Thursday, December 9, 2021

আমাদের জীবনটা একটা পথচলা

 আমাদের জীবনটা একটা পথচলা…….??

আমাদের জীবনটা একটা পথ চলার মতন, এই পথে আমরা মুসাফির। আল্লাহ পৃথিবীতে আমাদের পাঠিয়েছেন, তারই কাছে ফিরে যাবো। যাওয়া সুনিশ্চিত, যেমনটাই হোক এই পথচলার দৈর্ঘ্য।
★ ★ ★
খুব অদ্ভুত বিষয় হলো, মুসাফির যেমন ট্রেনে চড়ে যাবার সময় তার গন্তব্যে যেই ট্রেন যাবে সেটা ছাড়া অন্যগুলোতে চড়ে বসার কথা নয়, আমাদেরও তেমনি উচিত নয় গন্তব্যে নিয়ে যাবে যেই কাজ তা ছাড়া অন্য কাজে নিজেদের ব্যস্ত রাখা।

জান্নাত ছিলো আমাদের আদি নিবাস, আদম আলাইহিস সালাম সেখান থেকেই এই পৃথিবীতে পা রেখেছিলেন। আমাদের ফিরে যাওয়া তখনই সার্থক হবে যেদিন জান্নাতে পা দিতে পারবো। এই কথাটা মনে রেখেই পথ চলা দরকার…..
কত মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।আমাদের অন্তরে কি দাগ কাটেনি একটুও? স্মরণ হয়নি আমাদের, একদিন আমরাও তাদের মতন চলে যাবো? অথচ আমরা তাদের ভুলে গিয়ে আবার আগের মতন খিস্তি খেউড় আর হতাশার আলাপে ডুবে গেছি, আমাদের পাওয়া না পাওয়ার দিব্যি আলাপে আনন্দ খুঁজে নিয়েছি। ভুলে যাবার কিছু কি আছে যে যতক্ষণ বেঁচে আছি ততক্ষণই ভালো আছি, এখনো সম্ভাবনা আছে সুন্দর কিছুর, অনন্তকালে মুক্তি পাওয়ার। মৃত্যুর চাইতে বড় কোন দুঃসংবাদ পাপীদের জীবনে কি আর হতে পারে?
যে কাজের, চিন্তার, কথার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই আমাকে জান্নাতের পথে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার, তাতে লেগে থাকা বোকামিই… ভুল করলে, যা ইচ্চে তাই আচরণ করলে সেগুলো আমাদের ভুল পথে নিয়ে যাবে, গন্তব্যও হবে ভুল। আমরা জাহান্নামে নিপতিত হবো….
আমাদের প্রকৃত কল্যাণ ও অকল্যাণ নিয়ে হিসেব করা উচিত আখিরাতের কথা চিন্তা করে। এটা নিশ্চিত, বিষয়টা সহজ না এবং আমাদের জন্য চিন্তা করা ও কাজ করা সচরাচর বেশ কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু যেই আখিরাত সত্য এবং সেখানকার কল্যাণ ও অকল্যাণও সত্য তার জন্য একটুখানি প্রচেষ্টা যদি করি আজকে, আল্লাহ আমাদের রাহমাত দান করবেন এবং আমরা ধীরে ধীরে নিজেদের উন্নত করতে পারব। কোন দীর্ঘযাত্রার প্রথম পদক্ষেপটাই না নিলে কেউ কখনোই কোথাও পোঁছাতে পারতাম না। এই শুরু করাটাই আসল, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ বলে আমাদের এই যাত্রাটি শুরু হয়ে যাক আজই, এক্ষুনি! ইনশা আল্লাহ…

আল্লাহ আমাদেরকে জান্নাতি হিসেবে কবুল করে নিন।

শাউওয়াল মাসের সিয়াম সম্পর্কে ২০টি মাস‘আলা

 *শাউওয়াল মাসের সিয়াম সম্পর্কে ২০টি মাস‘আলা*

??????????????
*১. শাউওয়ালের ছয় সিয়ামের ফযীলত কী?*
ইবন উসাইমীন বলেন: “রমযানের সিয়ামের পর শাউওয়ালের ছয় সিয়াম পূর্ণ বছর সিয়ামের সমান”। ফতোয়া: (২০/১৭) (দলীলের জন্য মুসলিমের হাদীস দেখুন)।

*২. শাউওয়ালের ছয়টি সিয়াম কি নারী-পুরুষ সবার জন্যই সমান?*
ইবন উসাইমীন বলেন:
“নারী-পুরুষ সবার জন্যই সমান”। ফতোয়া: (২০/১৭)

*৩. শাউওয়ালের ছয় সিয়াম রাখার পদ্ধতি কী?*
ইবন বায বলেন: “মুমিন ব্যক্তি শাউওয়ালের পুরো মাস থেকে ছয়টি দিন বাছাই করে তাতে সিয়াম রাখবে। মাসের শুরুতে অথবা মাঝে অথবা শেষে যেভাবে ইচ্ছা সিয়াম রাখার অনুমতি আছে। চাইলে পৃথকভাবে রাখতে পারে”। মাজমুউল ফতোয়া: (১৫/৩৯০)

*৪. শাউওয়ালের ছয় সিয়াম কীভাবে রাখা উত্তম?*
ইবন বায বলেন: “সিয়াম দ্রুত ও মাসের শুরুতে লাগাতার রাখাই উত্তম”। মাজমুউল ফতোয়া: (১৫/৩৯০)
ইবন উসাইমীন বলেন: “উত্তম হচ্ছে ঈদের পরেই সিয়াম রাখা এবং সেগুলো যেন হয় লাগাতার”। মাজমুউল ফতোয়া: (২০/২০)

*৫. শাউওয়ালের ছয় সিয়াম কি লাগাতার রাখা জরুরি?*
ইবন বায বলেন: “লাগাতার ও পৃথক উভয়ভাবে রাখা বৈধ”। মাজমুউল ফতোয়া: (১৫/৩৯১)

*৬. যদি কেউ নিয়মিত শাউওয়ালের ছয় সিয়াম রাখে, সেটা কি তার ওপর প্রতি বছর ওয়াজিব?*
ইবন উসাইমীন বলেন: “যদি কতক বছর সিয়াম রাখে এবং কতক বছর না রাখে কোনো সমস্যা নেই, কারণ এটা নফল, ওয়াজিব সিয়াম নয়”। মাজমুউল ফতোয়া: (২১/২০)

*৭. ছয় সিয়ামে কি রাত থেকে নিয়ত করা জরুরি?*
ইবন উসাইমীন বলেন: “ছয়টি সিয়াম রাখার জন্য ফজরের পূর্ব থেকে নিয়ত করা জরুরি যেন পূর্ণ দিন পর্যন্ত সিয়াম প্রলম্বিত হয়”। মাজমুউল ফতোয়া: (১৯/১৮৪)

*৮. কেউ বলে শাউওয়ালের ছয় সিয়াম বিদ‘আত?*
ইবন বায বলেন: “এ কথাই বাতিল”। মাজমুউল ফতোয়া: (১৫/৩৮৯)

*৯. শাউওয়ালের ছয় সিয়াম কাযা করা কি বৈধ, যদি কেউ কারণবশত ত্যাগ করে?*
ইবন বায বলেন: “শাউওয়াল চলে যাওয়ার পর তার কাযা করা বৈধ নয়, কারণ এটা সুন্নত যার সময় শেষ, কারণবশত ত্যাগ করা হোক কিংবা কারণ ছাড়াই ত্যাগ করা হোক”। মাজমুউল ফতোয়া: (১৫/৩৮৯)

