।  বালকটি বলল, আমিতো কাউকে আরোগ্য করতে পারি না । বরং  রোগ ভাল করেন আল্লাহ্‌। অতএব আপনি যদি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনেন, তাহলে আমি আপনার রোগ মুক্তির জন্য আল্লাহর  নিকটে  দোআ  করতে  পারি।  তাতে  তিনি  হয়ত  আপনাকে আরোগ্য দান করতে পারেন। ফলে লোকটি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনল। আল্লাহ তাকে আরোগ্য দান করলেন।
পূর্বের ন্যায় তিনি রাজার নিকটে গিয়ে বসলে রাজা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, কে তোমাকে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিল? সে বলল, ‘আমার রব’। রাজা বললেন, আমি ছাড়া তোমার রব আছে কি? সে বলল, ‘আমার ও আপনার উভয়ের রব আল্লাহ’। এতে রাজা তাকে ধরে তার উপর নির্যাতন চালাতে থাকে। অবশেষে সে বালকটির নাম প্রকাশ করে দিল। অতঃপর বালকটিকে রাজদরবারে আনা হল। রাজা তাকে বললেন, বৎস!আমি জানতে পারলাম যে, তুমি তোমার যাদুর গুণে জনমান্ধ ও কুষ্ঠোব্যাধিগ্রস্ত লোকদের রোগ নিরাময় করছ এবং অন্যান্য কঠিন রোগও নিরাময় করে চলেছ। বালকটি বলল, আমি কাউকে রোগ মুক্ত করি না। রোগ মুক্ত করেন আল্লাহ। তখন রাজা তাকে পাকড়াও করে তার উপর উৎপীড়ন চালাতে থাকেন। এক পর্যায়ে সে সন্ন্যাসীর কথা প্রকাশ করে দিল। তখন সন্ন্যাসীকে ধরে আনা হ’ল এবং তাঁকে বলা হল, তুমি  তোমার ধর্ম পরিত্যাগ কর। কিন্তু সে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করল। তখন রাজার আদেশক্রমে করাত নিয়ে আসা হলে তিনি তা তার মাথার মাঝখানে বসালেন এবং তাঁর মাথা ও শরীর চিরে দ্বিখন্ডিত করে ফেললেন। তারপর রাজার সহচরকে আনা হল এবং তাকেও তার ধর্ম ত্যাগ  করতে বলা হল। কিন্তু সেও অস্বীকৃতি জানালে তাকেও করাত দিয়ে চিরে দ্বিখন্ডিত করা হল।
 তারপর বালকটিকে হাযির করে তার ধর্ম পরিত্যাগ করতে বলা হল। বালকটিও নিজ ধর্ম পরিত্যাগ করতে অস্বীকার করল। তখন রাজা তাকে তার লোকজনের নিকট দিয়ে বললেন, তোমরা একে অমুক পাহাড়ে নিয়ে যাও এবং তাকে সঙ্গে করে পাহাড়ে আরোহণ করতে থাক। যখন তোমরা পাহাড়ের উচ্চশৃঙ্গে পৌঁছাবে, তখন তাকে তার ধর্ম পরিত্যাগ করতে বলবে। সে যদি অস্বীকার করে, তাহলে তোমরা তাকে সেখান থেকে নীচে ছুড়ে ফেলে দিবে। তারা বালকটিকে নিয়ে পাহাড়ের উপরে উঠলে বালকটি দো‘আ করল, ‘হে আল্লাহ্‌! তোমার যেভাবে  ইচ্ছা হয়, সেভাবে তুমি আমাকে এদের কাছ থেকে রক্ষা কর’। তৎক্ষণাৎ পাহাড়টি কম্পিত হয়ে উঠল এবং তারা নীচে পড়ে মারা গেল। আর বালকটি (সুস্থ দেহে) রাজার নিকট এসে উপস্থিত হল। রাজা তখন তাকে বললেন, ‘তোমার সঙ্গীদের কি  হল’? তখন সে বলল, আল্লাহই  আমাকে  তাদের  হাত  থেকে বাঁচিয়েছেন।
 তারপর রাজা তাকে তার একদল লোকের নিকট সোপর্দ করে আদেশ দিলেন, ‘একে একটি বড় নৌকায় উঠিয়ে  নদীর মাঝখানে নিয়ে যাও। যদি সে নিজ ধর্ম পরিত্যাগ করে, তো ভাল। নচেৎ তাকে নদীতে নিক্ষেপ কর।’ তারা বালকটিকে নিয়ে মাঝ নদীতে পৌঁছালে বালকটি পূর্বের ন্যায় দোআ করল, ‘হে আল্লাহ্‌! তোমার যেভাবে ইচছা হয়, সেভাবে তুমি আমাকে এদের হাত থেকে রক্ষা কর’। এতে নৌকা ভীষণভাবে কাত হয়ে পড়ল। ফলে রাজার লোকজন নদীতে ডুবে মারা গেল। আর বালকটি (সুস্ত দেহে) রাজার নিকটে আসলে রাজা তাকে বললেন, তোমার সঙ্গীদের কি অবস্থা? সে বলল, আল্লাহ্‌ই আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। এরপর সে রাজাকে বলল, ‘আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন আমাকে কোনভাবেই হত্যা করতে পারবেন না। যতক্ষণ না আমি যা বলব, আপনি তা করবেন। রাজা বললেন, ‘সেটা কি’? বালকটি বলল, ‘আপনি একটি বিসতীর্ণ মাঠে সকল লোককে হাযির করুন এবং সেই মাঠে খেজুরের একটি গুঁড়ি পুঁতে তার উপরিভাগে আমাকে বেঁধে রাখুন। তারপর আমার তূনীর হতে একটি তীর  নিয়ে  ধনুকে  সংযোজিত  করুন। তারপর (বালকটির রব আল্লাহর নামে) বলে আমার দিকে তীরটি নিক্ষেপ করুন। আপনি  যদি  এ  পন্থা অবলম্বন  করেন, তবেই  আমাকে  হত্যা  করতে পারবেন।
 বালকের কথামত এক বিসতীর্ণ মাঠে রাজা সকল লোককে সমবেত করলেন এবং বালকটিকে একটি খেজুর গাছের গুঁড়ির উপরে বাঁধলেন। তারপর রাজা  বালকটির  তূনীর  হতে  একটি  তীর  নিয়ে  ধনুকের  মধ্যভাগে সংযোজিত করলেন। তারপর বলে বালকটির দিকে তীর নিক্ষেপ করলেন। তীরটি বালকের চোখ ও কানের মধ্যভাগে বিদ্ধ হল। বালকটি এক হাতে তীরবিদ্ধ স্থানটি চেপে ধরল। অতঃপর সে মারা গেল।
 এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত জনগণ বলে উঠল, ‘আমরা বালকটির রবের প্রতি ঈমান আনলাম।  আমরা বালকটির রবের প্রতি ঈমান আনলাম। তারপর রাজার লোকজন তাঁর নিকট গিয়ে বলল, ‘আপনি যা আশঙ্কা করছিলেন তাই শেষ পর্যন্ত ঘটে গেল। সব লোক বালকটির রবের প্রতি ঈমান আনল’। তখন রাজা রাস্তাগুলির চৌমাথায় প্রকান্ড গর্ত খনন করার নির্দেশ দিলেন। তার কথা মতো গর্ত খনন করে তাতে আগুন প্রজ্জ্বলিত করা হ’ল। তারপর রাজা হুকুম দিলেন, ‘যে ব্যক্তি বালকের ধর্ম পরিত্যাগ করবে না, তাকে ঐ আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করে পুড়িয়ে মার। অথবা তাকে বলবে, তুমি এই আগুনে ঝাঁপ দাও। রাজার লোকেরা তার হুকমু পালন  করতে  লাগল। ইতিমধ্যে  একজন  রমণীকে  তার  শিশুসন্তাসহ উপস্থিত করা হল। রমণীটি আগুনে ঝাঁপ দিতে ইতস্তত করতে থাকলে শিশুটি বলে উঠল, ‘মা ছবর অবলম্বন (করতঃ আগুনে প্রবেশ) করুন।কেননা আপনি হক পথে আছেন’।
পবিত্র কুরআনের সূরা বুরূজে এ ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে,
‘ধবংস হয়েছিল গর্তওয়ালারা- ইন্ধনপূর্ণ যে গর্তে ছিল অগ্নি, যখন তারা তার পাশে উপবিষ্ট ছিল এবং তারা মুমিনদের সাথে যা করছিল তা প্রত্যক্ষ করছিল। তারা তাদেরকে নির্যাতন করেছিল শুধু একারনে যে, তারা বিশ্বাস করতো পরাক্রমশালী ও প্রশংসার্হ আল্লাহে’ (বুরূজ ৪-৮)।
[সহীহ মুসলিম হা/৩০০৫ ‘যুহদ ও রিক্বাক্ব’ অধ্যায়, অনুচেছদ-১৭, শুহাইব বিন সিনান আর-রূমী (রাঃ) হতে বর্ণিত, আহমাদ হা/২৩৯৭৬]।

শিক্ষা :

১.  প্রত্যেকটি আদম সন্তান স্বভাবধর্ম ইসলামের উপর জন্মগ্রহণ করে।
২. মুমিন বান্দা সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করবে ও কায়মনোবাক্যে তাঁর নিকট দো‘আ করবে।
৩. রোগমুক্তির মালিক একমাত্র আল্লাহ্‌; কোন পীর-ফকীর বা সাধু-সন্ন্যাসী নয়।
৪. আল্লাহর পথের নির্ভীক সৈনিকেরা বাতিলের সামনে কখনো মাথা নত করে না।
৫. মুমিন দুনিয়াবী জীবনে পদে পদে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তার ঈমানের মযবূতী পরখ করেন।
৬. হক্বের বিজয় অবশ্যম্ভাবী

Monday, July 8, 2019

কা‘ব ইবনু মালিকের ঘটনা এবং মহামহিম আল্লাহর বাণীঃ


কা‘ব ইবনু মালিকের ঘটনা এবং মহামহিম আল্লাহর বাণীঃ

(وَعَلَى الثَلَاثَةِ الَّذِيْنَ خُلِّفُوْا).

এবং তিনি ক্ষমা করলেন অপর তিনজনকেও যাদের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল। (সূরাহ আত্-তওবাহ ৯/১১৮)

৪৪১৮. ‘আবদুল্লাহ ইবনু কা‘ব ইবনু মালিক (রহ.) হতে বর্ণিত। কা‘ব (রাঃ) অন্ধ হয়ে গেলে তাঁর সন্তানের মধ্য থেকে যিনি তাঁর সাহায্যকারী ও পথপ্রদর্শনকারী ছিলেন, তিনি (‘আবদুল্লাহ্) বলেন, আমি কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যখন তাবূক যুদ্ধ থেকে তিনি পশ্চাতে থেকে যান তখনকার অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যতগুলো যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তার মধ্যে তাবূক যুদ্ধ ব্যতীত আমি আর কোন যুদ্ধ থেকে পেছনে থাকিনি। তবে আমি বাদর যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করিনি। কিন্তু উক্ত যুদ্ধ থেকে যাঁরা পেছনে পড়ে গেছেন, তাদের কাউকে ভৎর্সনা করা হয়নি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল কুরাইশ দলের সন্ধানে বের হয়েছিলেন। অবশেষে আল্লাহ তা‘আলা তাঁদের এবং তাঁদের শত্রু বাহিনীর মধ্যে অঘোষিত যুদ্ধ সংঘটিত করেন। আর আকাবার রাতে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের থেকে ইসলামের উপর অঙ্গীকার গ্রহণ করেন, আমি তখন তাঁর সঙ্গে ছিলাম। ফলে বাদর প্রান্তরে উপস্থিত হওয়াকে আমি প্রিয়তর ও শ্রেষ্ঠতর বলে বিবেচনা করিনি। যদিও আকাবার ঘটনা অপেক্ষা লোকেদের মধ্যে বাদরের ঘটনা বেশী মাশহুর ছিল। আর আমার অবস্থার বিবরণ এই-তাবূক যুদ্ধ থেকে আমি যখন পেছনে থাকি তখন আমি এত অধিক সুস্থ, শক্তিশালী ও সচ্ছল ছিলাম যে আল্লাহর কসম! আমার কাছে কখনো ইতোপূর্বে কোন যুদ্ধে একই সঙ্গে দু’টো যানবাহন জোগাড় করা সম্ভব হয়নি, যা আমি এ যুদ্ধের সময় জোগাড় করেছিলাম। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে অভিযান পরিচালনার সংকল্প গ্রহণ করতেন, বাহ্যত তার বিপরীত দেখাতেন। এ যুদ্ধ ছিল ভীষণ উত্তাপের সময়, অতি দূরের যাত্রা, বিশাল মরুভূমি এবং বহু শত্রুসেনার মোকাবালা করার। কাজেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অভিযানের অবস্থা এবং কোন এলাকায় যুদ্ধ পরিচালনা করতে যাবেন তাও মুসলিমদের কাছে প্রকাশ করে দেন যাতে তারা যুদ্ধের প্রয়োজনীয় সামান জোগাড় করতে পারে। এদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মুসলিমের সংখ্যা অনেক ছিল এবং তাদের সংখ্যা কোন নথিপত্রেও হিসেব করে রাখা হতো না।

