Saturday, August 30, 2025

শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে মানব রচিত আদালতে বিচারপ্রার্থী হওয়ার বিধান

 প্রশ্ন: শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে মানব রচিত (তাগুতী) আদালতে বিচারপ্রার্থী হওয়ার বিধান কী?

▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর প্রতি। অতঃপর  মূলনীতি হচ্ছে শরীয়াহর বিরোধী মানব প্রণীত আইন অনুযায়ী আদালতে বিচার চাওয়া জায়েজ নয়। একইভাবে, সেখানে কাজ করা কিংবা মানুষের মাঝে সে আইন কার্যকর করাও বৈধ নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন: “অতএব, (হে মুহাম্মদ ﷺ) আপনি আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী বিচার নিষ্পত্তি করুন ও তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না এবং তাদের ব্যাপারে সতর্ক হোন, যাতে আল্লাহ্ আপনার প্রতি যা নাযিল করেছেন তারা এর কোন কিছু হতে আপনাকে বিচ্যুত না করে। অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখুন যে, আল্লাহ তাদেরকে কেবল তাদের কোন কোন পাপের জন্য শাস্তি দিতে চান। আর নিশ্চয় মানুষের মধ্যে অনেকেই তো ফাসেক।তবে কি তারা জাহেলিয়াতের বিধি-বিধান কামনা করে?আর দৃঢ় বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য বিধান প্রদানে আল্লাহর চেয়ে আর কে শ্রেষ্ঠতর?”(সূরা মায়েদাহ: ৪৯-৫০) অপর আয়াতে আরও বলেন:”হে ঈমাদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রাসূলের আনুগত্য কর, আরও আনুগত্য কর তোমাদের মধ্যকার ক্ষমতাশীলদের, অতঃপর কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটলে তা উপস্থাপিত কর আল্লাহ ও রাসূলের নিকট, যদি তোমরা আল্লাহ ও আখেরাতে ঈমান এনে থাক। এ পন্থাই উত্তম এবং পরিণামে প্রকৃষ্টতর।আপনি কি তাদেরকে দেখেননি যারা দাবি করে যে, আপনার প্রতি যা নাযিল হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা নাযিল হয়েছে তাতে তারা ঈমান এনেছে, অথচ তারা তাগূতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায়, যদিও সেটাকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর শয়তান তাদেরকে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট করতে চায়।তাদেরকে যখন বলা হয় আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে এবং রাসূলের দিকে আস, তখন মুনাফিকদেরকে আপনি আপনার কাছ থেকে একেবারে মুখ ফিরিয়ে নিতে দেখবেন।”(সূরা নিসা: ৫৯-৬১) এমনকি আল্লাহ তাআলা শপথ করে বলেন কিন্তু না, আপনার রবের শপথ তারা মুমিন হবে না যতক্ষন পর্যন্ত তারা নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার ভার আপনার উপর অর্পণ না করে; অতঃপর আপনার মীমাংসা সম্পর্কে তাদের মনে কোন দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে নেয়।”(সূরা নিসা: ৬৫) আল-কুরআনে বহু আয়াত আছে, যেখানে আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন যে মানুষ শুধুমাত্র তাঁর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী বিচার এবং ফয়সালা করবে। একই সঙ্গে তিনি স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন যে কেউ মানবসৃষ্ট আইনকে বিচার ও ফয়সালার ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করতে।
.
সৌদি আরবের প্রথম গ্র্যান্ড মুফতি, ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আলুশ শাইখ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৩৮৯ হি.] বলেছেন,من أعظم ذلك وأظهرها معاندة للشرع ، ومكابرة لأحكامه ، ومشاقة لله ولرسوله : إيجاد المحاكم الوضعية التي مراجعها القانون الوضعي ، كالقانون الفرنسي ، أو الأمريكي ، أو البريطاني ، أو غيرها من مذاهب الكفار ، وأي كفر فوق هذا الكفر ؟! وأي مناقضة للشهادة بأن محمَّداً رسول الله بعد هذه المناقضة ؟! “সবচেয়ে বড় (গুনাহের) বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম এবং শরীয়তের সাথে সবচেয়ে প্রকাশ্য বিরোধিতা ও তার বিধানকে অস্বীকার করা, এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে সরাসরি বিরোধিতা করার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হলো: এই সব আদালত প্রতিষ্ঠা করা যেগুলো মানুষের বানানো আইনের দিকে রেফার করে, যেমন ফরাসি আইন, বা আমেরিকান আইন, বা ব্রিটিশ আইন, অথবা কাফিরদের অন্য কোনো মতবাদ। এর চাইতেও বড় কুফরি আর কী হতে পারে?! এবং এর চাইতে বড় ‘মুহাম্মদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল’ এ সাক্ষ্যকে অস্বীকার করা আর কী হতে পারে?”।(তাহকীমুল কাওয়ানীন; পৃষ্ঠা: ৭)
.
