প্রশ্ন: অনেক মহিলাই স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে অপছন্দ করে। এতে কি তাদের ইমান নষ্ট হওয়ার বা মুনাফিক হওয়ার সম্ভাবনা আছে?
Sunday, June 4, 2023
স্বামীর একাধিক বিয়েকে অপছন্দ করা কি ঈমান ভঙ্গের কারণ
দান-সদকা করার ফজিলত ও কাকে দান করা যায় এবং দানের সর্বোচ্চ পরিমাণ
প্রশ্ন: দান-সদকা করার ফজিলত কী? কাকে দান করা যায় এবং দানের সর্বোচ্চ পরিমাণ কত?▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: নিম্নে এ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল:
▪ দান-সদকা করার ফজিলত:
▫ খ) দান সম্পদকে বৃদ্ধি করে: পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
▪ কাদেরকে দান করব?
সাধারণভাবে গরিব-অসহায় মানুষকে, জন কল্যাণকর কাজে এবং দ্বীনের প্রয়োজনে সাহায্য করা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। তবে নিজ আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে গরিব, এতিম ও অসহায় মানুষের উদ্দেশ্যে দান করা অধিক উত্তম। এদেরকে দান করলে দু ধরণের সওয়াবের কথা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন: রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
الصَّدَقَةُ عَلَى الْمِسْكِيْنِ صَدَقَةٌ وَهِىَ عَلَى ذِى الْقَرَابَةِ اثْنَتَانِ صَدَقَةٌ وَصِلَةٌ
“দরিদ্রকে দান করলে কেবল সদকার সওয়াব মেলে। আর আত্মীয়কে দান করলে সদকার সওয়াব ও আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষার সওয়াব উভয়ই পাওয়া যায়’। (তিরমিযী, হা/৬৫৮ ও ইবনে মাজাহ, হা/১৮৪৪, সনদ সহীহ) এ মর্মে আরও একাধিক হাদিস রয়েছে।
▪ কী পরিমাণ দান করা যায়?
আল্লাহ তাআলা যাকে অর্থ-সম্পদ দান করেছেন সে যত বেশি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে গরিব-অসহায় মানুষ, জনকল্যাণকর কাজ অথবা দ্বীনের সেবায় অর্থ দান করবেন আল্লাহ তাআলা তাকে তত বেশি সওয়াব দান করবেন। কেউ সুস্থ-সবল ও স্বাভাবিক অবস্থায় চাইলে তার জীবন পরিচালনা এবং তার স্ত্রী-পরিবারের অত্যাবশ্যকীয় খরচ ছাড়া তার সমূদয় সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে দেওয়ার অধিকার রাখে। এতটা দান উচিত নয় যে, সব কিছু দান করার পর সে নিঃস্ব হয়ে যায়। তবে যদি সে শারীরিকভাবে অর্থ-উপার্জনে সক্ষম হয় তাহলে ভিন্ন কথা।
“যা তার উপকারে আসবে তা তাকে অবশ্যই রাখবে; সব সম্পদ দান করবে না, যেমনটি তিনি কাব রা. কে বলেছিলেন,
أَمْسِكْ عَلَيْكَ بَعْضَ مَالِكَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ
অত:এব যথাটা সম্ভব দান করবে এবং এতটুকু রেখে দিবে যা দ্বারা সে আল্লাহর আনুগত্য করতে পারবে এবং তার পরিবারের জন্য ব্যয় করতে পারবে।”
তবে মৃত্যুর পূর্বক্ষণে মুমূর্ষু অবস্থায় দান (ওসিয়ত) করতে চাইলে ইসলাম একটি পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। আর তা হল, সর্বোচ্চ এক তৃতীয়াংশ। এর চেয়ে বেশি দান করা জায়েজ নাই। বরং এর চেয়ে কম হলেই ভালো। মুমূর্ষু অবস্থায় দানের ক্ষেত্রে কেউ যদি তার ধন-সম্পদ সব কিছু দানের ওসিয়ত করে যায় তাহলে তার মধ্যে কেবল এক তৃতীয়াংশ কার্যকর হবে। বাকিটা তার ওয়ারিশদের মাঝে যথানিয়মে বণ্টিত হবে।