কা‘ব (রাঃ) বলেন, যার ফলে যে কোন লোক যুদ্ধাভিযান থেকে বিরত থাকতে ইচ্ছা করলে তা সহজেই করতে পারত এবং ওয়াহী মারফত এ খবর না জানানো পর্যন্ত তা সংগোপন থাকবে বলে সে ধারণা করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অভিযান পরিচালনা করেছিলেন এমন সময় যখন ফল-মূল পাকার ও গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়ার সময় ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং এবং তাঁর সঙ্গী মুসলিম বাহিনী অভিযানে যাত্রার প্রস্তুতি গ্রহণ করে ফেলেন। আমিও প্রতি সকালে তাঁদের সঙ্গে রওয়ানা হওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকি। কিন্তু কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারিনি। মনে মনে ধারণা করতে থাকি, আমি তো যখন ইচ্ছা পারব। এই দোটানায় আমার সময় কেটে যেতে লাগল। এদিকে অন্য লোকেরা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ফেলল। ইতোমধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাথী মুসলিমগণ রওয়ানা করলেন অথচ আমি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম না। আমি মনে মনে ভাবলাম, আচ্ছা ঠিক আছে, এক দু’দিনের মধ্যে আমি প্রস্তুত হয়ে পরে তাঁদের সঙ্গে গিয়ে মিলব। এভাবে আমি প্রতিদিন বাড়ি হতে প্রস্তুতি নেয়ার উদ্দেশে বের হই, কিন্তু কিছু না করেই ফিরে আসি। আবার বের হই, আবার কিছু না করে ঘরে ফিরে আসি। ইত্যবসরে বাহিনী অগ্রসর হয়ে অনেক দূর চলে গেল। আর আমি রওয়ানা করে তাদের সঙ্গে রাস্তায় মিলিত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতে লাগলাম। আফসোস যদি আমি তাই করতাম! কিন্তু তা আমার ভাগ্যে জোটেনি। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম রওয়ানা হওয়ার পর আমি লোকেদের মধ্যে বের হয়ে তাদের মাঝে বিচরণ করতাম। এ কথা আমার মনকে পীড়া দিত যে, আমি তখন (মদিনা্য়) মুনাফিক এবং দুর্বল ও অক্ষম লোক ব্যতীত অন্য কাউকে দেখতে পেতাম না। এদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূক পৌঁছার আগে পর্যন্ত আমার ব্যাপারে আলোচনা করেননি। অনন্তর তাবূকে এ কথা তিনি লোকেদের মাঝে বসে জিজ্ঞেস করে বসলেন, কা‘ব কী করল?
বানু সালামাহ গোত্রের এক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তার ধন-সম্পদ ও অহঙ্কার তাকে আসতে দেয়নি। এ কথা শুনে মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বললেন, তুমি যা বললে তা ঠিক নয়। হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহর কসম, আমরা তাঁকে উত্তম ব্যক্তি বলে জানি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব রইলেন। কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, আমি যখন জানতে পারলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনা মুনাওয়ারায় ফিরে আসছেন, তখন আমি চিন্তিত হয়ে গেলাম এবং মিথ্যা ওজুহাত খুঁজতে থাকলাম। মনে স্থির করলাম, আগামীকাল এমন কথা বলব যাতে করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্রোধকে ঠান্ডা করতে পারি। আর এ সম্পর্কে আমার পরিবারস্থ জ্ঞানীগুণীদের থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে থাকি। এরপর যখন প্রচারিত হল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনা্য় এসে পৌঁছে যাচ্ছেন, তখন আমার অন্তর থেকে মিথ্যা দূর হয়ে গেল। আর মনে দৃঢ় প্রত্যয় হল যে, এমন কোন উপায়ে আমি তাঁকে কখনো ক্রোধমুক্ত করতে সক্ষম হব না, যাতে মিথ্যার লেশ থাকে। অতএব আমি মনে মনে স্থির করলাম যে, আমি সত্য কথাই বলব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকাল বেলায় মদিনা্য় প্রবেশ করলেন। তিনি সফর থেকে প্রত্যাবর্তন করে প্রথমে মসজিদে গিয়ে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করতেন, তারপর লোকদের সামনে  বসতেন। যখন নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করলেন, তখন যারা পশ্চাদপদ ছিলেন তাঁরা তাঁর কাছে এসে শপথ করে করে অপারগতা ও আপত্তি পেশ করতে লাগল। এরা সংখ্যায় আশির অধিক ছিল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহ্যত তাদের ওযর-আপত্তি গ্রহণ করলেন, তাদের বাই‘আত করলেন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। কিন্তু তাদের অন্তরের অবস্থা আল্লাহর হাওয়ালা করে দিলেন। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] আমিও এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে হাজির হলাম। আমি যখন তাঁকে সালাম দিলাম তখন তিনি রাগান্বিত চেহারায় মুচকি হাসি হাসলেন। তারপর বললেন, এসো। আমি সে মতে এগিয়ে গিয়ে একেবারে তাঁর সম্মুখে বসে গেলাম। তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী কারণে তুমি অংশগ্রহণ করলে না? তুমি কি যানবাহন ক্রয় করনি? তখন আমি বললাম, হ্যাঁ, করেছি। আল্লাহর কসম! এ কথা সুনিশ্চিত যে, আমি যদি আপনি ব্যতীত দুনিয়ার অন্য কোন ব্যক্তির সামনে বসতাম তাহলে আমি তার অসন্তুষ্টিকে ওযর-আপত্তি পেশের মাধ্যমে ঠান্ডা করার চেষ্টা করতাম। আর আমি তর্কে পটু। কিন্তু আল্লাহর কসম আমি পরিজ্ঞাত যে, আজ যদি আমি আপনার কাছে মিথ্যা কথা বলে আমার প্রতি আপনাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করি তাহলে শীঘ্রই আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে আমার প্রতি অসন্তুষ্ট করে দিতে পারেন। আর যদি আপনার কাছে সত্য প্রকাশ করি যাতে আপনি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হন, তবুও আমি এতে আল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার অবশ্যই আশা করি। না, আল্লাহর কসম, আমার কোন ওযর ছিল না। আল্লাহর কসম! সেই যুদ্ধে আপনার সঙ্গে না যাওয়ার সময় আমি সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ও সামর্থ্যবান ছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে সত্য কথাই বলেছে। তুমি এখন চলে যাও, যতদিনে না তোমার সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা ফায়সালা করে দেন। তাই আমি উঠে চলে গেলাম। তখন বানী সালিমার কতিপয় লোক আমার অনুসরণ করল। তারা আমাকে বলল, আল্লাহর কসম! তুমি ইতোপূর্বে কোন পাপ করেছ বলে আমাদের জানা নেই; তুমি (তাবূক যুদ্ধে) অংশগ্রহণ হতে বিরত অন্যান্যদের মতো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একটি ওযর পেশ করে দিতে পারতে না? আর তোমার এ অপরাধের কারণে তোমার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ষমা প্রার্থনাই তো যথেষ্ট ছিল। আল্লাহর কসম! তারা আমাকে বারবার কঠিনভাবে ভৎর্সনা করতে থাকে। ফলে আমি পূর্ব স্বীকারোক্তি থেকে ফিরে গিয়ে মিথ্যা বলার বিষয়ে মনে মনে চিন্তা করতে থাকি। এরপর আমি তাদের বললাম, আমার মতো এ কাজ আর কেউ করেছে কি? তারা জওয়াব দিল, হ্যাঁ, আরও দু’জন তোমার মতো বলেছে এবং তাদের ব্যাপারেও তোমার মতো একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম, তারা কে কে? তারা বলল, একজন মুরারা ইবনু রবী আমরী এবং অপরজন হলেন, হিলাল ইবনু ‘উমাইয়াহ ওয়াকিফী। এরপর তারা আমাকে জানালো যে, তারা উভয়ে উত্তম মানুষ এবং তারা বাদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। সেজন্য দু’জনেই আদর্শস্থানীয়। যখন তারা তাদের নাম উল্লেখ করল, তখন আমি পূর্ব মতের উপর অটল রইলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্যকার যে তিনজন তাবূকে অংশগ্রহণ হতে বিরত ছিল তাদের সঙ্গে কথা বলতে মুসলিমদের নিষেধ করে দিলেন। তদনুসারে মুসলিমরা আমাদের এড়িয়ে চলল। আমাদের প্রতি তাদের আচরণ বদলে ফেলল। এমনকি এ দেশ যেন আমাদের কাছে অপরিচিত হয়ে গেল।
এ অবস্থায় আমরা পঞ্চাশ রাত অতিবাহিত করলাম। আমার অপর দু’জন সাথী তো সংকটে ও শোচনীয় অবস্থায় নিপতিত হলেন। তারা নিজেদের ঘরে বসে বসে কাঁদতে থাকেন। আর আমি যেহেতু অধিকতর যুবক ও শক্তিশালী ছিলাম তাই বাইরে বের হতাম, মুসলিমদের জামা‘আতে সালাত আদায় করতাম, বাজারে চলাফেরা করতাম কিন্তু কেউ আমার সঙ্গে কথা বলত না। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে হাযির হয়ে তাঁকে সালাম দিতাম। যখন তিনি সালাত শেষে মজলিসে বসতেন তখন আমি মনে মনে বলতাম ও লক্ষ্য করতাম, তিনি আমার সালামের জবাবে তার ঠোঁটদ্বয় নেড়েছেন কি না। তারপর আমি তাঁর কাছাকাছি জায়গায় সালাত আদায় করতাম এবং গোপন দৃষ্টিতে তাঁর দিকে দেখতাম যে, আমি যখন সালাতে মগ্ন হতাম তখন তিনি আমার প্রতি দৃষ্টি দিতেন, আর যখন আমি তাঁর দিকে তাকাতাম তখন তিনি দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতেন। এভাবে আমার প্রতি মানুষদের কঠোরতা ও এড়িয়ে চলা দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকে। একদা আমি আমার চাচাত ভাই ও প্রিয় বন্ধু আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ)-এর বাগানের প্রাচীর টপকে ঢুকে পড়ে তাঁকে সালাম দেই। কিন্তু আল্লাহর কসম তিনি আমার সালামের জওয়াব দিলেন না। আমি তখন বললাম, হে আবূ ক্বাতাদাহ! আপনাকে আমি আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, আপনি কি জানেন যে, আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ভালবাসি? তখন তিনি নীরবতা পালন করলেন। আমি পুনরায় তাঁকে কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি এবারও কোন জবাব দিলেন না। আমি আবারো তাঁকে কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই ভাল জানেন। তখন আমার চক্ষুদ্বয় থেকে অশ্রু ঝরতে লাগল। আমি আবার প্রাচীর টপকে ফিরে এলাম। কা‘ব (রাঃ) বলেন, একদা আমি মদিনার বাজারে হাঁটছিলাম। তখন সিরিয়ার এক বণিক যে মদিনার বাজারে খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করার উদ্দেশে এসেছিল, সে বলছে, আমাকে কা‘ব ইবনু মালিককে কেউ পরিচয় করে দিতে পারে কি? তখন লোকেরা তাকে আমার প্রতি ইশারা করে দেখিয়ে দিল। তখন সে এসে গাস্সানি বাদশার একটি পত্র আমার কাছে হস্তান্তর করল। তাতে লেখা ছিল, পর সমাচার এই, আমি জানতে পারলাম যে, আপনার সাথী আপনার প্রতি জুলুম করেছে। আর আল্লাহ আপনাকে মর্যাদাহীন ও নিরাশ্রয় সৃষ্টি করেননি। আপনি আমাদের দেশে চলে আসুন, আমরা আপনার সাহায্য-সহানুভূতি করব।
