প্রশ্ন: ইসলামে মেহমানদারীর বিধান কি? আতিথেয়তার আদব সমূহ সম্পর্কে শার’ই নির্দেশনা জানতে চাই?
Wednesday, September 3, 2025
ইসলামে মেহমানদারীর বিধান ও আদব সমূহ
ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান হাফিযাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ
1: সৌদি ফতোয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] বলেন:
إذا تزوج الرجل بإمرأة صالحة، فإنه يعيش حياة مُنسجمة حتى لو كان فقيرًا رزقنا الله وإياكم.
শাইখ উত্তরে বলেন,
الطالبة والمرأة على وجه العموم لا يجوز تصويرها لأن تصويرها أشد من تصوير الرجل لأن صورتها ستتداول ويتناقلها الرجال فلا يجوز لها ذلك فإذا توقف تعليمها على الصورة فأنا أرى أنها تترك التعلم لأن التعلم ليس لازم لها إذا تعلمت أمور دينها وأمور صلاتها هذا يكفى من التخصص فالتصوير حرام شديد التحريم وتصوير النساء أشد لما فيه من الفتنه فالتعليم الذي ليس هو واجب وإنما هو من النقل أو من فضائل الأعمال لا ترتكب المحرم من أجله نعم
“স্ত্রীলোক হোক কিংবা কোন ছাত্রী উভয়ের জন্য একই বিধান যে, তাদের ছবি তোলা বৈধ নয়। কেননা তাদের ছবি পুরুষদের ছবির চেয়ে বেশি ফেতনা সৃষ্টি করে এবং তাদের ছবি নিয়ে ছেলেরা বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য ও বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করে যেটা বৈধ নয়। তবে যদি এই ছবির জন্য তার জ্ঞানার্জন করা বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে আমার ব্যক্তিগত পরামর্শ হল- সে সেখানে জ্ঞানার্জন করা থেকে বিরত থাকবে। কেননা তার জন্য সেখানে জ্ঞানার্জন করা আবশ্যক নয়। যদি সে দ্বীনি বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করে থাকে, তাহলে এটাই তার জন্য যথেষ্ট। কেননা ছবি হারাম। এবং এটি ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আর মেয়েদের ছবি তোলা তো আরো নিষিদ্ধ। কেননা তাতে ফেতনার আশংকা অনেক বেশি এবং এমন কিছু বিষয় জানা যার মাধ্যমে তোমার দ্বীন স্থির থাকবে এসব বিষয়ে অতিরিক্ত জ্ঞানার্জন আবশ্যক নয়। বরং এটি নফল কিংবা ফাযায়েলে আমলের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই এই কারণে সে যেন কোন হারাম কাজ সম্পাদন না করে”।(শাইখের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ফাতওয়া নং-২০৩২)
3: বর্তমান পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম,সৌদি ফতোয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল প্রশ্ন : শিক্ষার কি নির্ধারিত কোন সময় আছে, নাকি একজন ব্যক্তি সারা জীবনই জ্ঞানার্জনে অব্যাহত থাকবে?
উত্তরে শাইখ বলেন,
طلب العلم ليس له وقت محدد في حياة الإنسان يطلب العلم في كل حياته العلم لا يشبع منه وليس له نهاية كلما تزود الإنسان منه ازداد من الخير والعمل الصالح فلا يقف عن طلب العلم وفوق كل ذى علم عليم (فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ وَلَا تَعْجَلْ بِالْقُرْآنِ مِن قَبْلِ أَن يُقْضَى إِلَيْكَ وَحْيُهُ وَقُل رَّبِّ زِدْنِي عِلْمًا) [سورة طـه: 114] التزود من طلب العلم مطلوب ولا يتوقف الإنسان عند حد منع وهو يقدر على المواصلة على طلب العلم فيواصل طلب العلم وكل ما بادر من الصغر فهو أحسن من الطالب الذي يطلب العلم بعدما يكبر وإن كان كل ذلك خير لكن طلب العلم في سن الشباب مبكرا يكون أفضل ولهذا يقولون العلم في الصغر كالنقش في الحجر لأن ذاكرة الشاب تختلف عن ذاكرة الكبير ذاكرة الشاب تكون أصفى وأقوى والعلم يثبت فيها أكثر مما يثبت في ذاكرة الكبير.
