Wednesday, December 8, 2021

সুপারিশ

 সংকলকঃ আবূ মুআয সুহাইল বিন সুলতান

হে ঈমানদারগণ!

আর সে দিনের ভয় করযখন কেউ কারও সামান্য উপকারে আসবে না এবং তার পক্ষে কোন সুপারিশও কবুল হবে নাকারও কাছ থেকে ক্ষতিপূরণও নেয়া হবে না এবং তারা কোন রকম সাহায্যও পাবে না। (Al-Baqara 2 : 48)

তোমরা ভয় কর সেদিনকেযে দিন এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তি বিন্দুমাত্র উপকৃত হবে নাকারও কাছ থেকে বিনিময় গৃহীত হবে নাকার ও সুপারিশ ফলপ্রদ হবে না এবং তারা সাহায্য প্রাপ্ত ও হবে না। (Al-Baqara 2 : 123)

মুশরিকরা অন্যদের কেন আহ্বান করতঃ

আর উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্তুরযা না তাদের কোন ক্ষতিসাধন করতে পারেনা লাভ এবং বলেএরা তো আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশকারী। তুমি বলতোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ে অবহিত করছ,যে সম্পর্কে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে তিনি পুতঃপবিত্র ও মহান সে সমস্ত থেকে যাকে তোমরা শরীক করছ। (Yunus 10 : 18)

জেনে রাখুননিষ্ঠাপূর্ণ এবাদত আল্লাহরই নিমিত্ত। যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে রেখেছে এবং বলে যেআমরা তাদের এবাদত এ জন্যেই করিযেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়। নিশ্চয় আল্লাহ তাদের মধ্যে তাদের পারস্পরিক বিরোধপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা করে দেবেন। আল্লাহ মিথ্যাবাদী কাফেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না। (Az-Zumar 39 : 03)

অথচ তাদের এই ধারণা মিথ্যাঃ

তাদের দেবতা গুলোর মধ্যে কেউ তাদের সুপারিশ করবে না। এবং তারা তাদের দেবতাকে অস্বীকার করবে। (Ar-Room 30 : 13)

তোমরা আমার কাছে নিঃসঙ্গ হয়ে এসেছআমি প্রথমবার তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলাম। আমি তোদেরকে যা দিয়েছিলামতা পশ্চাতেই রেখে এসেছ। আমি তো তোমাদের সাথে তোমাদের সুপারিশকারীদের কে দেখছি না। যাদের সম্পর্কে তোমাদের দাবী ছিল যেতারা তোমাদের ব্যাপারে অংশীদার। বাস্তুবিকই তোমাদের পরস্পরের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তোমাদের দাবী উধাও হয়ে গেছে। (Al-An ‘am 6 : 94)

আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্যান্যদেরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করবকরুণাময় যদি আমাকে কষ্টে নিপতিত করতে চানতবে তাদের সুপারিশ আমার কোনই কাজে আসবে না এবং তারা আমাকে রক্ষাও করতে পারবে না। (Yaseen 36 : 23)

অবাধ্যদের কোন সুপারিশকারী নেই

আপনি তাদেরকে আসন্ন দিন সম্পর্কে সতর্ক করুনযখন প্রাণ কন্ঠাগত হবেদম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। পাপিষ্ঠদের জন্যে কোন বন্ধু নেই এবং সুপারিশকারীও নেইযার সুপারিশ গ্রাহ্য হবে। (Ghaafir 40 : 18)

নবী (সঃএর প্রতি আল্লাহর নির্দেশঃ আপনি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষ থেকে বিতর্ককারী হবেন না।

নিশ্চয় আমি আপনার প্রতি সত্য কিতাব অবতীর্ণ করেছিযাতে আপনি মানুষের মধ্যে ফয়সালা করেনযা আল্লাহ আপনাকে হৃদয়ঙ্গম করান। আপনি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষ থেকে বিতর্ককারী হবেন না। এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীলদয়ালু। যারা মনে বিশ্বাস ঘাতকতা পোষণ করে তাদের পক্ষ থেকে বিতর্ক করবেন না। আল্লাহ পছন্দ করেন না তাকেযে বিশ্বাস ঘাতক পাপী হয়। (Surah An-Nisaa 4:105)

সুপারিশ তাদের কোন উপকারে আসবেনা

তারা বলবেঃ আমরা নামায পড়তাম নাঅভাবগ্রস্তকে আহার্য্য দিতাম নাআমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম। এবং আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম। আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত। অতএবসুপারিশকারীদেরসুপারিশ তাদের কোন উপকারে আসবে না। (Al-Muddaththir 74 : 43 – 48)