আমি যখন এ পত্র পড়লাম তখন আমি বললাম, এটাও আর একটি পরীক্ষা। তখন আমি চুলা খুঁজে তার মধ্যে পত্রটি নিক্ষেপ করে জ্বালিয়ে দিলাম। এ সময় পঞ্চাশ দিনের চল্লিশ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে এক সংবাদবাহক[1] আমার কাছে এসে বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন যে, আপনি আপনার স্ত্রী হতে পৃথক থাকবেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমি কি তাকে তালাক দিয়ে দিব, না অন্য কিছু করব? তিনি উত্তর দিলেন, তালাক দিতে হবে না বরং তার থেকে পৃথক থাকুন এবং তার নিকটবর্তী হবেন না। আমার অপর দু’জন সঙ্গীর প্রতি একই আদেশ পৌঁছালেন। তখন আমি আমার স্ত্রীকে বললাম, তুমি তোমার পিত্রালয়ে চলে যাও। আমার সম্পর্কে আল্লাহর ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত তুমি সেখানে থাক। কা‘ব (রাঃ) বলেন, আমার সঙ্গী হিলাল ইবনু উমাইয়্যার স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল! হিলাল ইবনু উমাইয়্যা অতি বৃদ্ধ, এমন বৃদ্ধ যে, তাঁর কোন খাদিম নেই। আমি তাঁর খেদমত করি, এটা কি আপনি অপছন্দ করেন? নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, তবে সে তোমার বিছানায় আসতে পারবে না। সে বলল, আল্লাহর কসম! এ সম্পর্কে তার কোন অনুভূতিই নেই। আল্লাহর কসম! তিনি এ নির্দেশ পাওয়ার পর থেকে সর্বদা কান্নাকাটি করছেন। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] আমার পরিবারের কেউ আমাকে পরামর্শ দিল যে, আপনিও যদি আপনার স্ত্রীর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অনুমতি চাইতেন যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিলাল ইবনু উমায়্যার স্ত্রীকে তার (স্বামীর) খিদমাত করার অনুমতি দিয়েছেন। আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি কখনো তার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অনুমতি চাইব না। আমি যদি তার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুমতি চাই তবে তিনি কী বলেন, তা আমার জানা নেই। আমি তো নিজেই আমার খিদমতে সক্ষম। এরপর আরও দশরাত কাটালাম। এভাবে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন থেকে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেন তখন থেকে পঞ্চাশ রাত পূর্ণ হল। এরপর আমি পঞ্চাশতম রাত শেষে ফাজরের সালাত আদায় করলাম এবং আমাদের এক ঘরের ছাদে এমন অবস্থায় বসে ছিলাম যে অবস্থার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা (কুরআনে) বর্ণনা করেছেন। আমার জান-প্রাণ দুর্বিষহ এবং গোটা জগৎটা যেন আমার জন্য প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বে সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। এমন সময় শুনতে পেলাম এক চীৎকারকারীর[2] চীৎকার। সে সালা পর্বতের উপর চড়ে উচ্চৈঃস্বরে ঘোষণা করছে, হে কা‘ব ইবনু মালিক! সুসংবাদ গ্রহণ করুন।
কা‘ব (রাঃ) বলেন, এ শব্দ আমার কানে পৌঁছামাত্র আমি সাজদাহ্য় পড়ে গেলাম। আর আমি বুঝলাম যে, আমার সুদিন ও খুশীর খবর এসেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাজরের সালাত আদায়ের পর আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে আমাদের তওবা কবূল হওয়ার সুসংবাদ প্রকাশ করেন। তখন লোকেরা আমার এবং আমার সঙ্গীদ্বয়ের কাছে সুসংবাদ দিতে থাকে এবং তড়িঘড়ি একজন অশ্বারোহী[3] আমার কাছে আসে এবং আসলাম গোত্রের অপর এক ব্যক্তি[4] দ্রুত আগমন করে পর্বতের উপর আরোহণ করতঃ চীৎকার দিতে থাকে। তার চীৎকারের শব্দ ঘোড়া অপেক্ষাও দ্রুত পৌঁছল। যার শব্দ আমি শুনেছিলাম সে যখন আমার কাছে সুসংবাদ প্রদান করতে আসল, তখন আমাকে সুসংবাদ প্রদান করার শুকরিয়া স্বরূপ আমার নিজের পরনের কাপড় দু'টো খুলে তাকে পরিয়ে দিলাম। আল্লাহর শপথ সে সময় ঐ দু’টো কাপড় ব্যতীত আমার কাছে আর কোন কাপড় ছিল না। ফলে আমি দু’টো কাপড় ধার করে পরিধান করলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে রওয়ানা হলাম। লোকেরা দলে দলে আমাকে ধন্যবাদ জানাতে আসলে লাগল। তারা তওবা কবূলের মুবারকবাদ জানাচ্ছিল। তারা বলছিল, তোমাকে মুবারাকবাদ যে আল্লাহ তা‘আলা তোমার তওবা কবূল করেছেন। কা‘ব (রাঃ) বলেন, অবশেষে আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে বসা ছিলেন এবং তাঁর চতষ্পার্শ্বে জনতার সমাবেশ ছিল। ত্বলহা ইবনু ‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ) দ্রুত উঠে এসে আমার সঙ্গে মুসাফাহা করলেন ও মুবারকবাদ জানালেন। আল্লাহর কসম! তিনি ব্যতীত আর কোন মুহাজির আমার জন্য দাঁড়াননি। আমি ত্বলহার ব্যবহার ভুলতে পারব না। কা‘ব (রাঃ) বলেন, এরপর আমি যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম জানালাম, তখন তাঁর চেহারা আনন্দের আতিশয্যে ঝকঝক করছিল। তিনি আমাকে বললেন, তোমার মাতা তোমাকে জন্মদানের দিন হতে যতদিন তোমার উপর অতিবাহিত হয়েছে তার মধ্যে উৎকৃষ্ট ও উত্তম দিনের সুসংবাদ গ্রহণ কর। কা‘ব বলেন, আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! এটা কি আপনার পক্ষ থেকে না আল্লাহর পক্ষ থেকে? তিনি বললেন, আমার পক্ষ থেকে নয় বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খুশী হতেন তখন তাঁর চেহারা এত উজ্জ্বল ও ঝলমলে হত যেন পূর্ণিমার চাঁদের ফালি। এতে আমরা তাঁর সন্তুষ্টি বুঝতে পারতাম। আমি যখন তাঁর সম্মুখে বসলাম তখন আমি নিবেদন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার তওবা কবূলের শুকরিয়া স্বরূপ আমার ধন-সম্পদ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পথে দান করতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার কিছু মাল তোমার কাছে রেখে দাও। তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম, খাইবারে অবস্থিত আমার অংশটি আমার জন্য রাখলাম। আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহ তা‘আলা সত্য বলার কারণে আমাকে রক্ষা করেছেন, তাই আমার তওবা কবূলের নিদর্শন ঠিক রাখতে আমার বাকী জীবনে সত্যই বলব। আল্লাহর কসম! যখন থেকে আমি এ সত্য বলার কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জানিয়েছি, তখন থেকে আজ পর্যন্ত আমার জানা মতে কোন মুসলিমকে সত্য কথার বিনিময়ে এরূপ নিয়ামত আল্লাহ দান করেননি যে নিয়ামত আমাকে দান করেছেন। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] যেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে সত্য কথা বলেছি সেদিন হতে আজ পর্যন্ত অন্তরে মিথ্যা বলার ইচ্ছাও করিনি। আমি আশা পোষণ করি যে, বাকী জীবনও আল্লাহ তা‘আলা আমাকে মিথ্যা থেকে রক্ষা করবেন। এরপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর এই আয়াত অবতীর্ণ করেন لَقَدْ تَابَ اللهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِيْنَ ....... وَكُوْنُوْا مَعَ الصَّادِقِيْنَ অর্থাৎ আল্লাহ অনুগ্রহপরায়ণ হলেন নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি এবং মুহাজিরদের প্রতি ..... এবং তোমরা সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও- (সূরাহ আত্তওবাহ ৯/১১৭-১১৭)। [কা‘ব (রাঃ) বলেন] আল্লাহর শপথ! ইসলাম গ্রহণের পর থেকে কখনো আমার উপর এত উৎকৃষ্ট নিয়ামত আল্লাহ প্রদান করেননি যা আমার কাছে শ্রেষ্ঠতর, তা হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আমার সত্য বলা ও তাঁর সঙ্গে মিথ্যা না বলা, যদি মিথ্যা বলতাম তবে মিথ্যাচারীদের মতো আমিও ধ্বংস হয়ে যেতাম। সেই মিথ্যাচারীদের সম্পর্কে যখন ওয়াহী অবতীর্ণ হয়েছে তখন জঘন্য অন্তরের সেই লোকদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ
سَيَحْلِفُوْنَ بِاللهِ لَكُمْ إِذَا انْقَلَبْتُمْ اِلَيْهِمْ ....... فَإِنَّ اللهَ لَا يَرْضَى عَنِ الْقَوْمِ الْفَاسِقِيْنَ
অর্থাৎ তোমরা তাদের নিকট ফিরে আসলে তারা আল্লাহর শপথ করবে ....... আল্লাহ সত্যবাদি সম্প্রদায়ের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন না- (সূরাহ আত্তওবাহ ৯/৯৫-৯৬)। কা‘ব (রাঃ) বলেন, আমাদের তিনজনের তওবা কবূল করতে বিলম্ব করা হয়েছে-যাদের তওবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবূল করেছেন যখন তাঁরা তার কাছে শপথ করেছে, তিনি তাদের বাই‘আত গ্রহণ করেছেন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। আমাদের বিষয়টি আল্লাহর ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্থগিত রেখেছেন। এর প্রেক্ষাপটে আল্লাহ বলেন- সেই তিনজনের প্রতিও যাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল- (সূরাহ আত্তওবাহ ৯/১১৮)। কুরআনের এই আয়াতে তাদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়নি যারা তাবূক যুদ্ধ থেকে পিছনে ছিল ও মিথ্যা কসম করে ওযর-আপত্তি জানিয়েছিল এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তা গ্রহণ করেছিলেন। বরং এই আয়াতে তাদের প্রতি ইশারা করা হয়েছে আমরা যারা পেছনে ছিলাম এবং যাদের প্রতি সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল। [২৭৫৭; মুসলিম ৪৯/৯, হাঃ ২৭৬৯, আহমাদ ১৫৭৭০] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪০৭৩)