“জ্ঞান অন্বেষণের নির্ধারিত কোন সময় নেই। একজন ব্যক্তি সারাজীবনই জ্ঞানার্জনে অতিবাহিত করবে। আর জ্ঞানার্জনে কখনও পরিতৃপ্ত হওয়া যায় না এবং শিক্ষার কোন সমাপ্তিও নেই। যখন কোন ব্যক্তি এই জ্ঞান সরবরাহ করবে তখন তার কল্যাণ অর্জন ও সৎকর্ম আরো বৃদ্ধি পাবে। কাজেই কোন ব্যক্তি যেন জ্ঞানার্জনে ক্ষান্ত না হয়। মহান আল্লাহ বলেন, وَ فَوۡقَ کُلِّ ذِیۡ عِلۡمٍ عَلِیۡمٌ ‘আর প্রত্যেক জ্ঞানবান ব্যক্তির উপর আছে সর্বজ্ঞানী’ (সুরা ইউসুফ : ৭৬)। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন,وَقُلۡ رَّبِّ زِدۡنِیۡ عِلۡمًا ‘হে আমার রব! আমাকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ করুন’ (সুরা ত্ব-হা: ১১৪)। সুতরাং জ্ঞান সরবরাহ করা অপরিহার্য। কাজেই একজন ব্যক্তির সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সে যেন জ্ঞান অন্বেষণে অব্যাহত থাকতে ক্ষান্ত না হয়। এক্ষেত্রে তার উচিত হল ভালোভাবে জ্ঞানার্জন চালিয়ে যাওয়া। যদি কেউ ছোটতে জ্ঞানার্জন শুরু করে তাহলে সে তো ঐ ছাত্রের চেয়ে উত্তম বলে বিবেচিত হবে যে বড় হয়ে জ্ঞান অন্বেষণ করে। যদিও যে কোন বয়সেই জ্ঞানার্জনে কল্যাণ নিহিত। কিন্তু যুবক বয়সে দ্রুত ইলম হাসিল করা উৎকৃষ্টতর। এ কারণে আলেমগণ বলেন, العلم في الصغر كالنقش في الحجر ‘শৈশবে জ্ঞান আহরণ করা পাথরে খোদায় করার ন্যায়’। কেননা তরুণদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধদের স্মৃতি শক্তির চেয়ে আলাদা হয়। তাদের মেধা অনেক স্বচ্ছ ও সুদৃঢ় হয়। অধিকন্তু বৃদ্ধ বয়সের চেয়ে যুবক বয়সে অনেক বেশি জ্ঞান অন্বেষণ করা যায়।(শাইখের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ফাতওয়া নং-২০৩২)।
” البيعة لا تكون إلا لولي أمر المسلمين ، وهذه البيعات المتعددة مبتدعة ، وهي من إفرازات الاختلاف ، والواجب على المسلمين الذين هم في بلد واحد وفي مملكة واحدة أن تكون بيعتهم واحدة لإمام واحد ، ولا يجوز المبايعات المتعددة ”
خلقك الله لعبادته، وإنما سخر لك هذه الموجودات من أجل أن تستعين بها على عبادته- لأنك لا تستطيع أن تعيش إلا بهذه الأشياء، ولا تتوصل إلى عبادة الله إلا بهذه الأشياء، سخرها الله لك لأجل أن تعبده، ليس من أجل أن تفرح بها وتسرح وتمرح وتفسُق وتفجر تأكل وتشرب ما اشتهيت،
“আল্লাহ তোমাকে তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি সৃষ্টিজগতের সবকিছুকে তোমার অনুগত করেছেন এগুলির সাহায্যে তাঁর ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য। কারণ তুমি এগুলি ব্যতীত বেঁচে থাকতে পারবে না এবং আল্লাহর ইবাদতেও নিয়জিত থাকতে পারবে না। আল্লাহ তাঁর ইবাদত করার নিমিত্তেই এগুলিকে তোমার অনুগত করে দিয়েছেন। এজন্য নয় যে,তুমি এগুলির মাধ্যমে আনন্দ-উল্লাস করবে, দম্ভভরে পৃথিবীতে বিচরণ করবে, পাপে ডুবে থাকবে এবং মনের চাহিদা অনুযায়ী পানাহার করবে”।(ইমাম সালেহ বিন ফাওযান, শারহুল ক্বাওয়া‘ইদিল আরবা‘আ, পৃষ্ঠা: ১৪)
6: বর্তমান পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] বলেন:
《 اللسَان خطِير جدًّا ، اللسَان أشدُ من السَّيف . السَّيف يمكن تقتُل به واحدًا أو اثنَين ، لكن اللِسان تقتُل به أمَّة !
জিহ্বা খুবই বিপজ্জনক, জিহ্বা তরবারির চেয়েও ধারালো। তরবারি দিয়ে আপনি একজন বা দুইজনকে হত্যা করতে পারেন, কিন্তু জিহ্বা দিয়ে আপনি একটি জাতিকে হত্যা করতে পারেন। (শারহু কিতাবিল ফিতান ওয়াল হাওয়াদিস পৃষ্ঠা: ২৩৮)
ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশ-শাফিঈ আল-মাক্কী রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ
1: শাইখুল ইসলাম নাসিরুল হাদীস ফাক্বীহুল মিল্লাত ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশ-শাফি‘ঈ আল-মাক্কী (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৫০ হি: মৃত: ২০৪ হি.] বলেছেন:
صَحِبْتُ الصُّوفِيَّةَ. فَمَا انْتَفَعْتُ مِنْهُمْ إِلَّا بِكَلِمَتَيْنِ، سَمِعْتُهُمْ يَقُولُونَ: الْوَقْتُ سَيْفٌ. فَإِنْ قَطَعْتَهُ وَإِلَّا قَطَعَكَ. وَنَفْسُكَ إِنْ لَمْ تَشْغَلْهَا بِالْحَقِّ، وَإِلَّا شَغَلَتْكَ بِالْبَاطِلِ.
