Sunday, October 27, 2024

আলেম নন কিন্তু সব বিষয়ে মানুষকে ফতোয়া দেন তার থেকে ফতোয়া নেওয়া যাবে কি

 প্রশ্ন: একজন ব্যক্তি আলেম নন কিন্তু তার আকিদা সহিহ। তিনি সব বিষয়ে মানুষকে ফতোয়া দেন। তার থেকে ফতোয়া নেওয়া যাবে কি? আর ব্রাদার্সদের থেকে কি ফতোয়া গ্রহণ করা যাবে?

উত্তর: প্রকৃতপক্ষে ফতোয়া দেওয়ার মতো যোগ্যতা আমাদের দেশে যাদেরকে আমরা ‘আলেম’ বলে চিনি তাদের অধিকাংশের মধ্যেই নেই‌ ব্রাদার্স, সাধারণ তালেবুল ইলম, কিংবা সাধারণ দ্বীন চর্চা কারী ব্যক্তি তো দূরের কথা। কেননা ফতোয়া দেওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। ‌যেমন: ইলমুল কুরআন, তাফসির, হাদিস, উসুলে হাদিস, আরবি ভাষা সাহিত্য ও ব্যাকরণ, ফিকহ, উসুলে ফিকহ, সালাফদের ফতোয়া ও মতামত এবং বিশুদ্ধ আকিদা-এর পাশাপাশি ফিকহুল ওয়াকে (পরিবেশ ও প্রেক্ষাপট) সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থাকা।
তাই সাধারণ মানুষের উচিত, দেখেশুনে, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন আলেমদেরকে ফতোয়া জিজ্ঞাসা করা। বিশেষ করে এ ক্ষেত্রে ইলমের জগতে সুপরিচিত বিদগ্ধ ও বড় আলেমদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

যার তার কাছে ফতোয়া জিজ্ঞাসা করা মোটেও নিরাপদ নয়। আর যারা ইচ্ছেমত ফতোয়া দিচ্ছে তাদেরও উচিত, আল্লাহকে ভয় করা। কেননা এটা অনেক বড় আমানত।‌ এবং ইলম বিহীন ফতোয়া দেওয়ার পরিণতি খুবই ভয়াবহ। (আল্লাহ ক্ষমা করুন। আমিন)। তবে সাধারণ আলেম, বক্তা, ওয়ায়েজ, মসজিদের ইমামগণ-খতিব ও ব্রাদার্স প্রমুখগণ যদি বিজ্ঞ আলেমদের দলিল সমৃদ্ধ ফতোয়াগুলো মানুষের কাছে নকল করে তাহলে তাতে সমস্যা নেই। তাদের থেকে এই জাতীয় ফতোয়া গুলো সতর্কতার সাথে গ্রহণ করতে কোন বাধা নেই ইনশাআল্লাহ। আল্লাহু আলম।
▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬

উত্তর প্রদানে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার। সৌদি আরব।

অত্যাচারিত হইওনা এবং অত্যাচার করিও না এটি কি কোন হাদিসের ভাষা

 প্রশ্ন: “অত্যাচারিত হইও না অত্যাচার করিও না” এটা কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা? যদি হয়ে থাকে অনেক সময় অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে অর্থাৎ অত্যাচারিত না হতে চাইলে দেখা যায় আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ঝামেলা সৃষ্টি হয় পরবর্তীতে তারা আর নতুন করে আমাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে চায় না আমরা যত চেষ্টাই করি। এক্ষেত্রে কি করবো?অত্যাচারিত হতে না চাইলে তাদের সাথে ঝামেলা সৃষ্টি হবে। ঝামেলা করাও তো ইসলামিক ভাবে ঠিক না।

উত্তর: “অত্যাচারিত হইওনা এবং অত্যাচার করিও না” এটি কোন হাদিসের ভাষ্য নয়।
তবে হাদিসে জুলুম করা থেকে এবং জুলুমের শিকার হওয়া থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনার কথা এসেছে। যেমন: বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করতেন,
اللَّهمَّ إنِّي أعوذُ بِك مِن أَن أضِلَّ أو أزِلَّ أو أظلِمَ أو أُظلَمَ أو أجهَلَ أو يُجهَلَ عليَّ
– অনুরূপভাবে হাদিসে জুলুম করতে এবং জালিমকে সাহায্য করতে নিষেধ করা হয়েছে।
– কেউ যদি আপনার উপরে জুলুম ও অবিচার করে সবচেয়ে উত্তম হলো, ধৈর্য ধারণ করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাকে ক্ষমা করে দেওয়া কিন্তু প্রয়োজনে সে যে পরিমাণ অন্যায় করেছে সমপরিমাণ প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে‌।
সুতরাং কেউ যদি আপনার প্রতি কোন ধরনের অন্যায়-অবিচার করে তাহলে তাকে সম্ভব হলে ক্ষমা করে দিবেন এবং প্রতিশোধ নেওয়া থেকে নিবৃত থাকবেন। অন্যথায় ইচ্ছে করলে আপনি প্রতিবাদও করতে পারেন ও সমপরিমাণ (বেশি নয়) প্রতিশোধ গ্রহণ করতে পারেন। ইসলামে এর অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু এর কারণে যদি আরো বড় ধরনের ফেতনার আশঙ্কা থাকে তাহলে সেদিকে অগ্রসর হবেন না বরং ধৈর্য ধারণ করবেন। আর জালিমকে ক্ষমা করতে না পারলে আখেরাতে আল্লাহর কাছে এর বিচারের ভার তুলে দিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কেয়ামতের দিন জালিমের উপযুক্ত বিচার করবেন।
▬▬▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।

Translate