Thursday, May 24, 2018

ন্যায় বিচার — খলিফা হারুন অর রশিদের গল্প

ন্যায় বিচার — খলিফা হারুন অর রশিদের গল্প

সিরিয়ার একটি শহরের নাম রাকা। সেখান থেকে খলিফা হারুনুর-রশিদের নিকট চিঠি আসলো। চিঠিতে লেখা ছিল: শহরের বিচারক এক মাস যাবত অসুস্থ,বিচার কাজ স্থবির হয়ে আছে । খলিফা যেন দ্রুত ব্যবস্থা করেন । খলিফা চিঠির জবাব পাঠালেন । আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন বিচারক আসবেন । এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন বিচারক এসে যোগ দিলেন ।
বিচার কাজ শুরু হয়েছে । স্থানীয় প্রহরীরা একজন বৃদ্ধা মহিলাকে আসামী হিসেবে দরবারে হাজির করলেন । তার অপরাধ ছিল তিনি শহরের এক রেস্তারাঁ থেকে কিছু রুটি আর মধু চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পরেন ।
বিচারক: আপনি চুরি করেছেন?
– জ্বি ।
– আপনি কি জানেন চুরি করা কতো বড় অপরাধ ও পাপ ?
– জ্বি ।
– জেনেও কেন চুরি করলেন ?
– কারণ আমি গত এক সপ্তাহ যাবত অভুক্ত ছিলাম । আমার সাথে এতিম দু’নাতিও না খেয়ে ছিল । ওদের ক্ষুদারত চেহারা ও কান্না সহ্য করতে পারিনি তাই চুরি করেছি। আমার আর এ ছাড়া কোন উপায় ছিল না হুজুর ।
বিচারক এবার পুরো দরবারে চোখবুলালেন। বললেন কাল যেন নগর, খাদ্য,শরিয়া, পুলিশ প্রধান ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যাক্তিগন সবাই উপস্থিত থাকেন ।তখন এর রায় দেওয়া হবে ।
পরদিন সকালে সবাই হাজির হলেন । বিচারক ও যথাসময়ে উপস্থিত হয়ে রায় ঘোষণা করলেন-“ বৃদ্ধা মহিলার চুরির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ৫০টি চাবুক, ৫০০ দিণার রৌপ্য মুদ্রা আর অনাদায়ে এক বছর কারাদণ্ড দেওয়া করা হলো। তবে অকপটে সত্য বলার কারণে হাত কাটা মাফ করা হলো। বিচারক প্রহরীকে চাবুক আনার নির্দেশ দিয়ে নিচে নেমে ঐ বৃদ্ধা মহিলার পাশাপাশি দাঁড়ালেন ।
বিচারক বললেন যে নগরে একজন ক্ষুধার্তবৃদ্ধ মহিলা না খেয়ে ক্ষুধার যন্ত্রণায় চুরি করতে বাধ্য হয় সেখানে তো সবচেয়ে বড় অপরাধী সে দেশের খলিফা। আর আমি এসেছি খলিফার প্রতিনিধি হয়ে । আমি যেহেতু তাঁর অধীনে চাকরি করি তাই ৫০টি চাবুকের ২০টি আমার হাতে মারা হউক । আর এটাই হলো বিচারকের আদেশ । আদেশ যেন পালন করা হয় এবং বিচারক হিসাবে আমার উপর চাবুক মারতে যেন কোনো রকম করুণা বা দয়া দেখানো না হয়।
বিচারক হাত বাড়িয়ে দিলেন । দুই হাতে পর পর ২০টি চাবুক মারা হলো। চাবুকের আঘাতের ফলে হাত থেকে রক্ত গড়িয়ে পরছে । ঐ অবস্থায় বিচারক পকেট থেকে একটি রুমাল বের করলেন । কেউ একজন বিচারকের হাত বাঁধার জন্য এগিয়ে গেলে বিচারক নিষেধ করেন। এরপর বিচারক বললেন “ যে শহরে নগর প্রধান, খাদ্য গুদাম প্রধান ও অন্যান্য সমাজ হিতৈষীরা একজন অভাব গ্রস্হ মহিলার ভরন-পোষণ করতে পারেন না। সেই নগরে তারা ও অপরাধী। তাই বাকি ৩০টি চাবুক সমান ভাবে তাদেরকে মারা হোক ।“
এরপর বিচারক নিজ পকেট থেকে বের করা রুমালের উপর ৫০টি রৌপ্য মুদ্রা রাখলেন । তারপর বিচারপতি উপস্থিত সবাইকে বললেন “যে সমাজ একজন বৃদ্ধমহিলাকে চোর বানায়, যে সমাজে এতিম শিশুরা উপবাস থাকে সে সমাজের সবাই অপরাধী । তাই উপস্থিত সবাইকে ১০০ দিণার রৌপ্য মুদ্রা জরিমানা করা হলো।“
এবার মোট ৫০০দিনার রৌপ্য মুদ্রাথেকে ১০০ দিণার রৌপ্য মুদ্রা জরিমানাবাবদ রেখে বাকি ৪০০টি রৌপ্য মুদ্রা থেকে ২০টি চুরি যাওয়া দোকানের মালিককে দেওয়া হলো। বাকি ৩৮০টি রৌপ্য মুদ্রা বৃদ্ধা মহিলাকে দিয়ে বললেন “ এগুলো আপনার ভরণপোষণের জন্য । আর আগামী মাসে আপনি খলিফা হারুনুর রশিদের দরবারে আসবেন । খলিফা হারুনুর রশিদ আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থী । “
একমাস পরে বৃদ্ধা খলীফার দরবারে গিয়ে দেখেন ; খলীফার আসনে বসা লোকটিকে চেনা চেনা মনে হচ্ছে । মহিলা ভয়ে ভয়ে খলীফার আসনের দিকে এগিয়ে যান। কাছে গিয়েবুঝতে পারেন লোকটি সেদিনের সেই বিচারক। খলীফা চেয়ার থেকে নেমেএসে বললেন —আপনাকে ও আপনার এতিম দু’নাতিকে উপোস রাখার জন্য সেদিন বিচারক হিসেবে ক্ষমা চেয়েছিলাম । আজ দরবারে ডেকে এনেছি প্রজা অধিকারসমুন্নত করতে না পারা অধম এই খলীফাকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য ।আপনি দয়াকরে আমাকে ক্ষমা করুন ।