প্রিয় পাঠক! ইতিপূর্বে আমরা উল্লেখ করেছি যে, শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে মানব রচিত (তাগুতি) আদালতে বিচারপ্রার্থী হওয়া জায়েজ নয়, তবে বাস্তব জীবনে কখনও কখনও এমন পরিস্থিতি উদ্ভূত হতে পারে, যখন একজন মুসলিমকে অন্যায়, জুলুম বা ক্ষতি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে, অথবা তার ন্যায্য অধিকার আদায় করতে মানব-নিয়ন্ত্রিত আইনের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হতে হয়।উদাহরণস্বরূপ একজন মুসলিম ব্যবসায়ী কোনো অমুসলিম ব্যবসায়ীর সাথে অমুসলিম লোকটির দেশে লেনদেন করেছে, কিন্তু পরবর্তীতে সেই অমুসলিম বণিক তার পাওনা অস্বীকার করে বসে, এখন সেই মুসলিম কাফির রাষ্ট্রের কোর্টে বিচারপ্রার্থী না হয়ে নিজের সম্পদ উদ্ধার করতে পারছেন না। তদ্রুপ কোনো মুসলিম নারী কাফিরদের দেশে আছেন, তাঁর স্বামী তাঁকে পরিত্যাগ করেছে, তালাক না দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে, এবং ভালো মানুষজন তাকে বুঝানোর পরেও সে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে অস্বীকার করছে তাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য। এমতাবস্থায় জরুরি প্রয়োজনে সেই নারী কি এমন কারও কাছে বিচার চাইতে পারবেন, যে আল্লাহর আইনপরিপন্থি মানবরচিত আইন দিয়ে বিচার-ফয়সালা করে দেবে? এ বিষয়ে আলিমগণের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।তবে অধিকাংশ আলিমের মতে, কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে জরুরি প্রয়োজনে শরিয়াপরিপন্থি আদালতের দ্বারস্থ হওয়া বৈধ। শর্তগুলো হলো:
.
প্রথম শর্ত: উক্ত আদালতে বিচার না চাওয়ার কারণে যে ক্ষতি হবে, তা অবশ্যই সুনিশ্চিত ও বাস্তব বিষয় হতে হবে; কেবল অনুমাননির্ভর বা কল্পনাপ্রসূত (অর্থহীন ভীতি) হলে গ্রহণযোগ্য হবে না।
.
দ্বিতীয় শর্ত: যে ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা অবশ্যই গুরুতর ও অসহনীয় মাত্রার হতে হবে। অর্থাৎ এমন ধরনের ক্ষতি নয়, যা সাধারণত মানুষ সহজেই সহ্য করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ কেবল কয়েক হাজার টাকা নিয়ে সামান্য বিরোধ বা ঝগড়া, যা একজন ব্যবসায়ীর জন্য তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় (এমন কারণে তাগুতের আদালতে বিচার প্রার্থনা করা যাবে না)। বরং ক্ষতি বা সমস্যা এতটাই গুরুতর ও গুরুত্বপূর্ণ হতে হবে, যা স্বাভাবিক অবস্থায় সহ্য করা সম্ভব নয়।
.
তৃতীয় শর্ত: ওই ক্ষতি বা সমস্যা দূর করার জন্য অন্য কোনো শরিয়তসম্মত উপায় অবলম্বন করা সম্ভব না হলে, তখন ওই আদালতে বিচার চাওয়া জায়েজ হবে।
.
