Wednesday, October 12, 2022

নারীকে পুরুষের বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি বিষয়ে হাদিসের সঠিক ব্যাখ্যা এবং সংশয় নিরসন

 প্রশ্ন: আল্লাহ তাআলা কি সব মহিলাকে পুরুষের বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করেছেন? এ বিষয়ে ইসলামের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি কী?

▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: আমরা প্রথমে নিম্নে এ সংক্রান্ত কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করব। তারপর সেগুলো ব্যাখ্যার মধ্য দিয়ে উপরোক্ত বিষয়টি সম্পর্কে ইসলামের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি পেশ এবং এ সম্পর্কে মানুষের মনের ভ্রান্তি ও সংশয় নিরসন করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

❑ স্ত্রীকে বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি সংক্রান্ত হাদিস:
◆ আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا, فَإِنَّهُنَّ خُلِقْنَ مِنْ ضِلَعٍ, وَإِنَّ أَعْوَجَ شَيْءٍ فِي الضِّلَعِ أَعْلَاهُ, فَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمَهُ كَسَرْتَهُ, وَإِنْ تَرَكْتَهُ لَمْ يَزَلْ أَعْوَجَ فَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا»مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ, وَاللَّفْظُ لِلْبُخَارِيِّ
وَلِمُسْلِمٍ: «فَإِنِ اسْتَمْتَعْتَ بِهَا اسْتَمْتَعْتَ وَبِهَا عِوَجٌ, وَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهَا كَسَرْتَهَا, وَكَسْرُهَا طَلَاقُهَا

“আর তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো যে, তোমরা তামাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে। কেননা, তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে এবং সবচেয়ে বাঁকা হচ্ছে পাঁজরের ওপরের হাড়। যদি তা সোজা করতে যাও, তাহলে তা ভেঙ্গে দিবে আর যদি তা যেভাবে আছে সেভাবে রেখে দাও তাহলে বাঁকাই থাকবে। অতএব, তোমরা নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করার ব্যাপারে উপদেশ গ্রহণ করো।”

◆ উপরোক্ত শব্দ বিন্যাস সহিহ বুখারির আর সহিহ মুসলিমে এসেছে এভাবে:

فَإِنِ اسْتَمْتَعْتَ بِهَا اسْتَمْتَعْتَ وَبِهَا عِوَجٌ, وَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهَا كَسَرْتَهَا, وَكَسْرُهَا طَلَاقُهَا

“আর যদি তোমরা তাদের থেকে উপকৃত হতে চাও তাহলে বাঁকা থাকা অবস্থায়ই তাদের থেকে উপকৃত হও আর যদি সোজা করতে যাও তাহলে তা ভেঙ্গে ফেলবে। আর ভেঙ্গে ফেলার অর্থ তালাক দেয়া। [ বুখারী ৩৩৩১, ৫১৮৪, ৫১৮৫, ৬০১৮, ৬১৩৮, ৬৪৭৫, মুসলিম ৪৭, ১৪৬৮]

◆ আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

‏ الْمَرْأَةُ كَالضِّلَعِ، إِنْ أَقَمْتَهَا كَسَرْتَهَا، وَإِنِ اسْتَمْتَعْتَ بِهَا اسْتَمْتَعْتَ بِهَا وَفِيهَا عِوَجٌ

“নারী হল, পাঁজরের হাড়ের ন্যায়। যদি তোমরা তাকে সোজা করতে যাও তাহলে তাকে ভেঙ্গে ফেলবে। সুতরাং যদি তাদের থেকে লাভবান হতে চাও তাহলে ঐ বাঁকা অবস্থাতেই লাভবান হবে।” [সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) ৫৪/ বিয়ে-শাদি, পরিচ্ছেদ: ২৫০৪. নারীদের প্রতি সদ্ব্যবহার, আর এই সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “নারীরা পাঁজরের হাড়ের মত”]

❑ নারীদেরকে পুরুষের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে-সংক্রান্ত হাদিসগুলোর ব্যাখ্যা:

এ ব্যাপারে বিজ্ঞ আলেমদের থেকে দু ধরণের দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামত পাওয়া যায়। যেমন:

◈◈ ১ম অভিমত:

প্রথম ও আদি পুরুষ আদম আলাইহিস সালাম-এর জীবন সঙ্গিনী মা হাওয়া আ. কে কেবল আদম আ.-এর বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। যেমন:

◆ ইবনে হাজার রহ. বলেন,
“كأن فيه إشارةً إلى ما أخرجه ابن إسحاق في المبتدأ عن ابن عباس أن حواء خُلقت من ضلع آدم الأقصر الأيسر”
“এখানে যেন ইবনে ইসহাক তার আল ‘মুবতাদা’ কিতাবে ইবনে আব্বাস রা. থেকে যে বর্ণনা এনেছেন সে দিকে ইঙ্গিত রয়েছে যে, (ইবনে আব্বাস রা. বলেন)
إن حواء خلقت من ضلع آدم عليه الصلاة والسلام الأقصر الأيسر وهو نائم
“ঘুমন্ত অবস্থায় আদম আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম-এর বাম পাঁজরের সবচেয়ে ছোট হাড় থেকে হাওয়াকে সৃষ্টি করা হয়েছে।”

◆ দাউদি (আহমদ বিন নসর আদ দাউদি-আল জাযায়েরি (আলজেরিয়া) যাকে সহিহ বুখারির ১ম এবং মুয়াত্তা মালিকের ২য় ভাষ্যকার বলে গণ্য করা হয়, মৃত্যু: ৪০২] বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, إنما المرأة كالضلع “মহিলা হল, বাম পাঁজরের হাড়ের মত।” এ কথার বলার কারণ হল, لأنها خلقت من ضلع آدم “কারণ তাকে (হাওয়া আ. কে) আদমের বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।” [উমদাতুল কারি-বদরুদ্দিন হানাফি রাহ.]

◆ ইমাম নওবী বলেন,

فيه دليل لما يقوله الفقهاء أو بعضهم أن حواء خلقت من ضلع آدم

“এ হাদিসে ফকিহদের এ কথার পক্ষে দলিল রয়েছে যে, হাওয়া আ. কে আদমের বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।” [শরহে সহিহ মুসলিম,৫/২৮১]

এই সৃষ্টির ধরণ কেমন ছিল তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। কিন্তু কতিপয় আলেম বিষয়টি বুঝার স্বার্থে এর উদাহরণ দিয়েছেন যে, “খেজুরের আঁটি থেকে যেভাবে খেজুরের চারা গাছ বের হয়।” [আল মুফহিম-আবুল আব্বাস আল কুরতুবি-মৃত্যু: ৬৫৬]
আদম ও হাওয়া আ. ছাড়া তাদের পরবর্তী সন্তান-সন্ততি ও বংশধর সকলেই স্বামী-স্ত্রীর মিলনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর মানব সৃষ্টির সাধারণ প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে-যা আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার প্রথম আয়াতে স্পষ্ট করে বলেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً

“হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গিনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী।” [সূরা নিসা: ১] এ ছাড়াও বিষয়টি নিম্নোক্ত আয়াত সমূহে আলোচিত হয়েছে। যথা: সূরা আরাফ-এর ১৮৯ নম্বর, সূরা যুমার-এর ৬ নম্বর এবং সূরা আনআম: ৯৮ নম্বর আয়াত।

◈ ২য় অভিমত:

অন্য একদল আলেম বলনে, বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টির ব্যাপারটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রূপক অর্থ ও উপমা অর্থে বলেছেন। অর্থাৎ নারীদের আচার-আচরণ ও স্বভাব চরিত্রে কিছুটা বক্রতা রয়েছে বিধায় তার উদাহরণ হিসেবে এমনটি বলা হয়েছে।
শাইখ আলবানি বলেন, মিশকাত গ্রন্থের ভাষ্যকার মোল্লা আলি কারি [শরহে মিশকাত ৩/৪৬০] বলেছেন, “অর্থাৎ মহিলাদেরকে এমন স্বভাব ও বৈশিষ্ট্য সহকারে সৃষ্টি করা হয়েছে যে, তাতে বক্রতা রয়েছে-যেন তাদেরকে বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর বাম পাঁজরের হাড় হল, বক্র। সুতরাং বক্রতার আকৃতি বা অর্থ বুঝাতে এমন বা استعارة (ইস্তিয়ারাহ) বা রূপকতার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এর উদাহরণ রয়েছে, কুরআনের এই আয়াতে (আল্লাহ তাআলা বলেন),
خُلِقَ الْإِنسَانُ مِنْ عَجَلٍ
“মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে তাড়াহুড়া প্রবণতা থেকে।” [সূরা আম্বিয়া: ৩৭] (অর্থাৎ মানুষের স্বভাব ও প্রকৃতি হল, তাড়াহুড়া করা। এটা তার সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট)