Tuesday, May 15, 2018

সমাজের প্রতিটি স্তরে আজ ধর্মীয় অবক্ষয় হতে হতে এতো নিচে নেমে গেছে যে আমরা সেখান থেকে বের হতে পারছি না।

Sunday, May 13, 2018

টাখনুর নিচে পোশাক (প্যন্ট, পায়জামা ইত্যাদি) পড়া ইসলাম কি বলে?


টাখনুর নিচে পোশাক (প্যন্ট, পায়জামা ইত্যাদি) পড়াইসলাম কি বলে?
আমার এই বিষয়ে আলোচনা করার কারন হল- আমাদের দেশে বেশীর ভাগ মানুষ যারা ইসলামী আন্দোলন তথা খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাজ ফরজ বুঝার পরও এরা আন্দোলন তো দূরে থাক তারা বরং যারা আন্দোলন করছে তাদেরকে বলছেআপনি নিজেই তো ঠিক নাই মিয়া, আবার বড় বড় কথা কন” “ আপনার দাড়ি নাই” “আপনি টাখনুর নিচে প্যন্ট পড়েন, আন্দোলন কইরা কি করবেন, জাহান্নামে যাবেনআগে নিযে ঠিক হোন, দাড়ি রাখেন, ইসলামী লেবাস পড়েন, টাখনুর উপরে প্যন্ট পড়েনইত্যাদি ইত্যাদি।এই কারনে আমার এই বিষয়ে লেখা।


আমাদের সমাজে টাখনুর নিচে প্যন্ট পরার ব্যপারে সবারই ধারনা হল যে, টাখনুর নিচে প্যন্ট পড়লেই সে জাহান্নামে যাবে। এর পক্ষে তারা নিম্নলিখিত দলিল পেশ করেনঃ

আবু যর রা. বলেনরাসূল-সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম- বলেছেন, “কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তিন ব্যক্তির সাথে কথা তো বলবেনই না বরং তাদের দিকে তাকিয়েও দেখবেন না। এমনকি তিনি তাদেরকে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না বরং তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি। আমি জিজ্ঞাসা করলামতারা কারাতবে এরা তো ধ্বংশতাদের বাঁচার কোন রাস্তা নাই। রাসূল-সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম- কথা তিনবার বলেছেন। তারা হলঃ 
) যে ব্যক্তি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরে। 
) যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম খেয়ে ব্যাবসার পণ্য বিক্রি করে।
) যে ব্যক্তি কারো উপকার করে আবার খোটা দেয়। (মুসলিমতিরমিযীআবু দাউদ ইব্ মাজাহ্‌)

আবু হুরায়রা নবী -সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম- থেকে বর্ণনা করে বলেন, “লুঙ্গির যে অংশ টাখনুর নিচে থাকবে তা আগুনে প্রজ্জলিত হবে।” (বুখারী)

