Friday, December 10, 2021

বীর্য অপবিত্র নাকি পবিত্র? (বীর্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য)

 আমাদের দেশের অনেক বক্তার মুখেই শুনা যায়

মানুষকে এক ফোটা নাপাক পানি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এটি বানোয়াট ও দলীল বিহীন কথা। আমাদের সকলের অন্তরেই একটি প্রশ্ন জাগে যেঃ মানুষকে সামান্য পানি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তা হচ্ছে নারী-পুরুষের মনী বা বীর্য। এই পানি কি অপবিত্র? তাই যদি হয় তাহলে মানুষও তো অপবিত্র। কারণ মানুষ সৃষ্টির মূল উপাদনও তো এই বীর্য। উপরের প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যেঃ প্রত্যেক মানুষকেই মনী তথা বীর্য হতে সৃষ্টি করা হয়েছে। এটিই সত্য কথা। আল-কুরআন আমাদেরকে এই সংবাদ দিয়েছে।
পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমেও তা প্রমাণিত হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “আমি কি তোমাদেরকে তুচ্ছ পানি থেকে সৃষ্টি করিনি?” *সূরা মুরসালাতঃ আয়াতঃ ৭৭:২০। আল্লাহ্তা আলা আরও বলেছেনঃ “অতএব, মানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে। সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে। এটা নির্গত হয় মেরুদন্ড ও বক্ষপাজরের মধ্য থেকে। নিঃশ্চয় তিনি (আল্লাহ) তাকে ফিরিয়ে নিতে সক্ষম।” *সূরা তারিকঃ আয়াতঃ ৮৬:৫-৮। সুতরাং উপরোক্ত আয়াত গুলোতে যে পানির কথা বলা হয়েছে, তা হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর মিলনের মাধ্যমে নির্গত মনী বা বীর্য। এটি পবিত্র না অপবিত্র, আলেমদের নিকট থেকে এ ব্যাপারে দু’টি মত পাওয়া যায়। সঠিক কথা হচ্ছে এটি পবিত্র। এই পানি পবিত্র হওয়ার ব্যাপারে অনেক দলীল রয়েছে।

১) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ “আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাপড় হতে হাত দিয়ে ঘষে মনী (বীর্য) পরিস্কার করতাম। তিনি সেই কাপড় পরে নামায আদায় করতেন।” *সহীহ মুসলিমঃ ২৮৮। এটি জানা কথা যে, ঘষাঘষি করে মনী পরিস্কার করলে তা সম্পূর্ণরুপে পরিস্কার হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাতে দাগ থেকে যাবে। আর দাগসহ নামায পড়া প্রমাণ করে যে মনী অপবিত্র নয়।

২) এই পানি দিয়েই নবী, রাসূল অলী-আওলীয়া ও আল্লাহর সৎ বান্দাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ সমস্ত প্রিয় বান্দাদেরকে আল্লাহ্ তাআলা অপবিত্র উপাদান দিয়ে সৃষ্টি করবেন, তা হতেই পারে না। দেখুনঃ আশ্ শরহুল মুমতিউঃ ১/৩৮৮। সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিলঃ কাপড়ে মনী লাগলে কি তা নাপাক হয়ে যায়? মনী কি নাপাক? উত্তরে তারা বলেছেনঃ মনী পবিত্র। তা অপবিত্র হওয়ার কোন দলীল আমাদের জানা নেই। দেখুনঃ ফতোয়া নম্বরঃ ৬/৪১৬। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) বলেছেনঃ সঠিক কথা হচ্ছে মনী পবিত্র। এটিই ইমাম শাফেঈ এবং ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল-এর প্রসিদ্ধ মত। ইমাম আবু হানীফা (রঃ) বলেছেনঃ তা অপবিত্র। তবে ঘষাঘষির মাধ্যমে তা দূর করাই যথেষ্ট। ইমাম মালেক (রঃ) বলেছেনঃ ধৌত করা আবশ্যক। এ সমস্ত মতের মধ্যে প্রথমটিই সঠিক। এটি সকলের জানা কথা যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যুগে সাহাবীদেরও স্বপ্নদোষ হত। তাদের শরীরে ও কাপড়ে বীর্য লেগে যেত। আর এটি এমন বিষয়, যা সকলেরই হয়ে থাকে এবং তা গোপন থাকার বিষয় নয়। তা যদি অপবিত্র হত, তাহলে তিনি তাদের কাপড় ও কাপড় থেকে সসম্পূর্ণরূপে দূর করার আদেশ দিতেন। তিনি পায়খানা ও পেশাব শরীর ও কাপড় থেকে দূর করার এবং পরিস্কার করার আদেশ দিয়েছেন। রাসুল (সাঃ) কাপড় থেকে হায়েযের (মাসিকের) রক্ত ধৌত করার আদেশ দিয়েছেন। কারণ এগুলো অপবিত্র। মাসিকের রক্ত কাপড়ে ও শরীরে লাগার চেয়ে মনী বা বীর্য কাপড়ে ও শরীরে আরও অধিক শক্তভাবে লেগে থাকে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কোন সাহাবী থেকে সহীহ সূত্রে এ কথা বর্ণিত হয়নি যে, তিনি কাউকে শরীর ও কাপড় থেকে বীর্য ধৌত করার আদেশ দিয়েছেন।সুতরাং অকাট্যভাবে জানা গেল যে, বীর্য পবিত্র বলে তা ধৌত করা ওয়াজিব নয়। দেখুনঃ মাজমুআয়ে ফতোয়াঃ ২১/৬০৪। আল্লাহই অধিক ভাল জানেন। এখন প্রশ্ন হল: বীর্য যদি পবিত্র তাহলে স্ত্রী সহবাস করার পর কিংবা স্বপ্নদোষের মাধ্যমে বীর্যপাত হলে গোসল ফরজ হয় কেন?
অযু ও অপবিত্রতার গোসল অন্যতম একটি এবাদত। সকল প্রকার এবাদতের ক্ষেত্রে মূলনীতি হচ্ছে তা আল্লাহর আদেশ অনুযায়ীই করতে হবে। মানুষ তার কারণ ও হিকমত সম্পর্কে জানুক আর নাই জানুক। আল্লাহ্ যা ইচ্ছা আদেশ করবেন। বান্দা সেই আদেশ তামিল করবে। যা ইচ্ছা তা থেকে নিষেধ করবেন। বান্দা তা থেকে দূরে থাকবে। কোন কোন আদেশ-নিষেধের কারণ ও