3: শাইখুল ইসলাম নাসিরুল হাদীস ফাক্বীহুল মিল্লাত ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশ-শাফি‘ঈ আল-মাক্কী (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৫০ হি: মৃত: ২০৪ হি.] বলেছেন,
: ” وكان الإجماع من الصحابة والتابعين ومن بعدهم ومن أدركناهم يقولون: الإيمان قول وعمل ونية لا يجزئ واحد من الثلاثة إلا بالآخر ”
كَمْ مِن صحيحٍ ماتَ مِن غيرِ عِلَّةٍ * وكَمْ مِن عَليلٍ عَاشَ حِينَاً مِن الدَهرِ وكَمْ مِن فَتَى يُمسي ويُصبح ضاحكاً * وأكفانه في الغيب تُنسج وهو لا يدري
أَشَدُّ الأَعْمَالِ ثَلاثَةٌ: الْجُودُ مِنْ قِلَّةٍ، وَالْوَرَعُ فِي خَلْوَةٍ وَكَلِمَةُ حَقٍّ عِنْدَ مَنْ يُرْجَى وَيُخَافُ، ‘
সবচেয়ে কঠিন আমল তিনটি।
ইমাম ফুদ্বাইল বিন ইয়াদ্ব রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ
1: প্রখ্যাত তাবি‘ তাবি‘ঈ, আহলুস সুন্নাহ’র শ্রেষ্ঠ ‘আলিম, শাইখুল ইসলাম, ইমাম ফুদ্বাইল বিন ‘ইয়াদ্ব (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৮৭ হি.] বলেছেন,
الزمْ طريقَ الهدَى ، ولا يضرُّكَ قلَّةُ السالكين ، وإياك وطرقَ الضلالة ، ولا تغترَّ بكثرة الهالكين ”
“তুমি হেদায়াতের (সঠিক পথের) ওপর অটল থেকো, এতে যদি পথচারীর সংখ্যা কমও হয়,তবুও তা তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।আর তুমি গোমরাহির (বিভ্রান্তির) পথ থেকে সতর্ক থাকো,যদিও সেই পথে চলার লোক অনেক হয়,তবুও সংখ্যার মোহে পড়ে ধোঁকা খেয়ো না।”(ইমাম নববী; আল মাজমু: পৃষ্ঠা: ২২১; ইমাম শাতিবী; আল-ই’তিসাম খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৮৩)
2: প্রখ্যাত তাবি‘ তাবি‘ঈ, আহলুস সুন্নাহ’র অন্যতম শ্রেষ্ঠ ‘আলিম, শাইখুল ইসলাম, ইমাম ফুদ্বাইল বিন ‘ইয়াদ্ব (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৮৭ হি.] বলেছেন:
إذا كان يُسأل الصادقين عن صدقهم، مثل إسماعيل وعيسى عليهما السلام فكيف بالكاذبين أمثالنا ؟!!
الْمُؤْمِنُ يَسْتُرُ وَيَنْصَحُ، وَالْفَاجِرُ يَهْتِكُ وَيُعَيِّرُ
“মুমিন (কারো দোষ দেখলে তা) গোপন করে এবং তাকে (গোপনে) নসীহত করে। আর পাপী ব্যক্তি (দোষ গোপন না করে তাকে) অপমান ও (জনসম্মুখে) লজ্জিত করে”।(ইবনু রজব হাম্বলী, জামে‘উল ‘উলূম ওয়াল হিকাম: ১/২২৫)।
4: ফুযাইল ইবনু ‘ইয়ায (রাহিমাহুল্লাহ) (জন্ম: ১০৭ মৃত্যু: ১৮৭ হি.) বলেন,
مَنْ أَحَبَّ صَاحِبَ بِدْعَةٍ أَحْبَطَ اللهُ عَمَلَهُ وَأَخْرَجَ نُوْرَ الْإِسْلَامِ مِنْ قَلْبِهِ، وَمَنْ زَوَّجَ كَرِيْمَتَهُ مِنْ مُبْتَدِعٍ فَقَدْ قَطَعَ رَحِمَهَا، وَمَنْ جَلَسَ مَعَ صَاحِبِ بِدْعَةٍ لَمْ يُعْطَ الْحِكْمَةَ، وَإِذَا عَلِمَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ رَجُلٍ أَنَّهُ مُبْغِضٌ لِصَاحِبِ بِدْعَةٍ رَجَوْتُ أَنْ يَغْفِرَ اللهُ لَهُ.