*১০. শর‘ঈ কারণবশত শাউওয়ালের ছয় সিয়াম ত্যাগকারীর বিধান?*
ইবন বায বলেন: “শাউওয়ালের যতটা সিয়াম তুমি রাখবে তার সাওয়াব তুমি পাবে, তবে শর‘ঈ কারণবশত যদি সিয়াম রাখা তোমার পক্ষে সম্ভব না হয় আশা করছি তুমি পূর্ণ সাওয়াব হাসিল করবে, আর শাউওয়ালের ছুটে যাওয়া সিয়ামের কাযা নেই”। মাজমুউল ফতোয়া: (১৫/৩৯৫)

*১১. শাউওয়ালের ছয় সিয়ামের সাথে কাযা মিলিয়ে রাখার বিধান?*
শায়খ উষায়মিন রহঃ বলেছেন, একি নিয়তে ফরজ কাযা এবং শাওয়ালের নফল রাখবে না।
আগে ফরজ কাজা আদায় করবে এরপর নফল রাখবে।( ফাতওয়া আরকানুল ইসলাম)

*১২. শাউওয়ালের ছয় সিয়াম জিলকদ মাসে কাযা করা বৈধ?*
ইবন উসাইমীন বলেন:
১. যদি আমরা মনে করি, সফর অথবা অসুস্থতা অথবা নিফাসের কারণে কারো উপর পূর্ণ রমযানের কাযা ছিল, সে শাউওয়াল মাস সিয়াম রাখল এবং কাযাতেই তার পূর্ণ শাউওয়াল অতিবাহিত হল, তার পক্ষে জিলকদ মাসে ছয়টি সিয়াম রাখা বৈধ।
২. আর যদি সে অলসতা করে, এবং শাউওয়ালের কয়েকটি দিন চলে যায় যেখানে সে রমযানের কাযা করতে সক্ষম ছিল কিন্তু করে নি, অতঃপর শাউওয়ালের শেষ দিকে রমযানের কাযা করে এবং শাউওয়াল শেষে জিলকদ মাসে সিয়াম রাখে, এটা তার পক্ষে যথেষ্ট হবে না”। লিকাউল বাবিল মাফতুহ।

*১৩. মান্নত নাকি শাউওয়াল কোন সিয়াম আগে রাখবো?*
ইবন বায বলেন: “তোমার ওপর প্রথম জরুরি হচ্ছে মান্নতের সিয়াম পূর্ণ করা, অতঃপর শাউওয়ালের ছয় সিয়াম রাখা যদি তা সম্ভব হয়। কারণ, শাউওয়ালের ছয় সিয়াম মুস্তাহাব; পক্ষান্তরে মান্নতের সিয়াম ওয়াজিব”। ফতোয়া নুরুন আলাদ্দারব: (৩/১২৬১)

*১৪. শাউওয়ালের ছয় সিয়ামের জন্য কি নিয়ত জরুরি?*
ইবন উসাইমীন বলেন: “রমযান পরবর্তী শাউওয়ালের ছয় সিয়ামে যদি কেউ দিনে নিয়ত করে তাহলে সে পূর্ণ দিনের সাওয়াব পাবে না। যদি মনে করা হয় কেউ প্রথম দিন জোহরের সময় নিয়ত করে অতঃপর অবশিষ্ট পাঁচটি সিয়াম রাখে, তাহলে সে ছয়টি সিয়াম পূর্ণ পায় নি, পাঁচ দিন ও এক দিনের অর্ধেক, কারণ নিয়ত থেকেই সাওয়াব লিখা আরম্ভ হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻷﻋﻤﺎﻝ ﺑﺎﻟﻨﻴﺎﺕ ﻭﺇﻧﻤﺎ ﻟﻜﻞ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺎ ﻧﻮﻯ ».
“আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল, প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তাই যা সে নিয়ত করেছে”। এ ব্যক্তি দিনের শুরুতে সিয়াম রাখার নিয়ত করে নি অতএব তার পূর্ণ দিন সিয়াম হয় নি”। ফতোয়া নুরুন আলাদ্দারব।

*১৫. শাউওয়ালের ছয় সিয়ামের হিকমত কী?*
ইবন উসাইমীন বলেন: “শাউওয়ালের সিয়াম দ্বারা ফরয পূর্ণ করা উদ্দেশ্য, কারণ শাউওয়ালের ছয় সিয়াম ফরয সালাত পরবর্তী সুন্নতে রাতেবার মতো, যার দ্বারা ফরয সালাতে সৃষ্ট ত্রুটি পূর্ণ করা হয়”। ফতোয়া নুরুন আলাদ্দারব।

*১৬. শাউওয়ালের তিনটি বা পাঁচটি সিয়াম পালনকারী কি সাওয়াব পাবে?*
ইবন উসাইমীন বলেন: “হ্যাঁ, সংখ্যানুপাতে সাওয়াব পাবে, তবে পূর্ণ সাওয়াব পাবে না যার ওয়াদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিম্নের বাণীতে করেছেন:
« ﻣﻦ ﺻﺎﻡ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﺛﻢ ﺃﺗﺒﻌﻪ ﺳﺘّﺎً ﻣﻦ ﺷﻮﺍﻝ ﻓﻜﺄﻧﻤﺎ ﺻﺎﻡ ﺍﻟﺪﻫﺮ ».
“যে রমযানের সিয়াম রাখল অতঃপর তার পশ্চাতে শাউওয়ালের ছয়টি রাখল, সে যেন পুরো বছর সিয়াম রাখল”। দেখুন: ফতোয়া নুরুন আলাদ্দারব।

*১৭. শাউওয়ালের ছয় সিয়ামের সাথে সোম ও বৃহস্পতিবারের সিয়ামের নিয়ত করা কি বৈধ?*
ইবন উসাইমীন বলেন: “যদি শাউওয়ালের ছয় সিয়াম সোম ও বৃহস্পতিবার হয়, তাহলে নিয়তের কারণে শাউওয়াল এবং সোম ও বৃহস্পতিবারের সাওয়াব পাবে”। ফতোয়া নুরুন আলাদ্দারব।

*১৮. শাউওয়ালের ছয় সিয়াম কি রমযানের কাযা হিসেবে গণ্য করা বৈধ?*
ইবন উসাইমীন বলেন: “শাউওয়ালের ছয় সিয়ামকে রমযানের কাযা হিসেবে গণ্য করা বৈধ নয়। কারণ, ছয় সিয়াম রমযানের অনুগামী, যেমন ফরয সালাতের অনুগামী তার পরবর্তী সুন্নত”। ফতোয়া নুরুন আলাদ্দারব।

*১৯. কাফফারার সিয়ামের পূর্বে কি শাউওয়ালের ছয় সিয়াম রাখা বৈধ?*
ইবন বায বলেন: “ওয়াজিব হচ্ছে কাফফারার সিয়াম দ্রুত আদায় করা, তার পূর্বে নফল রাখা বৈধ নয়, কারণ শাউওয়ালের ছয় সিয়াম নফল আর কাফ্ফারার সিয়াম ফরয। কাফ্ফারা দ্রুত আদায় করা ওয়াজিব”। মাজমুউল ফতোয়া: (১৫/৩৯৪)

*২০. রমযানের কাযা যার ওপর রয়েছে, সে কি কাযা আদায় করার পূর্বে শাউওয়ালের ছয় সিয়াম রাখলে হাদীসে বর্ণিত সাওয়াব পাবে?*
ইবন উসাইমীন বলেন: “রমযান মাসের সিয়াম পূর্ণ করা ব্যতীত শাউওয়ালের ছয় সিয়ামের ফযীলত হাসিল হবে না”। মাজমুউল ফতোয়া: (২০/১৮)
ইবন বায বলেন: “নিয়ম হচ্ছে কাযা দিয়ে সিয়াম শুরু করা, দ্রুত কাযা আদায় করাই ওয়াজিব, যদিও ছয়টি সিয়াম ছুটে যায়, কারণ ফরয নফলের চেয়ে মুকাদ্দিম বা অগ্রাধিকার প্রাপ্ত”। মাজমুউল ফতোয়া: (১৫/৩৯৩)

