✔ আমাদের অফিসে ডক্টর মুহাম্মদ শানকিতি নামে একজন শাইখ আছেন। তিনি মালেকি মাজহাবের অনুসারী। কিন্তু তিনি সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় হাত ছেড়ে দেন না বরং হাত বাঁধেন।
আমি একদিন জিজ্ঞেস করলাম, শাইখ, আপনি তো মালেকি মাজহাবের অনুসারী। তাহলে সালাতে হাত বাঁধেন কেন? তিনি উত্তরে বললেন, “এ মাসআলায় মালেকি মাজহাবে গ্রহণযোগ্য কোন দলিল নাই। হাত বাঁধার দলিলই অধিক মজবুত। তাই দলিলের উপর আমল করি। এ ক্ষেত্রে মাজহাব মানি না।”
✔ এই দৃষ্টিভঙ্গিটা যদি সব মাযহাবি ভায়েরা গ্রহণ করতেন তবে আমাদের মাঝ থেকে ঝগড়া-ফ্যাসাদ বহু অংশে কমে যেত না কি?
✔ মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া কালীন ফিকহের ক্লাসে শাইখগণ যে নীতিতে পড়াতেন তা হল, যে কোন মাসয়ালা বর্ণনা করার পর সেখানে মতবিরোধ থাকলে মতবিরোধ হওয়ার কারণ কি সেটা উল্লেখ করতেন। তারপর প্রত্যেক মতের পক্ষে দলিল-প্রমাণ উল্লেখ করতেন।
তারপর দলিল পর্যালোচনা। পর্যালোচনা শেষে অধিক শক্তিশালী দলিল-প্রমাণ সমৃদ্ধ মতকে রাজেহ বা অগ্রগণ্য হিসেবে নির্ধারণ করতেন। তাতে দেখা যেত, কখনো হানাফি, কখনো শাফেয়ি, কখনো মালেকি, কখনো হাম্বলি আবার কখনো অন্য কোন মত প্রাধান্য পেত।
শায়খের জীবদ্দশায় ৮ খণ্ডে প্রকাশিত উক্ত গ্রন্থে তিনি মোট ৯৫০টি মাসয়ালায় হাম্বলি মাজহাবের বিপরীত মত প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলতেন, “শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া রহ. আমাদের প্রিয়পাত্র। কিন্তু হক আমাদের কাছে তারচেয়েও অনেক বেশি প্রিয়।”
☒ অথচ আমাদের সমাজে কোন ব্যক্তি যদি হানাফি মাযহাবের বিপরীত মত প্রকাশ করে বা আমল করে তাহলে মাযহাব গেল.. মাযহাব গেল.. বলে চিৎকার শুরু হয়ে যায়!! ব্যাপারটা যেন, কুরআন-সুন্নাহ বা দলিল মূখ্য নয়; মাজহাবটাই মূখ্য। কেউ মাযহাবের বিপরীত আমল করলে সে যেন ইসলাম থেকেই বের হয়ে গেল! অথচ সম্মানিত ইমমগণও বারবার দলিলের দিকে ফিরে যাওয়ার আহবান করেছেন। তাদের কোন মত সহিহ হাদিসের বিপরীতে গেলে তারা তাদের মতকে দেয়ালে ছুড়ে মেরে সহিহ হাদিসকে গ্রহণ করার জন্য উদাত্ব আহবান জানিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে তারা ছিলেন সত্যের রাহবার। তারা নিজেদের মুক্তির পথ করে নিয়েছেন। আর মুলত: এটাই মুক্তির পথ।
লেখক:
No comments:
Post a Comment