প্রশ্ন: প্রচলিত হিল্লা বিবাহ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার শারঈ সিস্টেম কি?
▬▬▬▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি। অতঃপর:

.
ইমাম আহমদ ইব্ন হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)-কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যে কোনো নারীকে বিয়ে করে, কিন্তু তার অন্তরের নিয়ত হচ্ছে স্ত্রীকে তার প্রথম স্বামীর জন্য হালাল করা, অথচ নারী তার এ নিয়ত সম্পর্কে জানে না। তিনি বললেন:هو محلل ، إذا أراد بذلك الإحلال فهو ملعون”সে হিল্লাকারী, যদি সে এর দ্বারা হালাল করার ইচ্ছা করে, তাহলে সে অভিশপ্ত।”(ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১০৯২৪৫)
.
আল-মাউসু‘আতুল ফিকহিয়্যাহ গ্রন্থে বলা হয়েছে:”وقد صرح الجمهور – المالكية والشافعية والحنابلة وأبو يوسف من الحنفية – بفساد هذا النكاح ؛ للحديثين السابقين ، ولأن النكاح بشرط الإحلال في معنى النكاح المؤقت ، وشرط التأقيت في النكاح يفسده ، وما دام النكاح فاسداً : فلا يقع به التحليل ، ويؤيد هذا قول عمر رضي الله عنه : ( والله لا أوتى بمحلل ومحلل له إلا رجمتهما ) “এবং অধিকাংশ ফকীহ – মালিকি, শাফি‘ই, হানাবিলা এবং হানাফি মাযহাবের ইমাম আবু ইউসুফ এ বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, এ ধরনের বিয়ে (অর্থাৎ শর্তসাপেক্ষে হালাল করার উদ্দেশ্যে করা বিয়ে) বাতিল। এর পেছনে দু’টি কারণ রয়েছে: এক, পূর্বোক্ত হাদিসসমূহ; দুই, কারণ, এ ধরণের বিবাহে ‘হালাল করার উদ্দেশ্যে বিবাহের শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়, যা আসলে সময়সীমাবদ্ধ (অস্থায়ী) বিবাহের মতোই আর শরীয়তে সময় নির্ধারণ করে বিবাহ করা স্পষ্টভাবে বাতিল ও ফাসিদ। এবং যেহেতু এই বিয়েই বাতিল, তাই এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী স্বামীর জন্য স্ত্রী হালাল হয় না। এ বিষয়ে সাহাবী উমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এর এই কঠিন বাণী দলিলস্বরূপ উল্লেখযোগ্য:“আল্লাহর শপথ!আমার নিকট যদি হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয়েছে ,তাদেরকে পেশ করা হয়, আমি তাদের উভয়কে অবশ্যই রজম বা প্রস্তরাঘাত করব”।(আল-মাউসু‘আতুল ফিকহিয়্যাহ, খণ্ড ১০, পৃষ্ঠা: ২৫৬-২৫৭)
.
সৌদি আরবের ‘ইলমী গবেষণা ও ফাতাওয়া প্রদানের স্থায়ী কমিটির (আল-লাজনাতুদ দাইমাহ লিল বুহূসিল ‘ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা) ‘আলিমগণ বলেছেন:” إذا تزوج الرجل المرأة بشرط التحليل ، أو نواه ، أو اتفقا عليه : فالعقد باطل ، والنكاح غير صحيح “যদি কোন পুরুষ কোনো মহিলাকে হালাল করার শর্তে বিয়ে করে, অথবা সে এই নিয়ত করে, কিংবা তারা উভয়ে এই বিষয়ে একমত হয়,
তাহলে বিয়ে বা আকদ (বিয়ের চুক্তি) বাতিল, আর বিয়ে অশুদ্ধ ও অবৈধ।……”(ফাতাওয়া লাজনাহ দায়িমাহ; খণ্ড: ১৮; পৃষ্ঠা: ৪৩৯)।
.
সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: আপনাদের দৃষ্টিতে শরীয়াতে হিল্লা বিয়ের বিধান কী ? উত্তরে শাইখ বলেন: প্রথমে জানা প্রয়োজন যে, হিল্লা বিয়ে কি। কোন ব্যক্তির এমন নারীকে বিয়ে করার ইচ্ছা করা, যাকে তার স্বামী তিন তালাক দিয়েছে, অর্থাৎ তার স্বামী তাকে তালাক দিয়ে অতঃপর ফিরিয়ে নিয়েছে, আবার তালাক দিয়ে অতঃপর ফিরিয়ে নিয়েছে, পুনরায় তৃতীয়বার তাকে তালাক দিয়েছে। স্বামীর তিন তালাক প্রাপ্তা এ নারী পুনরায় তার স্বামীর জন্য বৈধ হবে না, যতক্ষণ না তাকে দ্বিতীয় স্বামী আগ্রহসহ বিয়ে করে তার সাথে সহবাসে লিপ্ত হয়, অতঃপর সে ঐ স্বামী থেকে পৃথক হয় তার মৃত্যুর কারণে, অথবা তালাকের কারণে, অথবা বিয়ে ভেঙে দেয়ার কারণে, তাহলে সে প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন:”কোনো ব্যক্তি যদি এ ধরনের নারীকে বিয়ে করে, অর্থাৎ যাকে তার স্বামী তিন তালাক দিয়েছে, এ নিয়তে যে, যখন নারীটি প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হবে, অর্থাৎ যখন সে তার সাথে সহবাস করবে, সে তাকে তালাক দিয়ে দেবে, অতঃপর নারীটি ইদ্দত পালন করে তার পূর্বের স্বামীর কাছে ফিরে যাবে। এ বিয়ে সংঘটিত হয় না, এ বিয়ে অবৈধ ও অভিশপ্ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিয়েতে হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয়কেই অভিসম্পাত করেছেন। তিনি হিল্লাকারীকে ভাড়া করা পাঠা আখ্যা দিয়েছেন। কারণ সে ভাড়া করা পাঠার ন্যায়, যেমন বকরির মালিক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পাঠা ভাড়া করে অতঃপর তার মালিককে ফেরৎ দেয়। এ ব্যক্তি পাঠার ন্যায়, তার কাছে তালাক প্রাপ্তা নারীকে বিয়ে করা, অতঃপর তাকে পৃথক করে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ হিল্লা বিয়ে দু’ভাবে হয়:
*এক. কাউকে বলা হল, আমাদের মেয়েকে তোমার কাছে বিয়ে দিচ্ছি এ শর্তে যে, তার সাথে সহবাস হলে তাকে তুমি তালাক দিয়ে দেবে।
*দুই. কোন শর্ত ছাড়া শুধু অন্তরে নিয়ত গোপন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হল। এ নিয়ত স্বামীর মধ্যে আবার কখনো স্ত্রী ও তার অভিভাবকের মধ্যেও থাকতে পারে। যদি স্বামীর মধ্যে এ নিয়ত থাকে, মূলত পৃথক করার অধিকার সেই সংরক্ষণ করে, তাহলে এ আকদের মাধ্যমে তার জন্য স্ত্রী হালাল হবে না, কারণ এ বিয়ের মধ্যে বিয়ের মূল উদ্দেশ্যই তার ছিল না, অর্থাৎ মহব্বত, ভালবাসা এবং নিজেকে পবিত্র রাখা ও সন্তান লাভের আশা ইত্যাদিসহ আজীবন স্ত্রীর সাথে ঘর-সংসার করার বিয়ের যে মূল উদ্দেশ্য, তাই তার মধ্যে বিদ্যমান ছিল না, অতএব এ বিয়ে বিশুদ্ধ হবে না। আর নারী বা তার অভিভাবকের হিল্লার নিয়তের ব্যাপারে আলেমদের মত বিরোধ রয়েছে, এখন পর্যন্ত আমার কাছে বিশুদ্ধ মন্তব্য কোনটি স্পষ্ট নয়। মুদ্দাকথা : হিল্লা বিয়ে হারাম, এ বিয়ের ফলে নারী তার প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হবে না, কারণ এ বিয়েই শুদ্ধ নয়”।(ইবনু উসাইমীন-ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দারব; পৃষ্ঠা: ৫৭)
.
বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায আন-নাজদী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন,”وهذا من أقبح الباطل ، ومن أعظم الفساد ، وهو زانٍ في المعنى ؛ لأنه ما تزوجها لتكون زوجة ، لتعفه ولتبقى لديه لتحصنه ، ليرجو منها وجود الذرية ، لا ، إنما جاء تيساً مستعاراً ، ليحللها لمَن قبله ، بوطء مرة واحدة ، ثم يفارقها وينتهي منها ، هذا هو المحلل ، ونكاحه باطل ، وليس بشرعي ، ولا تحل للزوج الأول ما دام نكحها بهذه النية ، وبهذا القصد ؛ فإنه نكاح فاسد ، ولا تحل له ، ولا تحل للزوج الأول ؛ لأن هذا ليس بزواج ، والله قال : ( حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ) ، وهذا تيس مستعار ، وليس بزوج شرعي ، فلا يحللها للزوج الأول “এটি সবচেয়ে নিকৃষ্ট বাতিল কাজগুলোর অন্তর্ভুক্ত এবং ভয়াবহ বিপর্যয়গুলোর একটি। বাস্তবে এটি ব্যভিচারের শামিল, কারণ সে (মুহাল্লিল) তাকে প্রকৃত স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেনি নয় নিজেকে পবিত্র রাখার জন্য, নয় তার সঙ্গে সংসার করার উদ্দেশ্যে, নয় সন্তান লাভের আশায় বরং সে এসেছে ‘ভাড়াটে স্বামী’ হিসেবে; কেবলমাত্র তাকে (প্রথম স্বামীর জন্য) হালাল করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে। সে তার সঙ্গে একবার সহবাস করবে, এরপর তাকে তালাক দিয়ে চলে যাবে।এই ব্যক্তি-ই হচ্ছে ‘মুহাল্লিল’ (হালালকারী)। তার এই বিয়ে শরিয়তসম্মত নয় এটি বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য। এই নিয়ত ও উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ বিবাহ করলে সে (স্ত্রী) পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হবে না। কারণ এটি আদৌ বৈধ বিবাহ নয়। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন:‘যতক্ষণ না সে অন্য একজন স্বামীকে বিয়ে করে।”(সূরা বাকারা: ২৩০) কিন্তু এই ব্যক্তি তো কেবল বাড়াটে স্বামী’, প্রকৃত ও বৈধ স্বামী নয়। কাজেই তার মাধ্যমে (প্রথম স্বামীর জন্য স্ত্রীকে) হালাল করা সম্ভব নয়।”(মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতুম মুতানাওয়্যা‘আহ, খণ্ড: ২০; পৃষ্ঠা: ২৭৭-২৭৮)
.

.
স্বামী যখন তার স্ত্রীকে তালাক দেয়, আর এ তালাক যদি প্রথম অথবা দ্বিতীয় তালাক হয় এবং স্ত্রীর ইদ্দত এখনো শেষ না হয়, (যেমন তার বাচ্চা প্রসব করা, যদি তালাক অবস্থায় গর্ভবতী থাকে, অথবা তার তিন ঋতু অতিবাহিত হওয়া) তাহলে তার স্ত্রীকে কথার দ্বারাই রুজআত তথা ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব, যেমন বলা আমি তোমাকে রুজআত করে নিলাম তথা ফিরিয়ে নিলাম অথবা আমি তোমাকে রেখে দিলাম, তাহলে রুজআত হয়ে যাবে, অথবা কোন কাজের দ্বারা রুজআত উদ্দেশ্য করা, যেমন রুজআতের উদ্দেশ্যে সহবাস করা, তাহলেও রুজআত শুদ্ধ।এ ক্ষেত্রে সুন্নত হচ্ছে রুজআতের জন্য সাক্ষী রাখা, যেমন দু’জন ব্যক্তিকে তার রুজআত সম্পর্কে জানানো আল্লাহ তাআলার বাণী অনুসারে, আল্লাহ তাআলা বলেন: “অতঃপর যখন তারা তাদের ইদ্দতের শেষ সীমায় পৌঁছবে, তখন তোমরা তাদের ন্যায়ানুগ পন্থায় রেখে দেবে অথবা ন্যায়ানুগ পন্থায় তাদের পরিত্যাগ করবে এবং তোমাদের মধ্য থেকে ন্যায়পরায়ন দুইজনকে সাক্ষী বানাবে”।(সূরা তালাক:২)আর যদি স্ত্রী এক তালাকের পর অথবা দুই তালাকের পর ইদ্দত শেষ করে ফেলে, তাহলে নতুন করে আকদ করা জরুরী, এ ক্ষেত্রে সে অন্যান্য পুরুষের ন্যায়, মেয়ের অভিভাবক বা স্বয়ং মেয়েকে প্রস্তাব দেবে, যখন মেয়ে ও তার অভিভাবক সম্মত হয় এবং মোহরের প্রতি সন্তুষ্টি পোষণ করে, তখন দুই জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে আকদ সম্পন্ন করতে হবে। আর যদি তিন তালাক দেয়, তাহলে এ স্ত্রী তার উপর হারাম, যতক্ষণ না শরিয়ত সম্মতভাবে স্ত্রী অন্য স্বামীকে বিয়ে করে এবং তার সাথে সহবাসে লিপ্ত হয়, অতঃপর তালাক বা মৃত্যুর কারণে তার থেকে আলাদা হয়। আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়) তালাক দেয়, তাহ’লে সে যতক্ষণ তাকে ব্যতীত অন্য স্বামী গ্রহণ না করে, ততক্ষণ উক্ত স্ত্রী তার জন্য সিদ্ধ হবে না। অতঃপর যদি উক্ত স্বামী তাকে তালাক দেয়, তখন তাদের উভয়ের পুনরায় ফিরে আসায় কোন দোষ নেই, যদি তারা মনে করে যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা বজায় রাখতে পারবে। এগুলি আল্লাহর সীমারেখা। যা তিনি জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য বর্ণনা করে থাকেন”।(সূরা বাক্বারাহ: ২/২৩০)।
.