🔸 সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বিদায় হজের সময় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলাম। পথিমধ্যে আমি প্রচণ্ড রোগে আক্রান্ত হলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার সেবা-শুশ্রূষা করতে এলে আমি তাঁকে বললাম, হে আল্লাহর রসূল, আমার অনেক সম্পত্তি। কিন্তু আমার ওয়ারিশ হওয়ার মত কেউ নাই একমাত্র মেয়ে ছাড়া। আমি আমার সম্পত্তির তিন ভাগের দুই ভাগ ওসিয়ত করব? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, অর্ধেক? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তবে তিন ভাগের একভাগ? তিনি বললেন, “তিন ভাগের একভাগ! তিন ভাগের একভাগই তো বেশি। সাদ, তোমার উত্তরাধিকারীদেরকে দরিদ্র অবস্থায় রেখে যাবে আর তারা মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করে বেড়াবে এর চেয়ে তাদেরকে সম্পদশালী করে রেখে যাওয়াই উত্তম।” [বুখারী ও মুসলিম]
সালাত শেষে সম্মিলিত মুনাজাত করার হুকুম এবং একসাথে অনেক লোক দুআয় হাত উঠালে তা আল্লাহর দরবারে তাড়াতাড়ি কবুল হয় এ কথার যথার্থতা কতটুকু
প্রশ্ন: আমরা শুনেছি, সম্মিলিত মুনাজাত নাকি বিদআত। কিন্তু আমাদের বাসার কাছে মসজিদে জুম্মার নামাজের পরে সবসময়ই অনেক সময় নিয়ে সম্মিলিত মুনাজাত হয়। আমি ইমাম সাহেবকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে উনি বললেন, “অনেক মানুষ একসাথে হাত উঠালে সেই দুআ তাড়াতাড়ি আল্লাহর দরবারে কবুল হয়।” আমি কি এই মুনাজাতে অংশ নিব?▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
ফরজ সালাতের পর সম্মিলিত মুনাজাত বিদআত এবং মুনাজাতপন্থীদের উত্থাপিত বিভিন্ন সংশয়ের জবাব
ফরজ নামাজের পর মাঝেমধ্যে একক ভাবে হাত তুলে দুআ-মুনাজাত করা জায়েজ এবং হাদিসে বর্ণিত বিভিন্ন জিকির, তাসবিহ, আয়াতুল কুরসি, সূরাতুল ইখলাস, সূরাতুল ফালাক, সূরাতুন নাস ইত্যাদি পাঠ করা সুন্নত। কিন্তু ইমাম এবং মুক্তাদিগণ সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা কোনো সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। যার কারণে বিজ্ঞ ইমামগণের অনেকেই এটিকে অপছন্দ করেছেন ও বিদআত বলেছেন।
নিম্নে এ বিষয়ে বিজ্ঞ আলেমদের মতামত ও বিশ্লেষণের পাশাপাশি মুনাজাতপন্থীগণ তাদের পক্ষে যে সব সংশয় উপস্থাপন করে থাকে সেগুলো জবাব প্রদান করা হল:
❑ ফরজ সালাতের পরে সম্মিলিত মুনাজাত করা প্রসঙ্গে বিজ্ঞ আলেমদের কয়েকটি অভিমত:
◈ মুহাম্মদ বিন আহমাদ আল মালেকী বলেছেন,
◈ শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ বলেছেন,