যে ব্যক্তি বিদ‘আতীকে ভালোবাসে আল্লাহ তা‘আলা তার আমলকে ধ্বংস করে দেন এবং তার অন্তর থেকে ইসলামের জ্যোতিকে বের করে দেন। আর যে কোন বিদ‘আতীর কন্যাকে বিবাহ করে তার প্রতি রহম বা আল্লাহর দয়া কেটে যায়। যে বিদ‘আতীর সাথে উপবেশন করে তাকে হেকমত বা প্রজ্ঞা দান করা হয় না। আর আল্লাহ তা‘আলা যখন কোন ব্যক্তির ব্যাপারে জানেন যে, সে বিদ‘আতীর সাথে বিদ্বেষপরায়ণ, আমি আশা করি আল্লাহ তা‘আলা তাকে ক্ষমা করে দিবেন’।(আল-জামিঊ লি আহকামিল কুরআন, খন্ড: ৭; পৃষ্ঠা: ১৩)
ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদিঈ রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ
1: ইয়েমেনের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২২ হি./২০০১ খ্রি.] বলেন:
الإيمان بالله، طلب العلم، والزوجة الصالحة؛ هذا في هذا الزمان من أفضل ما يُستراح به بعد الإيمان بالله
(الذي أنصح به نفسي وكل أحد أن يشغل نفسه بالعلم وهموم الدنيا ليس لها نهاية ، وإياكم أن تشتغلوا بمشاكل الحياة ، لو اشتغلنا بها لما استطعنا أن نطلب علما.)
“আমি নিজেকে এবং প্রত্যেককেই যেটা নসীহা করি,তা হলো—(দ্বীনি) জ্ঞান অন্বেষণে নিজেকে নিয়োজিত রাখো,কেননা দুনিয়ায় দুশ্চিন্তার কোন শেষ নেই। সাবধান!জীবনের দুশ্চিন্তায় জড়াবে না! যদি আমরা সেসব নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম,তাহলে কোনোদিনই (দ্বীনি ইলম) জ্ঞান অর্জন করতে পারতাম না।”(আল-বাশা’ইর ফিস-সিমা‘ইল মুবাশির, পৃষ্ঠা: ২১)
ইমাম যাহাবী রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ
1: ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৪৮) বলেন:
وَلَوْ أَنَّ كُلَّ مَنْ أَخْطَأَ فِي اجْتِهَادِهِ – مَعَ صِحَّةِ إِيْمَانِهِ، وَتَوَخِّيْهِ لاتِّبَاعِ الحَقِّ – أَهْدَرْنَاهُ، وَبَدَّعنَاهُ، لَقَلَّ مَنْ يَسلَمُ مِنَ الأَئِمَّةِ مَعَنَا، رَحِمَ اللهُ الجَمِيْعَ بِمَنِّهِ وَكَرَمِهِ.”
“যদি আমরা এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে যিনি সঠিক আকীদা ও সত্য অনুসরণের আন্তরিক চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও ইজতিহাদে ভুল করেছেন তাদেরকে বাতিল বলে দিতাম বা বিদআতী বলতাম, তাহলে আমাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক আলেমই এর থেকে নিরাপদ থাকবেন।আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহ ও দয়া দ্বারা সবাইকে রহমত দান করুন।”(সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা; খণ্ড: ১৪; পৃষ্ঠা: ৩৭৬)
2: ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৪৮) বলেন:
وإذا رأيت المتكلم المبتدع يقول: دعنا من الكتاب والأحاديث الآحاد وهات العقل، فاعلم أنه أبو جهل، وإذا رأيت السالك التوحيدي يقول: دعنا من النقل ومن العقل، وهات الذوق والوجد، فاعلم أنه إبليس قد ظهر بصورة بشر، أو قد حل فيه، فإن جبنت منه، فاهرب، وإلا فاصرعه، وابرك على صدره، واقرأ عليه آية الكرسي، واخنقه
ينبغي للعالم أن يتكلم بنية وحسن قصد ، فإن أعجبه كلامه فليصمت ، وإن أعجبه الصمت فلينطق ، ولا يفتر عن محاسبة نفسه فإنها تحب الظهور والثناء .
إِذَا أَخْطَأَ إِمَامٌ فِي اجْتِهَادِهِ لاَ يَنْبَغِي لَنَا أَنْ ننسَى مَحَاسِنهُ وَنُغطِي معَارِفه بَلْ نستغفرُ لَهُ وَنَعْتَذِرُ عَنْهُ
“ইমাম যদি কোন ইজতিহাদের ক্ষেত্রে ভুল করেন, তবে আমাদের জন্য তার কল্যাণময় দিকগুলি ভুলে যাওয়া এবং তার জ্ঞানবত্তা (পাণ্ডিত্য) কে ঢেকে দেওয়া উচিৎ হবে না। বরং আমরা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব এবং তার পক্ষ থেকে ওযর পেশ করব”। (যাহাবী;সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা; খণ্ড: ১৮; পৃষ্ঠা: ১৫৭)। আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী
5: যারা আলেমদের ভুলের ব্যাপারে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করে তাদেরকে ইমাম আল-হা’ফিয শামসুদ্দিন আয-যাহাবী (রহি’মাহুল্লাহ) উপদেশ দিয়ে বলেছেন,
فلو أننا أهدرنا كل عالم زل لما سلم معنا إلا القليل، فلا تحط يا أخي على العلماء مطلقا ولا تبالغ في تقريظهم مطلقا واسأل الله أن يتوفاك على التوحيد
“আমরা যদি আলেমদের ভুলের কারণে তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে বাদ দেই, তাহলে খুব কম আলেমই বাকী থাকবে।সুতরাং প্রিয় ভাই আমার! আলেমদের (ভুলের কারণে) তাদের সমালোচনার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না, আবার তাদের প্রশংসার ব্যাপারে অতিরঞ্জন করো না। আল্লাহর কাছে দুয়া করো, তোমার মৃত্যুটা যেন তাওহীদের উপরে হয়।”(তারিখুল ইসলাম: ৩০/২৫৬)
6: ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৪৮) বলেন:
“ثم إن الكبير من أئمة العلم إذا كثر صوابه وعُلم تحريه للحق واتسع علمه وظهر ذكاؤه وعرف صلاحه وورعه واتباعه يغفر له زلله ولا نضلله ونطرحه وننسى محاسنه؛ نعم ولا نقتدي به في بدعته وخطئه ونرجو له التوبة من ذلك”
“অতঃপর যদি বড় কোন আলেম যার ভুলের চেয়ে সঠিক বেশি এবং জানা যায় যে,তিনি সত্য অনুসন্ধানে কঠোর, তার জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত, তার বিচক্ষণতা, সততা ও পরহেজগারিতা সুবিদিত- এমতবস্থায় তার কোন ভুল ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখা হবে। আমরা তাকে পথভ্রষ্ট বলব না বা বয়কট করব না এবং তার সৎকর্মগুলোও ভুলে যাব না। তবে হ্যাঁ, আমরা তার বিদআত বা ভুলের অনুসরণ করব না এবং প্রত্যাশা করব যে, তিনি সেগুলো থেকে তাওবা করবেন”।(যাহাবী;সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা; খণ্ড: ৫; পৃষ্ঠা: ২৭১)
প্রখ্যাত তাবি তাবিঈ শাইখুল ইসলাম ইমাম আওযাঈ রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ
1: প্রখ্যাত তাবি‘ তাবি‘ঈ, শাইখুল ইসলাম, ইমাম আওযা‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৫৭ হি.] বলেন:
2: প্রখ্যাত তাবি‘ তাবি‘ঈ,শাইখুল ইসলাম, ইমাম আওযা‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৫৭ হি.]-কে বলা হলো:
أنا أُجالِس أهل السُنَّة، وأجالس أهل البدع!
هذا رجلٌ يريد أن يُساوي بين الحق والباطل”
ইমাম আবূ মুহাম্মাদ হাসান বিন আলী বিন খালফ আল-বারবাহারী রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ
1: ইমাম আবূ মুহাম্মাদ হাসান বিন ‘আলী বিন খালফ আল-বারবাহারী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৩২৯ হি.] বলেছেন,
إذا وقعت الفتنة فالزم جوف بيتك وفر من جوار الفتنة وإياك والعصبية وكل ما كان من قتال بين المسلمين على الدنيا فهو فتنة فاتق الله وحده لا شريك له ولا تخرج فيها ولا تقاتل ولا تهوى ولا تشايع ولا تمايل ولا تحب شيئا من أمورهم.
“যখন ফিতনা সংগঠিত হবে, তখন তুমি তোমার বাড়ীর ভিতরে অবস্থান করবে, ফিতনার নিকট থেকে পলায়ন করবে এবং স্বজনপ্রীতি থেকে বিরত থাকবে। আর ফিতনা হল-দুনিয়াতে সংঘটিত হওয়া মুসলিমদের মাঝে পরস্পরের ঝগড়াসমূহ। সুতরাং এক আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করবে। যার কোন অংশীদার নেই এবং বাড়ী থেকে তুমি বের হবে না, পরস্পর ঝগড়া করবে না, এর প্রতি আকাঙ্ক্ষাও করবে না, বিভিন্ন দলে বিভক্তও হবে না, এদিক-ওদিক দৃষ্টি দিবে না এবং তাদের কোন বিষয়কে ভালবাসবে না”।(কিতাবু শারহিস সুন্নাহ, পৃষ্ঠা: ৪৭; তাহক্বীক্ব: ড. মুহাম্মাদ সাঈদ সালিম আল-কাহতানী (দাম্মাম, সউদী আরব দারু ইবনিল ক্বাইয়িম, ১ম সংস্করণ ১৪০৮ হি.),