[1] খুযাইমাহ ইবনু সাবিত (রাঃ)।

[2] ওয়াকিদীর মতে তিনি ছিলেন আবূ বাক্র (রাঃ)।

[3] এ অশ্বারোহী ছিলেন যুবায়র ইবনুল আওয়াস (রাঃ)।

[4] হামযাহ ইবনু ‘আমর আল আসলামী (রাঃ)।

Sunday, May 5, 2019

ইসলামে মত বিরোধের কারণ- নোমান আলী খানের চমৎকার বক্তব্যের সার-সংক্ষেপ


Avjøvn& Zvui wKQz ev›`v‡K wewfbœ welq †evSvi Ges Dcjwä Kivi Ggb ÿgZv w`‡q‡Qb †h, Zv‡`i e¨vL¨v †kvbvi ci Avcbvi g‡b n‡e †h, Avwg wKQzB Rvwb bv| Zviv hw` †Kvb mvaviY welq wb‡qI Avjvc K‡i †hUv Avcbvi g‡Z Avcwb fvjB Rv‡bb wKš‘ Avjvc †k‡l Ômyevnvbœvjøvn&Õ Avcbvi g‡b n‡e GUv AmvaviY wQj| BbkvAvjøvn GB iKg wKQz welq wb‡q GLv‡b Avjvc Kiv n‡e †hUv Avgvi Kv‡Q Zvrch©Ki e‡j g‡b n‡q‡Q| †hUv mevi Rb¨ Kv‡R jvM‡e|
Dc‡ii wP‡Î Avgiv hv †`L‡Z cvw”Q Zvi gva¨‡g GK A™¢zZ cÖ‡Póv Kiv n‡q‡Q| †mUv AvR‡Ki Av‡jvP¨ welqwU mevi mvg‡b mn‡R Dc¯’vcb Kvivi Rb¨| GLv‡b GK`g wfZ‡i GKUv e„Ë| Gi evB‡i AviI eo AviI eo AviI eo, GB QweUv wb‡qB AvR‡K Avgiv K_v eje| g~jZ Avgv‡`i a‡g©i e„nËg iƒcUv Avgiv GB Qwe w`‡q †evSvi †Póv Ki‡ev|
GK`g †K›`ª Avgv‡`i a‡g©i g~j †hUv i‡q‡Q, g~jZ Avgv‡`i ag© Bmjv‡gi g~j bxwZUv Avgiv GB Qwei gva¨‡g †evSvi †Póv Kie| †mUv‡K Avgiv ej‡Z cvwi Avgv‡`i `x‡b im~j| Avgv‡`i a‡g©i wbh©vm Z_v g~jbxwZ| A_©vr Avgv‡`i a‡g©i AZ¨ek¨Kxq bxwZgvjv mg~n| †gv‡Ui Dci Avgv‡`i ag©Uv n‡”Q GK¸”Q bxwZgvjvi mgvnvi| welqwU‡K Avgiv GBfv‡e †`L‡Z cvwi-GBme bxwZgvjv n‡jv †mUvB †hUv Avjøvn& GKRb gvby‡li KvQ †_‡K Pvb| Avjøvn& GKRb gvby‡li KvQ †_‡K wK Pvb? wK ai‡Yi ¸bvejx, wK ai‡Yi `„wóf½x, Av‡eM, wPšÍv-‡PZbv, wek¦vm GKRb gvby‡li _vKv DwPr| Avcbviv hw` Rvb‡Z Pvb GB AZ¨vek¨Kxq wRwbm wK wK, Avjøvn& †KviAv‡b LyeB my›`i fv‡e GB¸‡jv eY©bv K‡i‡Qb| wZwb GUv K‡i‡Qb Òjv-Avjøvn& ZvËvKzgÓ †hgb wewfbœ welq eY©bv Kivi ci wZwb e‡jb-Òjv-Avjøvn& ZvËvKzg, jv-Avjøvn&Kzg ZvËvKzb, jv-AvjøvnKzg ZvmKziƒb, jv-AvjøvnKzg ZvhvK¡viƒYÓ| hv‡Z K‡i †Zvgiv g‡b iv‡Lv, hv‡Z K‡i †Zvgiv †kvKiKvix nI, hv‡Z K‡i †Zvgiv ZvKIqv AR©b Ki, hv‡Z K‡i †Zvgiv wPšÍv Ki| GB me¸‡jvB nj †gŠwjK ¸bvejx hv GKRb gvby‡li _vKv DwPr| GKRb gvby‡li we‡ePbv g~jK `„wóf½x _vKv DwPr, Zvi wPšÍvkxj nIqv DwPr, Zvi me©`v Avjøvn‡K ¯§i‡Y ivLv DwPr, Zvi g‡a¨ Avjøvn& fxwZ _vK‡Z n‡e, Zvi Avjøvni cÖwZ †kvKi ‡MvRvi nIqv DwPr| Òjv-Avjøvn Kzg ZvkKziƒYÓ hv‡Z K‡i †Zvgiv †kvKiKvix n‡Z cvi| Avjøvn hLbB Ôjv-AvjøvnKzgÕ e‡jb Ges GB ai‡Yi KvR¸‡jv D‡jøL K‡ib Gi gv‡b wZwb †evSv‡Z Pvb GB ¸‡jv nj †mBme ¸bvejx ‡h¸‡jv Avgv‡`i AvqZ¡ Ki‡Z n‡e| Avwg ZLbB Avjøvni GKRb mdj ev›`v n‡Z cvi‡ev hLb wb‡Ri Rxe‡b GB me ¸bvejxi cÖwZdjb NUv‡Z cvi‡ev|
me¸‡jv welq GLv‡b D‡jøL Ki‡ev bv| K‡qKUv welqB evi evi Avcbv‡`i mvg‡b ejvi †Póv Ki‡ev|
myôfv‡e wPšÍv Ki‡Z cviv-Ôjv-AvjøvKzg Z¡vwKjybÕ, Ôjv-AvjøvKzg ZvmKziæbÕ-hv‡Z K‡i ‡Zvgiv †kvKi Kvix nI, jv-ÔAvjøvKzg Zvhv°viæbÕ-hv‡Z K‡i ‡Zvgiv Avjøvn‡K ¯§iY Ki, Ôjv-AvjøvKzg ZvËvKzgÕ- hv‡Z K‡i †Zvgiv wb‡R‡K iÿv Ki‡Z cv‡iv wec` †_‡K, mZK© _vK‡Z cv‡iv Ges Aek¨B Ôjv-AvjøvKzg ZzdwjûbÕ- hv‡Z K‡i †Zvgiv ciKv‡j mdj n‡Z cv‡iv| Avjøvn cÖvq †KviAv‡b jv-AvjøvKzg Zzdwjûb e‡j‡Qb| GB¸‡jv n‡”Q †gŠwjK wKQz ¸bvejx| Gme QvovI A_©vr Avjøvn gvby‡li Kv‡Q wK Pvb GB m¤ú‡K© eY©bv K‡i‡Qb GB k㸇jvi gva¨‡g ÔBbœvjvnv BDwneŸyÕ A_ev ÔIqv Avjøvû BDwneŸyÕ Avjøvn gyËvKxb‡`i fvjev‡mb, Avjøvn gydwQwbb‡`i fvjev‡mb| GBfv‡e Avjøvn wewfbœ ¸bvejxi gvbyl‡`i fvjevmvi K_v D‡jøL K‡i‡Qb| GB¸‡jv n‡”Q †mB me ¸Y †h¸jv Avgv‡`i Rxe‡b wb‡q Avm‡Z n‡e| Ges me †k‡l Avjøvn e‡jb-ÔBbœvjvnv gvÕAvÕ-Avjøvn mv‡_ Av‡Qb| Avjøvn cÖ_‡g ej‡Qb- Ôjv-AvjøvnKzgÕ Gici ej‡Qb- ÔBbœvjvnv BDwneŸyÕ Ges Gici ej‡Qb- ÔBbœvjvnv gvÕAv| wbðB Avjøvn Zv‡`i m‡½ Av‡Qb hviv ci‡nRMvi Ges mrKg© K‡ib| GB ¸‡jvB n‡”Q Avgv‡`i `x‡b imyj| g~jZt GB ¸‡jvB n‡”Q Avgv‡`i a‡g©i wbh©vm| Avgvi g‡Z GB¸‡jvB n‡”Q Avgv‡`i a‡g©i g~j bxwZ ev †gŠwjK bxwZ| Avjøvn KziAv‡b mivmwi GBme wel‡q D‡jøL K‡i‡Qb| Avkv Kwi welqwU Avcbv‡`i Kv‡Q cwi®‹vi n‡q‡Q|
GLb K_v n‡”Q GB †h g~j bxwZ GUv wKš‘ †`Lv hvq bv| GUv n‡”Q GKUv aviYv| Ô†kvKiKvix nIqvÕ  Gi gv‡b wK ZvKIqv AR©b Ki‡Z n‡e| ZvKIqv wel‡q Avgiv A‡bK Av‡jvPjv ï‡bwQ| ZvKIqv evov‡Z n‡e ZvKIqv evov‡Z n‡e| ZvKIqv wK wKb‡Z cvIqv hv‡e ev Avwg wK Ggb wKQz †L‡Z cvwi †hUv Avgvi ZvKIqv‡K evov‡e? Avwg wKfv‡e eyS‡ev Avgvi ZvKIqv Kg ev †ewk? GKB fv‡e Avgvi Cgvb evov‡Z n‡e, ZvIqv°zj evov‡Z n‡e| GB meB n‡”Q weg~Z© aviYv| Avgiv wKfv‡e GBme wRwbm‡K Avgv‡`i cÖvZ¨wnK Rxe‡b wb‡q Avm‡ev? wKfv‡e Avgiv GB KvR Ki‡ev? †mUvB n‡”Q cieZx e„ËwU|

wØZxq e„Ët
 2q e„ËwU n‡”Q †gŠwjK eva¨ev`KZv| g~j Kibxq Ges g~j eR©bxq KvR mg~n|
D`vniY ¯^iƒc Avgiv mK‡jB Rvwb Avgv‡`i a‡g©i cuvPwU g~j ¯Í¤¢ Av‡Q| mvjvZ Gi g‡a¨ GKwU| mvjvZ n‡”Q †gŠwjK KiYxq wKš‘ cÖK…Zc‡ÿ GB eva¨ev`KZvi gva¨‡g Bmjv‡gi AvZ¨ek¨Kxq g~j bxwZi GKwU c~iY Kiv hvq| Ggb wK Avjøvn Avgv‡`i †h me †gŠwjK eva¨ev`KZv †mU K‡i w`‡q‡Qb †m m‡ei D‡Ïk¨ n‡”Q g~jbxwZ ¸‡jv‡K my`~p Kiv| †hgb aiæY- Avjøvn ej‡Qb-ÒAvwKgyQ mjvZvwj wRKixÓ mvjvZ cÖwZUv Ki hv‡Z K‡i †Zvgiv Avgv‡K ¯§iY Ki‡Z cv‡iv| Avjøv‡n‡K ¯§iY Kiv wK GKwU †gŠwjK bxwZ bq? Aek¨B| Avjøvni ¯§iY‡K wKfv‡e Avgv‡`i cÖvZ¨wnK Rxe‡b wb‡q Avm‡ev Ggb wK Dcvq Avgiv GUv Ki‡Z cvwi hv Avjøvn‡K mš‘ó Ki‡e? GgbwU Kivi me‡P‡q fvj DcvB n‡”Q mvjvZ| mvjvn n‡”Q Ggb GKwU gva¨g †hUv Avjøvni ¯§iY Kivi weg~Z© aviYvwU‡K ev¯ÍweK ¯^‡Z¡ iƒcvšÍwiZ K‡i| wmqvg cvjb Kivi wel‡q Avjøvn e‡jb-ÒKvgv KzwZev Avjvjøvhxbv wgb K¡ewjKzg jv-AvjøvKzg ZvËvKzgÓ †Zvgv‡`i wmqvg cvjb Ki‡Z ejv n‡q‡Q hv‡Z K‡i †Zvgiv ZvKIqv AR©b Ki‡Z cvi| ev¯Í‡e Ggb wK Kiv †h‡Z cv‡i †hUv ZvKIqvi GB weg~Z© aviYv‡K Avgv‡`i RxebhvÎvq cÖwZdwjZ Ki‡e? wK †mUv? wmqvg cvjb Kiv GB ai‡Yi GKwU KvR| GBfv‡e Avcbviv †`L‡eb Avjøvn cÖ`Ë cÖ‡Z¨KwU †gŠwjK eva¨ev`KZv GK GKwU †gŠwjKbxwZ‡K my`„p K‡i| eva¨ev`KvZv ¸‡jv †`Iqv n‡q‡Q hv‡Z K‡i †gŠwjKbxwZ ¸‡jv‡K Avgv‡`i cÖvZ¨wnZ Rxe‡b wb‡q Avm‡Z cv‡i| `~i fvM¨ RbK fv‡e Avgiv hv KiwQ †mUv n‡”Q Avgiv Avjøvn cÖ`Ë GB eva¨ev`KZv‡K mswkøó bxwZgvjv †_‡K Avjv`v K‡i †d‡jwQ| gvbyl wVKB wmqvg dvjK Ki‡Q wKš‘ Zv‡`i g‡a¨ GB †evawU †bB †h, wmqvg cvj‡bi g~j D‡Ïk¨ n‡”Q ZvKIqv e„w× Kiv| gvbyl mvjvZ Av`vq Ki‡Q wKš‘ ivZv GB wel‡q AeMZ bv †h, mvjvZ Av`vq Kivi wKQz mywbw`©ó D‡Ïk¨ i‡q‡Q| GB¸‡jv n‡”Q †gŠwjK eva¨ev`KZv| ïaygvÎ GB D‡Ï‡k¨B Avgiv GBme KvR cvjb Kwi bv| Bmjv‡gi AZ¨ek¨Kxq bxwZ¸‡jv c~iY K‡i Avgv‡`i Rxe‡b Zvi cÖwZdjb NUv‡bvi D‡Ï‡k¨ Avgiv GB me KvR K‡i _vwK|
mvjvZ n‡jv GKUv MšÍe¨ ch©šÍ †cŠuQvevi GKUv iv¯Ív| GKB fv‡e wmqvj cvjK KivI j‡ÿ¨ †cŠuQv‡bv GKUv Dcvq| AvRKvj Avgiv GBme Dcvq ev iv¯Ív‡K Avgv‡`i jÿ¨ D‡Ï‡k¨ iƒcšÍi K‡i †d‡jwQ| †hUv LyeB fqven mgm¨v| †KviAvb wKš‘ Avgv‡`i Ggb Ki‡Z e‡j bv| †KviAv‡b hLbB †Kvb eva¨ev`KZvi eY©bv †`Iqv n‡q‡Q ZLbB †m Kv‡Ri D‡Ïk¨ A_©vr H KvR m¤úwK©Z g~j bxwZ¸‡jvi K_v ejv n‡q‡Q| AvgivB GB `yÕwU welq‡K †Ku‡U Avjv`v K‡i †d‡jwQ| Avi GKUv K_v- eva¨ev`KZv ej‡Z ïay Kibxq KvR¸‡jv‡KB †evSv‡bv nqwb| eR©bxq KvR mg~‡ni K_vI ejv n‡q‡Q| D`vniY ¯^iƒc mvjvZ Ab¨Zg D‡Ïk¨ n‡”Q ÒmvjvZ Akøxj I g›` KvR †_‡K `~‡i iv‡LÓ AkøxjZv Avgv‡`i GKwU ¸iæZ¡c~Y© g~j bxwZ ‡_‡K `~‡i iv‡L| Avgv‡`i ZvKIqvevb, Avjøvni ïKiKvix Ges Avjøvni cÖwZ webqx n‡Z evuav †`q| mvjvZ Avgv‡`i GB AkøxjZv †_‡K †ndvhZ K‡i| A_©vr Avjøvn Avgv‡`i ‡mB me KvR Ki‡Z wb‡la K‡i‡Qb †h¸‡jv Ki‡j Bmjv‡gi g~jbxwZ‡K AgvY¨ Kiv n‡e| cÖ‡Z¨KUv wb‡la GK GKUv g~jbxwZi mv‡_ RwoZ| Øx‡b im~‡ji mv‡_ m¤ú„³| ms‡ÿ‡c GUvB n‡”Q Avgv‡`i wØZxq e„ËwU| cÖavb cÖavb KiYxq Ges eR©bxq welqmg~n| GB ch©šÍ, A_©vr GB `ywU e„‡Ë ‡h me ejv n‡q‡Q GB wel‡q ‡gvUvgywU me ¯‹jvi me gymwjgivB GKgZ| Bmjv‡gi g~j bxwZ ¸‡jv wK wK Ges Avgv‡`i g~j Kibxq I eR©bxq KvR wK wK? †Kvb gymwjg G‡m GiKg ej‡e bv Avwg Avm‡j wbwðZ bv ïKi wK Avm‡j nvivg wK bv? GiKg KLbB n‡e bv| Avi hw` †KD GiKg e‡j _v‡K Zvi gv‡b n‡”Q †m cvMj|