সমাপ্ত

রমযান মাসের সমাপ্তি

 রমযান মাসের সমাপ্তি

ভাইয়েরা আমার! অতি শীঘ্রই রমযান মাস আমাদের নিকট থেকে বিদায় নিচ্ছে ও নতুন একটি মাস আসছে, কিন্তু রমযান মাস আমাদের জন্য সাক্ষী থাকবে। এ মাসে যে ব্যক্তি ভাল আমল করতে পেরেছে, সে যেন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে ও শুভ পরিণামের অপেক্ষায় থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ভাল আমলকারীর আমল নষ্ট করেন না। আর যে ব্যক্তি এ মাসে অন্যায় কাজ করেছে, সে যেন তার প্রভূর কাছে খালেছ তওবা করে। আল্লাহ তাআলা তওবাকারীর তওবা কবুল করেন। তিনি আমাদের জন্য এ পোশাক শেষে এমন কিছু ইবাদত নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন হয়, বৃদ্ধি পায় ঈমানী শক্তি, সমৃদ্ধ হয় আমলনামা। যেমন সদকাতুল ফিতর আদায় করা এবং  ঈদের চাঁদ উঠার পর থেকে ঈদের সালাত আদায় পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :

﴿ وَلِتُكۡمِلُواْ ٱلۡعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ١٨٥ ﴾ [البقرة: ١٨٥]

‘যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়াত দান করার দরুন আল্লাহর তাআলার মহত্ব বর্ণনা কর (তাকবীর বল)। যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পার’। {সূরা আল-বাকারা : ১৮৫}

তার পদ্ধতি হল, অধিক হারে নিম্নের এ তাকবীর পড়া :

اللهُ أكْبَرُ اللهُ أكْبَرُ لاَ إلَهَ إَلاَّ الله واللهُ أكْبَرُ اللهُ أكْبَرُ اللهُ أكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ

পুরুষগণ ঘরে, বাজারে এবং মসজিদে অর্থাৎ সকল জায়গায় আল্লাহর মহত্বের ঘোষণা দিয়ে ইবাদতের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। উক্ত তাকবীর উচ্চস্বরে বলা সুন্নত। মহিলাদের জন্য নিচু স্বরে বলা সুন্নত। যেহেতু তারা নিজেদের ও নিজেদের কণ্ঠস্বরকে গোপন করার জন্য আদিষ্ট হয়েছে। মুসলমানদের ঈদের দিনটি কত চমৎকার! পূর্ণ একমাস সিয়াম সাধনা শেষে তারা সর্বত্র তাকবীর ধ্বনি দ্বারা আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব প্রকাশ করে এবং তারা আল্লাহর তাকবীর, প্রশংসা ও একত্ববাদের ঘোষণা দিয়ে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে তোলে। তারা আল্লাহর রহমতের আশাবাদী এবং তার আজাবের ভয়ে শংকিত। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা ঈদের দিন বান্দাকে ঈদের সালাতের হুকুম দিয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়ে তার উম্মতের নারী-পুরুষ সকলকে আদেশ করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশ আল্লাহর হুকুমের মতই।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :

﴿ ۞يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَأَطِيعُواْ ٱلرَّسُولَ وَلَا تُبۡطِلُوٓاْ أَعۡمَٰلَكُمۡ ٣٣ ﴾ [محمد: ٣٣]

‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য কর। তোমাদের আমলসমূহকে নষ্ট কর না’। {মুহাম্মদ : ৩৩}

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের ঈদের সালাত আদায়ের জন্য ঈদগাহে যেতে বলেছেন। যদিও তাদের জন্য ঈদের সালাত ব্যতীত অন্যান্য সালাত ঘরে পড়াই উত্তম।

উম্মে আতিয়্যা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাতে সালাতের উদ্দেশ্যে বের হতে বলেছেন। এমনকি ঋতুবতী নারীকেও। ঋতুবতী নারীগণ সালাতে অংশগ্রহণ করবে না। ঈদগাহের এক পাশে থাকবে এবং দুআয় শরিক হবে। তিনি বলেন, আমি আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের প্রত্যেকের পর্দা করার চাদর নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, সে তার বোনের চাদর নিয়ে হলেও ঈদের সালাতে শরিক হবে।

ঈদুল ফিতরের সালাতে যাওয়ার পূর্বে খেজুর খাওয়া সুন্নত।
তিন, পাঁচ বা ততোধিক বেজোড় সংখ্যায় হিসাব করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর খেতেন। [বুখারী ও আহমদ]

ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া সুন্নত। আলী বিন আবী তালেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

العيد ماشيا. رواه الترمذي

অর্থাৎ ঈদগাহে পায় হেঁটে যাওয়া সুন্নত। [তিরমিযী]
পুরুষগণ ঈদগাহে যাওয়ার সময় সুন্দর পোশাক পরে সজ্জিত হয়ে যাবে।

বুখারীতের আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু একটি রেশমী পোশাক বাজার থেকে এনে  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এটা ক্রয় করে ঈদের দিন এবং মেহমানের উপস্থিতিতে ব্যবহার করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রেশমী কাপড়ের দরুন অসুন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন, রেশমী পোশাক ঐ ব্যক্তিদের জন্য যারা আখেরাতের কিছুই পাবে না। পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক বা স্বর্ণালঙ্কার ব্যবহার করা বৈধ নয়। যেহেতু এটা উম্মতে মুহাম্মদীর পুরুষদের জন্য হারাম। নারীগণ সাজসজ্জা ও আতর ব্যবহার ব্যতীত এবং পূর্ণ পর্দাসহ ঈদগাহে যাবে। কারণ তাদেরকে বাইরে বের হওয়ার সময় উলঙ্গপনা, সৌন্দর্য প্রদর্শন এবং সুঘ্রাণ ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। গোপনীয়তা ও পর্দার আদেশ করা হয়েছে। ঈদের সালাত একাগ্র চিত্তে আল্লাহর ভয়-ভীতি সহকারে আদায় করবে। বেশী বেশী করে আল্লাহর জিকির করবে ও দোয়া পড়বে। তার রহমতের আশা ও আজাবের ভয় করবে। সকলে একত্রিত হয়ে আল্লাহকে ডাকার মধ্যে অধিক মর্যাদা আছে। যেহেতু মানুষের মধ্যে কেউ অধিক পুণ্যবান, কেউ আল্লাহ ভীরু, আবার কেউ মধ্যম স্তরের। বিধায় সকলে একত্রিত হয়ে দোয়া ও কান্নাকাটি করা অধিক লাভজনক ও আল্লাহর সন্তুষ্টির কারণ।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :

﴿ ٱنظُرۡ كَيۡفَ فَضَّلۡنَا بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖۚ وَلَلۡأٓخِرَةُ أَكۡبَرُ دَرَجَٰتٖ وَأَكۡبَرُ تَفۡضِيلٗا ٢١ ﴾ [الاسراء: ٢١]

‘হে নবী, আপনি লক্ষ্য করুন, আমি তাদের কতককে কতকের ওপর সম্মান দান করেছি। আর যে পরকালে মর্যাদা লাভ করে সে প্রকৃত মর্যাদা লাভকারী’। {সূরা বানী ইসরাঈল : ২১}

পোশাক আগনে আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করবে। কেননা তিনি বান্দার জন্য সালাত, সিয়াম, কুরআন তেলাওয়াত, সদকা ইত্যাদি ইবাদত সহজ করে দিয়েছেন। ইবাদত করার তাওফীক পাওয়া সবচেয়ে বড় নিয়ামত। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :

﴿ قُلۡ بِفَضۡلِ ٱللَّهِ وَبِرَحۡمَتِهِۦ فَبِذَٰلِكَ فَلۡيَفۡرَحُواْ هُوَ خَيۡرٞ مِّمَّا يَجۡمَعُونَ ٥٨ ﴾ [يونس: ٥٨]