সে সমস্ত লোক যারা ভৎর্সনাবিদ্রুপ করে সেসব মুসলমানদের প্রতি যারা মন খুলে দান করে এবং তাদের প্রতি যাদের কিছুই নেই শুধুমাত্র নিজের পরিশ্রমলব্দ বস্তু ছাড়া। অতঃপর তাদের প্রতি ঠাট্টা করে। আল্লাহ তাদের প্রতি ঠাট্টা করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব। তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর আর না কর। যদি তুমি তাদের জন্য সত্তর বারও ক্ষমাপ্রার্থনা করতথাপি কখনোই তাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। তা এজন্য যেতারা আল্লাহকে এবং তাঁর রসূলকে অস্বীকার করেছে। বস্তুতঃ আল্লাহ নাফরমানদেরকে পথ দেখান না। (Surah At-Tawbah 9:69-70)

সেদিন অবাধ্যরাও তা বুঝতে পারবে

আল্লাহর কসমআমরা প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে লিপ্ত ছিলাম। যখন আমরা তোমাদেরকে বিশ্বপালনকর্তার সমতুল্য গন্য করতাম। আমাদেরকে দুষ্টকর্মীরাই গোমরাহ করেছিল। অতএব আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই। (Ash-Shu’araa 26 : 97 – 100)

তারা আফসোস করবেঃ

হায়যদি কোনরুপে আমরা পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ পেতামতবে আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারী হয়ে যেতাম।(Ash-Shu’araa 26 : 102)

যেদিন অগ্নিতে তাদের মুখমন্ডল ওলট পালট করা হবেসেদিন তারা বলবেহায়। আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম ও রসূলের আনুগত্য করতাম। (Surah Al-Ahzaab 33:66)

তারা কি এখন এ অপেক্ষায়ই আছে যেএর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হোকযেদিন এর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হবেসেদিন পূর্বে যারা একে ভূলে গিয়েছিলতারা বলবেঃ বাস্তবিকই আমাদের প্রতিপালকের পয়গম্বরগণ সত্যসহ আগমন করেছিলেন। অতএবআমাদের জন্যে কোন সুপারিশকারী আছে কি যেসুপারিশ করবে অথবা আমাদেরকে পুনঃ প্রেরণ করা হলে আমরা পূর্বে যা করতাম তার বিপরীত কাজ করে আসতাম। নিশ্চয় তারা নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্তকরেছে। তারা মনগড়া যা বলততা উধাও হয়ে যাবে। (Al-A’raaf 7 : 53)

সমস্ত সুপারিশ আল্লাহরই

তারা কি আল্লাহ ব্যতীত সুপারিশকারী গ্রহণ করেছেবলুনতাদের কোন এখতিয়ার না থাকলেও এবং তারা না বুঝলেও(Az-Zumar 39 : 43)

বলুনসমস্ত সুপারিশ আল্লাহরই ক্ষমতাধীনআসমান ও যমীনে তাঁরই সাম্রাজ্য। অতঃপর তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। (Az-Zumar 39 : 44)

আল্লাহ যিনি নভোমন্ডলভুমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেনঅতঃপর তিনি আরশে বিরাজমান হয়েছেন। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক ও সুপারিশকারী নেই। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না(As-Sajda 32 : 4)

নিঃসন্দেহে আল্লাহ সাবধানীদের পছন্দ করেন (At-Tawba: 7)

আপনি এ কোরআন দ্বারা তাদেরকে ভয়প্রদর্শন করুনযারা আশঙ্কা করে স্বীয় পালনকর্তার কাছে এমতাবস্থায় একত্রিত হওয়ার যেতাদের কোন সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী হবে নাযাতে তারা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে। (Al-An’aam 6 : 51)

হে ঈমানদারগণআমি তোমাদেরকে যে রুযী দিয়েছিসেদিন আসার পূর্বেই তোমরা তা থেকে ব্যয় করযাতে না আছে বেচাকেনানা আছে সুপারিশ কিংবা বন্ধুত্ব। আর কাফেররাই হলো প্রকৃত যালেম। (Al-Baqara 2 : 254)

আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কেউ সুপারিশ করতে পারবেন না

যে দয়াময় আল্লাহর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছেসে ব্যতীত আর কেউ সুপারিশ করার অধিকারী হবে না।(Maryam 19 : 87)

দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার কথায় সন্তুষ্ট হবেন সে ছাড়া কারও সুপারিশ সেদিন কোন উপকারে আসবে না। (Taa-Haa 20 : 109)

তিনি ব্যতীত তারা যাদের পুজা করেতারা সুপারিশের অধিকারী হবে নাতবে যারা সত্য স্বীকার করত ও বিশ্বাস করত। (Az-Zukhruf 43 : 86)

আকাশে অনেক ফেরেশতা রয়েছে। তাদের কোন সুপারিশ ফলপ্রসূ হয় না যতক্ষণ আল্লাহ যার জন্যে ইচ্ছা ও যাকে পছন্দ করেনঅনুমতি না দেন। (An-Nam 53 : 26)

নিশ্চয়ই তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ যিনি তৈরী করেছেন আসমান ও যমীনকে ছয় দিনেঅতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি কার্য পরিচালনা করেন। কেউ সুপারিশ করতে পাবে না তবে তাঁর অনুমতি ছাড়া ইনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। অতএবতোমরা তাঁরই এবাদত কর। তোমরা কি কিছুই চিন্তা কর না (Yunus 10 : 3)

আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেইতিনি জীবিতসবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছেসবই তাঁর। কে আছ এমনযে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে নাকিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।(Al-Baqara 2 : 255)

সুপারিশ কার জন্য ?