Z…Zxq e„Ët
GB Z…Zxq e„ËwU n‡”Q cÖavb eva¨ev`KZvi ZzjbvB †QvU mycvwik mg~n(Recommandation)| †hgb aiæb Avgv‡`i gnvbex (mvt) Gi mybœvn mg~n| A_©vr †mB me fvj KvR mg~n †h m‡ei K_v †KviAv‡b ejv n‡q‡Q| Ggb KvR †h¸‡jv Avgv‡`i PvwiwÎxK DrKl© mvab K‡i| D`vniY ¯^iƒc big fv‡e K_v ejv, b¤ªfv‡e Pjv‡div Kiv| GB¸‡jv n‡”Q †mB me KvR hv Avcbvi Pwi·K DbœZ Ki‡e| GKB fv‡e Wvb cv w`‡q gmwR‡` cÖ‡ek Kiv, †hUv GKUv mybœvn&| A_ev aiæb Wvb nvZ w`‡q LvIqv| GB me †QvU †QvU KvR¸wj Avgv‡`i Pwi‡Îi weKvk NUvq| GLb e¨vcviUv `vov‡jv GB †h, cÖvavb¨ †`Iqv DwPr †gŠwjK bxwZ ¸‡jvi AvZ¨¯’ Kivi w`‡K| †mUv mwVK fv‡e Kivi Rb¨ Zv‡K bRi w`‡Z n‡e cÖavb cÖavb eva¨ev`KZvi w`‡K| hw` †m GB cÖavb eva¨ev`KZv¸‡jv wVK fv‡e †g‡b Pj‡Z cv‡i Zvn‡j Zvi cieZ©x wPšÍv nIqv DwPr †QvU †QvU mycvwik ¸‡jv cvj‡bi gva¨‡g AviI my›`h© gwÛZ Kiv|
D`vniY ¯^iƒc- mvjvZ n‡”Q GKwU cÖavb KvR| mvjv‡Zi c‡i wRwKi KivUv wK? GUv n‡”Q DrKl© mvab| GKB fv‡e mvjv‡Zi c‡i †`vAv KivUv GKUv DrKl© mvab| A_©vr Avcwb B‡Zvg‡a¨ cÖavb KvRwU K‡i †d‡j‡Qb| GB †h †QvU †QvU fvj KvR Kivi gva¨‡g DrKl© mvab Kivi †h aviYv GUv wb‡q KviI g‡a¨ †Zgb †Kvb †f`v‡f` †bB| ÔwKqvgyj jvBjÕ GKUv fvj KvR, Zvnv¾y‡`i mvjvZ Av`vq Kiv GKUv fvj KvR, wmqv‡gi AwZwi³ wmqvg cvjb Kiv GKUv fvj KvR, ågY wKsev N‡i cÖ‡e‡ki mgq †`vAv Kiv BZ¨vw`| †`vAv bv K‡i N‡i cÖ‡ek Kiv nvivg bv| A_©vr †`vAv bv c‡o ågY KivUvI nvivg bv| wKš‘ Ggb KivUv fvj| GUv Avcbvi Øx‡bi DrKl© mvab K‡i| GB me wRwbm Avcbvi Rxeb‡K DbœZ K‡i| GB¸wj nj Z…Zxq e„ËwU| wKš‘ Pvi b¤^i e„‡Ë hvevi Av‡M wZb b¤^i e„ËwU m¤ú‡K© AviI wKQz welq cwi®‹vi Kiv `iKvi| cÖ_g wØZxq e„‡Ë Av‡jvP¨ welq¸‡jv n‡”Q †mB me wRwbm †h ¸‡jvi w`‡K Avgv‡`i bexMY `vIqvZ w`‡q‡Qb| A_©vr bexMY Avgv‡`i‡K Bmjv‡gi cÖavb bxwZgvjv mg~n, cÖavb KiYxq I eR©bxq GB m‡ei w`‡K †W‡K‡Qb| GB¸‡jvB wQj ebx‡`i `vIqv‡Zi †gŠwjK w`K| gvbyl hLb GBme †gŠwjK welq‡K †g‡b wb‡q, fvj K‡i ey‡S AvZ¨¯’ Ki‡Z mÿg nj Gi c‡i wM‡q bexMb Zv‡`i‡K G m‡ei cvkvcvwk DrKl© mva‡bi Rb¨ Avjv`v cÖwkÿY w`‡Zb| GLb †`Lv hvK Avgiv wK Kwi?
Avgiv †hUv Kwi- ‡mUv n‡”Q †gŠwjK bxwZgvjv ¸‡jv †Zv Avgiv fz‡jB †MwQ Dciš‘ Avgiv cÖavb ev`¨ev`KZv¸‡jv DrKl© mva‡bi Rb¨ †hme †QvU †QvU mycvwik i‡q‡Q †m m‡ei mv‡_ wgwk‡q †d‡jwQ| GB m¤ú~Y© wgkÖYB GLb cÖavb eva¨ev`KZv n‡q †M‡Q| D`vniY ¯^iƒc-Avcwb hw` Ggb KvD‡K †`‡Lb ‡h †Rvn‡ii diR mvjvZ Av`vq K‡i‡Q, mybœvZ mvjvZ Av`vq K‡i wb, ZLb Avcwb Zvi wcQ‡b jv‡Mb| wK K‡i‡Qb Avcwb!! Avcwb mybœvZ bvgvh c‡ob wb †Kb? A_©vr Avgiv gvbyl‡K DrKl© mvabg~jK KvR¸‡jv Kivi Rb¨ ej cÖ‡qvM KiwQ| gvbyl hw` G KvR¸‡jv bv K‡i Zvn‡j Avgiv Zv‡`i wcQ‡b jvMwQ, Zv‡`i mvjvZ wb‡q cÖkœ ZzjwQ| Zviv wK Ki‡Q wK K‡iwb GB me wb‡q K_v ejwQ| †hgb aiæb mwn D”PviY!
GUv wKš‘ wØZxq e„‡Ëi g‡a¨I c‡o bv| GUv Z…Zxq e„‡Ëi AšÍf©³| A_P Avgiv wK Kwi-KviI wZjvIqvZ mwn bv n‡j Kcv‡j nvZ Pvc‡o ewj, In! KziAvb wZjvIqvZ K‡i KLbB Avcwb ¸bv‡ni g‡a¨ co‡Qb bv| Avcwb Aeg¨B mwn fv‡e wZjvIqvZ †kLvi †Póv Ki‡eb| wKš‘ Avcwb hw` e‡m e‡m g` KjKjv GK`g cytLvbycytL fv‡e wnmve Kivi †Póv K‡ib Zvn‡j? mvnvevMY †Zv GBfv‡e †k‡Lb wb| Avcwb Aek¨B Avcbvi Zvmwe‡`i Ávb evov‡bvi †Póv Ki‡eb| wKš‘ Avcbv‡K eyS‡Z n‡e GB me wRwbm G¸‡jv n‡”Q DrKl© mva‡bi R‡b¨| G¸‡jv Ni mvRv‡bvi wRwb‡mi gZ| Avcbvi evivi GKUv `iRv _vKv `iKvi Av‡Q, GKUv Rvbvjvi `iKvi Av‡Q Av‡jv evZv‡mi Rb¨ wKš‘ Avcbv emvi Rb¨ †¯úkvj Kv‡c©K AZ¨ek¨K bv| †`Iqv‡j is †e i‡Oi †cBw›Us _vK‡ZB n‡e GgbwU bq| GUv wVK †h G¸‡jv _vK‡j fvjB jv‡M| GKUv †mvdv _vK‡j fvjB nq| wKš‘ KviI evmvi †`Iqv‡j †cBw›Us bv _vK‡j Avcwb Zv‡K ej‡Z cv‡ib bv †h, †Zvgvi †Zv evmvq †bB| †cBw›Us bv _vK‡j wK Avi evmv nq bvwK? Avcwb G iKg Ki‡Z cv‡ib bv| KviY AwaKvsk gvbylB cÖavb eva¨ev`KZv Ges DrKl© mvabg~jK KvR¸‡jvi g‡a¨ cv_©K¨ K‡ib bv| hvi d‡j Avcwb hLb GiKg e‡jb-mgv‡jvPbv K‡ib GKUv wbw`©ó wel‡q ZLb gvbyl MYnv‡i me †ÿ‡ÎB GUv‡K cÖhR¨ g‡b K‡i| Avwg Avcbv‡`i Gi GKUv fqven cwiYwZi D`vnib w`w”Qt
Avgv‡`i g‡a¨ GK ai‡Yi gvbyl Av‡Qb hv‡`i g‡a¨ †gvUvgywU me wKQzB nvivg| †KD wfwWI †Mg †Lj‡Q Zviv ej‡e wfwWI †Mg wKš‘ nvivg| Avcwb wUwf †`L‡Qb GUv nvivg, Avcwb †iwWI ïb‡Qb GUv nvivg| nvivg! me wKQzB nvivg| GLb e¨vcviUv n‡”Q wØZxq e„‡Ë ewY©Z wKQz cÖavb eR©bxq KvR i‡q‡Q, †hgb-g`, wRbv| Gû‡jv LyeB Lvivc Ges G¸‡jv wØZxq e„‡Ëi AvIZvq c‡o| Avjøvn †h me‡K nvivg e‡j‡Qb| Avi GLb Avcwb ej‡Qb wfwWI †Mgm nvivg| GB iKg ejvi gva¨‡g Avcwb Avjøvn †h me KvR‡K nvivg e‡j‡Qb Avi Avcwb wb‡R †h me KvR‡K AcQ›` K‡ib GB Dfq‡KB GKB cvjøvq gvc‡Qb| Gi d‡j GKRb hyeK fvB ev †evb †h gywf †`‡L, n‡Z cv‡i †mUv A_©nxb †Kvb gywf ev †h †Kvb wKQz| hLb †m ïb‡e gywf †`Lv nvivg †m ej‡e GUv nvivg!! Avwg †Zv mvivÿYB gywf †`wL| GUv nvivg! Zvn‡j †Zv Avwg wec‡` AvwQ? Avi †h‡nZz Avwg cÖPzi gywf †`wL, Zvn‡j †Zv Avwg wec‡` AvwQ? Avi wec‡` hLb AvwQB Ab¨ nvivg ¸‡jvI  Zvn‡j Kwi| †`vh‡L †Zv Ggwb‡ZB hvIqv jvM‡e| Zvn‡j †gvR-gvw¯Í, cvwU© GB me K‡iB hvB| GLb †`‡Lb GB †h Avcwb g`, †iwWI, wfwWI †Mg GB me wKQz‡K GK KvZv‡i ‡d‡j‡Qb; GKRb cvwci g‡b g‡a¨I GB me GLb GKB cvjøvB wePvi n‡”Q| †m fve‡e wfwWI †Mg †Kvb e¨vcvi bv, gywf †`LvI †Kvb e¨vcvi bv, Avi wRbvI †Kvb NUbv bv, g`, †bkv meB mgvb| Zvi gv‡b Avgiv ZLbB mgv‡R mgm¨v ˆZwi Kiv ïiæ Kwi hLb Avgiv Avjøvn KZ©„K cÖ`Ë m„wbw`©ó AMÖvwaKvi wj÷‡K wVK ivLwQ bv| gvbyl g‡b K‡i Avgiv hZ †ewk wRwbm‡K nvivg wn‡m‡e wj÷ Ki‡ev GUv gvby‡li Rb¨ ZZB fvj n‡e, gvbyl‡K iÿv Ki‡e| Avgv‡`i g‡b ivLv DwPr bexMY gvbyl‡K Avgv‡`i †_‡K fvj fv‡e iÿv K‡i‡Qb| Zviv hv K‡i‡Qb Gi †P‡q DbœZ Zi wKQz Kivi mvg_©¨ Avgv‡`i †bB|  Avgv‡`i mxgve×Zvi wfZ‡i †_‡KB Aek¨B wePvi Kivi †Póv Ki‡e †h, †h †Kvb wKQz wK Avm‡jB cwi®‹vifv‡e nvivg wK bv? Ggb ¯úó nvivg wRwbm Aek¨B Avgv‡`i mvg‡b Avm‡Z cv‡i †h, †hUvi Aw¯ÍZ¡ Av‡M KLbB wQj bv| wKš‘ †mUv Aek¨B eo †Kvb cvc Kv‡Ri mv‡_ m¤úK©xZ n‡e| Avcbviv wK G‡Zv`~i ch©šÍ eyS‡Z cvi‡jb? G me n‡”Q DrKl© mvab g~jK KvR Kg©| Gme KvR K‡g©i g‡a¨ Av‡Q AwZwi³ mybœvZ bvgvh cov, †mvgevi I e„n¯úwZevi wmqvg cvjb Kiv, Kei wRqviZ Kiv| GB †h GB me KvR GB me wb‡q †Kvb g‡Zv ‡f` †bB| DrKl© mvabg~jK KvR¸‡jv Kiæb| Avcwb hw` †gŠwjK eva¨ev`KZv ¸‡jv c~iY Kivi c‡i AviI fvj gydwZ n‡Z Pvb †Zv LyeB fvj| cÖw`wb GKUz GKUz K‡i fvj wKQz wkLyb, GKUv †QvU †`vAv wkLyb cÖwZw`b| G ai‡Yi me wKQzB Kiv DwPZ| GLb GB e„‡Ëi wVK evB‡i vvi GKwU e„Ë Av‡Q| Pvi b¤^i e„Ë|