এই দূইটা হাদিস থেকে তারা যুক্তি দেখান যে যারা টাখনুর নিচে কাপড় পরবে তারা জানান্নামী। দুইটা হাদিসে অহংকার করার কথা উল্লেখ নাই। এই দুইটা হাদিস ছাড়া আরো অনেক হাদিস আছে যাতে বেশীর ভাগই উল্লেখ করা হয়েছে যে, যারা অহংকার করে টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করে তারা জাহান্নামী। যেমন কয়েকটা হাদিস উল্লেখ করলামঃ

যে ব্যক্তি গর্বভরে নিজের পোশাক ভুলুন্ঠিত করে পরিধান করে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না” (সহীহ বুখারী /১৩৪০; সহীহ মুসলিম /১৬৫১)

যে ব্যক্তি সালাতের মধ্যে অহংকারের সাথে তার পোশাক ভুলুন্ঠিত করে পরিধান করবে আল্লাহর সাথে তার হালাল বা হারাম কোন সম্পর্ক থাকবে না” ( আবু দাউদ /১৭২)

 একজন লোক হাঁটছিলসে নিজের পরিধেয় পোশাক গর্বের সাথে মাটিতে হেঁচড়ে নিয়ে চলছিলতার চুল ছিলো পরিপাটি করে আঁচড়ানোআল্লাহ মাটিকে আদেশ করলেন তাকে গিলে ফেলতে এবং শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত সে এইভাবে মাটির নিচে ডুবতে থাকবে ” [সহীহ আল বুখারি৩২৯৭,মুসলিম ২০৮৮]

রাসুলুল্লাহ() বলেন, “যে ব্যক্তি তার পরিধানের কাপড়কে অহংকারের সাথে মাটিতে হেঁচড়ে নিয়ে চলেশেষ বিচারের দিনে আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না আবু বকর(রা) উপস্থিত ছিলেনতিনি জানতে চাইলেন, “মাঝে মাঝে অসতর্কতার কারণে আমার পরিধেয় কাপড় একদিকে ঝুলে পড়ে রাসুলুল্লাহ() বলেন, “তুমি তা অহংকার থেকে করোনি (বুখারি,৩৪৬৫)

রকম আরো অনেক হাদিস রয়েছে।

মুলত বিতর্কটা লাগে যে, টাখনুর নিচে কাপড় পড়লেই কি অহংকার হয়ে যায়? কারন রাসুল বলেনঃ

যার মনে একটি অণু পরিমাণ  অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। ” একজন উপস্থিত লোক জানতে চাইলো, “ইয়া রাসুলুল্লাহ , যদি কেউ তার নিজের পোষাক জুতাকে পছন্দ করে একারণে যে তাকে সুন্দর দেখায় রাসুলুল্লাহ() বলেন, “আল্লাহ তায়ালা নিজেই সুন্দরতম অস্তিত্ব এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন। অহংকার মানে হলসত্যকে প্রত্যাখান করা মানুষকে ছোট করে দেখা ” [মুসলিম , ৯১]

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে অনু পরিমান অহংকার থাকলেই সে জাহান্নামে যাবে। তাহলে যে ব্যক্তির অহংকার আছে আবার টাখনুর উপরে প্যন্ট পরে তাহলে তার কি অবস্থা হবে?

যা হোক এতোক্ষন আমি টাখনুর নিচে প্যন্ট পড়া এবং অহংকার সম্পর্কিত হাদিস উল্লেখ করলাম, এবার চলুন মুজতাহিদ/ইমামগন ব্যপারে কি ফতোয়া বলেছেন।

১। ইমাম আবু হানিফাঃ ইমাম আবু হানিফার মতে গর্ব বা অহংকার না করে কেউ যদি টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করে তাহুলে সেটা হারাম হবে না। তার ফতোয়ার কিতাব আল-হিদায়া (/৩৩৩) উল্লেখ আছেঃ

“Abu Haneefah (may Allaah be pleased with him) wore an expansive rida’ and let it drag on the ground. It was said to him: Are we not forbidden to do this? He said: That is for those who show off and we are not among them”

২। ইমাম মালিকিঃ টাখনুর নিচে প্যন্ট পরা সংক্রান্ত ফতোয়ার ব্যপারে ইমাম মালিকি আলেমদের মাঝে মতভেদ আছে। ইমাম মালিকির মাহযাবের কিছু আলেমের মতে টাখনুর নিচে প্যন্ট পরাই হারাম।