اما دعاء الإمام والمأمومين جميعا عقيب الصلاة فهو بدعة لم يكن على عهد النبي صلى الله عليه وسلم بل إنما كان دعاؤه في صلب الصلاة فإن المصلى يناجي ربه فإذا دعا حال مناجاته له كان مناسبا. وأما الدعاء بعد انصرافه من مناجاته و خطابه فغير مناسب و إنما المسنون عقيب الصلاة هو الذكر الماثور عن النبي صلى الله عليه وسلم من التهليل والتحميد والتكبير. مجموع الفتاوى لابن تيمية: ٢٢/٥١٩
◈ ইমাম ইবনুল কায়্যেম আল জাওযিয়্যাহ বলেছেন,
أما الدعاء بعد السلام من الصلاة مستقبل القبلة أو المأمومين فلم يكن ذلك من هديه صلى الله عليه وسلم. زاد المعاد,١/٢٤٩
“অতঃপর সালামের পর কিবলামুখী হয়ে দুআ করা অথবা মুক্তাদিগণের দুআ করা। এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদর্শ ছিল না।” [যাদুল মাআদ: ১/২৪৯]
◈ আহমদ বিন গানিম আল মালেকী বলেছেন,
أن المطلوب بإثر الصلاة المفروضة الذكر وأما الاشتغال بالدعاء زيادة على ذلك فقال إنه بدعة لم يرد به عمل عن النبي صلى الله عليه وسلم ولا عن السلف الصالح.الفواكه الدوانية: 1/214
“ফরজ নামাজের পর জিকির ও তাসবিহ করা কাঙ্খিত। আর দুআ করার দ্বারা ব্যস্ত থাকা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সালাফে সালেহ তথা পূর্বসূরীদের থেকে কোন আমল বর্ণিত হয়নি।” [আলফাওকিহুদ দাওয়ানী: ১/২১৪]
◈ ইমাম আব্দুল আযীয বিন বায রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন,
◈ শায়েখ সালিহ আলফাওযান বলেছেন,
أما الدعاء الجماعي بعد الصلاة فهو بدعة لأنه لم يرد عن النبي صلى الله عليه وسلم ولا عن صحابته ولا عن القرون المفضلة أنهم كانوا يدعون دعاء جماعيا بأن يرفع الإمام يديه، ثم يرفعون أيديهم ويدعو، وهم يدعون معه، هذا من البدع. فتاوى صالح الفوزان: ٢/٦٨٠.
“নামাজের পর জামাতবদ্ধ দুআ করা বিদআত। কেননা তা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবিগণ হতে বর্ণিত হয়নি। এমনকি সোনালী যুগের কারো থেকে প্রমাণিত নাই যে, তাঁরা জামাতবদ্ধ দুআ করতেন এভাবে যে, ইমাম তার দুই হাতকে উত্তোলন করতেন, এরপর তারা (মুক্তাদিগণ) তাদের দুই হাত উত্তোলন করতেন এবং দুআ করতেন ও তারা তার সাথে দুআ করতেন। এটা বিদআতের অন্তর্ভুক্ত।” [ফাতাওয়া সালিহ আলফাওযান: ৬৮০]
◈ সাউদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড বলেছে,
❑ ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত মুনাজাতের পক্ষে যে সমস্ত দলিল পেশ করা হয় নিম্নে সেগুলো উল্লেখ পূর্বক অতিসংক্ষেপে সেগুলোর জবাব দেওয়া হল:
◆ জবাব: এখানে সম্মিলিত মুনাজাতের কথা কোথায় আছে? বরং এখানে ফরজ সালাতের পর মাসনুন দুআ (হাদিস দ্বারা প্রমাণিত বর্ণিত দুআ) তাসবিহ পাঠ এবং তিলাওয়াত করার কথা বলা হয়েছে।
✪ ৬) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
لا يَجْتَمِعُ مَلأٌ فَيَدْعُو بَعْضُهُمْ وَيُؤَمِّنُ سَائِرُهُمْ إِلا أَجَابَهُمُ اللَّهُ. الطبراني: (3536). ورواه الحاكم في المستدراك: ٥٤٧٨
✪ ৮) ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেছেন,
«لَا يَؤُمُّ رَجُلٌ قَوْمًا فَيَخُصُّ نَفْسَهُ بِالدُّعَاءِ دُونَهُمْ، فَإِنْ فَعَلَ فَقَدْ خَانَهُمْ» رواه الترمذي (357). وقال حديث ثوبان حديث حسن .
