প্রশ্ন: ইতিকাফ কী? এর নির্দিষ্ট কোনো সময় আছে কি?
উত্তর: ইতিকাফ একটি সুন্নত ইবাদত। এটি মূলত আল্লাহ তাআলার আনুগত্যের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করে ইবাদতে মনোযোগী হওয়া, তা রাত হোক বা দিন, এক ঘণ্টা হোক বা এক দিন, এক রাত বা একাধিক দিন-রাত হোক।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন:
وَلا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাধারণত রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। তবে কোনো বছর কিছু কারণে তা করতে না পারলে তিনি শাওয়ালের প্রথম দশকে ইতিকাফ করতেন।
ইতিকাফ সুন্নত এবং এটি রমজানে করা উত্তম, বিশেষত শেষ দশকে।
রমজান ব্যতীত অন্য মাসেও (যেমন শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ, মহররম ইত্যাদি) ইতিকাফ করা জায়েজ। তবে ইতিকাফ অবশ্যই মসজিদে হতে হবে, যেখানে জামাতের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
যদি ইতিকাফের সময় এক সপ্তাহের বেশি হয় এবং তার মাঝে জুমার দিন আসে, তাহলে উত্তম হলো এমন মসজিদে ইতিকাফ করা যেখানে জুমার নামাজ হয়, যাতে জুমার জন্য বের হতে না হয়। তবে যদি এমন মসজিদে ইতিকাফ করা হয় যেখানে জুমা হয় না, তাহলে জুমার দিন বাইরে গিয়ে নামাজ আদায় করা জায়েজ।
🟢 সারসংক্ষেপ হলো, ইতিকাফের সময় মূলত নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, জিকির, দোয়া এবং অন্যান্য ইবাদতে মনোযোগী হওয়া। তবে পরিবারের সদস্যরা বা বন্ধু-বান্ধব কেউ ইতিকাফকারীর সাথে সাক্ষাৎ করতে এলে কোনো সমস্যা নেই। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীগণ সাক্ষাৎ করতেন।
✅ এতেকাফের নির্দিষ্ট কোন সময়সীমা নেই:
ইতিকাফের নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই। এমনকি এক ঘণ্টার জন্যও করা যায়। এটির জন্য রোজা রাখা শর্ত নয়। কেউ যদি রোজা ছাড়া ইতিকাফ করে, তাতেও কোনো সমস্যা নেই। যদিও কিছু আলিম বলেছেন, ইতিকাফের জন্য রোজা থাকা আবশ্যক, তবে এটি সঠিক মত নয়। আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে: “রোজা ছাড়া ইতিকাফ নেই।” তবে ইবন আব্বাস (রা.) বলেছেন: “ইতিকাফকারীর জন্য রোজা রাখা আবশ্যক নয়, যদি না সে নিজে তা নিজের ওপর বাধ্যতামূলক করে নেয়।”
মূল কথা হলো, ইতিকাফের জন্য রোজা শর্ত নয়, কারণ ইবাদতগুলো শরিয়তের বিধানের ওপর নির্ভরশীল, আর কোরআন-হাদিসে ইতিকাফের জন্য রোজাকে আবশ্যক করার কোনো প্রমাণ নেই।
No comments:
Post a Comment