কিছু আলেম আলেমদের মতে গর্ব বা অহংকার না করে কেউ যদি টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করে তাহুলে সেটা মাকরুহ হবে, হারাম হবে না।

৩। ইমাম শাফিঃ ইমাম শাফির মতে গর্ব বা অহংকার না থাকলে টাখনুর নিচে প্যন্ট পড়লে কোন সমস্যা নেই।

৪। ইমাম হাম্বলিঃ ইমাম হাম্বলির মতে গর্ব বা অহংকার না থাকলে টাখনুর নিচে প্যন্ট পড়লে কোন সমস্যা নেই।  ( in al-Iqnaa’ 1/139) 

৫।Ibn Qudaamah ইবনে কাদামাহ এর মতে গর্ব বা অহংকার না থাকলে টাখনুর নিচে প্যন্ট পরা মাকরুহ।

৬। Ibn Taymiyah ইবনে তাইমিয়ার মতে গর্ব বা অহংকার না থাকলে টাখনুর নিচে প্যন্ট পড়লে কোন হারাম হবে না।


৭। Shaykh Ibn Baaz, Shaykh Ibn ‘Uthaymeen, Shaykh Ibn Jibreen, Shaykh Saalih al-Fawzaan শায়খ ইবনে বায, ইবনে উথাইমিন, ইবনে জিবরিন সালেহ আল- ফাওযান প্রমুখ এর মতে টাখনুর নিচে প্যন্ট পরাই হারাম।

উপরোক্ত আলেমদের বক্তব্য বা ফতোয়া আপনি পাবেন islamqa.com  এই ওয়েবসাইটটি পরিচালনায় আছেন সৈদি আরবের বিশিষ্ট আলেম সালেহ আল মুনাজ্জিদ। পুরো আর্টিক্যলটি পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুনঃ


৮। Imam Nawawi  Ibn Hajar Imam Nawawi's, Ibn Qudama's, and Ibn Hajar's commentaries on the various hadiths on this chapter. It will be seen in the light of their views that there is no strong basis to argue that it is absolutely prohibited to wear garments below the ankles.


৯। Fatawa Darul Uloom Fatawa Darul Uloom (Vol.4 Pg. 127) states that it is Makrooh to wear the trousers below the ankles and the act deprives one of the rewards of Salah. It is also necessary to wear the garments above the ankles out of Salah because the Ahadeeth have sound warnings against this. And Allah knows best what is most correct.


বিষয়ে আরো জানতে নিচের লিংকে ঢু মারতে পারেনঃ







সুতরাং উপোরোক্ত আলোচনা থেকে এটা সুপষ্ট যে, অহংকার করে টাখনুর নিচে প্যন্ট বা পায়জামা পড়া হারাম। কিন্তু অহংকার ছাড়া টাখনুর নিচে প্যন্ট বা পায়জামা পড়া- ব্যপারে ইমাম/মুজতাহিদগন দের মাঝে মতভেদ আছে। কেউ বলেছেন, কোন হারাম হবে না, কেউ বলেছেন মাকরুহ হবে এবং কেই বলেছেন হারাম হবে। তবে চার মাহযাবের সবাই বলেছেন যে এটা হারাম হবে না।

আল্লাহপাকই সবচেয়ে বেশী ভাল জানেন।

ফি আমানিল্লাহ।

 

 

 

http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/RedwanKader/RedwanKader-1463501623-f8d0136_xlarge.jpgটাখনুর নিচে কাপড় না পড়ার বৈজ্ঞানিক ধর্মীয় কারন

১৭ মে, ২০১৬ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে : 
http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/RedwanKader/RedwanKader-1463501623-f8d0136_xlarge.jpg

সত্যি কথা বলতে কি আমি নিজেই ১০০% সময় টাখনূর উপরে কাপড় পরিধান করতে পারিনা। তবে সম্প্রতি আমেরিকার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কতৃক যখন জানলাম টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করলে টেস্টাস্টেরন নামক যৌন হরমোন শুকিয়ে যায়। যার ফলে যৌন শক্তি কমে যাবে। তখন থেকে মনে হচ্ছে আমার যতগুলো প্যান্ট আছে সবগুলোর পায়ের নীচের কিছু আংশ কাপড় কেটে ছোট করা যায় কিনা? এটা করতে পারলে একসাথে দুটি কাজ হয়ে যেত।

যাই হোক বিষয়টি আমেরিকার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কতৃক সম্প্রতি প্রমানিত হয়েছে। যার ফলে এখন এটা একটা ফ্যাশনে পরিনত হতে দেড়ি হবে না বলা যায়!