✪ ১০) ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেছেন,
✪ ১৩) ইমাম বুখারী বর্ণনা করেছেন,
عن أبي هريرة أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «إذا أمن القارئ فأمنوا، فإن الملائكة تؤمن، فمن وافق تأه تأمين الملائكة، غفر له ما تقدم من ذنبه». أخرجه البخاري (٦٤٠٢).
আবু হুরায়রাহ রাযি আল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যখন কুরান পাঠকারী (ইমাম) আমিন বলে, তখন তোমরাও আমিন বলো। যার আমিন বলা ফেরেশতাদের আমিন বলার সাথে হয়, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।” [সহীহুল বুখারী হাদিস নম্বর: ৬৪০২]
◆ জবাব: এটি সালাতের ভেতরের বিষয়। যেমন: ইমাম যখন গাইরিল মাগযুবি আলাইহিম পড়ে তখন মুক্তাগিণ আমিন বললে এই মর্যাদা লাভ হয় যা অন্য হাদিসে স্পষ্টভাবে এসেছে। সুতরাং এর দ্বারা ফরজ সালাতের পরে ইমাম-মুক্তাদির সমন্বয়ে দু হাত তুলে মুনাজাত সাব্যস্ত হয় না।
✪ ১৪) ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেছেন:
عن عمر بن الْخطاب رَضِي الله عَنهُ قَالَ: «كَانَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم اذا رفع يَدَيْهِ فِي الدُّعَاء لم يحطهما حَتَّى يمسح بهما وَجهه». أخرجه الترمذي: ٣٣٨٦.
উমার বিন আলখাত্তাব রাযি আল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন দুআতে তাঁর দুই হাতকে উত্তোলন করতেন তখন তিনি উভয় হাতকে রাখতেন না যতক্ষণ না তিনি উভয় হাত দ্বারা তাঁর মুখমণ্ডলকে মাসেহ করতেন।” [সুনানু তিরমিযী হাদিস নম্বর: ৩৩৮৬]
✪ ১৫) ইমাম বুখারী বর্ণনা করেছেন,
◆ জবাব: এই হাদিস দ্বারা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দুই হাতকে উঁচু করে দুআ করা সাব্যস্ত হয়। কিন্তু ফরজ সালাতের পর সম্মিলিত মুনাজাত করা সাব্যস্ত হয় না।
✪ ১৬) ইমাম তাবারানী বর্ণনা করেছেন,
عن محمد بن أبي يحيى قال: رأيت عبد الله بن الزبير رضي الله عنه ورأى رجلًا رافعًا يديه يدعو قبل أن يفرغ من صلاته، فلما فرغ منها قال: «إن رسول الله صلى الله عليه وسلم لم يكن يرفع يديه حتى يفرغ من صلاته». رواه الطبراني: (١٤٩٠٧) وقتل الألباني: قال الهيثمي في مجمع الزوائد: (١٧٣٤٥) رجاله ثقات
✪ ১৭) ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেছেন,
عن الفضل بن عباس رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «الصلاة مثنى مثنى، تشهد في كل ركعتين، وتخشع وتضرع وتمسكن، ثم تقنع يديك، يقول ترفعهما إلى ربك مستقبلًا ببطونهما وجهك، وتقول يا رب يا رب، ومن لم يفعل ذلك فهو كذا وكذا»، وفي رواية: «فهو خداج». رواه الترمذي وصححه. سنن الترمذي: ٣٨٥.