আমি বলি (শাইখ আলবানি রাহ. বলেন,) এ মতটাই আমার নিকট অধিক অগ্রাধিকার যোগ্য। কারণ এটি উপমা এবং রূপক অর্থ; প্রকৃত অর্থ উদ্দেশ্য নয় দুটি কারণে। যথা:

● ১ম: কোনও হাদিস প্রমাণিত হয়নি যে, হাওয়াকে আদমের বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
● ২য়ত: উপমার বিষয়টি অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন: আবু হুরায়রা রা. বর্ণিত হাদিসে এসেছে. إن المرأة كالضِّلع
“নিশ্চয় মহিলা হল, পাঁজরের হাড়ের মত।” (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমদ প্রমুখ আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণনা করেছেন। ইবনে হিব্বান এটিকে সহিহ বলেছেন। এ ছাড়াও ইমাম আহমদ প্রমুখ আবু যর এবং আয়েশা রা. কর্তৃক বর্ণিত হাদিসকে সহিহ বলেছেন] [সিলসিলা যাইফাহ, ১৩/১১৩৯ ও ১১৪০]

◈ তাহলে হাওয়া আ. কে কীভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে?

শাইখ আলবানি আরও বলেন যে, কেউ যদি প্রশ্ন তোলে যে, হাওয়াকে যদি আদম থেকে সৃষ্টি না করা হয়ে থাকে তাহলে তাকে কীভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে? আমরা এর উত্তরে বলব যে, আমরা এ কথা দৃঢ়ভাবে বলতে পারি না যে, হাওয়াকে আদমের পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। কারণ এ ব্যাপারে বিশুদ্ধ ও সুস্পষ্ট কোনও হাদিস সাব্যস্ত হয়নি। মুফাসসিরগণ এ বিষয়ে যা কিছু বর্ণনা করেছেন সেগুলো ইসরাইলি বর্ণনা-যা আমরা সত্য-মিথ্যা কোনটাই বলবো না এবং কেউ এ মত ব্যক্ত করলে আমরা তার বিরোধিতাও করবো না। যেহেতু তা শুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এটি অধিকাংশ মুফাসসিরের অভিমত। কিন্তু আল্লাহ কিভাবে হাওয়া আলাইহাস সালামকে সৃষ্টি করেছেন তা আমরা দৃঢ়তার সাথে বলবো না এবং আমরা এর উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে কষ্টও করতে যাবো না বরং বলব, আল্লাহু আলাম।অর্থাৎ আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন। আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান এবং আমরা বলব যেমনটি আল্লাহ বলেছেন,
وَفَوْقَ كُلِّ ذِي عِلْمٍ عَلِيمٌ
“প্রত্যেক জ্ঞানীর উপরে আছে অধিকতর এক জ্ঞানী।” [সূরা ইউসুফ: ৭৬]
وَمَا أُوتِيتُم مِّنَ الْعِلْمِ إِلَّا قَلِيلًا
“আর তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দান করা হয়েছে।” [সূরা ইসরা: ৮৫]
[দেখুন: তাফসিরে মানার: ৯/৪৩১-৪৩২] ও সিলসিলা যাইফাহ, ১৩/১১৩৯]

◈ মহিলাদেরকে পাঁজরের বাঁকা হাড়ের সাথে উপমা দেওয়ার উদ্দেশ্য কী?