এজন্য আমেরিকার বেশিরভাগ হেলথ সেন্টারে লেখা আছে--

"
টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করবেন না" তাই তাদের বেশির ভাগই টাখনুর নিচে কাপড় পরেন না। 

অথচ আমাদের প্রিয় নবীজী রাসুল (সা) ১৫০০ বছর আগে টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করতে নিষেধ করে গেছেন। অনেক মুসলিম সেটি মেনে চলছেন।

আমাদের প্রিয় নবীজী রাসুল (সা) লেবাস-পোশাকের ব্যবহারের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা:

লেবাস-পোশাকের একটি বিশেষ দিক 'গোড়ালির নিচে কাপড় পরিধান' সম্পর্কে সামান্য আলোচনা করা যেতে পারে। কারণ বিষয়ে মুসলিম সমাজের বিশেষ শ্রেণীর লোকদের অবহেলাও দৃষ্টিগোচর হচ্ছে।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনলুঙ্গি (পায়জামা-প্যান্ট) ইত্যাদির যে অংশ টাখনুর নিচে হবে, তা দোজখে যাবে। (বুখারি শরিফ, . , পৃ. ৮৬১)

হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি অহংকারের বশীভূত হয়ে নিজের কাপড় অত্যন্ত নিচে [টাখনুর নিচে] পরিধান করবে, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামত দিবসে তার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না। [বুখারি শরিফ, . , পৃ. ৮৬০]

হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছিমুমিন বান্দাদের জন্য পায়জামা পরিধান করার (উত্তম সুন্দর) পদ্ধতি হলো 'নিছফ্ সাক্ব'- অর্ধহাঁটু পর্যন্ত পরিধান করা। অর্থাৎ পায়ের গোছার মধ্যখান পর্যন্ত বা অর্ধহাঁটু অথবা পায়ের গিঁটের মধ্যখান পর্যন্ত হলে গুনাহ হবে না, তা বৈধ। যা এর নিচে হবে, তা জাহান্নামে যাবে (তার পরিণাম জাহান্নাম) 

বর্ণনাকারী বলেন কথাটি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিনবার বলেছেন। অতঃপর তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা ওই ব্যক্তির দিকে চোখ তুলেও তাকাবেন না, যে অহংকার বড়ত্বের বশীভূত হয়ে কাপড় হিঁচড়ে চলে। [আবু দাউদ শরিফ, ইবনে মাজাহ শরিফ]

মহান আল্লাহ আমাদের সকল পুরুষকে অহংকারমুক্ত হয়ে টাখনুর উপরে সবসময় কাপড় পড়ার তৌফিক দান করুন।-আমিন

পুরুষদের টাকনোর নিচে কাপড় পরিধানের শাস্তি

https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjJXhDfLqeu_9N5xFiF5a4uHyIjeOQm9fyFB5L-uVOvXM-bDNs4gPCoGdy_lce5eMKSW7Xn6_KYndW8orwRy7Lm7JD910J6IGQD8Lvv9pWiXdiogqv1Iz3aSsAJag7n2bimXsuNJMqIByI/s640/untitled-11_30162.jpg




মুলকথা :-

টাকনোর নিচে কাপড় থাকলে সেই অংশটুকু জাহান্নামে যাবে।

আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের দিকে ফিরেও তাকাবেন না বা রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না।

এটা হল অহংকার। আর আল্লাহ অহংকার কারীকে পছন্দ করেন না।

আল্লাহ এমন ব্যক্তির নামায গ্রহন করবেন না, যে তার লুঙ্গি-কাপড় ঝুলিয়ে দিয়ে নামায আদায় করে।নামায পড়ে ফেললে সেই নামায বাতিল পুনরায় ওযু করে নামায পড়তে হবে।

নিয়ম হল হাটুর নিচে  টাকনোর মধ্যবর্তী স্থানে পরা বা সমস্যা হলে টাকনোর উপরে কাপড় পরলেই হবে।


এই  টি কথা নিচের সকল হাদিসের মুলকথা :-


জাবের ইবন সুলাইম রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, “টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পড়ার ব্যাপারে সাবধান হও। কারণ, তা অহংকারের অন-র্ভূক্ত। আর আল্লাহ অহংকার করাকে পছন্দ করেন না।” (আবু দাঊদ)

আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত৷
তিনি বলেন,
নাবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন; ইযারের বা পরিধেয় বস্ত্রের যে অংশ পায়ের গোড়ালির গিঁটের নীচে (টাখনুর নিচে) থাকবে, সে অংশ জাহান্নামে যাবে৷
[সহীহ বুখারী হাঃ ৫৭৮৭],

আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; আল্লাহ কিয়ামত দিবসে সে ব্যক্তির দিকে (দয়ার)
দৃষ্টি দিবেন না, যে ব্যক্তি অহংকার বশতঃ ইযার বা পরিধেয় বস্ত্র পায়ের গিঁটের নিচে (টাখনুর নিচে) ঝুলিয়ে পরিধান
করে৷
[সহীহ বুখারী হাঃ ৫৭৮৮;
মুসলিম হাঃ ২০৮৭],

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পুরুষের শরীরের যে কোন পোশাক টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পড়া হারাম। পোশাক যদি টাখনুর নিচে ঝুলে যায়, তাহলে টাখনুর নিচের অংশকে জাহান্নামের অংশ বলে ধরা হল।
[বুখারী হাঃ ৫৪৫০],

আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু একদিন এক লোক পায়ের গিঁটের নিচে (টাখনুর নিচে) লুঙ্গি-কাপড় ঝুলিয়ে নামায পড়ছিলো। তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যাও, পুনরায় ওযু কর। সে গিয়ে আবার ওযু করে এলো। তিনি আবার বললেন যাও, পুনরায় ওযু কর। একজন বললো ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! কেন আপনি তাকে ওযূ করার আদেশ দিচ্ছেন, তারপর নীরাবতা পালন করেছেন? তিনি বললেন : লোক তার লুঙ্গি-কাপড় পায়ের গিঁটের (টাখনুর নিচে) ঝুলিয়ে নামায পড়ছিলো। অথচ আল্লাহ এমন ব্যক্তির নামায গ্রহন করবেন না, যে তার লুঙ্গি-কাপড় ঝুলিয়ে দিয়ে নামায আদায় করে। হাদীসটি মুসলিমের শর্তে আবূ দাঊদ সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।
[আবূ দাঊদ হাঃ ৪০৮৬],

আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
একলোক গোডালির গিঁটের নিচে (টাখনুর নিচে) কাপড় পরিধান করে রাস্তা দিয়ে হাটছিল৷ হঠাৎ তাকে মাটির সাথে ধ্বসিয়ে দেওয়া হল৷ এভাবে কিয়ামত পর্যন্ত
লোকটি ধ্বসতেই থাকবে৷
[বুখারী]

এটি আবূ হুরাইরাহ
রাদিয়াল্লাহু আনহু
হতেও বর্ণিত হয়েছে৷
[বুখারী]



আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কিয়ামতের দিন তিন শ্রেনীর লোকের সাথে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি ফিরে তাকাবেন না এবং তাদেরকে গুনাহ থেকে পবিত্রও (মুক্ত) করবেন না। তাছাড়া তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন তিনবার কথাগুলি বললেন। আবূ যার রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! এসব বিফল মনোরথ বঞ্চিত কারা? তিনি বললেন :

(
) অহংকারবশে যে লোক লুঙ্গি-কাপড় পায়ের গিঁটের নিচে (টাখনুর নিচে) ঝুলিয়ে দেয়,

(
) উপকার করে যে লোক খোটা দেয় বা বলে বেড়ায় এবং

(
) মিথ্যা শপথ করে যে লোক তার মালসামগ্রী বিক্রয় করে। হাদীসটি ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেছেন। তার অপর এক বর্ণনায় রয়েছে : যে লোক তার লুঙ্গি হেঁচরিয়ে চলে।
[
সহীহ মুসলিম হাঃ ১০৬; তিরমিযী হাঃ ১২১১; নাসায়ী হাঃ ১৫৬৩; আবূ দাঊদ হাঃ ৪০৮৭; ইবনে মাজাহ হাঃ ২২০৮],


ইবনু উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তহবন্দ বা পায়জামা, জামা পাগড়ীই ঝুলিয়ে দেয়া হয়। যে লোক অহংকার বশত এমন কিছু ঝুলিয়ে দিবে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কিয়ামতের দিন তার প্রতি তাকাবেন না। হাদীসটি আবূ দাঊদ নাসায়ী সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।
[
সহীহ আবূ দাঊদ, তাহক্বীক্ব আলবানী হাঃ ৩৪৫০, ৪০৯৪; সহীহ আল-জামি হাঃ ২৭৭],


হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি অহংকারের বশীভূত হয়ে নিজের কাপড় অত্যন্ত নিচে [টাখনুর নিচে] পরিধান করবে, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামত দিবসে তার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না। [বুখারি শরিফ, . , পৃ. ৮৬০]