ফজলত বিন আব্বাস রাযি আল্লাহ আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নামাজ দুই রাক্আত দুই রাক্আত করে আদায় করতে হবে। তুমি প্রত্যেক দুই রাক্আতে তাশাহহুদ পাঠ করবে। নামাজে বিনয়, নম্রতা ও অক্ষমতা প্রকাশ করবে। এরপর তুমি দুই হাতকে তোমার পালন কর্তার দিকে উত্তোলন করবে কিবলামুখি হয়ে উভয় হাতের পেটকে (তালু) তোমার মুখের দিকে করে বলবে: হে আমার রব, হে আমার পরোওয়ারদেগার! আর যে ব্যক্তি এটা করবে না তার দুআ এমন এমন। অপর বর্ণনায় এসেছে: অসম্পূর্ণ (অর্থাৎ যে এভাবে দুআ করবে না তার দুআ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে) ইমাম তিরমিযী উহাকে বর্ণনা করেছেন ও সহিহ বলেছেন। [সুনানু তিরমিযী, হাদিস নম্বর: ৩৮৫। আরও বর্ণনা করেছেন আহমদ ও তাবারানী এবং নাসায়ী সহ অন্যান্য ইমামগণ]
✪ ১৮) ইবনুল আরাবী বর্ণনা করেছেন,
عن أنس رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال: ما من عبد يبسط كفّيه في دبر كل صلاة ثم يقول: اللهم إلهي وإله إبراهيم وإسحاق ويعقوب، وإله جبريل وميكائيل وإسرافيل، أسألك أن تستجيب دعوتي فإني مضطر. معجم ابن العربي: ١٢٠٤
আনাস রাযি আল্লাহ আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলছেন, কোন বান্দা প্রত্যক নামাজের পর তার দুই হাতকে প্রসারিত করবে এরপর সে বলবে: “হে আল্লাহ, আপনি আমার ইলাহ। আপনি ইব্রাহিম, ইসহাক এবং জিবরাইল, মিকাইল ও ইস্রাফিলের মাবুদ। আমি আপনার নিকটে প্রার্থনা করছি, আপনি আমার দুআ কবুল করুন। কারণ আমি নিতান্ত অসহায়।” [মুজামু ইবনে আরাবী: ১২০৪]
✪ ১৯) ইবনু আবী শায়বাহ বর্ণনা করেছেন,
জাবির বিন ইয়াযিদ বিন আল্আস্ওয়াদ হতে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেন তার পিতা হতে। তিনি বলেন,, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম-এর পেছনে ফজর নামাজ আদায় করেছি। তিনি যখন সালাম ফিরালেন তখন তিনি তাঁর দুই হাত উত্তোলন করে দুআ করলেন।” [মুসান্নাফু ইবনে আবী শায়বাহ, হাদিস নম্বর: ৩০৯৩]
الحديث رواه ابن أبي شيبة في مصنفه، كذا ذكر بعض الأعلام هذا الحديث بغير سند، وعزاه إلى المصنف. ولم أقف على سنده. فالله تعالى أعلم كيف صحيح أو ضعيف؟. تحفة الاحوذي: ٢/١٧١
বাতাসকে গালি দেওয়া নিষেধ
প্রশ্ন: হাদিসে বাতাসকে গালি দিতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু অনেক সময় বেশি বৃষ্টি বা তুষার ঝড় হলে আমরা বলে থাকি যে, আজ আবহাওয়া খারাপ, বাইরে/কাজে/ স্কুলে যাব না ..ইত্যাদি। যদি এটা এমনি কথার কথা হয়; কোন অভিযোগ স্বরূপ না হয় তাহলেও কি তা হাদিস অনুযায়ী গালি বা আকিদাগত ত্রুটি হিসেবে গণ্য হবে?▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
ঝড়-বৃষ্টিতে যে দুআ পাঠ করতে হয়
❒ ঝড় ও বায়ু প্রবাহের সময় দুআ:
❒ বৃষ্টির সময় দুআ:
পরীক্ষা কেন্দ্রিক বিদআত এবং পরীক্ষার পূর্বে দু রাকআত সালাত আদায়ের বিধান