চতুর্থ শর্ত: বিচারপ্রার্থী ব্যক্তি কখনো নিজের শরয়ি হক বা অধিকার অতিক্রম করতে পারবে না। কারণ সেক্যুলার আদালত অনেক সময় অন্যায় রায় দেয়।যদি কেউ এমন রায়ের ভিত্তিতে তার প্রকৃত প্রাপ্যের চেয়ে বেশি কিছু গ্রহণ করে, তবে তা শারীরিকভাবে জায়েজ হবে না। উদাহরণস্বরূপ,একজন ব্যক্তি যদি প্রকৃতপক্ষে এক লাখ টাকার পাওনাদার হয়, আর আদালত তাকে দশ লাখ টাকার রায় দেয়; তাহলে তার জন্য এক লাখের চেয়ে বেশি টাকা নেওয়া জায়েজ হবে না।
.
সৌদি আরবের ‘ইলমী গবেষণা ও ফাতাওয়া প্রদানের স্থায়ী কমিটির (আল-লাজনাতুদ দাইমাহ লিল বুহূসিল ‘ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা) ‘আলিমগণ-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল: তালাক, ব্যবসা এবং অন্যান্য বিষয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে আমেরিকান আইনের কাছে বিচারের জন্য আবেদন করার বিধান কী?
তারা উত্তর দিলেন:
لا يجوز للمسلم التحاكم إلى المحاكم الوضعية إلا عند الضرورة إذا لم توجد محاكم شرعية ، وإذا قضي له بغير حق له فلا يحل له أخذه “
“মুসলিমদের জন্য মানুষের বানানো আইন-আদালতে বিচার চাওয়া বৈধ নয়; তবে জরুরি অবস্থায় যদি শরিয়ত-ভিত্তিক আদালত না থাকে, তখন (কোনো বিকল্প না থাকলে) সেখানে যাওয়া যেতে পারে। তবে যদি তার পক্ষে এমন কোনো রায় আসে যা প্রকৃতপক্ষে তার (হক) অধিকার নয়, তবে তা তার জন্য নেওয়া হালাল নয়।”(ফাতাওয়া লাজনাহ দায়িমাহ; খণ্ড: ২৩; পৃষ্ঠা: ৫০২)
.
সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.]-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল: একজন মুসলিম যদি মানবসৃষ্ট আইন অধ্যয়ন করে, তারপর কোনো আইনি অফিস পরিচালনা করেন এবং কোম্পানির পক্ষ থেকে দেওয়ানি আদালতে মামলা পরিচালনা করেন, তাহলে তার কাজের শার‘ই হুকুম কী? এছাড়াও, তিনি যে অর্থ উপার্জন করেন, তার বিধান কী?
তিনি উত্তর দিলেন:
وضع القوانين المخالفة للشرع مكان الشرع كفر؛ لأنه رفع للشرع ووضع للطاغوت بدله، وهذا يدخل في قوله عز وجل: (وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ) المائدة/44 . ….وأما تعلم الإنسان للقوانين الوضعية، إذا كان يتعلمها من أجل أن يدفع الباطل بالحق ؛ فهذا لا بأس به ، وإذا كان يتعلمها من أجل أن يتبع ما فيها من القوانين المخالفة للشرع ؛ فهذا حرام. وفي هذا نقول : حتى المحاماة في بلد تحكم الشريعة فيه نقول: إذا كان المحامي يريد إيصال الحق إلى أهله ؛ فلا بأس أن يمارس هذه المهنة ، وإن كان يريد أن يغلب الناس في قوله ومحاماته بالحق أو بالباطل ؛ فهذا حرام
“মানুষের প্রণীত আইনকে শরিয়তের জায়গায় স্থাপন করা কুফরি; কারণ এর মাধ্যমে শরিয়তকে বাতিল করা হয় এবং তার স্থলে তাগুত (অশরিয়তি শাসনব্যবস্থা ও ভ্রান্ত আইন) প্রতিষ্ঠিত করা হয়।আর এটি আল্লাহ তাআলার এই বাণীর অন্তর্ভুক্ত:“আর যারা আল্লাহর অবতীর্ণ বিধান অনুযায়ী বিচার করে না, তারাই কাফির।” (সূরা আল-মায়িদাহ, ৫: ৪৪) তবে মানুষের বানানো আইন অধ্যয়ন করা যদি হয় মিথ্যা ও অন্যায়কে সত্য ও ন্যায়ের মাধ্যমে খণ্ডন করার উদ্দেশ্যে, তবে এতে কোনো সমস্যা নেই। আর যদি উদ্দেশ্য হয় শরিয়তের বিরোধী আইনসমূহকে গ্রহণ বা অনুসরণ করা, তবে তা হারাম। বিষয়টি আরও স্পষ্ট করার জন্য আমরা বলি: এমনকি যদি কোনো দেশে শরিয়তের বিধান দ্বারা শাসন পরিচালিত হয়, তবুও আইনজীবী হওয়ার ব্যাপারে বিধান হলো যদি আইনজীবীর উদ্দেশ্য হয় অধিকার তার প্রকৃত মালিকের কাছে পৌঁছে দেওয়া, তবে এই পেশা অনুশীলনে কোনো দোষ নেই। কিন্তু যদি তার উদ্দেশ্য হয় কেবল বিতর্কে জয়লাভ করা,বা নিজের যুক্তি ও আইনজীবিত্ব দিয়ে মানুষের হক নষ্ট করা, তা সে হক বা বাতিল যেভাবেই হোক না কেন তবে তা হারাম।”(ইবনু উসামীন লিক্বাউল বাব আল-মাফতূহ, লিক্বা নং-৩৩/৬)
.