যার জন্যে অনুমতি দেয়া হয়তার জন্যে ব্যতীত আল্লাহর কাছে কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। যখন তাদের মন থেকে ভয়ভীতি দূর হয়ে যাবেতখন তারা পরস্পরে বলবেতোমাদের পালনকর্তা কি বললেনতারা বলবেতিনি সত্য বলেছেন এবং তিনিই সবার উপরে মহান। (Saba 34 : 23)

তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা আছেতা তিনি জানেন। তারা শুধু তাদের জন্যে সুপারিশ করেযাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত। (Al-Anbiyaa 21 : 28)

মুমিনদের কর্তব্য

তাদেরকে পরিত্যাগ করুনযারা নিজেদের ধর্মকে ক্রীড়া ও কৌতুকরূপে গ্রহণ করেছে এবং পার্থিব জীবন যাদেরকে ধোঁকায় ফেলে রেখেছে। কোরআন দ্বারা তাদেরকে উপদেশ দিনযাতে কেউ স্বীয় কর্মে এমন ভাবে গ্রেফতার না হয়ে যায় যেআল্লাহ ব্যতীত তার কোন সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী নেই এবং যদি তারা জগতের বিনিময়ও প্রদান কবে,তবু তাদের কাছ থেকে তা গ্রহণ করা হবে না। একাই স্বীয় কর্মে জড়িত হয়ে পড়েছে। তাদের জন্যে উত্তপ্ত পানি এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছেকুফরের কারণে। (Al-An’aam 6 : 70)

অতএবআপনি তাদেরকে ছেড়ে দিনতারা বাকবিতন্ডা ও ক্রীড়াকৌতুক করুক সেই দিবসের সম্মুখীন হওয়া পর্যন্ত,যে দিবসের ওয়াদা তাদের সাথে করা হচ্ছে। (Al-Ma’aarij 70: 42)

নবী ও মুমিনের উচিত নয় মুশরেকদের মাগফেরাত কামনা করেযদিও তারা আত্নীয় হোক একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে তারা দোযখী। (At-Tawba 9: 113)

নৈকট্যশীলদের পরিচয়অল্পসংখ্যক নৈকট্যশীল পরবর্তীদের মধ্যে থেকেঃ

এবং তোমরা তিনভাবে বিভক্ত হয়ে পড়বে। যারা ডান দিকেকত ভাগ্যবান তারা। এবং যারা বামদিকেকত হতভাগা তারা। অগ্রবর্তীগণ তো অগ্রবর্তীই। তারাই নৈকট্যশীলঅবদানের উদ্যানসমূহেতারা একদল পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে। এবং অল্পসংখ্যক পরবর্তীদের মধ্যে থেকে। (Al-Waaqia 56: 7 – 14)

যাদেরকে তারা আহবান করেতারা নিজেরাই তো তাদের পালনকর্তার নৈকট্য লাভের জন্য মধ্যস্থ তালাশ করে যে,তাদের মধ্যে কে নৈকট্যশীল। তারা তাঁর রহমতের আশা করে এবং তাঁর শাস্তিকে ভয় করে। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার শাস্তি ভয়াবহ। (Al-Israa 17: 57)

আর যারা সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনছারদের মাঝে পুরাতনএবং যারা তাদের অনুসরণ করেছেআল্লাহ সে সমস্ত লোকদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন কাননকুঞ্জযার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত প্রস্রবণসমূহ। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। এটাই হল মহান কৃতকার্যতা।(At-Tawba 9:100 )

নৈকট্য অর্জনের উপায়ঃ

কখনই নয়আপনি তার আনুগত্য করবেন না। আপনি সেজদা করুন ও আমার নৈকট্য অর্জন করুন। (Al-Alaq 96 : 19)

হে মুমিনগণআল্লাহকে ভয় করতাঁর নৈকট্য অন্বেষন কর এবং তাঁর পথে জেহাদ কর যাতে তোমরা সফলকাম হও। (Al-Maaida: 35)

আর কোন কোন বেদুইন হল তারাযারা ঈমান আনে আল্লাহর উপরকেয়ামত দিনের উপর এবং নিজেদের ব্যয়কে আল্লাহর নৈকট্য এবং রসূলের দোয়া লাভের উপায় বলে গণ্য করে। জেনোতাই হল তাদের ক্ষেত্রে নৈকট্য। আল্লাহ তাদেরকে নিজের রহমতের অন্তর্ভূক্ত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীলকরুনাময়। (At-Tawba: 99)

>>>>>Special Courtesy:- dararqam.com<<<<<

No comments:

Post a Comment

Translate