উপরোক্ত আয়াতের তাফসিরে ইমাম ইবনু ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:‘দ্বিতীয় স্বামী কর্তৃক স্বেচ্ছায় তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে তার প্রথম স্বামীর নিকট পুনরায় ফিরে আসার অনুমতি প্রদান আল্লাহর পক্ষ হতে একটি বিশেষ অনুগ্রহ।কেননা তাওরাতের বিধান মতে তারা আর বিবাহ করতে পারে না। ইনজীলের বিধান মতে তাদের মধ্যে স্থায়ীভাবে বিবাহ নিষিদ্ধ। কিন্তু ইসলামী শরী‘আত বান্দার কল্যাণার্থে তিন তালাকের পরও পুনরায় ঐ স্বামীর সাথে বিবাহের সুযোগ রেখেছে: (ইবনু ক্বাইয়িম ই‘লামুল মু‘আক্কিঈন; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৫৬-৫৭)।
মোটকথা ত্বালাক প্রাপ্তা নারীর ইদ্দাত শেষ হওয়ার পর কোন পুরুষ যদি তাকে স্বেচ্ছায় বিয়ে করে, ত্বালাক দেওয়ার পরিকল্পনা বা বৈধ করার উদ্দেশ্য ছাড়াই সহবাস করে এবং পরবর্তীতে যদি দ্বিতীয় স্বামী কোন কারণে তাকে স্বেচ্ছায় শরীয়ত সম্মত কারণে ত্বালাক দেয় বা মারা যায়, সেক্ষেত্রে প্রথম স্বামী তাকে আবার বিয়ে করতে পারবে। (সূরা আল-বাক্বারাহ: ২৩০)। আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যে তার স্ত্রীকে তিন ত্বালাক দিয়েছে, ফলে সে অন্য পুরুষকে বিয়ে করে তার সাথে নির্জনবাস করে, অতঃপর সহবাস ব্যতীতই স্বামী তাকে ত্বালাক দেয়, সে কি পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হবে? নবী (ﷺ) বললেন, ‘প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হবে না, যতক্ষণ না সে অপরের সহবাসের স্বাদ গ্রহণ করে এবং সে তার সহবাসের স্বাদ গ্রহণ করে’ (সহীহ বুখারী, হা/৫২৬১, ৫২৬৫, ৫৭৯২; সহীহ মুসলিম, হা/১৪৩৩) তবে কোনো ব্যক্তির সাথে এমনভাবে চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া বৈধ নয় যে, তাকে বিয়ে করে তালাক দিয়ে দেবে, এটা গর্হিত ও কবিরা গুনাহ্, এ বিয়ের কারণে স্ত্রী পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হবে না, বরং হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয়কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন।”(এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে দেখুন; ইবনু মাজাহ হা/১৯৩৬; হাকেম হা/২৮০৪; সহীহুল জামে‘ হা/২৫৯৬; সালেহ বিন ফাওযান, আল-মুলাখখাছুল ফিক্বহী ৩১৭-১৮; ইমাম বিন বায; ফাতওয়াত তালাক; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ১৯৫-২১০)। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
▬▬▬▬▬◄❖►▬▬▬▬▬
উপস্থাপনায়:
জুয়েল মাহমুদ সালাফি।
No comments:
Post a Comment