Pvi b¤^b e„Ët
PZz_© e„ËwU n‡”Q †mB me welq †h ¸‡jv m¤ú‡K© mvnvexMY GKgZ †cvlY K‡i‡Qb| Avgiv GB welq¸‡jv KziAv‡b cvB bv| GLv‡b GKUv K_v e‡j ivLv fvj †m me wKš‘ mybœv‡Z ¯úófv‡eB we`¨gvb| Zvi evB‡Z GB †h Pvi b¤^vi e„ËwUi K_v ejv n‡”Q G¸‡jv n‡”Q †m me welq †h ¸‡jv wb‡q mvnvexMY g‡Zv HK¨  †cuŠ‡P‡Qb| wKš‘ ev¯Í‡e Ggb welq cvIqv `y®‹i †hUv wb‡q me mvnexMY GKgZ n‡q‡Qb| e¨vcviUv G‡Zv mnR bq| wZb ai‡Yi g‡ZvK¨ i‡q‡Q| mvnvex‡`i GK g‡Zi ai‡Yi Dci wbf©i K‡i g~jZt wZb ai‡Yi g‡ZvK¨ i‡q‡Q| cÖ_gwU n‡”Q-mvnvexMY †Kvb GKUv NUbv wb‡q GKgZ| †mUv †Kgb? †hgb aiæb me mvnvexMY e`‡ii hy‡Ï Ask MÖnY K‡ib wb| A‡b‡KB e`‡ii hy‡×i ci gymwjg n‡q‡Qb| wKš‘ hviv Ask wb‡qwQ‡jb Zviv mK‡jB GKB fv‡e ej‡eb †h, GB hyÏ AgyK w`‡b ïiæ n‡qwQj, G‡Zv w`b a‡i P‡j‡Q| mevB GiKg K_v ej‡eb KviY Zviv mevB IB hy‡× Dcw¯’Z wQ‡jb| G Kvi‡YB Zviv G wel‡q GKgZ|
wØZxq ai‡Yi HK¨gZ n‡”Q mvnvex‡`i g‡a¨ hviv me‡P‡q Ávbx wQ‡jb Zv‡`i g‡a¨ HK¨gZ| wKQz †ÿ‡Î Zviv mevB G‡K Ac‡ii mv‡_ GKgZ †cvlY Ki‡Zb| †hgb aiæb Be‡b AveŸvm iv. wZwb GKRb Ávbx mvnvex wQ‡jb| Ggb A‡bK mvnvex wQ‡jb hviv g~jZ GKwU m~ivI cvi‡Zb bv| Zviv m`¨ gymwjg wQ‡jb| GLbKvi mgq hviv ag©všÍwiZ n‡q gymwjg n‡”Q Zv‡`i g‡Zv| wKš‘ Zv‡`i HK¨gZ GB wØZxq ai‡bi HK¨g‡Zi g‡a¨ c‡o bv| GUv n‡”Q †mB ai‡Yi HK¨gZ ‡hLv‡b †Kvb wel‡q †Kvb Ávbx mvnvexMY GKgZ n‡q‡Qb| Z…ZxqwU n‡”Q mvnvex‡`i g‡a¨ hviv kvmK Zv‡`i ga¨Kvi HK¨gZ| ‡hgb aiæb Igiv iv. Ges Zvi Dc‡`óv gÛwj, Zvi HK¨gZ †mUv n‡”Q GB Z…Zxq ai‡Yi HK¨gZ| GB n‡”Q mvnvexMY‡`i g‡a¨ wZb ai‡Yi HK¨gZ| A_©vr NUbv wfwËK, Ávbx mvnvex wfwËK Ges kvmb Kv‡h© wb‡qvwRZ mvnvex‡`i HK¨gZ wfwËK| hLb kvmb Kv‡h©K mv‡_ m¤ú„³ †Kvb wel‡q wm×všÍ †bIqvi cÖ‡qvRb co‡Zv Igi iv. Aek¨B nvRvi nvRvi mvnvex‡`i mv‡_ Av‡jvPbv Ki‡Zb bv| wZwb Zvi Dc‡`óv gÛwj‡`i mv‡_ e‡m mevB wg‡j GKgZ n‡q GKUv wm×všÍ wb‡Zb| Zvi ci †mB wm×v‡šÍi wfwˇZ AvBb cÖbqY Kiv n‡Zv| e¨vcviUv †evSv †Mj?GLb eZ©gvb mg‡q G‡m †hUv Sv‡gjv n‡q‡Q †KD GKRb hLb GBfv‡e e‡j me mvnvexMY GB wel‡q GKgZ| me mvnvexMY GB wel‡q GKgZ? `uvovb `uvovb me mvnvexMY GKgZ?GUv Avcwb †Kv_vq †c‡jb? †Kb GBfv‡eB †Zv eY©bv Av‡Q| †Kv_vq Av‡Q? eB cy¯Í‡K Av‡Q| †Kvb eB? hvI fvj fv‡e co| Avcwb †Kvb fv‡eB GUv ej‡Z cv‡ib bv †h me mvnvexivB GKgZ wQ‡jb| Avcwb GPv Ki‡Z cv‡ib bv| Avcbvi K_v mywbw`©ó `wjj c‡Îi wfwˇZ n‡Z n‡e| Ggwb‡ZB e‡j †dj‡j n‡e bv| me †P‡q nvm¨Ki †h K_vwU GLb ch©šÍ ï‡bwQ me Bmjvwg wekvi` GB wel‡q GKgZ| e‡jb wK? wVK Av‡Q Zv‡`i `k R‡bi bvg e‡jb? A¨v.....A¨v.............mevB|
Avcwb hw` Zvdmxi c‡ob Zvn‡j Avcwb GKwU welq cv‡eb bv †h wel‡q me ¯‹jvi GKgZ n‡q‡Qb| GUv nvm¨Ki K_v| KziZzwe, Zvevix, RvjvjvBb, Zvdmxi Be‡b KvwQi, Be‡b Avïi, GKUv K_v †hUv cÖvqkB me Zvdmx‡i †jLv _v‡K ¯‹jviMY GB wel‡q GKgZ| Ges Gi wfbœgZ GK`gB weij| Ab¨ Avi GK gydvw”Qi nq‡Zv Gi D‡ëvUv wj‡L‡Qb †h, GB wfbœ g‡Zi wel‡qB eis ¯‹jviMY GKgZ, Avi cÖ_g g‡Zi c‡ÿB hyw³ weij| A_©vr Zv‡`i Kv‡QI GB GKgZ nIqvi welqwU Av‡cwÿK| GUv wVK fv‡e †evSvi Rb¨ A‡bK cov‡kvbv Ges wVKfv‡e †evSvi cÖ‡qvRb| GgbI n‡q‡Q †h, mvnvexM‡Yi g‡a¨ whwb me †_‡K Ávbx wZwbI GKB wel‡q wfbœ wfbœ gZ w`‡q‡Qb, wØgZ †cvlY K‡i‡Qb| Øx‡bi †Kv_vq me©m¤§Z fv‡e HK¨gZ Av‡Q? †Kvb wel‡q †Kvb cÖKvi wØgZ †bB? cÖ_g wZbwU e„Ë| hLb Avgiv gvbyl‡K Øx‡bi c‡_ `vIqvZ w`B, bex ivm~j‡`i cÿ †_‡K AvInŸvb RvbvB ZLb Avgiv g~jZ †Kvb wel‡q K_v ewj? e„Ë bv¤^vi GK Ges e„Ë bv¤^vi `yB| hLb †mB gvbyl¸‡jv Avgv‡`i `‡j P‡j Av‡m, Avgv‡`i cwiev‡ii AšÍf©y³ n‡q hvq, Avgv‡`i eÜz gn‡ji n‡q hvq, cÖ_g `ywU e„wËi welq¸‡jv BwZg‡a¨B †g‡b †bB ZLb Avgiv Zv‡`i wZb bv¤^vi e„‡Ëi w`‡K AvMÖnx Kivi †Póv Kwi| Pvi bv¤^vi e„‡Ëi welq¸‡jv LyeB mywbw`©ó G¸‡jv g~jZ M‡elYv I D”P wkÿvi Rb¨| ZvB Avcwb Pvi bv¤^vi e„Ë w`‡q Bmjvg cÖPvi ïiæ K‡i GUv ej‡Z cv‡ii bv-GUv Bmjvg| Avcbv‡K ïiæ Ki‡Z n‡e gnvbex (mvt) †hLvb †_‡K ïiæ K‡i‡Qb †mLvb †_‡K| Avcbv‡`i‡K GK Ges `yB w`‡q ïiæ Ki‡Z n‡e| GLb mKj mvnvex wK GB me¸‡jv wel‡q GKgZ n‡qwQ‡jb? bv| Z‡e Zviv mevB GK †_‡K wZb welq¸‡jv‡Z mngZ †cvlY K‡i‡Qb| Avcbviv hw` GUv‡K BRgv ej‡Z Pvb A_©vr mKj mvnvex †h me wel‡q GKgZ †cvlY K‡i‡Qb †m¸‡jv n‡”Q GK, `yB Ges wZb bv¤^vi e„‡Ëi welq¸wj| GLb GB PviwU e„‡Ëi evB‡i Avi GKwU e„Ë Av‡Q|

