Sunday, July 9, 2023

গোপনাঙ্গে জয়তুন তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহারের বিধান এবং এই তেল ব্যবহারের অভূতপূর্ব কিছু উপকারিতা

 প্রশ্ন: শিশুর মলদ্বারে জয়তুনের তেল ব্যবহার করা কি জায়েজ? যেহেতু তা বরকতময়। আর জয়তুন তেলের উপকারিতা কী?▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬

উত্তর: শরীরের যেকোনো স্থানে জয়তুন তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে কোন বাধা নেই।
নিঃসন্দেহে জয়তুন তেল (زيت الزيتون/olive oil), জয়তুন ফল, জয়তুন গাছ সবই বরকতময়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সূরা তীনে এই ফলটির কসম খেয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَٱلتِّینِ وَٱلزَّیۡتُونِ
“কসম তীন ও ‘জয়তুন-এর।” [সুরা তীন: ১]
এটিও এই জিনিসটির মর্যাদা ও গুরুত্বের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

আর হাদিসে এসেছে, উমর ইবনুল খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“‏ كُلُوا الزَّيْتَ وَادَّهِنُوا بِهِ فَإِنَّهُ مِنْ شَجَرَةٍ مُبَارَكَةٍ ‏”‏
“তোমরা জয়তুন খাবে এবং তা দ্বারা (শরীর) মালিশ করবে। কেননা, এ হলো মুবারক (বরকতময়) বৃক্ষ।”
[সুনান আত তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), অধ্যায়: ২৮/ খাদ্য সম্পর্কিত, পরিচ্ছেদ: জয়তুন খাওয়া]

▪️লক্ষণীয়:
– জয়তুন বা অলিভ বরকতময় হওয়ার এটিও একটি দিক যে, এটি আমাদের শারীরিক সুস্থতা বা স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য খুবই কার্যকর।
সুতরাং তা রান্না-বান্না সহ যেকোনো প্রয়োজনে ব্যবহার করা জায়েজ। পূর্ব যুগে জায়তুন তেল দ্বারা চেরাগ জ্বালানো হতো।

– এই হাদিসে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম জয়তুনের তেল শরীরে মালিশ করতে বলেছেন। কিন্তু শরীরের নির্দিষ্ট কোন স্থানে মালিশ করা যাবে না-মর্মে কোন কথা বলেননি। অতএব মানুষ প্রয়োজনে তার গোপনাঙ্গে যেমন তা ব্যবহার করতে পারে তেমনি চিকিৎসা হিসেবে মলদ্বার বা অন্য যেকোনো স্থানে ব্যবহার করতে পারে।

🔹”জয়তুন তেল পাইলস/অর্শরোগে ঔষধ” মর্মে বর্ণিত হাদিসটি বানোয়াট:

জয়তুন তেল পাইলস/অর্শরোগের ঔষধ” মর্মে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একটি হাদিস বলা হয়ে থাকে। কিন্তু তা বানোয়াট। সেটি হলো:
عليكم بزيت الزيتون فكلوه وادهنوا به، فإنه ينفع من الباسور
“তোমরা বরকতপূর্ণ জয়তুন গাছের তেল গ্রহণ কর এবং ঔষধ হিসেবে ব্যবহার কর।‌ কারন তা অর্শরোগের আরোগ্যকারী।”
হাদিসটি বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
এটিকে তাবারানী “আল-মু-জামুল কাবীর” গ্রন্থে (১৭/২৪৭/৭৭৪) এবং তার থেকে আবূ নু’য়াইম “আত-তিব্ব” গ্রন্থে (২/৮০) বর্ণনা করেছেন।

🔹অলিভ অয়েল-এর উপকারিতা:

এ সম্পর্কে ডেইলি স্টার লিখেছে:

“ত্বকের যত্নে অলিভ ওয়েল
অলিভ অয়েল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। ত্বকের নিয়মিত যত্নে তেলটি বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। নানান ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ এই তেল আমাদের মুখে বয়সের ছাপ দূর করতে
অলিভ অয়েল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। ত্বকের নিয়মিত যত্নে তেলটি বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। নানান ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ এই তেল আমাদের মুখে বয়সের ছাপ দূর করতেও কাজ করে।
চলুন আজ জেনে নেই ত্বকে অলিভ ওয়েল ব্যবহারের কিছু উপকারিতা।

▪️১. ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা:

আমাদের ত্বকে পানির পরিমাণ কমে গেলে ত্বক রুক্ষ হতে শুরু করে। নিয়মিত অলিভ ওয়েলের ব্যবহার এই ঘাটতির আশঙ্কা দূর করে। প্রচুর ভিটামিন এ ও ই-এর পাশাপাশি এই তেলে ভিটামিন ডি ও কে থাকে, যা ত্বকের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশকেও সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেয়। তাই এটিকে সরাসরি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে বা ক্রিমের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

▪️২. ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু ঠিক করতে:

কনুই বা হাঁটুর ছিলে যাওয়া চামড়া অথবা কোনো হালকা আঘাতে অলিভ ওয়েল ব্যবহার বেশ কার্যকরী। পাশাপাশি মুখের ব্রণ রোধেও ভূমিকা রাখে এটি। ব্রণের জন্য দায়ী বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টিতে বাধা দেয় তেলটির বিভিন্ন উপাদান। রোজাসিয়া ও সোরিয়াসিসের মতো রোগগুলোকেও বেশি বাড়তে দেয় না এটি।

▪️৩. মুখের সজীবতায়:

আমাদের ত্বকের অন্যতম উপাদান কোলাজেনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে অলিভ ওয়েল। তাছাড়া এতে থাকা অলিক এসিড ত্বকের নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে, মুখের ত্বককে করে তোলে আরও নরম, এনে দেয় মুখের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা।

▪️৪. বয়সের ছাপ দূর করতে:

সময়ের সঙ্গে মুখে-শরীরে বয়সের ছাপ পড়া স্বাভাবিক ব্যাপার। তার সঙ্গে যদি যুক্ত হয় দূষিত পরিবেশ, মানসিক চাপ বা অন্য কোনো কারণ, তাহলে তো কথাই নেই। আর এর সমাধানেও আছে অলিভ ওয়েলে। এই তেলে পলিফেনল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা বয়স্ক হওয়ার জন্য দায়ী ফ্রি র‍্যাডিকেল তৈরি হতে দেয় না। পাশাপাশি সূর্যের আলো থেকেও মুখকে সুরক্ষা দেয়।

▪️৫. ত্বক পরিষ্কার রাখতে:

প্রতিনিয়তই আমাদের ত্বককে পরিষ্কার রাখতে হয়। অলিভ ওয়েল সেই নিয়মিত কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। মুখ থেকে মেকআপ বা সানস্ক্রিন ক্রিম তোলার ক্ষেত্রে তেলটি কাজে দেবে। মেকআপ তোলার জন্য বিভিন্ন সামগ্রী বাজারে পাওয়া গেলেও, এগুলোতে মুখের স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু অলিভ ওয়েল সরাসরি বা প্যাডে মেখে মুখে লাগালে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকে না।”
অনুবাদ করেছেন: আসিফ করিম চৌধুরী
[উৎস: bangla.thedailystar]
দৃষ্টি আকর্ষণী:
জয়তুনকে অনেকেই জলপাই-এর সাথে এক করে ফেলে। কিন্তু এ দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ফল।

-আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল-

No comments:

Post a Comment

Translate