মহিলাদেরকে এভাবে পাঁজরের বাঁকা হাড়ের উপমা দেওয়ার উদ্দেশ্য হল, তাদের আচরণে বক্রতা থাকলেও স্বামীরা যেন তার প্রতি ভদ্রতা ও সদয় আচরণ করে, সব সময় তার দোষ-ত্রুটি অনুসন্ধান না করে এবং তাকে সব দিক থেকে পরিপূর্ণ গুণের অধিকারী হিসেবে পেতে না চায়। অন্যথায় সংসার ভাঙ্গা ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। বরং তার উচিত, ধৈর্য, সহনশীলতা এবং সুন্দর আচরণের মাধ্যমে তাকে নিয়ে ঘর সংসার অব্যাহত রাখা।

❂ সৌদি আরবের স্থায়ী জ্ঞান-গবেষণা ও ফতোয়া বোর্ডকে প্রশ্ন করা হয়, “নারীকে বাঁকা পাঁজর থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে” রসূলের এ হাদিসটির ব্যাখ্যা কী এবং বক্রতা বলতে কী বোঝায়? তারা এর জবাবে বলেন,
أن المرأة لا تخلو من اعوجاج في أخلاقها كالضلع، فمن أراد كمالها لم يستطع ذلك إلا بطلاقها، فالمشروع له: الصبر والتغاضي عن بعض الاعوجاج، مع الاستمرار في النصيحة والتوجيه
“এর অর্থ হল: একজন মহিলা আচার-আচরণে বক্রতা মুক্ত নয়-যেমনটা থাকে পাঁজরের হাড়। তাই যে ব্যক্তি তার মধ্যে পরিপূর্ণতা (দোষত্রুটি মুক্ত এবং সব দিক থেকে পরিপূর্ণ) পেতে চায় সে তা পাবে না তালাক ছাড়া। সুতরাং তার জন্য এটাই বিধেয় যে, সে ধৈর্য ধারণ করবে এবং তার কিছু বাঁকা আচরণ উপেক্ষা করার পাশাপাশি, পরামর্শ এবং নির্দেশনা অব্যাহত রাখবে।” [ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ৪র্থ খণ্ড, ১০৫ পৃষ্ঠা]

❂ নাস্তিকদের অভিযোগ ভিত্তিহীন:

অনেক নাস্তিক ও ইসলাম বিদ্বেষী এক্টিভিস্ট এ সংক্রান্ত হাদিস সমূহের অপব্যাখ্যা করে বলতে চায় যে, হাদিসে বলা হয়েছে, সব নারীকেই তাদের স্বামীর পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এ কথা বলে তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বহুবিবাহ, পাঁজরের হাড় সংখ্যা এবং তাঁর স্ত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন আজেবাজে কথা বলে। আবার কেউ কেউ অবিবাহিত নারী, তালাক প্রাপ্ত নারী, একাধিক পুরুষের সাথে বিয়ে হওয়া নারীর উদাহরণ দেখিয়ে হাদিসকে ভুল প্রমাণ করতে চায়। কিন্তু তাদের এ সব অভিযোগের মূলেই আছে, এ সংক্রান্ত হাদিসগুলোর ভুল বুঝ এবং অপব্যাখ্যা।

❑ সারাংশ:
নারীদেরকে পুরুষের বাম পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে সৃষ্টির ব্যাপারে হক্কানি বিজ্ঞ আলেমদের থেকে দুটি অভিমত পাওয়া যায়। যথা:
ক. শুধু হাওয়া আ. কে আদম আ. এর বাম পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে; আর কোনও নারীকে নয়।
খ. হাওয়া আ. কে আদম আ. বাঁকা হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়নি। বরং হাদিসে মহিলাদের আচার-আচরণ ও স্বভাবে বক্রতা থাকার বিষয়টিকে উপমা ও রূপক অর্থে বলা হয়েছে। উদ্দেশ্য হল, নারীদের সাথে নম্রতা, ভদ্রতা ও সদাচরণ করা।

সব নারীকে পুরুষের বাঁকা হাড় থেকে সৃষ্টি করার বিষয়টি কোনও নির্ভরযোগ্য আলেম বলেননি। বরং একশ্রেণীর নাস্তিক ও ইসলাম বিদ্বেষীর পক্ষ থেকে ইসলামের প্রতি মিথ্যা অপবাদ।
আল্লাহ আমাদেরকে দীনের সঠিক জ্ঞান দান করুন এবং সকল বিভ্রান্তি থেকে হেফাজত করুন। আমিন। আল্লাহু আলাম।

▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।

No comments:

Post a Comment

Translate