হিকমত যদি বান্দা জানতে পারে তাহলে খুবই ভাল। আর যদি তা জানা না যায়, তাহলে এগুলোর হিকমত জানার পিছনে ছুটে আমাদের কোন লাভ নেই। অযথা সময় নষ্ট হবে। ইসলামের কোন আদেশ-নিষেধ যদি কেউ যুক্তি ও বিবেক মোতাবেক হওয়ার কারণে মেনে চলে আর বিবেকের বিরোধী হওয়ার কারণে না মানে, তাহলে সে তার রবের আনুগত্য করেছে, এটা বলা যাবে না; বরং বলতে হবে সে তার বিবেকের আনুগত্য করেছে। সুতরাং মুমিন ব্যক্তি চিন্তা করুক। সে কি তার দয়াময় আল্লাহর আনুগত্য করবে? না তার ত্রুটিপূর্ণ জ্ঞান ও বিবেকের পূজা করবে। বিষয়টি ভাল করে বুঝার জন্য একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। মনে করুন একজন রোগী ডাক্তারের কাছে গেল। ডাক্তার রোগীর কাছে রোগের বিবরণ শুনে কিছু ঔষধ লিখে দিল। তারপর ডাক্তার বললঃ এই ঔষধগুলো খাবার পর খেতে হবে। আর এগুলো
খেতে হবে খাবার গ্রহণের আধা ঘন্টা পূর্বে। এখন রোগীর জন্য কি ডাক্তারের কাছে এ কথা
জিজ্ঞেস করা ঠিক হবে, এই ঔষধ খাবার আগে কেন? আর এটি খাবার পর কেন? এটি দিনে তিনবার আর ঐটি দিনে দুইবার কেন? ডাক্তর কি এ ক্ষেত্রে এর কারণ ও হিকমত বলতে বাধ্য? রোগীর কি উচিৎ নয় যে, সে ডাক্তারের কথা মত ঔষধগুলো সেবন করবে? কারণ কোন্ ঔষধ কিভাবে খেলে রোগী ভাল হবে, তা ডাক্তার ভাল করেই জানে। রোগীর জন্য এটি জানা জরুরী নয় জানার চেষ্টা করা। ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করাও ঠিক নয়। এ ধরণের প্রশ্নে কোন ডাক্তার খুশী হবে বলে মনে হয় না। রোগীর এ জাতীয় প্রশ্ন তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় নয়। আল্লাহ্ আমাদের সৃষ্টিকর্তা। আমাদের ভাল-মন্দ সম্পর্কে তিনি আমাদের নিজের চেয়েও অধিক অবগত আছেন। সুতরাং তিনি ভাল করেই জানেন যে, কি আমল করলে আমাদের কল্যাণ হবে। তিনি আমাদেরকে সেই আদেশ দিয়েছেন। আর কি কাজ করলে আমাদের ক্ষতি হবে। তিনি আমাদেরকে তা থেকে নিষেধ করেছেন। আমাদের উচিৎ হবে, বিনা প্রশ্নে সেগুলো মেনে নেওয়া। সুতরাং এ ধরণের কোন প্রশ্ন করা ঠিক হবে না, যোহর-আসরের নামায চার রাকআত কেন? মাগরিব কেন তিন? ফজর কেন দুই রাকআত। যোহর-আসরে কিরআত নীরবে কেন? বাকী গুলোতে প্রকাশ্যে কেন? পশ্চাৎ পথে বায়ু বের হলে অযুতে হাত-মুখ ও পা ধৌত করতে হয়
কেন? উটের গোশ্ত খেলে অযু নষ্ট হয়; ছাগলের গোশত খেলে নষ্ট হয় না কেন? এ রূপ আরও অসংখ্য প্রশ্ন। এবার মূল আলোচনায় আসি। গভীরভাবে দৃষ্টি দিলে দেখা যায় যে, স্ত্রী সহবাসের পর গোসল করা ফরজ হওয়ার সাথে সাথে এর একাধিক উপকার রয়েছে।

১) ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রঃ)-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, পেশাব করার পর শুধু সামান্য স্থান ধৌত করা হয়। আর বীর্যপাতের পর সমস্ত শরীর ধৌত করতে হয়। এর কারণ কি? অথচ নির্গত পেশাবের চেয়ে
নির্গত মনী বা বীর্যের পরিমান খুবই কম। উত্তরে তিনি বলেছিলেনঃ পেশাব নির্গত হয় শরীরের নির্দিষ্ট একটি অংশ থেকে। আর মনী অল্প হলেও তা বের হয় শরীরের সকল অংশ থেকে। সুতরাং মনী বের হওয়ার পর গোসল করাই অধিক যুক্তি সংগত।

২) মনী বের হওয়ার পর শরীর দূর্বল হয়। আর গোসলের মাধ্যমে সেই দূর্বলতা কেটে যায় এবং শরীর শক্তিশালী হয়। এ বিষয়টি খুবই বোধগম্য।

৩) বীর্যপাতের পর শরীর ভারী হয়ে যায়। আর গোসলের মাধ্যমে তা পাতলা হয়। আবু যার (রাঃ) একদা জানাবাতের তথা অপবিত্রতার গোসল করার পর বললেনঃ এখন আমার উপর থেকে একটি বোঝা সরিয়ে ফেলা হল।
৪) বিজ্ঞ ডাক্তারগণ বলেছেনঃ স্ত্রী সহবাসের পর গোসল করা শরীর ও মনের জন্য খুবই উপকারী। তাই আমাদেরকে স্ত্রী সহবাসের পর গোসল করার আদেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহই অধিক ভাল জানেন। বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আমাদের দেশের অনেক বক্তার মুখেই শুনা যায় মানুষকে এক ফোটা নাপাক পানি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এটি বানোয়াট ও দলীল বিহীন কথা। সুতরাং এ ধরণের কথা থেকে বিরত থাকা উচিৎ। বীর্য পবিত্র হওয়ার আরও দলিলঃ বীর্য কি পবিত্র? বীর্য ধোয়ার পরও কিছু অংশ লেগে থাকলে
উক্ত কাপড়ে সালাত হবে কি? অবশ্যই বীর্য পবিত্র। জ্যেষ্ঠ তাবেঈ হুমাম বিন হারেছ একদিন আয়েশা
(রাঃ)-এর মেহমান হন। এমতাবস্থায় সকালে তিনি কাপড় ধুতে থাকলে আয়েশা (রাঃ)-এর দাসী সেটা দেখেন এবং তাঁকে সেটা অবহিত করেন। তখন আয়েশা (রাঃ) বললেনঃ ‘তার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট ছিল যে, সে বীর্য দেখলে কেবলমাত্র সে স্থানটি ধুয়ে ফেলবে। আর না দেখা গেলে স্থানটিতে কেবল পানি ছিটিয়ে দিবে। কেননা আমি রাসূল (সাঃ)-এর কাপড় থেকে শুকনো বীর্য ঘষা দিয়ে তুলে ফেলেছি এবং তিনি সেই কাপড়েই সালাত আদায় করেছেন।’ *আবু দাঊদঃ ৩৭১, মুসলিমঃ ২৮৮, ‘বীর্য সম্পর্কীয় বিধান’ অনুচ্ছেদ। তাছাড়া স্বপ্নদোষে নাপাক অবস্থায় পানি না পেলে কেবল তায়াম্মুমের মাধ্যমে সালাত আদায় করা জায়েয। *বুখারী, মুসলিম, মিশকাতঃ ৫২৭-২৮। বীর্য পবিত্র। তবে ময়লা পরিস্কার করার স্বার্থে তা পরিষ্কার করা আবশ্যক। *ফাতওয়া লাজনা দায়েমাঃ ৫/৩৮১।