2: ইমাম বারবাহারি (রহিমাহুল্লাহ) বলেন:
” جس نے کتاب و سنت کی مخالفت کی وہ بدعتی ہے، گرچہ کہ اس کے پاس علم و کتب کا بڑا ذخیرہ ہی کیوں نہ ہو!۔
“যে ব্যক্তি কিতাব (আল-কুরআন) ও সুন্নাহর (রাসূল (ﷺ)-এর হাদিস) বিরোধিতা করে, সে বিদআতী,যদিও তার কাছে বিপুল জ্ঞান ও অসংখ্য বই-পুস্তকের ভাণ্ডার থাকে”(শারহুস সুন্নাহ: ২৭০)
প্রখ্যাত তাবিঈ হাসান বিন ইয়াসার ওরফে হাসান বসরী রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ
1: ইলম ও আমলের মধ্যে সমন্বয় করা জরুরি:
أَطْلُبُ الْعِلْمَ طَلَبًا لَا يَضُرُّ بِالْعِبَادَةِ، وَأَطْلُبُ الْعِبَادَةَ طَلَبًا لَا يَضُرُّ بِالْعِلْمِ، فَإِنَّ مَنْ عَمِلَ بِغَيْرِ عِلْمٍ كَانَ مَا يُفْسِدُ أَكْثَرَ مِمَّا يُصْلِحُ،
مكارم الأخلاق المؤمن قوة في لين وحزم في دين وإيمان في يقين وحرص على العِلْمِ وَاقْتِصَاد في اللفقة وبذل فِي السَّعَةِ وقناعة في الفاقة ورحمة للمجهود وإعطاء في حَقٌّ وَبر في استقامة
“একজন মুমিনের উত্তম চরিত্র হল: নমনীয়তায় দৃঢ়তা, ধর্মে দৃঢ় অবস্থান, নিশ্চিয়তার উপর ঈমান, জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ, ব্যয়ে মিতব্যয়ীতা, প্রাচুর্যে দান, দারিদ্র্যে সন্তুষ্টি, কষ্টভোগকারীর প্রতি দয়া, ন্যায়ের পথে দান, এবং সৎপথে থেকে উত্তম আচরণ করা।”(কিতাবু মিন আখবারিস সালাফিজ সালিহ,পৃষ্ঠা; ৩০২)
3: প্রখ্যাত তাবি‘ঈ,হাসান বিন ইয়াসার ওরফে হাসান বসরী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত:১১০ হি.] বলেন:
‘الْمُؤْمِنُ حَلِيمٌ لَا يَجْهَلُ وَإِنْ جُهِلْ عَلَيْهِ حَلِيمٌ لَا يَظْلِمُ وإن ظلِمَ غَفَرَ لَا يَقْطَعُ وَإِنْ قُطِعَ وَصَل لَا يَبْخَلُ وَإِنْ يُجْلُ عَلَيْهِ صَبَرَ.
“মুমিন (খাঁটি ঈমানদার) ব্যক্তি সহনশীল। সে অজ্ঞতাপূর্ণ আচরণ করে না। যদিও তার সাথে অজ্ঞতাপূর্ণ আচরণ করা হয়। সে অন্যদের উপর অন্যায় করে না, যদিও তার উপর অন্যায় করা হয়, তবে সে ক্ষমা করে। সে সম্পর্ক ছিন্ন করে না, যদিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়, তবে সে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখে। সে কৃপণ নয়, যদিও তার সাথে কৃপণতাপূর্ণ আচরণ করা হয়, তবে সে ধৈর্যধারণ করে”। (ইবনু আবিদ দুনইয়া,আল-হিলমু, হা/৬১,পৃষ্ঠা; ৫৩)
4: প্রখ্যাত তাবি‘ঈ,হাসান বিন ইয়াসার ওরফে হাসান বসরী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত:১১০ হি.] বলেন:
إخواننا أحب إلينا من أهلنا وأولادنا لأن أهلنا يذكروننا بالدنيا وإخواننا يذكروننا بالآخرة
“আমাদের (দ্বীনি) ভাইয়েরা আমাদের নিকট আমাদের পরিবার ও সন্তান-সন্ততির চেয়েও অধিক প্রিয়; কারণ, পরিবার-পরিজন আমাদের দুনিয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, আর ভাইয়েরা আমাদের আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।”(গাজালী;ইয়াহইয়াউ উলুমিদ্দিন খন্ড:২ পৃষ্ঠা:১৭৬)
5: প্রখ্যাত তাবি‘ঈ ইমাম হাসান বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত:১১০হি.] থেকে বর্ণিত হয়েছে,একদা হাসান বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)-কে বলা হলো,
ﺇﻥ ﻧﺎﺳﺎً ﻳﻘﻮﻟﻮﻥ : ﻣﻦ ﻗﺎﻝ : ( ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ) ﺩﺧﻞ ﺍﻟﺠﻨﺔ . ﻓﻘﺎﻝ : ﻣﻦ ﻗﺎﻝ ( ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ) ﻓﺄﺩَّﻯ ﺣﻘﻬﺎ ﻭﻓﺮﺿﻬﺎ ﺩﺧﻞ ﺍﻟﺠﻨﺔ
«زَوِّجُهُ؛فَقَدْ أَرْغَبَها في الصَّدَاقِ،وبذل لها ما ترى،فقال الحسن: إنَّ رجلاً بذل في صداق امرأة مئة ألفٍ لَجَاهِلٌ مَغْرُورٌ يَجِبُ أَلَا يُرْغَبَ فِي مُناكَحَتِهِ،ولا يُحْرَصَ على مُصاهَرَتِهِ.وترك تزويجه، وزَوَّجَها من رجل صالح.»
