Sunday, May 25, 2025

আমাদের সমাজে প্রচলিত ত্যাজ্য করার সংস্কৃতি শরিয়তসম্মত নয়

 প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম শ্রদ্ধেয় শাইখ। সম্প্রতি ভাইরাল হ‌ওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে,মেয়ে প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যাওয়ার সময় বাবা আটকানোর চেষ্টা করলে মেয়েটি জনসম্মুখে বাবাকে অস্বীকার করে এবং বলে তিনি তার বাবা না। আর সেই কারণেই কষ্ট পেয়ে বাবা মেয়েকে স্টাম্প পেপারে স‌ই করে মেয়েটিকে ত্যাজ্য করে দিল। সন্তানকে ত্যাজ্য করার ব্যাপারে ইসলামের বিধান সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি ইনশাআল্লাহ।

উত্তর: ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামের দৃষ্টিতে সন্তানের জন্য পিতা-মাতার আনুগত্য করা ফরজ, যতক্ষণ না তারা তাকে কোনো হারাম কাজের নির্দেশ দেন। তবে যদি কোনো সন্তান পিতা-মাতার অবাধ্য আচরণ করে বা তাদের কষ্ট দেয়, তাহলে তারা প্রথমে তাকে সদুপদেশ দেবে, সংশোধনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এবং তার হেদায়েতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবে। এরপরও যদি সে সংশোধন না হয়, তবে শাস্তিমূলক কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের অধিকার পিতা-মাতার রয়েছে। তবে তাকে ‘ত্যাজ্য সন্তান’ ঘোষণা করে সম্পর্ক ছিন্ন করা বা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্য সম্পদ থেকে তাকে বঞ্চিত করার কোনো শরিয়তসম্মত বা আইনগত বৈধতা নেই। ত্যাজ্য ঘোষণা করলেই রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন হয় না; এটি কখনোই সম্ভব নয়। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক উত্তরাধিকারীর জন্য মিরাসে নির্ধারিত অংশ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এটি পরিবর্তন বা বাতিল করার অধিকার কারো নেই। তবে ব্যতিক্রম তখনই সম্ভব যদি সন্তান ইসলাম ত্যাগ করে (মুরতাদ হয়) কিংবা পিতা-মাতাকে হত্যা করে। এ ছাড়া অন্য কোনো কারণে তাকে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা বৈধ নয়। অতএব, আমাদের সমাজে প্রচলিত ‘ত্যাজ্য’ করার সংস্কৃতি শরিয়তসম্মত নয়। আল্লাহু আলাম। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।

No comments:

Post a Comment

Translate