▓▓▓▒▒░░ বীর্য, মযী ও অদী ░░▒▒▓▓▓
নিজেকে পবিত্র রাখতে ও পবিত্র করতে প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষদের যে বিষয়টি জানা জরুরী – যাহা অধিকাংশ পুরুষদের মধ্যেই হয়ে থাকে এবং যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা সন্দেহে থাকি সেই
গুলো সহীহ হাদিসের আলোকে নীচে দেওয়া হলঃ প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে প্রস্রাব ছাড়াও আরও তিন রকম তরল পদার্থ বের হয়। যে গুলোকে আরবীতেঃ-
১) মযী বা কামরস।
২) অদী এবং
৩) মনী বা বীর্য- বলা হয়ে থাকে। উপরের তিনটির মধ্যে মযী ও অদী জাতীয় তরল পদার্থ বের হলে গোসল ফরয হয় না। বরং প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে শরীরের কোন জায়গায় বা কাপড়ে মযী ও অদী জাতীয় তরল পদার্থ লাগলে তা ধুয়ে ফেলতে হবে। ওযু অবস্থায় হলে ওযু নষ্ট হয়ে যাবে।
১) মযীঃ যৌন উত্তেজনার সময় বিনা বেগে প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে সাদা পিচ্ছিল আঠালো যে পানি বের হয় তাকেই ‘মযী’ বলে। কখনো বিনা অনুভুতিতেও এই মযী জাতীয় পানি বের হয়। সাধারণতঃ যুবক ও শক্তিশালী লোকদের যৌন উত্তেজনার সময় এটা বের হয়। এই মযী সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছেনঃ “এর জন্য ওযুই যথেষ্ট।” *মুসলিমঃ ৬০৩। “মযী কাপড়ে লাগলে যেখানে লাগবে সেখানে এক আঁজলা (দুই হাতের তালু) পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।”ম *তিরমিযীঃ ১১০।
“মযী বের হলে পুরুষাঙ্গ বা লিঙ্গটাও ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে।” *মুসলিমঃ ৬০২।
২) অদীঃ কোন কোন সময় প্রস্রাবের পূর্বে কিংবা পরে যে গাঢ় সাদা পানি বের হয় তাকে অদী বলে। অদী সম্পর্কে আয়িশা (রাদিঃ) বলেছেনঃ ‘প্রস্রাবের পর অদী বের হলে লিঙ্গ ও অন্ডকোষ দু’টি ধুতে হবে এবং ওযু করতে হবে। গোসল করতে হবে না।’ ইবনু ‘আব্বাস (রাদিঃ)’ ও তাই বলেছেন। *বায়হাকীঃ ১ম খন্ড; পৃষ্ঠাঃ ১১৫ ও ইবনুল মুনযির, ফিকহুস সুন্নাহঃ ১ম খন্ড; পৃষ্ঠাঃ ২৬; বরাতে আইনী তুহফা সলাতে মুস্তফাঃ ১ম খন্ড; পৃষ্ঠাঃ ২০-২১।
৩) মনী বা বীর্যঃ উত্তেজনার চূড়ান্ত পর্যায়ে লম্ফ বা ঝাপ দিয়ে যে তরল পদার্থ প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে বেরহয় তাকে মনী বা বীর্য বলে। বীর্য যে কোন (বৈধ বা অবৈধ) উপায়ে ‘সবেগে’ বের হলে বা বীর্যপাত বা বীর্যস্থলন হলেই গোসল ফরয হয়ে যায় বা যাবে। *তিরমিযীঃ ১০৯। বিঃ দ্রঃ নারিদের বেলায় ও একই বিষয় প্রযোজ্য।
★ বীর্য সম্পর্কে কুরআনের আয়াতসমূহঃ মহান আল্লাহ বলেছেন- ﺃَﻟَﻢْ ﻧَﺨْﻠُﻘْﻜُﻢْ ﻣِﻦْ ﻣَﺎﺀٍ ﻣَﻬِﻴﻦٍ আমি কি তোমাদেরকে তুচ্ছ পানি থেকে সৃষ্টি করিনি? [আল-মুরসালাত, ৭৭/২০] ﻭَﺃَﻧَّﻪُ ﺧَﻠَﻖَ ﺍﻟﺰَّﻭْﺟَﻴْﻦِ ﺍﻟﺬَّﻛَﺮَ ﻭَﺍﻷﻧْﺜَﻰ ﻣِﻦْ ﻧُﻄْﻔَﺔٍ ﺇِﺫَﺍ ﺗُﻤْﻨَﻰ আরতিনিই যুগল পুরুষ ও নারী সৃষ্টি করেছেন। একবিন্দু বীর্য থেকে, যখন তা নিক্ষিপ্ত হয়। [আন্-নাজম, ৫৩/৪৫-৪৬] ﺃَﻓَﺮَﺃَﻳْﺘُﻢْ ﻣَﺎ ﺗُﻤْﻨُﻮﻥَ ﺃَﺃَﻧْﺘُﻢْ ﺗَﺨْﻠُﻘُﻮﻧَﻪُ ﺃَﻡْ ﻧَﺤْﻦُ ﺍﻟْﺨَﺎﻟِﻘُﻮﻥَ তোমরা কি ভেবে দেখেছ, তোমরা যে
বীর্যপাত করছ সে সম্পর্কে? তোমরা কি তা সৃষ্টি কর, নাকি আমিই তার স্রষ্টা? [ওয়াকি’আ, ৫৬/৫৮-৫৯] ﺃَﻛَﻔَﺮْﺕَ ﺑِﺎﻟَّﺬِﻱ ﺧَﻠَﻘَﻚَ ﻣِﻦْ ﺗُﺮَﺍﺏٍ ﺛُﻢَّ ﻣِﻦْ ﻧُﻄْﻔَﺔٍ ﺛُﻢَّ ﺳَﻮَّﺍﻙَ ﺭَﺟُﻼ তুমি কি অস্বীকার করছ? যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে এরপর বীর্য থেকে এরপর তোমাকে পূর্ণাঙ্গ করেছেন মানুষের আকৃতিতে? [আল-কাহফ, ১৮/৩৭] ﺃَﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺮَ ﺍﻹﻧْﺴَﺎﻥُ ﺃَﻧَّﺎ ﺧَﻠَﻘْﻨَﺎﻩُ ﻣِﻦْ ﻧُﻄْﻔَﺔٍ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻫُﻮَ ﺧَﺼِﻴﻢٌ ﻣُﺒِﻴﻦٌ মানুষ কি দেখে না, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি বীর্য থেকে? অথচ এখন সে সুস্পষ্ট ঝগড়াটে হয়ে গেছে। [ইয়াসীন, ৩৬/৭৭]
ﺧَﻠَﻖَ ﺍﻹﻧْﺴَﺎﻥَ ﻣِﻦْ ﻧُﻄْﻔَﺔٍ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻫُﻮَ ﺧَﺼِﻴﻢٌ ﻣُﺒِﻴﻦٌ তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন বীর্য থেকে অথচ এখন সে সুস্পষ্ট ঝগড়াটে হয়ে গেছে।
[আন্-নাহল, ১৬/⁠⁠⁠⁠

No comments:

Post a Comment

Translate