اَلْمُؤْمِنُ كَالْغَرِيبِ لاَ يَجْزَعُ مِنْ ذُلِّهَا، وَلاَ يُنَافِسُ فِي عِزِّهَا، لَهُ شَأْنٌ، وَلِلنَّاسِ شَأْنٌ- وَجِّهُوا هَذِهِ الْفُضُولَ حَيْثُ وَجَّهَهَا اللهُ ‘
: يا أبا سعيد ! إني أريد أن أخاصمك
“হে আবু সাঈদ, আসুন, আপনার সাথে দীনের কিছু মাসআলায় ডিবেট করি।
জবাবে হাসান বসরী বলেন,,
: إليك عني، فإني قد عرفت ديني، وإنما يخاصمك الشاك في دينه
“আমি তো আমার দীনকে জেনেবুঝে গ্রহণ করেছি, তুমি যদি তোমার দীন হারিয়ে ফেলে থাক,তবে সেটা খুঁজে বেড়াও।” অপর বর্ননায় এসেছে,তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন:
اذهب إلى شاك مثلك يناظرك، فإني قد عرفت ديني
“তোমার মত সন্দেহবাদীর কাছে যাও যে তোমার সাথে বিতর্ক করবে,কারণ আমি আমার ধর্ম শিখেছি”।(আল-আজুররী,আশ শারীআহ,আসার নং ১৯৭৭) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
11: ইমাম হাসান বসরি (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত:১১০ হি:] বলেন,
الفتنة إذا أقبلت عرفها كل عالم، وإذا أدبرت عرفها كل جاهل
“যখন ফিতনা আসে, তখন সকল আলিম একে চিনতে পারে,আর সকল অজ্ঞ একে তখনই চিনতে পারে তখন,যখন তা চলে যায়।”
ইবনু রজব আল-হাম্বালী আল-বাগদাদী রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ
1: ❖ বুদ্ধিমানদের জন্য গান-বাজনার ফিতনা থেকে সতর্কবার্তা……!
واعلم أن سماع الأغاني يضاد سماع القرآن من كل وجه، فإن القرآن كلام الله، ووحيه ونوره الذي أحيا الله به القلوب الميتة، وأخرج العباد به من الظلمات إلى النور، والأغاني وآلاتها مزامير الشيطان ، فإن الشيطان قرآنه الشعر، ومؤذنه المزمار، ومصائده النساء كذا قال قتادة وغيره من السلف.
وقد فتن كثير من المتأخرين بهذا ، فظنوا أن من كثر كلامه وجداله وخصامه في مسائل الدين : فهو أعلم ممن ليس كذلك !!وهذا جهل محض ؛ وانظر إلى أكابر الصحابة وعلمائهم ، كأبي بكر وعمر وعلي ومعاذ وابن مسعود وزيد بن ثابت ؛ كيف كانوا : كلامهم أقل من كلام ابن عباس ، وهم أعلم منه .وكذلك كلام التابعين أكثر من كلام الصحابة ، والصحابة أعل منهم .وكذلك تابعوا التابعين ، كلامهم أكثر من كلام التابعين ، والتابعون أعلم منهم .فليس العلم بكثرة الرواية ، ولا بكثرة المقال ؛ ولكنه نور يقذف في القلب يفهم به العبد الحق ، ويميز به بينه وبين الباطل ، ويعبر عن ذلك بعبارات وجيزة محصلة للمقاصد ”
وقد فتن كثير من المتأخرين بهذا ، فظنوا أن من كثر كلامه وجداله وخصامه في مسائل الدين : فهو أعلم ممن ليس كذلك !!وهذا جهل محض ؛ وانظر إلى أكابر الصحابة وعلمائهم ، كأبي بكر وعمر وعلي ومعاذ وابن مسعود وزيد بن ثابت ؛ كيف كانوا : كلامهم أقل من كلام ابن عباس ، وهم أعلم منه .وكذلك كلام التابعين أكثر من كلام الصحابة ، والصحابة أعل منهم .وكذلك تابعوا التابعين ، كلامهم أكثر من كلام التابعين ، والتابعون أعلم منهم .فليس العلم بكثرة الرواية ، ولا بكثرة المقال ؛ ولكنه نور يقذف في القلب يفهم به العبد الحق ، ويميز به بينه وبين الباطل ، ويعبر عن ذلك بعبارات وجيزة محصلة للمقاصد ”
4: ❖ ইবনু রজব আল-হাম্বালী আল-বাগদাদী (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম: ৭৩৬ হি.মৃত:৭৯৫ হি:] বলেছেন,
5: ❖ ইমাম ইবনু রজব আল-হাম্বালী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৯৫ হি.] বলেছেন,
,أن العبد إذا اشتد عليه الكرب فإنَّه يحتاج حينئذٍ إِلَى مجاهدة الشيطان؛ لأنّه يأتيه فيقنطه ويسخطه، فيحتاج العبد إِلَى مجاهدته ودفعه، فيكون ثواب مجاهدة عدوه ودفعه: دفع البلاء عنه ورفعه،
“যখন বান্দার উপর বিপদ ঘনীভূত হয়, তখন তাকে শয়তানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। কেননা শয়তান এসে তাকে (কুমন্ত্রণা দিয়ে) নিরাশ ও রাগান্বিত করে তোলে। তাই বান্দাকে সংগ্রাম করে শয়তানকে প্রতিহত করতে হয়। অবশেষে শত্রুর বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও তাকে দমন করার পুরস্কার স্বরূপ বান্দার উপর থেকে সেই বিপদ উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়”।(ইবনু রজব; নূরুল ইক্বতিবাস; পৃষ্ঠা: ১৫১)
ইমাম ইবনুল জাওযী রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ
1: এক মুহূর্ত সময়ও অবহেলায় নষ্ট করা যাবে না………..।
كان ملِك كثيرَ المال ، وكانت له ابنة لم يكن له ولد غيرها ، وكان يحبها حبّاً شديداً ، وكان يلهيها بصنوف اللهو ، فمكث كذلك زماناً ، وكان إلى جانب الملك عابدٌ ، فبينا هو ذات ليلة يقرأ إذ رفع صوته وهو يقول يا أيها الذين آمنوا قوا أنفسكم وأهليكم ناراً وقودها الناس والحجارة فسمعت الجارية قراءته ، فقالت لجواريها : كفوا ، فلم يكفوا ، وجعل العابد يردد الآية والجارية تقول لهم : كفوا ، فلم يكفوا ، فوضعت يدها في جيبها فشقت ثيابها ، فانطلقوا إلى أبيها فأخبروه بالقصة ، فأقبل إليها ، فقال : يا حبيبتي ما حالك منذ الليلة ؟ ما يبكيك ؟ وضمها إليه ، فقالت : أسألك بالله يا أبت ، لله عز وجل دار فيها نار وقودها الناس والحجارة ؟ قال : نعم ، قالت : وما يمنعك يا أبت أن تخبرني ، والله لا أكلتُ طيِّباً ، ولا نمتُ على ليِّنٍ حتى أعلم أين منزلي في الجنة أو النار .