পরিশেষে প্রিয় পাঠক! আমরা আমাদের সন্মানিত শাইখ বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] এর সুন্দর একটি নসীহা দ্বারা আলোচনার সমাপ্তি টানছি। শাইখুল ইসলাম ইবনু উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,
لا تجد أعدل من دين الله – عز وجل – في كل زمان ومكان، وكل ما خالف دين الله – عز وجل – فهو جور وظلم، ولهذا أخبر النبي عليه الصلاة والسلام أن أظلم الظلم أن تجعل لله ندًّا وهو خلقك. ثم سئل: أي الظلم أعظم؟ قال: «أن تجعل لله ندًّا وهو خلقك» فلو مشى الناس على شريعة الله لقاموا بالقسط، لكن كل من لم يتمش على شريعة الله فهو جائر، قال الله تعالى: {وعلى الله قصد السبيل ومنها جآئر} يعني من السبيل ما هو جائر وهو سبيل الظالمين
“তুমি প্রত্যেক যুগে ও স্থানে আল্লাহ ‘আযযা ওয়া জাল্লার দ্বীনের চেয়ে অধিক ন্যায়পরায়ণ আর কিছু পাবে না। আর যা কিছুই আল্লাহ ‘আযযা ওয়া জাল্লার দ্বীনের পরিপন্থী, তা-ই অত্যাচার ও যুলুম। এ কারণেই নবীজি (ﷺ) জানিয়েছেন যে, সবচেয়ে বড় যুলুম হলো আল্লাহর জন্য শরীক নির্ধারণ করা, অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কোন যুলুম সবচেয়ে বড়? তিনি বলেন,“তুমি আল্লাহর জন্য শরীক নির্ধারণ করবে, অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।”[বুখারী, আস-সহীহ, কিতাবুত তাফসীর, বাব: আল্লাহ তা‘আলার বাণী হাদীস নং ৪৪৭৭; মুসলিম, আস-সহীহ, কিতাবুল ঈমান, বাব: শির্ক সবচেয়ে নিকৃষ্ট গুনাহ এবং এর পরে সবচেয়ে বড় গুনাহসমূহের বিবরণ, হাদীস নং ৮৬] সুতরাং মানুষ যদি আল্লাহর শারী‘আতের ওপর চলত, তবে তারা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করত। কিন্তু যে-ই আল্লাহর শারী‘আতের ওপর চলে না, সে-ই অত্যাচারী। (কুর‘আনুল কারীম: সূরাহ্ (১৬) আন-নাহল, আয়াত নং ৯।) অর্থাৎ,পথের মধ্যে কিছু আছে যা বক্র, আর তা হলো যালিমদের পথ।”(তাফসীরুল কুরআনিল কারীম: সূরাহ আল-হাদীদ, পৃষ্ঠা নং ৪২৩।) মহান আল্লাহ আমাদের সঠিক ভাবে কুরআন সুন্নাহের অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬
উপস্থাপনায়: জুয়েল মাহমুদ সালাফি।
সম্পাদনায়: ইব্রাহিম বিন হাসান হাফিজাহুল্লাহ।
অধ্যয়নরত, কিং খালিদ ইউনিভার্সিটি, সৌদি আরব।

No comments:

Post a Comment

Translate