‘হে নবী! আপনি বলুন, যারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা প্রাপ্ত হয়েছে, তাদরে এতে খুশি হওয়া উচিৎ। মানুষ যে সম্পদ অর্জন করে, এটা তা থেকে অধিক উত্তম’। {ইঊনুস : ৫৮}

যেহেতু আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় রমযানের সিয়াম ও রাত জাগরণ গুনাহ মাফের উপায়। সুতরাং মুমিনগণ রমযান মাস ফেলে খুশ হয়। আর দূর্বল ঈমানদার রমযান মাস ফেলে নারাজ হয় ও সে সিয়াম পালনকে কষ্টকর মনে করে।

হে আমার ভাই সকল! রমযান মাস শেষ হয়ে গেল। কিন্তু মুমিনের আমল তো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শেষ হবে না।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :

﴿ وَٱعۡبُدۡ رَبَّكَ حَتَّىٰ يَأۡتِيَكَ ٱلۡيَقِينُ ٩٩ ﴾ [الحجر: ٩٩]

‘আপনি আপনার প্রভূর ইবাদত করুন, আপনার মৃত্যু আসা পর্যন্ত’। {আল-হিজর : ৯৯}

তিনি আরো ইরশাদ করেন :

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسۡلِمُونَ ١٠٢ ﴾ [ال عمران: ١٠٢]

‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে যথাযথ ভয় কর। তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না’। {আলে-ইমরান : ১০৬}

রাসূলুল্লা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :

মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে,তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়। এখানে মৃত্যুকে মানুষের আমলের সমাপ্তি ধরা হয়েছে। সুতরাং মানুষ যত দিন বেঁচে থাকবে ততদিন রমযান ঘুরে ঘুরে আসতে থাকবে।

আবূ আইউব আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

যে ব্যক্তি রমজানে সিয়াম পালন করেব, অতঃপর শাওয়ালের আরো ছয়টি সিয়াম পালন করবে, সে সারা বছর সিয়াম রাখার সমতুল্য সওয়াব প্রাপ্ত হবে। এ ছাড়া প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়াম পালন করা। [মুসলিম]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
প্রতি মাসে তিনটি এবং এক রমযান থেকে অন্য রমযান সিয়াম পালন করা সারা বছর সিয়াম পালনের সমান। [মুসলিম ও আহমদ]

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমাকে আমার বন্ধু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন। এক. প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম পালন করবে। অর্থাৎ আইয়্যামে বিজ বা চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে সিয়াম পালন করবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূজর কে বললেন, হে আবূ জর! তুমি যখন প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম পালন করবে তখন তা ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে পালন করবে। [আহমদ ও নাসায়ী]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আরাফার দিনের সিয়ামের ফজিলত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি উত্তর দিলেন, তা এক বছরের আগের গুনাহ ও এক বছরের পরের গুনাহের কাফ্ফারা স্বরূপ। আশুরার সিয়াম পূর্বের এক বছরের গুনাহ মাফ মোচন করে দেয়। প্রতি সোমবারের সিয়াম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি বলেন, সোমবার আমি জন্মগ্রহণ করেছি ও সোমবার নবুওয়্যাত প্রাপ্ত হয়েছি এবং সোমবার আমার উপর কুরআন নাযিল করা হয়েছে। [মুসলিম]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জিজ্ঞাসা করা হল, পোশাক পরে কোন মাসে সিয়াম পালন উত্তম? তিনি উত্তর দিলেন, মুহাররম মাসের সিয়াম। [মুসলিম]

বুখারী ও মুসলিমে আছে, আয়েশা রাদিয়াল্লাহ আনহা বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমযান ছাড়া অন্য কোন সময় পূর্ণ একম মাস সিয়াম পালন করতে দেখিনি।

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে অপর বর্ণনায় আছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সপ্তাহে সোমরাব ও বৃহস্পতিবার সিয়াম পালন করতেন।

উসামা বিন জায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু ও আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
বনী আদমের আমল সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। আমি পছন্দ করি আমার আমল সিয়াম অবস্থায় পেশ করা হোক। [তিরমিযী]

রমযান মাস শেষ হওয়ার দ্বারা রাত জাগরণ শেষ হয় না, বরং বছরের প্রত্যেক রাতে নফল সালাত ও তাহাজ্জুদ পড়ার মাধ্যমে রাত জাগরণ করা উচিৎ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা বছর রাতে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন।

বুখারীতে মুগীরা বিন শুবা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে এত অধিক নফল সালাত আদায় করতেন যে, তার পা মুবারক ফুলে যেত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, আমি কি শুকর গুজার বান্দা হব না?

আব্দুল্লাহ বিন সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
হে লোক সকল! তোমরা অধিক হারে সালাম দিবে। অভাবগ্রস্তদের খাদ্য খাওয়াবে। আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখবে। যখন মানুষ ঘুমে খাকে তখন রাতে নফল সালাত আদায় করবে। তাহলে তোমরা শান্তির স্থান জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। [তিরমিযী]

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
সর্বোত্তম সালাত হল, ফরজ সালাতের পর রাতের তাহাজ্জুদ সালাত। [মুসলিম]

আর রাতের সালাতে সব ধরণের নফল এবং বিতর অন্তর্ভুক্ত। রাতের সালাত দু’ দু’ রাকাত করে আদায় করতে থাকবে। সময় শেষ হওয়ার ভয় হলে এক রাকাত মিলিয়ে বিতর পড়ে নেবে।

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রতি রাতের এক তৃতীয়াংশ বাকী থাকতে অর্থাৎ শেষ রাতে প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, আমার কাছে চাওয়ার মত কে আছ? আমি তাকে দান করব। কে আছে আমার নিকট প্রার্থনা করবে? আমি তার প্রার্থনা কবুল করব। কে আছে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব। [বুখারী ও মুসলিম]

দৈনিক ১২ রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ আদায় করবে। চার রাকাত জোহরের পূর্বে ও দু’ রাকাত পরে। দু’ রাকাত মাগরিবের পর। দু’ রাকাত এশার পর ও  দু’রাকাত ফজরের পূর্বে।

উম্মে হাবীবা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট শুনেছি,
যে মুসলমান বান্দা বারো রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদা সালাত প্রতিদিন আদায় করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করেন। [মুসলিম]

প্রতি ফরজ সালাত আদায়ের পর কিছু সময় জিকির করবে। যেহেতু জিকির করতে আল্লাহ হুকুম করেছেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :

﴿ فَإِذَا قَضَيۡتُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ قِيَٰمٗا وَقُعُودٗا وَعَلَىٰ جُنُوبِكُمۡۚ  ﴾ [النساء: ١٠٣]

‘অতঃপর যখন তোমরা সালাত সম্পন্ন কর, তখন দণ্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিকির করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি যখন ফরজ সালাত থেকে সালাম ফিরাতেন, তখন তিনবার ইস্তেগফার করতেন। অতঃপর এ দুআ পড়তেন।

اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ ذَا الْجَلاَلِ وَالْإِكْرَامِ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন,
যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর ৩৩ বার سبحان الله ও ৩৩ বার الحمد لله ও ৩৩ বার الله أكبر মোট ৯৯ বার। সর্বশেষ ১০০ পূর্ণ করতে বলবে :

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.

তাহলে তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও আল্লাহ তা মাফ করে দিবেন। [মুসলিম]

সুতরাং হে আমার ভাইগণ! আপনারা অধিক পুণ্যের কাজ করুন। পাপ থেকে বেচে থাকুন। যাতে আপনাদের পার্থিব জীবন সুখময় হয়। মৃত্যুর পর চিরস্থায়ী শান্তির অধিকারী হতে পারেন।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :

﴿ مَنۡ عَمِلَ صَٰلِحٗا مِّن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤۡمِنٞ فَلَنُحۡيِيَنَّهُۥ حَيَوٰةٗ طَيِّبَةٗۖ وَلَنَجۡزِيَنَّهُمۡ أَجۡرَهُم بِأَحۡسَنِ مَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ٩٧ ﴾ [النحل: ٩٧]

‘পুরুষ ও নারীদের মধ্য থেকে যে ঈমান সহ সৎকর্ম করে, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে কর্মের উত্তম পুরস্কার দেব’। {আন-নাহল : ৯৭}

হে আল্লাহ! আপনি আমাদের ঈমানের উপর মজবুত রাখুন এবং আমলে সালেহ করার তাওফীক দিন। হায়াতে তায়্যিবাহ দান করুন। আমাদেরকে পুণ্যবান ব্যক্তির সঙ্গী বানান। সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য, যিনি বিশ্ব জগতের পালনকর্তা। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তার পরিবার, সাহাবা ও সকল সৎকর্মশীল ব্যক্তির উপর। আল্লাহ তাআলা আমাদের ইখলাছের সাথে আমল করার, ঈমান ও সৎ আমলের উপর অটল থাকার তাওফীক দিন ও সৎ কর্মশীলদের অন্তভুক্ত করুন। আমীন


সমাপ্ত

লেখক : মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমিন

অনুবাদক: মোঃ সানাউল্লাহ নাজির আহমদ 

সম্পাদনা : আলী হাসান তৈয়ব

সূত্র : ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদিআরব

আল্লাহর উপর ভরসা

 

আল্লাহর উপর ভরসা

অনুবাদকঃ শাইখ মুহা: আবদুল্লাহ আল কাফী

 

আল্লাহ্ তাআলার উপর ভরসা ইসলামে একটি বিরাট বিষয়। এর গুরুত্ব ও মর্যাদা অপরিসীম।

আল্লাহর প্রতি ভরসা ছাড়া কোন বান্দাই কোন মূহুর্ত অতিবাহিত করতে পারে না। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে। কেননা এর মাধ্যমে আল্লাহর তাওহীদের সাথে সম্পর্ক গাড় ও গভীর হয়।

আল্লাহ্ বলেন:
وَتَوَكَّلْ عَلَى الْحَيِّ الَّذِي لَا يَمُوتُ
“আর ভরসা কর সেই জীবিত সত্বার (আল্লাহর) উপর, যিনি কখনো মৃত্যু বরণ করবেন না।” [সূরা ফুরক্বান-৫৮]

এই আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে তাঁর উপর ভরসা করার আদেশ করেছেন। তিনি ছাড়া অন্য কারো নিকট নিজেকে পেশ করবেন না। কেননা তিনি চিরঞ্জীব, তাঁর মৃত্যু নেই। তিনি পরাক্রমশালী, কোন কিছুই তাঁকে পরাজিত করতে পারে না। যে ব্যক্তিই তাঁর উপর নির্ভর করবে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট হবেন- তাকে সাহায্য ও সমর্থন করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো উপর ভরসা করবে, সে তো এমন কিছুর উপর ভরসা করল যে মৃত্যু বরণ করবে, বিলীন ও ক্ষয় হয়ে যাবে। দুর্বলতা ও অপারগতা তাকে চারদিক থেকে ঘিরে রয়েছে। এ কারণে তার প্রতি ভরসা কারীর আবেদন বিনষ্ট হয়ে যায়, সে হয়ে যায় দিশেহারা।

এ থেকেই বুঝা যায় আল্লাহর উপর ভরসা করার ফযীলত ও মর্যাদা কি?! তাঁর সাথে হৃদয়ের সম্পর্ককে গভীর করার গুরুত্ব কতটুকু?!

‘তাওয়াক্কুল আল্লাহ বা আল্লাহর উপর ভরসা করার অর্থ:

দুনিয়া-আখেরাতের যাবতীয় বিষয়ের কল্যাণ লাভ ও ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য সঠিক ভাবে অন্তর থেকে আল্লাহর উপর নির্ভর করা। বান্দা তার প্রতিটি বিষয় আল্লাহর উপর সোপর্দ করবে। ঈমানে এই দৃঢ়তা আনবে যে, দান করা না করা, উপকার-অপকার একমাত্র তিনি ছাড়া আর কারো অধিকারে নেই।
আল্লাহ্ তাআলা মুমিন বান্দাদেরকে তাওয়াক্কুলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে পবিত্র কুরআনে অনেক আয়াত উল্লেখ করেছেন। তার মর্যাদা ও ফলাফল উল্লেখ করেছন। তন্মধ্যে:
আল্লাহ্ বলেন:
وَعَلَى اللَّهِ فَتَوَكَّلُوا إِنْ كُنتُمْ مُؤْمِنِينَ
“তোমরা যদি মুমিন হয়ে থাকে তবে আল্লাহর উপরেই ভরসা কর।” [সূরা মায়েদা- ২৩]
তিনি আরও বলেন:
وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلْ الْمُؤْمِنُونَ
“মু’মিনগণ যেন একমাত্র আল্লাহর উপরেই ভরসা করে।” [সূরা তওবা- ৫১]
তিনি আরও এরশাদ করেন:
وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ
“যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করবে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হবেন।” [সূরা ত্বলাক- ৩]
তিনি আরও বলেন:
فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ
“যখন তুমি দৃঢ়ভাবে ইচ্ছা করবে, তখন আল্লাহর উপর ভরসা করবে। নিশ্চয় আল্লাহ্ ভরসা কারীদের ভালবাসেন।” [সূরা আল ইমরান- ১৫৯]

হাদীছ গ্রন্থ সমূহেও তাওয়াক্কুলের গুরুত্ব ও তার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। ওমার বিন খাত্তাব (রা:) হতে বর্ণিত।

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা যদি সঠিকভাবে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করতে তবে তিনি তোমাদেরকে রিযিক দান করতেন- যেমন পাখিকে রিযিক দান করে থাকেন- তারা খালি পেটে সকালে বের হয় এবং পেট ভর্তি হয়ে রাতে ফিরে আসে।” (আহমাদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনু মাজাহ্)

হাফেয ইবনু রজব (র:) বলেন, তাওয়াক্কুলের ক্ষেত্রে এ হাদীছটিই হল মূল। আর তাওয়াক্কুলই হল জীবিকা পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন,
وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ
“আর যে আল্লাহ্‌কে ভয় করে, আল্লাহ্ তার জন্যে নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট।” [সূরা ত্বালাক-২,৩]

জাবের বিন আবদুল্লাহ্ (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেন, “কোন প্রাণী তার নির্দিষ্ট রিযিক পরিপূর্ণরূপে না পাওয়া পর্যন্ত সে মৃত্যু বরণ করবে না। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয় কর এবং রিযিক অনুসন্ধানের জন্য সুন্দর (বৈধ) পন্থা অবলম্বন কর। যা তোমাদের জন্য হালাল করেছেন তা গ্রহণ কর,আর যা হারাম করেছেন তা পরিত্যাগ কর।” (ইবনু মাজাহ্, হাকেম ও ইবনু হিব্বান)

ওমার (রা:) বলেন, “বান্দা এবং তার রিযিকের মধ্যে একটি পর্দা রয়েছে। সে যদি অল্পে তুষ্ট হয় এবং তার আত্মা সন্তুষ্ট হয় তবে তার রিযিক তার কাছে সহজে আগমন করবে। আর যদি সীমালঙ্ঘন করে এবং উক্ত পর্দাকে ফেড়ে ফেলে, তবে তার নির্দিষ্ট রিযিকের অতিরিক্ত কোন কিছু তার নিকট পৌঁছবে না।”
জনৈক বিদ্বান বলেন: “তুমি আল্লাহর উপর ভরসা কর, রিযিক তোমার কাছে ক্লান্তি ও অতিরিক্ত কষ্ট ছাড়া সহজেই এসে যাবে।”

