পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর সালাতের ভিতরে হোক কিংবা বাহিরে যেকোনো সময় কুরআন তিলাওয়াতকালে সুনির্দিষ্ট ১৫ টি সিজদার আয়াতের কোন একটি আয়াত পাঠ করা হলে বা শুনলে “মুমিন- মুমিনা” পাঠক ও শ্রোতা সকলকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি সিজদা দেয়া গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। একই আয়াত বারবার পড়লে তেলাওয়াত শেষে একবার সিজদা দিলেই যথেষ্ট হবে। তেলাওয়াতের সিজদায় নেকী রয়েছে এবং সিজদা দিলে অভিশপ্ত শয়তান আঘাত পায়; তাই সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা পরিত্যাগ করা অনুচিত। তবে যদি কোনো বৈধ কারণে কেউ তা আদায় করতে না পারেন, তবে ইনশাআল্লাহ এতে কোনো গুনাহ হবে না।কারণ এ সিজদা ফরজ নয়; বরং সুন্নাহ আদায় করলে সওয়াব রয়েছে, না করলেও পাপ হয় না।(বিস্তারিত জানতে দেখুন সহীহ বুখারী, হা/১০৭৭, ১০৭২; মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/৫৯৩০; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৬৪; ইবনু উসাইমীন, মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, খণ্ড: ১৪; পৃষ্ঠা: ৩০৯)
Monday, April 21, 2025
সালাতের ভিতরে কুরআন তেলাওয়াত করার সময় সিজদার আয়াত পাঠ করলে কিভাবে সিজদা দিতে হবে
.
সালাতের ভিতরে সিজদায়ে তিলাওয়াতের নিয়ম:
যদি সালাতের মধ্যে এমন কোনো আয়াত তিলাওয়াত করা হয় যেখানে সিজদার নির্দেশ রয়েছে, তাহলে নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে তা আদায় করতে হবে তিলাওয়াত চলাকালে সিজদার আয়াতে পৌঁছালে সেখানে থেমে গিয়ে “আল্লাহু আকবার” বলে সরাসরি সিজদায় যেতে হবে। সিজদায় গিয়ে সাধারণ সিজদায় পড়ার মত তাসবীহ সমূহের মধ্য থেকে যে কোনও এক বা একাধিক দুআ পাঠ করবে। অত:পর তেলাওয়াতে সেজদার বিখ্যাত দুআটি পাঠ করবে। দু’আটি হচ্ছে, আম্মিজান ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) [মৃত: ৫৭/৫৮ হি.] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতের বেলা তেলাওয়াতের সেজদাতে এই দু‘আ পাঠ করতেন:سَجَدَ وَجْهِيَ لِلَّذِي خَلَقَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ بِحَوْلِهِ وَقُوَّتِهِ উচ্চারণ: সাজাদা ওয়াজহিয়া লিল্লাযী খালাকাহু ওয়া শাক্কা সাম’আহু ওয়া বাসারাহু বিহাওলিহী ওয়া কুওয়াতিহ। অর্থ: “আমার চেহারা সেই মহান সত্তার জন্য সিজদা করলো যিনি নিজ শক্তি ও সামর্থ্যে একে সৃষ্টি করেছেন এবং এতে শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি দান করেছেন।”(আবু দাউদ/১২৭৩;তিরমিযী হা/৩৪২৫) এছাড়াও নিম্নোক্ত দুয়াটিও পড়া হাদিস সম্মত:اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ وَبِكَ آمَنْتُ، وَلَكَ أَسْلَمْتُ، سَجَدَ وَجْهِيَ لِلَّذِي خَلَقَهُ، وَصَوَّرَهُ، وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ بِحَوْلِه، وَقُوَّتِهِ، تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسنُ الْخَالِقينَ
(অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার জন্যই সিজদাহ করেছি, আপনার ওপরই ঈমান এনেছি, আপনার কাছেই নিজেকে সঁপে দিয়েছি। আমার মুখমণ্ডল সিজদায় অবনত সেই মহান সত্তার জন্য, যিনি একে সৃষ্টি করেছেন এবং আকৃতি দিয়েছেন, আর তার কান ও চোখ বিদীর্ণ করেছেন। সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ সুমহান।) ইমাম মুসলিম তাঁর সহিহ হাদিসের সংকলনে হা/১২৯০)প্রখ্যাত সাহাবী আলী রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) [মৃত: ৪০ হি.] এর সূত্রে এ যিকিরটি উদ্ধৃত করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সালাতের সিজদাতে এই যিকিরটি বলতেন।তবে কারো যদি উক্ত দুআটি মুখস্থ না থাকে তাহলে সেজদার দুআ সমূহ থেকে যে কোনও একটি দুআ যেমন: سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى) পড়াই যথেষ্ট ইনশাআল্লাহ। কিন্তু পরবর্তীতে সুন্নত পালনার্থে সেজদার দুআ মুখস্থ করার চেষ্টা করা কর্তব্য।
.
একটি সিজদা সম্পন্ন করার পর ‘আল্লাহু আকবার’ বলে দাঁড়িয়ে যেতে হবে এবং স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী কিরাআত চালিয়ে যেতে হবে। তবে যদি তখন রুকুর সময় হয়ে থাকে, তাহলে কিরাআতের পরিবর্তে রুকুতে চলে যেতে হবে যেটি ঐ সময়ের সালাতের অংশ অনুযায়ী অধিক উপযুক্ত হবে। এভাবেই তিনি তার বাকি সালাত সম্পন্ন করবেন।”(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
_______________________
উপস্থাপনায়: জুয়েল মাহমুদ সালাফি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment