Monday, March 27, 2023

কবরের আজাব মাফের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ হাদীস ও তার আমল

 কবরের শাস্তি থেকে বাচার সবগুলো হাদিস একত্রে দেওয়া হলো আশা করি নিজে আমল করবেন এবং অন্যকে উৎসাহিত করবেন। <<< যাদেরকে কবরের শাস্তি থেকে মুক্ত রাখা হবে >>> ১। প্রতিরাতে সুরাহ মুলক তিলায়াত করা (কুরআন দেখে দেখে বা মুখস্ত যে কোন ভাবেই হোক) রাসূল (সাঃ) বলেন : “যে ব্যাক্তি প্রত্যেক রাতে তাবারকাল্লাযী বিইয়াদিহিল মুলক (সুরাহ মূলক) পাঠ করবে এর মাধ্যমে মহিয়ান আল্লাহ্ তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবেন । সাহাবায়ি কিরাম বলেন , রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর যুগে আমরা এ সুরাহ টিকে আল-মানি’আহ বলতাম । অর্থাৎ আমরা একে “কবরের আযাব থেকে প্রতিরোধকারী ” হিসেবে নামকরণ করেছিলাম । সুরাহ মূলক মহান আল্লাহ্র কিতাবের এমন একটি সুরাহ , যে ব্যাক্তি এটি প্রতি রাতেই পাঠ করে সে অধিক করলো এবং অতি উত্তম কাজ করলো ।” (নাসায়ী, সহীহ আত- তারগীব) ‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত । রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, সুরাহ মূলক (তিলাওয়াতকারীকে) কবরের আযাব থেকে প্রতিরোধকারী।’(সিলসিলাহ সহীহাহ) ২- প্রত্যেক ফরয নামাযের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করা “আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযের পর আয়াতুল কুরসি (সূরা বাকারা- আয়াত ২৫৫) পাঠ করবে, মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সে জান্নাতবাসী হবে। (নাসায়ী, হাদীসটি সহীহ,আলবানী) [যে ব্যক্তি মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে জান্নাতবাসী হবে তার তোঁ কবরের আজাব, জাহান্নামের শাস্তি এগুলোর প্রশ্নই আসে না] যারা ৫ ওয়াক্ত সলাত আদায় করে এটা তাদের জন্য মহা সুসংবাদ আর যারা ৫ ওয়াক্ত সলাত আদায় করে না তাদের সম্পর্কে জেনে নিন রাসুল (সাঃ) কি বলেছেন- নবী (সাঃ) বলেনঃ কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার সলাতের হিসাব হবে। যদি সলাত ঠিক হয় তবে তার সকল আমল সঠিক বিবেচিত হবে। আর যদি সলাত বিনষ্ট হয় তবে তার সকল আমলই বিনষ্ট বিবেচিত হবে। (তিরমিজি হাদিস সহিহ/২৭৮) তিনি আরও বলেনঃ আমাদের মাঝে আর অমুসলিমদের মাঝে চুক্তি হলো সলাত, যে ব্যক্তি সলাত ছেড়ে দিলো সে কাফের হয়ে যাবে। (মুসনাদে আহমাদ হাদিস সহিহ/ ২১৮৫৯) ### সকলের প্রতি অনুরোধ থাকলো আজ থেকেই ৫ অয়াক্ত সলাত আদায় করুন, না হলে পরিণাম বরই খারাপ। অতীতের যতো সলাত ছুটে গেছে তার জন্য আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চান এখনই নইলে সময় হয়তো নাও পেতে পারেন ### ৩। সহিহ শুদ্ধ যিকির বেশি বেশি পাঠ করা- “জাবির (রাঃ) হতে নবী (সাঃ) সুত্রে বর্ণিত, “মহান আল্লাহ্র যিকিরের চাইতে অন্য কোন আমল কবরের আযাব থেকে অধিক নাজাতকারী নেই । জিজ্ঞেস করা হল , আল্লাহ্র পথে জিহাদও নয় কি ? তিনি (সাঃ) বললেন, আল্লাহ্র পথে জিহাদ ও নয় ,তবে কেউ এরূপ বীরত্তের সাথে লড়াই করে যে , তরবারী চালাতে চালাতে এক পর্যায়ে তা ভেঙ্গে যায় তার কথা ভিন্ন।” (ত্বাবারানী, সহীহ আত- তারগীব) ৪।আল্লাহ্র পথে বেশি বেশি দান করা “ওকবা ইবনু আমের (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “নিশ্চয়ই দান কবরের শাস্তিকে মিটিয়ে দেয় এবং কিয়ামতের দিন মুমিন তার দানের ছায়াতলে ছায়া গ্রহণ করবে”। (সিলসিলাহ সহীহাহ) এই এক হাদিসেই দানের ২টি বিশাল ফযিলতের কথা বলা হয়েছে ১- কবরের শাস্তিকে মাফ করে দেওয়া ২- কিয়ামতের দিন বিশেষ ছায়াতলে স্থান পাওয়া। ### আপনারা ২ ভাবে দান করতে পারেন, ১- আপনি যে চাকরি বা বেবসা বা সৎপথে যেভাবেই উপার্জন করেন তার একটা নির্দিষ্ট persent দানের জন্য নির্ধারিত করুন হতে পারে আয়ের ৫% বা ১০% বা ২০% ইত্যাদি ২- অথবা প্রতিদিন কিছু টাঁকা আলাদা করে একটা জায়গায় জমা রাখুন, যখন অনেক টাঁকা হয়ে যাবে তখন সেটা গরিবদুঃখী, মিসকিন, অসহায় বিধবা মহিলা, অনাথ এতিম বা মসজিদে বা মাদ্রাসায় দান করুন এতে আপনি প্রতিদিনের দান করার সওয়াব পাবেন এবং অন্যরাও উপকৃত হবে। অবশ্য জমানো টাঁকা আবার নিজে খরচ করে ফেলবেন না যেহেতু আপনি আল্লাহ্র পথে দান করার নিয়তে এই টাঁকা জমিয়েছেন ### ৫। প্রশাব থেকে ভালো করে পবিত্র হওয়া অর্থাৎ প্রশাবের ছিটা যেন শরীরে না লাগে। রাসূল (সাঃ) বলেন : অধিকাংশ কবরের আজাব প্রসাবের কারণে হয়।(সহিহুল জামে) সুতরাং এ ব্যাপারে আমাদের সাবধান হতে হবে। আবার অতিরিক্ত সাবধানতার নামে বর্তমান পুরুষেরারা প্রসাব শেষে মানুষের সামনে দিয়ে কুলুখ লাগিয়ে হেটে বেড়ানোর যে নির্লজ্জতা করে থাকেন সেটা ত্যাগ করতে হবে। পানি থাকলে পানিই যথেষ্ট আর পানি না থাকলে কুলুখ ব্যাবহার করবেন। ২টা একসাথে ব্যাবহার করার দরকার নেই কেননা প্রসাব শেষে পানি এবং কুলুখ ২টাই ব্যাবহার করতে হবে এ মর্মে কোন সহিহ হাদিস তোঁ দূরে থাক কোন জাল জয়ীফ হাদিসও নেই। প্রসাব শেষে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তারপর পানি ব্যাবহার করুন তাহলে আর সমস্যা থাকবে না আর যদি সমস্যা থাকতোই তবে রাসুল (সাঃ) এবং তার সাহাবাদের থেকে ২টা একসাথে ব্যাবহার এবং হাঁটাহাঁটি করার প্রমাণ পাওয়া যেত। সুতরাং কারো মনগড়া কথায় কান দিবেন না। কেউ বললে তাকে প্রমাণ দেখাতে বলুন। ৬। জুম্মার দিনে বা রাতে মৃত্যুবরণ “আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন , “কোন মুসলমান যদি জুম’আর দিনে অথবা জুম’আর রাতে মারা যায়, তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ্ তাকে কবরের ফিৎনা হতে রক্ষা করবেন ”।(আহমাদ, হাদীস সহীহ , তাহক্বীক্বে মিশকাত) ### এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই কিন্তু আমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তালার কাছে চাইতে পারি তিনি যেন আমাদেরকে এই মহান দিনে মৃত্যু দান করেন ###


No comments:

Post a Comment

Translate