Thursday, June 19, 2025

জাতির উদ্দেশ্যে আয়াতুল্লাহ খামেনির ভাষণ

জাতির উদ্দেশ্যে আয়াতুল্লাহ খামেনির ভাষণ ইতিহাসের সেরা

হুবহু তুলে ধরা হলো-
লেখা সংযোজন
মোঃ আব্দুর রশিদ
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
আমি ইরানের মহান ও গৌরবময়ী জাতিকে সালাম জানাই।
সর্বপ্রথম, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই ইরানিদের সেই দৃঢ় ও সাহসী অবস্থানের জন্য, যা তারা বিদেশি ষড়যন্ত্রের মুখে প্রদর্শন করেছে।
গাদীরের দিনে জাতির ঐক্যবদ্ধ অবস্থান, জনসমাগম জুমার নামাজের উপস্থিতি এবং পরবর্তী মিছিলে অংশগ্রহণ সবই প্রমাণ করে দিয়েছে ইরান এখন কেবল একটি জাতি নয় বরং আত্মিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তির এক প্রতিচ্ছবি।
আমি আল্লাহর শোকর আদায় করছি, যিনি এই জাতিকে এমন শক্তি মানুষিকতা ও প্রজ্ঞা দান করেছেন। আমি এখানে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্তের কথাও বলতে চাই; শত্রুর হামলার পর টিভি উপস্থাপক 'তাকবীর' উচ্চারণ করে জাতির মনোভাব সারা বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করেছে।
এটি ছিল ইতিহাসের এক গৌরব্যউজ্জ্বল মুহূর্ত।
এখন দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল- এই হামলা সরাসরি আমাদের ভূখণ্ডে ইসরায়েলি আগ্রাসন ঘটেছে এমন এক সময়ে, যখন আমাদের কূটনীতিকরা আমেরিকার সঙ্গে সরাসরিও পরোক্ষভাবে আলোচনা চালাচ্ছিল ইরানের তরফে কোন উস্কানি বা সামরিক উত্তেজনার ইঙ্গিত ছিল না।
এটাই স্পষ্ট যে, ইসরায়েল একপেশে সিদ্ধান্তে এই হামলা চালিয়েছে।
শুরু থেকেই আমাদের সন্দেহ ছিল, এতে আমেরিকার হাত রয়েছে।
এখন যেসব বক্তব্য তারা দিচ্ছে তা আমাদের সেই সন্দেহকে আরও জোরালো করছে।
ইরানি জাতি কখনো চাপের কাছে নত হয়নি। যেমন জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের বিরুদ্ধে আমরা লড়েছি, তেমনি চাপিয়ে দেওয়া তথাকথিত শান্তির বিরুদ্ধেও দাঁড়িয়ে আছি। আমরা কারো দাসত্ব বা আধিপত্য মেনে নিই না।
আমি চিন্তাবিদ, লেখক এবং বিশেষভাবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্তদের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন এই সত্যগুলো পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করে, জনগণের সামনে তুলে ধরে এবং শত্রুর মিথ্যা প্রচারণার জবাব দেয়।
ইসরাইল এক ভয়াবহ ভুল করেছে এবং একটি অপরাধ করেছে, এর জন্য তাকে শাস্তি পেতেই হবে এবং তারা সেটা তার পাচ্ছেও।
আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইতোমধ্যে এর প্রতিশোধ নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা রয়েছে।
এই মুহূর্তে আমেরিকার বন্ধুরা মাঠে নামছে। এটাই প্রমাণ করে তারা দুর্বল, ভীত এবং অসহায়। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট আমাদের হুমকি দিয়েছেন এবং একই সঙ্গে এক হাস্যকর দাবি করেছেন। ইরানি জাতিকে তার সামনে আত্মসমর্পণ করতে বলছেন। এটা একেবারেই অযৌক্তিক।
ইরানি জাতি হুমকির সামনে ভয় পায় না। আমরা সেটা বারবার প্রমাণ করেছি। সেই আরবিতে বলা আয়াতের মতো: "তোমরা দুঃখ করোনা, হীনবল হয়ো না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মু'মিন হও।"
আমরা জানি হুমকি আমাদের মনোভাব বদলাতে পারে না এবং আত্মসমর্পণ করার কথাটা এমন কেউই বলতে পারে যে ইতিহাস, ইরানের জাতিসত্তা, আর আত্মমর্যাদা সম্পর্কে জানেনা।
'আমরা কখনো নত হইনি, হবও না।
আমরা কারো দাস নই,হবও না।'
আমেরিকার যারা বাস্তবতা বোঝে, তারা জানে এই সংঘাতে হস্তক্ষেপ করলে তার ফল তাদের জন্য ভয়াবহ হবে। যেটুকু ক্ষতি ইরানের হতে পারে তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি আমেরিকার হবে এবং এই ক্ষতি অপূরণীয়।
আমি আমার জাতিকে বলছি, ভয় পেয়ো না, দুর্বলতা প্রকাশ করো না,
যদি শত্রু বুঝে ফেলে তুমি ভয় পাচ্ছো, তবে সে তোমাকে ছাড়বে না।
তোমাদের শক্ত অবস্থান বজায় রাখো, সব দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা; প্রশাসন, প্রচার, জনসংযোগ যেন আল্লাহর উপর ভরসা রেখে দায়িত্ব পালন করে
কারণ, বিজয় একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে।
আর আল্লাহই সত্য ও ইনসাফের পক্ষকে জয়ী করবেন, ইনশাআল্লাহ।

Translate