cuvP bv¤^vi e„Ët
GB e„‡Ëi AšÍf©³ n‡”Q †mB me welq †h ¸‡jv wb‡q eZ©gvb gymwjg D¤§v GKgZ †cvlY K‡ib| GUv‡K Avcbviv Bw¯Ínv` ej‡Z cv‡ib| GKRb ¯‹jvi wbR¯^ gZvgZ _v‡K ‡hUv‡K Avgiv d‡Zvqv ewj| ¯‹jviiv wKfv‡e wPšÍv K‡ib? Zviv Rv‡bb †h, GK `yB ev wZb G¸‡jv n‡”Q wbLyZ| Pvi bv¤^vi e„‡Ëi welq¸‡jvi †ÿ‡Î A_©vr †Kb Zviv GB wel‡q GKgZ n‡qwQ‡jb A_ev wØgZ †cvlY K‡iwQ‡jb GUv †evSvi Rb¨ A‡bK cov‡jLv Ges M‡elYvi cÖ‡qvRb| Gi c‡i hLb cvuP bv¤^vi e„ËwU Av‡m †hLv‡b Ggb wKQz cÖkœ Av‡Q †h¸‡jv m¤ú‡K© KziAv‡b mvivmwi †Kvb mgvavb †`Iqv nqwb Ges nv`x‡mI cwi®‹vi fv‡e wKQz ejv nqwb| GLb mgvavi cvIqvi Rb¨ Avgv‡K Avgvi wb‡Ri M‡elYv Ki‡Z n‡e| `wjj cÖgvYv`x hv wKQz cvIqv hvq Lyu‡R †ei Ki‡Z n‡e| Gi ci Avgvi mvg‡_©i m‡ev©”P e¨envi K‡i G m‡ei wfwˇZ GKUv mgvav‡b Avm‡Z n‡e| Zvi gv‡b Avwg GB mgm¨v GKUv mgvavb ‡ei Kivi †Póv KiwQ GUv †g‡b wb‡q †h, Avgvi cÖvß DËiwU G‡Kev‡i wbLyZ n‡e bv| KviY GK`g wbLuyZ mgvavb GK, `yB Ges wZb GB e„Ë ¸‡jvi g‡a¨B mxgve×| ZvB Avgvi cÖvß DËiwU n‡”Q Avgvi mxgv×Zvi ga¨ †_‡K hZUzKz wbLuyZ nIqv hvq ZZUzKz| GUv Ggb †Kvb mgvavb bq †hUv Avwg A‡b¨i Dci Pvwc‡q w`‡Z cvwi| wKš‘ Avwg Ggb K‡i ej‡Z cvi‡ev bv †h, GUvB Bmjvg Ges †Zvgiv hw` GUv AbymiY bv Ki Zvn‡j Bmjvg †_‡K evB‡i P‡j hv‡e| Avwg GgbUv ej‡Z cvwi bv| Avwg ej‡Z cvi‡ev bv †h Avgvi †`Iqv d‡Zvqv Bmjv‡gi mv‡_ my-bxweo fv‡e m¤úK©xZ| e‡ov †Rvi Avwg GB fv‡e ej‡Z cvwi †h, Avgvi Ávb Abymv‡i h‡Zv`~i eyS‡Z †c‡iwQ GBfv‡e wPšÍv Ki‡Z cvwi| Gme n‡”Q †mB me welq †h¸‡jvi wel‡q †KviAvb, nv`xm ev mvnvevM‡Yi cÿ †_‡K †Kvb ¯úó mgvavb cvIqv hvq bv| GKUv D`vniY w`w”Q-Lwjdv nviæbi iwk`| wZwb ZLb ivóªcÖavb wQ‡jb| Avwgiæj gy‡gbxb| †mB mgq Av‡giæj gy‡gbxbMY mvjv‡Zi BgvgZx Ki‡Zb we‡kl K‡i n‡R¡i mgq| GiKg GK mgq wZwb nR¡ cvjb Ki‡Z †M‡jb| Av‡giæj gy‡gbxb wn‡m‡e wZwbB BgvgwZ Ki‡eb| hvB †nvK wZwb cÖ_g KvZv‡i wQ‡jb KviY wZwb BgvgwZ Ki‡eb| Avi wZwb wQ‡jb nvbvdx gvhnv‡ei Abymvix| Ibvi n‡R¡i whwb †gvqv‡jøg wQ‡jb (†gvqv‡jøg n‡”Q †mB e¨w³ whwb Acbv‡K n‡R¡i wewfbœ wbqg Kvbyb wkwL‡q †`‡eb) ¯^vfvweK fv‡eB Av‡giæj gy‡gbx‡bi †gvqv‡jøg nvbvdx gvhnv‡ei Abymvix wQ‡jb| wZwb wQ‡jK KvRx Avey BDmyd| nvbvdx gvhnv‡ei cÖwZôvZv Bgvg Avey nvbxdvi me wKQz wZwbB wjwcä Ki‡Zb| hvB †nvK, c„w_exi ey‡K nvbvdx gvhnv‡ei weÁ †h Av‡jg wZwb n‡”Q Zvi †gvqvjøxg| Zviv `yR‡bB mvg‡bi KvZv‡i Av‡Qb| Ges Av‡giæj gy‡gbxb GKUz c‡iB mvjv‡Zi BgvgwZ Ki‡eb| wKš‘ Ljxdv nviæbi iwk` wnRvgv K‡i‡Qb (wnRvgv n‡”Q Ggb GKUv wPwKrmv c×wZ †hUv Kvwcs Gi gva¨‡g Kiv nq Ges Gi d‡j kixi †_‡K i³ †ei nq)| GLb nvbvdx gvhnve Avbymv‡i kixi †_‡K i³ †ei n‡j Ihy bó n‡e| Lwjdv nviæbi iwk` GKRb wePÿY e¨w³ wQ‡jb| wZwb Rvb‡Zb †h, wZwb hw` Bgvg Avey BDmyd‡K GLb wRÁvmv K‡ib †h Avgvi Ihy wK bó n‡q‡Q Zvn‡j Avey BDmyd wK ej‡e? n¨v, Avcbvi Ihy bó n‡q †M‡Q| Avi †mB †ÿ‡Î Zv‡K cÖ_g KvZvi †_‡K †ei n‡q me¸‡jv KvZvi cvi n‡q Ihy LvbvB †h‡q Ihy Ki‡Z n‡e| GB cy‡iv cÖwµqvwU‡Z †h mgq jvM‡e Zv‡Z Avm‡ii Iqv³ †kl n‡q gvMix‡ei Iqv³ P‡j Avm‡e| wKš‘ Zv‡K †Zv ZLbB mvjv‡Zi BgvgwZ Ki‡Z n‡e Ges wZwb hw` Avey BDmyd‡K G wel‡q wRÁvmv K‡ib Zvn‡j Dwb ej‡eb Avcbvi mvjvZ Av`vq n‡e bv| Kvib Ihy †bB| NUbv P‡µ Bgvg gvwjK I cª_g KvZv‡i wQ‡jb| GgZve¯’vq Lwjdv D‡Ïk¨ cÖwYZfv‡e Dbvi wb‡Ri †gvqvwjøg‡K G wel‡q bv wR‡Ám K‡i Bgvg gvwjK‡K G wel‡q wR‡Ám Ki‡jb| KviY gvwjwK gvhnve Abymv‡i i³cvZ n‡jI Ihy bó nq bv Ges Lwjdv GUv Rvb‡Zb| wZwb Bgvg gvwjK‡K wR‡Ám Ki‡jb-ÒAv”Qv Avwg †h Kvwcs Kivjvg Avgvi wK Ihy bó n‡q‡Q?ÓBgvg gvwjK ej‡jb-bv bv, Avcbvi Ihy f½ nq wb, Avcwb BgvgwZ Kiæb| djkÖæwZ‡Z Lwjdv nviæbi iwk` BgvgwZ Ki‡jb n‡R¡i mgq †mB wekvj Rvgv‡Zi| KvRx Avey BDmyd, Bgvg gv‡jK `yR‡bB †mB Rvgv‡Z Dbvi †cQ‡b wQ‡jb| Avi KvRx Avey BDmyd wQ‡jb †mB mg‡qi weL¨vZ ¯‹jvi‡`i g‡a¨ Ab¨Zg| Zvi mv‡_ A‡bK wkÿv_©x wQ‡jb hvivI nR¡ Ki‡Z G‡mwQ‡jb| †mB wkÿv_x©iv wKš‘ †cQ‡b wQ‡jb ZvivI GB NUbv †`L‡Z †c‡jb Ges bvgvh cowQ‡jb| Avi bvgvh †kl nIqvi mv‡_ mv‡_ Zviv †`Šu‡o KvRx BDmy‡di Kv‡Q †M‡jb Ges ej‡jb Avgiv wK Avevi mvjvZ Av`vq Kie?Avcwb wKfv‡e Dbv‡K Kvevi mvg‡b BgvgwZ Ki‡Z w`‡jb Ihy Qvov? ZLb KvRx Avey BDmyd, whwb wKbv nvbvdx gvhnv‡eb Abymvix Zvi wkÿv_©x‡`i ej‡jb-Ô‡h cybivB mvjvZ Av`v‡qi `ytmvnm †`Lv‡e †m LvIqvixR‡`i AšÍf©³, †m ev Zviv G Øx‡bi AšÍf©³ bqÕ| ‡Kb wZwb GiKg ej‡jb? KviY d‡Zvqv wb‡q Zvi wPšÍvi cÖK…wZ wKQzUv wfbœ wQj| Dbvi wPšÍvi cÖK…wZ GB iKg wQj †h, i³ cv‡Zi mv‡_ Ihy bó nIqvi wel‡q my¯úó wKQz ejv nqwb| GwU Ggb GKwU welq †hU wb‡q M‡elYv K‡i Zvici wm×všÍ wb‡Z n‡e| GLb Avgv‡`i M‡elYv Abymv‡i Ihy bó n‡e Avi Bgvg gvwj‡Ki M‡elYv Abymv‡i Ihy bó n‡e bv| GUv GKvšÍB Avgv‡`i e¨w³MZ M‡elYvi djvdj| †KviAv‡b Ggb †Kvb AvqvZ †bB †hLv‡b ejv n‡q‡Q †h, i³ cvZ n‡j Ihy bó n‡e| Ggb †Kvb nv`xm †bB †hLv‡b ejv n‡q‡Q i³ cv‡Zi Kvi‡Y Ihy bó n‡e| ZvB Avgiv †KD GB wb‡q weZK© Ki‡Z cvwi bv †h, Avgvi cÖß djvdjB mwVK| KviY GUv GKvšÍB Avgvi mxwgZ Áv‡bi gva¨‡g AwR©Z e¨w³MZ gZvgZ| hvi d‡j Avwg wKš‘ GUvI Rvwb bv Avwg mwVK wK bv Avi Dwb fzj wK bv| Avi GUv wb‡q ZK© Ki‡Z †h‡q Avwg †h g~jbxwZ Rvwb Zv n‡”Q HK¨ n‡”Q ¸iæZ¡c~Y© g~jbxwZ| wb‡Ri d‡Zvqvi cÖwZ Abo _vK‡Z †h‡q Avwg GB g~j bxwZ‡K Agvb¨ Ki‡Z ivwR bq| GiKg wQj Zv‡`i wPšÍv fvebv| GfvB Dbviv welq¸‡jv wb‡q fve‡Zb| Avcwb hw` wdKvn wb‡q cov‡kvbv K‡ib, wdKvi wKZve ¸‡jv co‡j †`L‡eb †KD hw` Ab¨ Avi GKR‡bi mv‡_ wØgZ †cvlY K‡ib ZLb ïiæ‡ZB wZwb hvi  †m‡½ wØgZ †cvlY K‡ib Zvi Rb¨ †`vAv K‡i GKc„ôv †j‡Lb| Gic‡i we¯ÍvwiZ e¨vL¨v K‡ib †Kb wZwb GKgZ bb| GKB fv‡e Aci Rb hLb Gi DËi w`‡eb ZLb wZwbI Gfv‡e e‡jb †h, Avcbvi †`vAvi Rb¨ ab¨ev` Ges Avcbvi Rb¨I wb‡b¥v³ †`vAv iB‡jv| hw`I Zviv †h me mgq G‡K Avc‡ii mv‡_ Giƒc e¨envi K‡ib †Zgb wKšÍ bq| gv‡S gv‡S Zv‡`i †jLvi g‡a¨ A‡bi cÖwZ cÖK…wZi g‡bvfve jÿ¨ Kiv hvq| hv †nvK, eZ©gvb mg‡q Bmjv‡gi †h iƒc †mUv †evSvi Rb¨ GB e„Ë ¸‡jv m¤ú‡K© cwi®‹vi _vKv `iKvi| e„Ë ¸jvi K_v gv_vq †i‡L hw` Avgiv wPšÍv Kwi †h Avgv‡`i †Kvb welq Uv‡K AMÖvwaKvi †`Iqv DwPZ, †KvbwU mevi cÖ_‡g MY¨ n‡e, g~jbxwZ mg~n, ¯^”QZv, b¨vqwePvi, Avjøvn fxwZ, mZ¨Zv, mZ¨ev`xZv GM‡jv n‡jv mevi Av‡M Avm‡e| GB g~jbxwZ ¸‡jv Avgiv wKfv‡e wkwL? AZ¨vek¨Kxq eva¨ev`KZv cvjb Kvivi gva¨‡g GB g~jbxwZ ¸‡jv Avgv‡`i g‡a¨ `„p nq| Avi †Kvb wRwbmUv GB g~jbxwZ ¸‡jv‡K cwieZ©b K‡i, DbœZ K‡i? Z…Zxq e„ËwU| GLb †hUv †`Lv hvq eZ©gvb mg‡q Bmjvg g¯úwK©Z Avgv‡`i †ewki fvM wRÁvmvB cÖ_g wZbwU e„Ë †_‡K `~‡i| Avgv‡`i wRÁvmv ¸‡jv n‡jv cÂg e„‡Ëi g‡a¨ P‡j †M‡Q| g~jbxwZ My‡jvi wQ‡U ‡dvUv †hLv‡b †bB| †KviAv‡i Avjøvn †h me gvby‡li eY©bv w`‡q‡Qb, hviv cweÎ _vK‡Z fviev‡mb| Avgiv hLb n‡R¡ hvq; nR¡ n‡”Q GKwU †gŠwjK eva¨ev`KZv| nR¡ cvj‡bi gva¨‡g Avgv‡`i g‡a¨ GBme ¸bvejx my`„p nIqvi K_v| ZvKIqv, †kvKi, Avjøvn fxwZ, mZZv, b¨vqwePvi GB me wKQzB| GLb Beªvnxg (Avt) Gi mgq †_‡K cÖPwjZ ixwZ bxwZ Abymv‡i Avcwb hLb Kvevi mvg‡b wM‡q Kv‡jv cv_i wU‡K aivi †Póv K‡ib ZLb †`L‡eb Av‡k cv‡ki gvbyl Rb Avcbvi gy‡L Zv‡`i KbyB‡qi ¸Zv w`‡”Q| Avcbv‡K †V‡j mwi‡q mvg‡b hvIqvi †Póv Ki‡Q| GgbI †`L‡eb †h, †KD GKRb Zvi mvg‡bi cvuP Qq Rb gvby‡li Dci w`‡q G‡m nv‡R¡ AvmIqv aivi Rb¨ gwiqv n‡q †Póv Ki‡Q| †hb Zvi A‡bK g~j¨evb wKQy PvIqvi Av‡Q, †`vAv Ki‡Z n‡e| wKš‘ GiKg DZjv n‡q, hy× K‡i nv‡R¡ AvmIqvi Kv‡Q Avmvi c‡i GKgvÎ †h †`vAvwU Zv‡K me©cÖ_g Kiv DwPZ †mUv n‡”Q ÔAvwg GB gvÎ †h me ¸bvn K‡i GB ch©šÍ Avmjvg Zvi Rb¨ Avgv‡K ÿgv K‡i `vIÕ| A_©vr †`Lv hv‡”Q †h,Avgiv ixwZ bxwZ ¸‡jv wVKB †g‡b PjwQ wKš‘ Zvi gv‡a g~jbxwZ ¸‡jvi †Kvb Dcw¯’wZ †bB| gyR`vwjdvB(gyR`vwjdv n‡”Q LyeB cweÎ ¯’vb) hLb Avcbviv hv‡eb; GUv Ggb GK RvqMv †hLv‡b Avcwb mviv ivZ Avjøvni †`vAv K‡i KvUv‡bvi K_v, Avjøvni ¯§i‡Y ivZ cvi Kivi K_v| mKv‡j hLb Avcwb †mLvb †_‡K iIbv †`‡eb GgbwK Avcwb `yB K`gI †mLvb †_‡K †h‡Z cvi‡eb bv| Avcwb wPšÍvB c‡o hv‡eb Avcwb wK GKUv cweÎ RvqMvq Av‡Qb? bvwK GKUv Av¯ÍvKz‡oi gvSLv‡b `vuw`‡q Av‡Qb? Avcwb wb‡P ZvwK‡q gvwU †`L‡Z cv‡eb bv| ïay †`L‡eb WvBcvi, cvwbi †evZj, †KvKv-†Kvjvi ‡evZj, wUmy¨ †ccvi| Ggb †Kb nq? Avcbvi wK Rv‡bi g~jbxwZi †Kvb avi avwibv Avgiv| Gi d‡j AZ¨vek¨Kxq g~jbxwZ ¸‡jvi cÖvavb¨ †`Iqvi Kvi‡Y †h ag© nIqvi K_v wQj me †P‡q my›`i †mUv GLb n‡q ‡M‡Q K`vKvi| Gfv‡eB Avgiv GKUv my›`i ag©‡K K`vKvi K‡i †d‡jwQ| ewb CmivBjiv †hfv‡e K‡iwQj| Zviv Avjøvni †`Iqv g~j wRwbm¸‡jv ev` w`‡q ïaygvÎ ixwZ bxwZ ¸‡jv‡KB MÖnY K‡iwQj| myenvb Avjøvn! Avgvi Kv‡Q ZvB GB KvVv‡gvwU fvjfv‡e eyS‡Z cviv LyeB ¸iæZ¡c~Y© Ges g~j¨evb g‡b nq| Zvn‡j Avgv‡`i †mB †mB my‡hvMUv †bIqv DwPZ| eZ©gvb D¤§vi g‡Zv‡f‡`i K‡qKwU eo eo welq n‡”Q Zvivwei bvgvh Kq ivKvZ?Puv` †`Lvi †ÿ‡Î wK mviv c„w_ex GKB w`‡b aiv n‡e bvwK GjvKv wfwËK wVK Kiv n‡e? Gme n‡”Q eo eo Z‡K©i welq| wKš‘ Avcbviv hw` g~j wdKvni eB ¸‡jv †`‡Lb Zvn‡j eyS‡eb GB me well GgbwK wZb b¤^vi e„‡Ëi g‡a¨I †bB| Pvi ev Zvi c‡ii welq| Zvn‡j †Kb Avgiv GB me wb‡q ZK© KiwQ? †h me welq Avgv‡`i‡K m•Ne× K‡i, ‡m¸‡jv ‡m me welq †h¸‡jv Avgv‡`i g‡a¨ wefw³ NUvB Zvi †P‡q †ewk kw³kvjx| wKš‘ Avgiv hLb †m me welq †_‡K Avgv‡`i `„wókw³ mwi‡q wbB ZLb wefw³ m„wó Kivi welq ¸wjB Avgv‡`i †Pv‡Li mvg‡b †f‡m Av‡m|  GgbwK GLbKvi w`‡b GKRb gymwjg Avi GKRb gymwjg‡K †`‡L ZLb g‡b g‡b wPšÍv K‡i †m wK mvwd? bvwK gvwjwK? †m wK Avgvi g‡Zv? Avcbvi †Zv GBme wb‡q wPšÍvB Kiv DwPZ bv| Avcbvi †Zv wPšÍv Kiv DwPZ †mwK gymwjg bvwK gymwjg bv? e¨vm! GUzKzB h‡_ó|
Gevi Avmv hvK †k‡l GKwU D`vni‡Y-Avjøvn †gvU KZ Rb bex ivm~j †cÖiY K‡i‡Qb? GK jÿ PweŸk nvRvi| c„w_ex‡Z me‡P‡q ¸iæZ¡c~Y© Kviv? bex ivm~jMj| GB welq †Zv Avgiv mevB GKgZ? gvbe RvwZi Rb¨ me©Ëg wkÿK Kviv wQ‡jb? GB GK jÿ PweŸk nvRvi bex-ivm~jMY n‡”Qb mgMÖ gvbe RvwZi Rb¨ †cÖwiZ m‡e©vËg wkÿK| Zv‡`i bvg ejyb GB evi? Zviv me †P‡q ¸iæËc~b© e¨w³eM©! Avcbv‡`i †Zv Zv‡`i bvg Rvbv DwPZ wQj? Avjøvn †Zv Zv‡`i mevi bvg e‡jb wb| AvjøvM ïaygvÎ 25 R‡bi bvg D‡jøL K‡i‡Qb| Zvi gv‡b wK Aí K‡qK R‡bi bvg ev` c‡o‡Q? Zviv wQ‡jb Bmjv‡gi me‡P‡q eo wkÿK| A_P Avgiv Zv‡`i bvg ch©šÍ Rvwb bv| Avjøvn Avcbv‡K wR‡Ám Ki‡eb bv †h, Avey nvwbdv †K wQ‡jb? †K wQ‡jb Bgvg kvwd? Ah_v wPšÍv eÜ Kiæb| 