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা স্মরণ রাখতে হবে যে, বিশুদ্ধভাবে আল্লাহর উপর ভরসার সাথে আবশ্যক হল, জীবিকার উপায়-উপকরণ অনুসন্ধান করা ও কাজ করা- ভরসা করে বসে না থাকা।

আল্লাহ্ তা’আলা বলেন,
وَاتَّقُوا اللَّهَ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلْ الْمُؤْمِنُونَ
“তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আর মু’মিনগণ যেন আল্লাহর উপরই ভরসা করে।” [সূরা মায়েদা-১১]

এখানে ভরসা করার সাথে সাথে আল্লাহকে ভয় করার কথা বলা হয়েছে। আর তা নির্দেশিত যাবতীয় বিষয়ের উপকরণকে শামিল করছে। সুতরাং নির্দেশিত উপকরণ অবলম্বন না করে বা কাজ না করে শুধু ভরসা করে বসে থাকা বিরাট ধরণের অপারগতা- যদিও এতে তাওয়াক্কুল পাওয়া যায়। সুতরাং কোন বান্দার জন্য উচিত নয় যে,ভরসাকে অপারগতায় রূপান্তরিত করবে অথবা অপারগতাকে ভরসায় রূপান্তরিত করবে। বরং যে সমস্ত উপকরণ সে অবলম্বন করবে তার মধ্যে ভরসাও শামিল থাকবে।

এ অর্থে একটি হাদীছও বর্ণিত হয়েছে। আনাস (রা:) হতে বর্ণিত,তিনি বলেন: জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল,হে আল্লাহর রাসূল! উটটিকে বাঁধার পর আল্লাহর উপর ভরসা করব? নাকি আল্লাহর উপর ভরসা করে (না বেঁধেই) ছেড়ে দিব? তিনি (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: “আগে তা বেঁধে দাও,তারপর আল্লাহর উপর ভরসা কর।” (তিরমিযী)

এক্ষেত্রে একদল লোক বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে (প্রয়োজনীয় উপকরণ অবলম্বন না করে, কাজ না করে,পরিশ্রম না করে) নিজেদের অপারগতাকে ভরসা ভেবেছে, আর তাকেই ওযর বা ছুতা হিসেবে গ্রহণ করেছে। ফলে নিজের এবং পরিবারের অনেক অধিকার- ওয়াজিব বিষয় বিনষ্ট করেছে। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: “কোন ব্যক্তির পাপী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, যাদের খরচ বহন করা তার উপর আবশ্যক তাদেরকে বিনষ্ট করা তথা তাদেরকে প্রয়োজনীয় খরচ না দেয়া।” (আবু দাউদ)
এদের উদ্দেশ্য করে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: “শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর নিকট দুর্বল মুমিনের চাইতে অধিক উত্তম ও বেশী প্রিয়। অবশ্য উভয়ের মধ্যে কল্যাণ রয়েছে। উপকারী বিষয়ের প্রতি আগ্রহী হবে এবং তা হাসিল করার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে,অপারগতা প্রকাশ করবে না। যদি কোন ক্ষতি হয়ে যায়,তবে কখনই এরূপ বলবে না যে, ‘যদি’ আমি এটা করতাম তবে এরূপ এরূপ হত। বরং তখন বলবে, আল্লাহ্ যা নির্ধারণ করেছেন এবং তিনি যা চান তাই করেন। কেননা ‘যদি’শয়তানের দরজা উন্মুক্ত করে।” (ছহীহ্ মুসলিম)

উল্লেখ্য যে, ভরসার ক্ষেত্রে মানুষের দুর্বলতা একমাত্র তাক্বদীরের প্রতি ঈমানের দুর্বলতা থেকেই সৃষ্টি হয়। কেননা মানুষ যখন তার যাবতীয় বিষয় আল্লাহর কাছে সোপর্দ করে, আর তিনি যা ফায়সালা করেন তাতে সন্তুষ্ট হয়ে যায় ও তা পসন্দ করে, তাহলে সে প্রকৃত ভাবে তাওয়াক্কুল বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু সে যদি আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো উপর ভরসা করে এবং তার সাথেই স্বীয় হৃদয়কে সংশ্লিষ্ট করে, তবে নি:সন্দেহে সে লাঞ্ছিত হবে, স্বীয় মহান রব থেকে উদাসীন।

ইবনু মাসঊদ (রা:) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: “কোন ব্যক্তি যদি অভাবী হয়, অত:পর তার অভাবের কথা মানুষের কাছে পেশ করে, তবে তার অভাব দুর করা হবে না। আর যে ব্যক্তি তা আল্লাহর কাছে পেশ করে, অনতিবিলম্বে আল্লাহ্ তাকে অভাব মুক্ত করে দিবেন।” (আবু দাউদ )

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়া (র:) বলেন: কোন মাখলুকের কাছে যে ব্যক্তি আশা করবে এবং তার উপর ভরসা করবে, তার উক্ত ধারণা নি:সন্দেহে বাতিল হবে এবং সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর সে হবে মুশরিক।

আল্লাহ্ বলেন,
وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَكَأَنَّمَا خَرَّ مِنْ السَّمَاءِ فَتَخْطَفُهُ الطَّيْرُ أَوْ تَهْوِي بِهِ الرِّيحُ فِي مَكَانٍ سَحِيقٍ
“আর যে কেউ আল্লাহর সাথে শরীক করে সে যেন আকাশ থেকে আছড়ে পড়ল, অত:পর পাখি তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল, কিংবা বায়ু তাকে উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে এক দূরবর্তী স্থানে নিক্ষেপ করল।” (সূরা হাজ্জ-৩১)

শায়খ সুলায়মান বিন আবদুল্লাহ্ বিন আবদুল ওয়াহাব (র:) বলেন: তাওয়াক্কুল দুপ্রকার:

১) এমন বিষয়ে তাওয়াক্কুল করা- যে ব্যাপারে আল্লাহ্ ছাড়া কারো কোন ক্ষমতা নেই। যেমন, কোন কোন মানুষ মৃত ব্যক্তি এবং তাগুতের উপর ভরসা করে এই আশায় যে, তারা তাদেরকে সাহায্য করবে, তাদের জীবিকার ব্যবস্থা করবে, তাদের জন্য শাফাআত করবে… এগুলো সবই বড় শিরক যা ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে বের করে দিবে।

২) বাহ্যিক উপায়-উপকরণ ও বস্তুর উপর ভরসা করা। যেমন কোন আমীর বা বাদশার উপর ভরসা করা এমন বিষয়ে যা বাস্তবায়নের ক্ষমতা আল্লাহ্ তাকে দিয়েছেন। যেমন চাকরীর ব্যবস্থা করা বা নির্দিষ্ট কোন বিপদ দূর করা। এটা ছোট শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

বৈধ ভরসা হলঃ

একজন মানুষ অপরজনকে তার পক্ষ থেকে কোন কাজ আদায় করার দায়িত্ব দেয়া। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি উক্ত বিষয়ে সামর্থ্য রাখবে। এক্ষেত্রেও সে ব্যক্তির উপর পুরাপুরি নির্ভর করবে না। বরং উক্ত বিষয় বাস্তবায়নের জন্য সে নিজে এবং ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করবে।