ইবনু উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অহংকারবশত যে ব্যক্তি তার বস্ত্র বা কাপড় পায়ের গিঁটের নিচে (টাখনুর নিচে) ঝুলিয়ে চলবে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কিয়ামতের দিন তার দিকে ফিরেও তাকবেন না। উম্মু সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, তাহলে মহিলারা তাদের আচঁলের ব্যাপারে কি করবে? তিনি বললেন, তারা পায়ের গিঁট থেকে এক বিঘত পরিমান ঝুলিয়ে রাখবে। উম্মু সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, এতে তো তাদের পা অনাবৃত হয়ে পড়বে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তাহলে তারা একহাত পরিমান নিচে পর্যন্ত ঝুলতে পারে, এর চাইতে বেশি যেন না ঝুলায়। হাদীসটি আবূ দাঊদ তিরমিযী বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি হাসান সহীহ।
[
সহীহ আল-জামি হাঃ ৬১৮৭; গাইয়াতুল মারাম হাঃ ৯০; সহীহ আবূ দাউদ হাঃ ৩৪৬৭, ৪০৮৫; তিরমিযী হাঃ ১৭৩১],


ইবনু উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মুখ দিয়ে গেলাম। তখন আমার লুঙ্গি-কাপড় পায়ের গিঁটের নিচে (টাখনুর নিচে) ঝুলন্ত ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : হে আবদুল্লাহ! তোমার লুঙ্গি-কাপড় উপরে উঠাও। তা আমি উপরে উঠালাম। তিনি আবার বললেন : আরো উঠাও। আমি তা আরো উঠালাম। তাঁর নির্দেশক্রমে এভাবে আমি তা উঠাতেই থাকলাম। লোকদের মধ্যে একজন বললো, তা কতদূর উঠাতে হবে? তিনি বললেন পায়ের নলার অর্ধেক পর্যন্ত।
[
মুসলিম হাঃ ২০৮৬],


ইবনু উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অহংকার বশত যে লোক তার কাপড় পায়ের গিঁটের নিচে (টাখনুর নিচে) ঝুলিয়ে দেয়, কিয়ামতের দিন তার প্রতি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ফিরে তাকাবেন না। আবূ বাকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পায়জামা তো প্রায়ই ঝুলে যায়, আমি যদি সচেতন না থাকি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন তাদের মধ্য তুমি অন্তর্ভুক্ত নও, যারা অহংকারের বর্শবর্তী হয়ে কাপড় ঝুলিয়ে রাখে। হাদীসটি ইমাম বুখারী বর্ণনা করেছেন এবং এর অংশবিশেষ মুসলিম বর্ণনা করেছেন।
[
বুখারী হাঃ ৩৬৬৫, ৫৭৮৪; মুসলিম হাঃ ২০৮৫],


আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলিমের লুঙ্গি বা পায়জামা হাঁটু পায়ের গিঁটের বা টাখনুর মাঝামাঝি জায়গা পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। তবে তা পায়ের নলার মাঝখান হতে পায়ের গিঁটের মাঝামাঝি থাকাও দোষের নয়। যে অংশটুকু পায়ের গিঁটের নিচে (টাখনুর নিচে) থাকবে তা, জাহান্নামে যাবে। অহংকার বর্শবর্তী হয়ে যে ব্যক্তি লুঙ্গি বা পায়জামা নীচের দিকে ঝুলিয়ে দেয়, কিয়ামতের দিন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তার দিকে ফিরেও তাকবেন না। আবূ দাঊদ হাদীসটি সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।
[
সহীহ আবূ দাঊদ, তাহক্বীক্ব আলবানী হাঃ ৩৪৪৯, ৪০৯৩],


হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছি, মুমিন বান্দাদের জন্য পায়জামা পরিধান করার (উত্তম সুন্দর) পদ্ধতি হলো 'নিছফ্ সাক্ব'- অর্ধহাঁটু পর্যন্ত পরিধান করা। অর্থাৎ পায়ের গোছার মধ্যখান পর্যন্ত বা অর্ধহাঁটু অথবা পায়ের গিঁটের মধ্যখান পর্যন্ত হলে গুনাহ হবে না, তা বৈধ। যা এর নিচে হবে, তা জাহান্নামে যাবে (তার পরিণাম জাহান্নাম) বর্ণনাকারী বলেন, কথাটি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিনবার বলেছেন। অতঃপর তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা ওই ব্যক্তির দিকে চোখ তুলেও তাকাবেন না, যে অহংকার বড়ত্বের বশীভূত হয়ে কাপড় হিঁচড়ে চলে। [আবু দাউদ শরিফ, ইবনে মাজাহ শরিফ]


হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.)-এর হাদিস থেকে অনুভূত হয়, মুমিনদের জন্য উত্তম হলো লুঙ্গি বা পায়জামা 'নিছফ্ সাক্ব'- অর্ধহাঁটু হওয়া। তবে পায়ের গিঁট পর্যন্ত পরিধান করা বৈধ। কিন্তু তারও নিচে পরিধান করা বৈধ নয়; বরং বড় গুনাহ, তার ওপর জাহান্নামের হুকুম এসেছে। (মারেফুল হাদিস, পৃ. ২৯০, . )


বিশর রাহিমাহুল্লাহ বললেন, একদা ইবনু হানযালিয়্যা রাদিয়াল্লাহু আনহু আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আবূ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে বললেন, আমাদের এমন কিছু কথা বলুন, আমারা যাতে লাভবান হই এবং আপনার ক্ষতি না হয়। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, খুরাইম আসাদী কি চমৎকার লোক। তার চূল যদি বেশি লম্বা না হতো এবং তার লুঙ্গি-কাপড় যদি পায়ের গিঁটের নিচে (টাখনুর নিচে) না পড়তো। কথাটি খুরাইমের কানে পৌঁছে গেল। কাঁচি নিয়ে তিনি দ্রুত কান পর্যন্ত নিজের চুল কেটে ফেললেন এবং নিজের পায়জামাটি হাটু পায়ের গিঁটের মাঝখানের অর্ধেক পর্যন্ত উঠিয়ে নিলেন। হাদীসটি আবূ দাঊদ উত্তম সনদে বর্ণনা করেছেন।
[
আবূ দাঊদ হাঃ ৪০৮৯],


আবূ জুরাই জাবির ইবনু সুলাইম রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেন,
আমি বললাম, আলাইকাস সালামু ইয়া রাসূলুল্লাহ! এভাবে দুবার বললাম। তিনি বললেন : আলাইকাস সালাম বলো না। কারণ, আলাইকাস সালাম এটা হলো মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে সালাম, বরং বল, আসসালামু আলাইকা। আমি বললাম, আপনি কি আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন : হ্যাঁ আমি সেই আল্লাহর রাসূল, কোন বিপদ-মুসিবাতে পতিত হলে তুমি যাঁর কাছে দুআ করলে তা যিনি দূর করেন, দুর্ভিক্ষে পড়ে তুমি যার কাছে দুআ করলে তোমার জন্য যিনি শস্য উৎপন্ন করেন, জনমানবহীন অথবা পানিবিহীন প্রান্তরে তোমার সাওয়ারী হারিয়ে গেলে তুমি যার কাছে দুআ করলে তোমাকে যিনি তা ফিরিয়ে দেন। জাবির ইবনু সুলাইম রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বললাম, আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বললেন : কখনো কাউকে গালি-গালাজ করো না। জাবির ইবনু সুলাইম বলেন, এরপর কখনো আযাদ, গোলাম, উট, বকরীকেও আমি গালি দেইনি। উত্তম পুন্যের কোন কাজকে তুচ্ছ মনে করো না। তোমার ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে কথা বলবে। এটিও একটি সাওয়াবের কাজ। লুঙ্গি-কাপড় তোমার হাঁটুর নীচে অর্ধাংশ পর্যন্ত তুলে রাখবে। এতো দূর উঠাতে তোমার যদি বাঁধা থাকে তাহলে অন্তত পায়ের গিঁট (টাখনু) পর্যন্ত তুলে রাখবে। লুঙ্গি-কাপড় ঝুলিয়ে দেয়া থেকে বিরত থাকবে। কারণ, এটা অহংকারের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা অহংকার পছন্দ করেন না। তোমাকে কেউ যদি গালি দেয় অথবা তোমার সম্পর্কে যা সে জানে সে বিষয়ে তোমার দুর্নাম করে, তার সম্পর্কে তুমি যা জানো, সে বিষয়ে তার দুর্নাম করো না। কারণ, এর খারাপ পরিণতি তারই উপর বর্তাবে। হাদীসটি সহীহ সনদসহকারে আবূ দাঊদ তিরমিযী বর্ণনা করেছেন।
[
তিরমিযী হাঃ ২৭২; সহীহ আল জামি হাঃ ৭৪০২; সহীহ হাদীস সিরিজ হাঃ ১৪০৩; সহীহ আবূ দাঊদ, তাহক্বীক আলবানী হাঃ ৩৪৪২, ৪০৪৮],


Translate