Wednesday, February 6, 2019

সুরা বাক্বারার শেষ দুটি আয়াত ২৮৫ ও ২৮৬

آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلَانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ


অর্থঃ
২৮৫. রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

২৮৬. আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।
(আমিন)

Wednesday, January 23, 2019

কুর’আন কিভাবে পড়বো ও বুঝবো – ১

কুর’আন কিভাবে পড়বো ও বুঝবো – ১


পবিত্র কুর’আন, দ্বীন ইসলামে এবং ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় যে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে, পৃথিবীর আর কোন একটি ধর্মের বেলায়, সেই ধর্মের ধর্মগ্রন্থকে এ ধরনের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না। মুসলিম জীবনে কুর’আনের ভূমিকা কি তা অনুভব করার ব্যাপারটাও হয়তো বা সবার জন্য উন্মুক্ত নয় – অনেকে যেমন মনে করেন যে, কুর’আনের পথনির্দেশনা এবং নিরঙ্কুশ জ্ঞানের ভান্ডারও সবার জন্য উন্মুক্ত নয়, কেবল বিশ্বস্ত বিশ্বাসী বা সম্ভাব্য হেদায়েত লাভের যোগ্যতা সম্পন্ন সৌভাগ্যবানদের জন্যই তা উন্মুক্ত হয়ে থাকে। তেমনি এই ব্যাপারটাও – অর্থাৎ, কুর’আনের ভূমিকার গুরুত্ব বোঝার ব্যাপারটাও – সম্ভবত কেবল নির্বাচিত ও বিশিষ্টদের জন্য নির্ধারিত। ইহুদী বা খৃস্টধর্মাবলম্বী কুফফার ওরিয়েন্টালিস্টগণ – খৃস্টধর্মের উপর যাদের রয়েছে বিস্তর পড়াশোনা – তারা তাদের নিজেদের মত করে ব্যাপারটাকে কিছুটা আঁচ করার চেষ্টা করেছেন। তারা বলেছেন যে, খৃস্টধর্মের বেলায় যীশুর যে গুরুত্ব – ইসলামের বেলায় কুর’আন সেই ধরনের গুরুত্বের অধিকারী। ‘যীশুকে অবতার ভাবার’ মত কুফরে নিমজ্জিত থেকেও, তারা একধরনের ব্যাখ্যা দান করার চেষ্টা করেছেন। তারা বলেছেন যে, যীশু হচ্ছেন ঈশ্বরের Word made flesh, আর কুর’আন হচ্ছে ঈশ্বরের Word made book। খৃস্টানদের এই বক্তব্যে, কুর’আন যে আল্লাহর বাণী এই ধারণার একটা vague স্বীকৃতি রয়েছে বলে, আমাদের অনেকেই ভুলে যাই যে, উপরোক্ত বক্তব্যের প্রথমার্ধে একটা সূক্ষ্ম অথচ ভয়ঙ্কর ‘কুফরি’ রয়েছে এবং আমরা মুসলিমরাও নিজেদের অজান্তেই ঐ কুফরির ফাঁদে পা দিই। কুর’আন আল্লাহর বাণী বলে তা আল্লাহর সিফাতের একটা অংশ এবং সেহেতু divine বা ঐশ্বরিক – অর্থাৎ সৃষ্ট বস্তু নয় ; যীশুও যদি আল্লাহর বাণীর ‘রক্ত-মাংসে রূপান্তরিত অবস্থা’ বা Word made flesh হয়ে থাকেন, তবে তো তিনিও divine বা ঐশ্বরিক এবং সৃষ্ট কোন প্রাণী নন! এখানেই নিহিত রয়েছে এমন ধারণা যা ইসলামের দৃষ্টিতে নির্ভেজাল ‘কুফরি’।
রাসূল(সা.)-এঁর ভবিষ্যদ্বাণীকে ইতোমধ্যেই বাস্তবতা দান করে মুসলিম উম্মাহ্ যে আজ ৭৩ ভাগে বা তারও চেয়ে বেশী ভাগে বিভক্ত, তা বুঝতে কারো অসুবিধা হবার কথা নয়। অন্য অনেক কিছুর মতই – কুর’আনকে নিয়ে আমরা কি করবো – এই ব্যাপারটা নিয়েই মুসলিম উম্মাহ্ আজ শতধাবিভক্ত। ইসলামের কেন্দ্রীয় ব্যাপার – বলতে গেলে মেরুদন্ড স্বরূপ – এই কুর’আনকে নিয়ে আমাদের অজ্ঞতা ও বিভক্তি কুফফারকে সাহস ও শক্তি যোগায়। তারা বুঝতে পারে যে, আমাদের নিয়ে তাদের ভয়ের কোন কারণ নেই। কুর’আনকে নিয়ে আমাদের মতপার্থক্য, বিভ্রান্তি ও বিভক্তির রকমফের একাধারে করুণ ও হাস্যকর। অপাঠ্য ছোট্ট অক্ষরে ছাপা কুর’আনকে একদিকে যেমন কেবল মাদুলির মত গলায় ঝুলিয়ে রাখার কাজে ব্যবহার করা হয়, তেমনি, কারুকাজপূর্ণ এমন বিশাল কুর’আনও রয়েছে যার শিল্পকর্ম সম্পন্ন করতে হয়তো কোন শিল্পীর গোটা জীবনটাই কেটে গেছে; আবার এমন অনেক কুর’আনিক ক্যালিগ্রাফি আছে যার পাঠোদ্ধার করা আমার মত সাধারণ মুসলিমের জন্য দুরূহ। “কুর’আন সবার জন্য নয় বরং গণমানুষ অর্থসহ কুর’আন পড়তে গেলে বিপথগামী হয়ে যাবে” – এমন কথা যেমন উপমহাদেশে দাওয়াতের কাজে আত্মনিয়োগকারী গোষ্ঠী বিশেষ প্রচার করে থাকেন। আবার, “যে কেউ একখানা কুর’আন হাতে নিয়ে অর্থসমেত পড়তে শুরু করলেই, সব সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন” – এমন কথাও প্রচলিত রয়েছে – যার মর্মার্থ অনেকটা এরকম যে, একখানা Gray’s Anatomy হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করলেই, যে কেউ নিজের চিকিৎসা নিজেই করতে পারবেন। কত স্বচ্ছ হৃদয়ের মানুষকে দেখা যায় একটি বর্ণের অর্থ না বুঝেও জীবনের প্রতিটি দিন সকাল বিকাল কুর’আন তেলাওয়াতের (প্রচলিত অর্থে) আমল করে কবরে চলে যান – আবার, কত অভাগা মানুষকে দেখা যায় কুর’আনের ভাষা জানা ও বোঝা সত্ত্বেও তাদের জীবনে কুর’আনের কোন ছাপ নেই। আরো বেশি অভাগা আরেকটা শ্রেণীকে দেখা যায়, পশ্চিম থেকে ধার করা scientific reductionism-এর আলোকে কুর’আনকে ব্যাখ্যা করতে চেয়ে, পথভ্রষ্ট হয়ে শেষ পর্যন্ত “কাফির হয়ে যাবার” পরিণতি বরণ করতে (যেমনটা ঘটেছিল ড. রাশাদ খলিফার বেলায়, যিনি ১৯ সংখ্যা ভিত্তিক ফর্মূলায় পবিত্র কুর’আনকে আবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন)। এটা তো সত্যি যে, কুর’আনের কাছে যাবার সঠিক ও শুদ্ধ পন্থা কি তা না বুঝলেও এবং না জানলেও, আমরা যে কুর’আন থেকে উপকৃত হতে পারছি না – কান্ডজ্ঞান সম্পন্ন সকল মুসলিমই একথা জানেন। কুর’আন তার অনুসারীদের যে সাফল্য, যে সম্মান, যে আসন, যে শান্তি ও যে অর্জনের অঙ্গীকার করে – বিশ্বব্যাপী কুফফারের লাথি খেয়ে, তাদের পা থেকে পায়ে ঘুরে বেড়ানো মুসলিম জনসমষ্টিসমূহকে দেখে কোথাও তার কোন চিহ্ন খুজে পাওয়া দুষ্কর। বরং, স্বাভাবিক ভাবেই যে কারো মনে হতে পারে যে, কোথাও মারাত্মক কোন গোলমাল বা সমস্যা রয়েছে – এবং নিম্ন মানের ঈমান সম্পন্ন কারো, গভীর নিরাশা উদ্ভূত কুফরিতে ডুবে যাবার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। আমরা আল্লাহর কাছে শয়তানের চিরন্তন অবস্থা: আল্লাহর দয়ায় নিরাশ হওয়া থেকে আশ্রয় চাই এবং সেই নৈরাশ্যের আনুষঙ্গিক কুফরি থেকেও আশ্রয় চাই। আমীন!!

Translate