তাওয়াক্কুলের বাস্তবায়ন এবং বৈধ উপায়-উপকরণ অবলম্বন করার সাথে সাথে হৃদয়কে আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত করার জন্য এ উদাহরণটি উল্লেখযোগ্য: রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হিজরতের সময় মদিনার দিকে যাওয়ার জন্য মক্কা থেকে উল্টা দিকে গমন করেন। আর তা ছিল রাতের আঁধারে। অত:পর তাঁরা ‘ছওর’নামক গুহায় আত্মগোপন করেন। আবু বকর (রা:) নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর হিজরতের ঘটনা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, আমরা যখন ‘গারে ছওরে’ ছিলাম তখন আমি উপর দিকে দৃষ্টি দিয়ে দেখলাম মুশরেকদের পা আমাদের মাথার ঠিক উপরেই। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তাদের কেউ যদি নিজের পায়ের দিকে তাকায় তাহলেই আমাদেরকে দেখতে পাবে। তখন তিনি আমাকে বললেন, “আমাদের দুজন সম্পর্কে তোমার ধারণা কি হে আবু বকর! আল্লাহ্ আমাদের তৃতীয় জন। অর্থাৎ আমাদের সাহায্যকারী।” (বুখারী ও মুসলিম)

যে কথা পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ এভাবে বর্ণনা করেছেন,
إِذْ أَخْرَجَهُ الَّذِينَ كَفَرُوا ثَانِيَ اثْنَيْنِ إِذْ هُمَا فِي الْغَارِ إِذْ يَقُولُ لِصَاحِبِهِ لَا تَحْزَنْ إِنَّ اللَّهَ مَعَنَا
“যখন তাকে কাফেররা বহিষ্কার করেছিল, তিনি ছিলেন দুজনের একজন, যখন তারা গুহার মধ্যে ছিলেন। তখন তিনি আপন সঙ্গীকে বললেন, বিষন্ন হয়ো না, আল্লাহ্ আমাদের সাথে আছেন।” (সূরা তওবাহ্-৪০)
সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করবে,সে অকল্পনীয় ভাবে তার মর্যাদা লাভ করবে,তার ফলাফল ভোগ করবে। আর সে হবে সর্বাধিক উন্মুক্ত হৃদয়ের মানুষ,সবচাইতে সুখী মানুষ।

আল্লাহ্ বলেন,
وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ
“যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট।” (সূরা ত্বালাক-৩)

আল্লাহ্ আমাদেরকে তাঁর প্রতি সঠিকভাবে ভরসা করার তাওফীক দান করুন। আমীন॥

তাস বা দাবা খেলা কি ইসলামের দৃষ্টি তে জায়েজ

 প্রশ্নঃ তাস বা দাবা খেলা কি ইসলামের দৃষ্টি তে জায়েজ ?

উত্তরঃ উলামাগন স্পষ্ট ভাবে ঘোষনা করেছেন যে, উভয় প্রকার খেলাই হারাম। যেমন আমাদের শেইখ এবং উস্তাদগনও তা উল্লেখ করেছেন। তাদের এই সিদ্ধান্তের কারন এই যে, যে কোন খেলা খেলাতে মানুষের মাঝে উদাস্য ও আল্লাহর জিকির এবং ইবাদতে বাধা সৃস্টি করে। মানে খেলা তাকে নেশার মত আকৃষ্ট করে। আবার অনেক সময় খেলাকে কেন্দ্র করে উভয় দলের খেলোয়াড়দের মাঝে শত্রুতার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। যা মুসলিম সমাজের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করে। আবার অনেক সময় খেলোয়াড়দের উপর বাজি ধরা হয়, যা শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম। শরিয়ত শুধু ৩টি প্রতিযোগিতার অনুমতি দিয়েছে, আর তা হলঃ তীর, ঘোড়া, উট এর প্রতিযোগিতা।

অপর দিকে যারা তাস বা দাবা খেলায় মত্ত থাকে,তারা নিজেরাই বুঝতে পারছে যে তারা কিভাবে সময়ের অপচয় করছে। যেখানে কোন আল্লাহভীতির কিছু নেই এবং দুনিয়াবিও কোন সাফল্য নেই!

অনেকে বলে থাকে, এই সব খেলা দিয়ে মানুষের ব্রেইন খুলে ও বুদ্ধি বাড়ে!!
এই কথার কোন ভিত্তি নেই। কারন সে তাঁর ব্রেইন কে ঐ খেলার সাথেই সীমাবদ্ধ করে রাখছে, যা অন্যের উপকারে আসছে না! তাই সকল মুমিনদের উচিত সময় কে মূল্য দিয়ে তা আল্লাহর কাজে লাগানো কে। এবং এই সব খেলা থেকে নিজেকে দূরে রাখা।

মূলঃ ফতোওয়া, আস-ই’লাতুম মুহিম্মা
শেইখ সালেহ আল উসাইমীন (রহ)
সাবেক সদস্য, সৌদী সর্বোচ্চ ফতোওয়া বিভাগ এবং উচ্চ উলামা পরিষদ।

ফাতাওয়া তে, এখানে মূলত শুধু দাবা কে খাছ করা হয়নি ! সমস্ত খেলার বিধান কেই শামিল করা হয়েছে !

উলামায়ে কেরামকে যারা অবজ্ঞা করে তারা মূলত: ইসলামকেই অবজ্ঞা করে। দেখুন সাহাবায়ে কেরামের ফতোয়া: আলী (রা.) বলেছেন, দাবা হচ্ছে অনারবদের জুয়া। ইবনে ওমারকে দাবা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ওটা পাশা খেলা থেকেও নিকৃষ্ট। আবু মূসা আশআরী বলেন, গুনাহগার ছাড়া কেউ দাবা খেলে না। উবাইদুল্লাহ বিন জা’ফার বলেন, আবু সাঈদ খুদরী রা. দাবা খেলাকে ঘৃণা করতেন। তাবেঈ ইবনে শিহাব যুহরীকে দাবা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এটা বাতিল বিষয়, আর আল্লাহ বাতিল পছন্দ করেন না।

ইমাম মালেক মুয়াত্তায় বলেন, দাবা হচ্ছে পাশা খেলার অন্তর্ভুক্ত। বাইহাকী ৬০১৬।

ইবনে কাসীর এর সংশোধিত তাফসিরেঃ
সুরা মায়িদার ৯১ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, রসুল (সঃ) বলেছেন
“যে ব্যাক্তি চওসর খেলা করল যে যেন শুকরের মাংস ও রক্ত দ্বারা নিজ হাত রাবগিয়ে নিল”
মুসলিম।

ঠিক পরের লাইনে আছে, “আর দাবা সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেছেন যে, ওটাতো চওসর থেকেও খারাপ, এটা জুয়া ও পাশার মত।।

ইন্টারনেটে দাওয়াতীকাজের ১৬টি পদ্ধতি

 