❑ প্রশ্ন-১: অনেকে পরীক্ষার পরে খাতায় বিভিন্ন দুআ পড়ে ফুঁ দেয়। তারা মনে করে যে, এটা করলে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল লাভ করা যাবে, পরীক্ষার খাতায় ভুল থাকলে তা ঠিক হয়ে যাবে, লেখায় কাটাকাটি থাকলে তা সংশোধিত হয়ে যাবে ইত্যাদি। হ্যাঁ, আমিও বিশ্বাস করি, সব কিছুতে দুআ-দরুদের প্রভাব আছে। কিন্তু এটা আমার কাছে অযৌক্তিক মনে হয়। এখন আমি যদি বিশ্বাস করি যে, এতে কোনও উপকার হবে না তাহলে কি আমি কা/ফি/র হয়ে যাবো? আর এক্ষেত্রে কেমন বিশ্বাস রাখা উচিৎ?▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
পড়াশোনার প্রতি অমনোযোগিতা, অনর্থক সময় অপচয় বা অলসতা করে যারা বছর পার করে তারাই পরীক্ষা পাশের এমন উদ্ভট দোয়া ও তদবির খুঁজে বেড়ায়। কোথাও না পেলে শেষ পর্যন্ত নিজেরাই আবিষ্কার করে ফেলে। আসলে এসব আবিষ্কার দ্বারা কোন উন্নতি হয় না। বরং ভালো পরীক্ষা না দেওয়ার ফলে একদিকে পরীক্ষায় দুর্বল ফলাফল লাভ করে অথবা অকৃতকার্য হয় অন্যদিকে মনগড়া পন্থায় পরীক্ষার খাতায় দুআ-দরুদ পড়ে ফুঁ দেওয়ার মাধ্যমে বিদআত করে। এটি কুরআন ও হাদিসের দুআর অপব্যবহারের শামিল। এতে সে দ্বীন ও দুনিয়া উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আল্লাহ হেফাজত করুন। আমিন।
একজন পরীক্ষার্থীর উচিত, পরীক্ষার জন্য আগে থেকেই সঠিক পদ্ধতিতে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি আল্লাহর কাছে দুআ করা যেন, আল্লাহ তাকে সঠিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার তৌফিক দান করেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখেন, তার মেধা ও স্মৃতিশক্তিকে প্রখর করেন এবং পরীক্ষার খাতায় সঠিকভাবে লেখার শক্তি দেন। পরীক্ষা শেষেও আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারে যে, আল্লাহ যেন পরীক্ষকের অন্তর নরম করে দেন যেন, তিনি তার উত্তরপত্র দেখে খুশি হন এবং তাকে আশানুরূপ নাম্বার দেন।
কিন্তু পরীক্ষার খাতায় ভুল লিখে ভুল ঠিক করার জন্য পরীক্ষার খাতায় দুআ-দরুদ পাঠ করে ফুঁ দেওয়া নিতান্ত মূর্খতা সুলভ কাজ এবং কুরআন-হাদিসের দুআর অপব্যবহারের শামিল। এটিকে দুআর মধ্যে ‘বাড়াবাড়ি’ও বলা যায়।
মনে মনে কুরআন তিলাওয়াত করলে কি পূর্ণ সাওয়াব পাওয়া যাবে
প্রশ্ন: মনে মনে কুরআন তিলাওয়াত করলে কি পূর্ণ সাওয়াব পাওয়া যাবে?▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
জিলকদ মাসের বৈশিষ্ট্য সমূহ এবং এ মাসের সুন্নতি আমল
হিজরি ক্যালেন্ডারের ১১ তম মাস হল, জিলকদ মাস। এর পরের মাসই জিলহজ মাস-যাতে ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে মুসলিম বিশ্বের সর্ব বৃহৎ গণ জমায়েত এবং ইসলামের ৫ম স্তম্ভ হজ অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু হজের প্রস্তুতি শুরু হয় আরও বহু আগে থেকে।
❑ এ মাসগুলো হারাম হওয়ার কারণ:
◈ ৩. এ মাসের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরতের পরে মোট চারটি ওমরা আদায় করেছেন। সেগুলোর মধ্যে হজের সাথে যে ওমরা করেছেন সেটি ছাড়া বাকি সবগুলোই আদায় করেছেন জিলকদ মাসে।
কাতাদা রা. হতে বর্ণিত, আনাস রা. তাকে এ তথ্য দিয়েছেন যে,