ইন্টারনেটে দাওয়াতীকাজের ১৬টি পদ্ধতিঃ

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

সম্মানিত বন্ধুগণ, প্রত্যেক মুসলমানের জন্য
দ্বীন প্রচার করা আবশ্যক। প্রত্যেকেই তার
জ্ঞান, যোগ্যতা ও সাধ্যানুযায়ী দ্বীন প্রচারে
অংশ গ্রহণ করবেন। দ্বীন প্রচার করার জন্য
আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম আমাদেরকে আদেশ করেছেন এবং এ
জন্য অগণিত সোয়াবের কথা কুরআন-হাদীসে
বর্ণিত হয়েছে। যেমন, আল্লাহ তায়ালা বলেন:
“তোমার রবের পথে ডাক হেকমত এবং উত্তম
উপদেশের মধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর
সবোর্ত্তম পন্থায়।” (আন নাহাল: ১২৫)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমার
পক্ষ থেকে একটি আয়াত হলেও পৌঁছিয়ে
দাও।” (সুনান তিরমিযী, সহীহ)
আল্লাহর দ্বীনকে প্রচার করার মর্যাদা অনেক
বেশি। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন:
”যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে
এবং বলে, আমি মুসলমানদের অন্তর্ভূক্ত, তার কথার
চেয়েউত্তম কথা আর কার হতে পারে??” (হা মীম
সাজদাহ: ৩৩)
“তোমার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা যদি একটি মানুষকেও
হেদায়াত দেন তবে তা তোমার জন্য অনেক লাল
উঁট পাওয়া থেকে উত্তম।” (সহীহ বুখারী)
”যে ব্যক্তি মানুষকে হেদায়েতের দিকে আহবান
করে সে ব্যক্তি ওই সকল লোকের মতই
সোয়াবের অধিকারী হয় যারা তা অনুসরণ করে।
কিন্তু যারা অনুসরণ করে তাদের সোওয়াবের
কোন ঘাটতি হবে না।” (সহীহ মুসলিম)
ইন্টারনেটে দাওয়াতী কাজ করার পদ্ধতি সম্পর্কে
অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন। দাওয়াতী কাজে
আগ্রহী অনেক ভাই নেট ব্যবহার করে কিন্তু
পদ্ধতি না জানার কারণে তা যথার্থভাবে দাওয়াতের
কাজে ব্যবহার করতে পারে না। তাদের জন্য আমার
সামান্য অভিজ্ঞতার আলোকে অতি সংক্ষেপে ১৬টি
পয়েন্ট তুলে ধরলাম। যথা:
১) ভাল মানের সহীহ আকীদা ভিত্তিক ওয়েব সাইট
প্রচার ও প্রসার করা।
২) ইসলামের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিষয় ভিত্তিক
লেখা বা লেখার লিংক প্রচার। যেমন, হজ্জ, সিয়াম,
মুহাররম ইত্যাদি বিষয়ে।
৩) কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক ভাল মানের ভিডিও ইউটিউব,
ফেসবুক বা অন্যান্য ভিডিও সাইটে আপলোড করা।
৪) নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে একাধিক লিংক একত্রিত করে
তা প্রচার করা।
৫) ইন্টারনেটে ফেসুবক, টুইটার ইত্যাদি মাধ্যমে
মানুষকে কোন বিশেষ আমল সম্পর্কে স্মরণ
করিয়ে দেয়া। যেমন, মুহাররমের ১০ তারিখের
রোযা, আরাফাতের রোযা, আইয়ামে বিয়ের
রোযা, বিশেষ দুয়া ইত্যাদি।
৬) সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন বিদআত ও শিরক ও অন্যায়
সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। যেমন, কবর
পুজার ভয়াবহতা, তাবিজ-কবজ, রিং, সুতা ব্যাবহার, মীলাদ,
ওরস পালন ইত্যাদি।
৭) বিভিন্ন ব্লগে ইসলাম নিয়ে লেখা-লেখি করা।
৮) নিজস্ব ওয়েব সাইট তৈরি করে তাতে লেখা
প্রকাশ করা।
৯) অন্য কোন ওয়েব সাইটের এডমিন হয়ে তাতে
লেখা প্রকাশ করা।
১০) ফেসবুকে নিজস্ব টাইমলাইনে, আলাদা পেজ বা
গ্রুপ তৈরি করে তাতে ইসলাম বিষয়ক লেখা বা ছবি তৈরি
করে তা পাবলিশ করা। (তবে প্রাণীর ছবি প্রচার করা
থেকে বিরত থাকা উচিৎ)।
১১) ফেসবুকে অন্যের পরিচালিত ইসলামিক পেজ
এর এডমিন হয়ে বা কোন ইসলামিক গ্রুপ এ যুক্ত
হয়ে সেখানে ইসলাম বিষয়ে লেখা।
১২) ফেসবুকে ভাল মানের ইসলামি পোস্টে লাইক,
শেয়ার বা মন্তব্যের মাধ্যমে অন্যদের নিকট তা
ছড়িয়ে দেয়া।
১৩) গুগল বা ইয়াহুতে ইসলামিক ইমেইল গ্রুপ তৈরি
করে তাতে অংশ গ্রহণ করার জন্য মানুষকে ইনভাইট
করা।
১৪) বন্ধুদের ইমেইল সংগ্রহ করে সেগুলোতে
তাদের আগ্রহের ভিত্তিতে ইসলামিক আর্টিকেল বা
উপকারী বিষয়াদি ইমেইল করা। কেউ এতে অনাগ্রহ
দেখালে তার কাছে ইমেইল না পাঠানোই ভাল।
১৫) ইসলামী বক্তৃতা দেয়ার যোগ্যতা থাকলে
ইসলামী ভয়েস চ্যাট রুম সমূহে জয়েন করে
সেখানে ইসলাম বিষয়ে কথা বলা।
১৬) স্কাইপিতে গ্রুপ তৈরি করে সেখানেও বক্তৃতা,
লিংক শেয়ার ইত্যাদি মাধ্যমে দাওয়াতি কাজ করার
সুযোগ রয়েছে।
এগুলো ছাড়াও আর কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করা যায় দয়া
করে আপনাদের অভিজ্ঞতার আলোকে
মন্তব্যের মাধ্যমে জানান। হয়ত আপনার দেয়া
পদ্ধতিটি কোন ব্যক্তি পছন্দ করে বাস্তবায়িত
করতে পারে। সেক্ষেত্রে তা আপনার জন্য
একটি সদকায়ে জারিয়া হিসেবে আল্লাহর দরবারে
গৃহীত হয়ে যেতে পারে।

মোবাইল ফোনটি সাইলেন্ট অবস্থায় থাকলেও কিভাবে খুজে পাবেন

 আপনার মোবাইল ফোনটি সাইলেন্ট অবস্থায় রেখেছেন, সেই সময়েই হঠাৎ দেখলেন মোবাইলটি খুঁজে পাচ্ছেন না। সাধারণ ভাবে মোবাইল কাছে-পিঠে কোথাও লোপাট হলে, অন্য কোনও ফোন থেকে নিজের নম্বরটি ডায়াল করাই সেই ফোনকে খুঁজে পাওয়ার সহজতম পন্থা। মোবাইলটি বাজতে শুরু করলেই সেই আওয়াজ অনুসরণ করে সহজেই আপনি খুঁজে পেয়ে যাবেন মোবাইলটি। কিন্তু ফোন যদি সাইলেন্ট মোডে থাকে তাহলে এই কৌশল কার্যকর হবে না। তা হলে সেই অবস্থায় কীভাবে খুঁজে পাবেন সেই হারানো মোবাইল? জেনে নিন, কৌশল।

১. প্রথমে অন্য কোনও মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে গুগল-এর ওয়েবসাইটে যান।
২. সেখানে সার্চ বারে লিখুন ‘ফাইন্ড মাই ফোন’।
৩. তার পর গুগল অ্যাকাউন্ট বা জিমেইল অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করুন।
৪. নিজের মোবাইলের লোকেশন দেখতে পাবেন গুগল-এ।
৫. এর পর আপনার সামনে অপশন আসবে, যেটির মাধ্যমে আপনি আপনার ফোনের অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইজ ম্যানেজারটি ‘অন’ করে দিতে পারবেন।
৬. এ বার ‘রিং’ অপশনটিকে সিলেক্ট করুন।
৭. আপনার ফোন সাইলেন্ট মোডে থাকলেও সেটি ফুল ভলিউমে রিং হতে শুরু করবে। এবং যতক্ষণ না আপনি ফোনটিকে খুঁজে বার করে তার পাওয়ার বাটনটি চেপে ধরছেন, ততক্ষণ ফোন রিং হতেই থাকবে। এ বার সেই আওয়াজ
অনুসরণ করে ফোনটিকে খুঁজে বার করা তো কোনও ব্যাপারই নয়।
এই একই পদ্ধতিতে আপনি আপনার হারানো অ্যান্ড্রয়েড ট্যাব-ও খুঁজে পেতে পারেন। তবে একটাই বিষয় আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। সেটা এই যে, আপনার ডিভাইস থেকে অবশ্যই গুগল অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করা থাকতে হবে। নতুবা এই পদ্ধতিতে হারানো মোবাইল খুঁজে পাবেন না।

Translate