“এক রাজা ছিলেন বিপুল সম্পদের অধিকারী। তার কোনো ছেলে সন্তান না থাকলেও একজন মেয়ে সন্তান ছিল। মেয়েকে তিনি খুবই ভালোবাসতেন। তাকে নানান খেল-তামাশায় ব্যস্ত রাখতেন। এভাবে বেশ কিছু সময় কেটে গেল। রাজার পাশে একজন ইবাদতগুজার মানুষ থাকতেন। এক রাতে তিনি কুরআন পড়তে গিয়ে এই আয়াতটা জোরে পড়লেন: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে (জাহান্নামের) আগুন থেকে রক্ষা করো যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর।” ঐ মেয়ে তার পড়া শুনতে পাচ্ছিল। সে তার দাসীদেরকে বলল: তোমরা থামো। তারা থামছিল না। এদিকে ইবাদতগুজার লোকটা বারবার আয়াতটা পড়ছিল। আর মেয়েটা দাসীদেরকে বলে যাচ্ছিল: তোমরা থামো। তারা থামল না। মেয়েটা তার বুকের জামায় হাত দিয়ে সেটা ছিঁড়ে ফেলল। দাসীরা তার বাবার কাছে গিয়ে ঘটনাটি বলল। মেয়ের বাবা তাকে বলল: ‘মামনি, গত রাত থেকে তোমার কী হয়েছে? তুমি কী জন্য কাঁদছ?’ তিনি তাকে জড়িয়ে ধরলেন। মেয়ে বলল: আব্বু! আমি আল্লাহর ওয়াস্তে আপনাকে জিজ্ঞাসা করছি, ‘আল্লাহর কি এমন একটা আগুনের স্থান আছে যেটার জ্বালানী হবে: মানুষ এবং পাথর?’ তিনি বললেন: হ্যাঁ। মেয়ে বলল: ‘বাবা, এটা আমাকে জানাতে কীসে তোমাকে নিষেধ করল? আল্লাহর কসম! আমি আর কখনো ভালো কিছু খাবো না, নরম বিছানায় ঘুমাব না যতক্ষণ না আমি জানতে পারছি আমার বাসস্থান কোথায় হবে? জান্নাতে; নাকি জাহান্নামে?”।(সিফাতুস সাফওয়াহ খণ্ড: ৪; পৃষ্ঠা: ৪৩৭-৪৩৮) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
3: ইমাম ইবনুল জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত:৫৯৭ হি.] বলেন:
فإذا جاء إبليس؛ فقال: كَم تدعوهُ ولا ترى إجابة! فقُل: أنا أتعبَّدُ بالدُّعاء
“বছরের বারোটি মাস যেন (নবি) ইয়াকুব (আ.)-এর বারো জন পুত্রের ন্যায়৷ তাদের মধ্যে ইউসুফ (আ.) যেমন তাঁর পিতার নিকট সর্বাধিক প্রিয় ছিলেন, তেমনি রামাদান মাসও আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বেশি প্রিয়। ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা যেমন নিজেদের ভুল-ত্রুটি ও পাপের পর তাঁর সাহায্যে এসেছিল অভাব পূরণ ও কষ্ট মোচনের জন্য, তেমনি রমাদানও আসে (বান্দার জন্য) পাপ মোচনের সুযোগ নিয়ে৷”(বুস্তানুল ওয়াঈযীন; পৃষ্ঠা: ২৩০)(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
5: ইবনুল জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
6: ইবনুল জাওযি (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন:
أنت في طلب الدنيا صحيح الجسم، وفي طلب الآخرة بك أوجاع! كم تعرج عن سُبل التقوى يا أعرج الهمة، يا من يبقى في القاع! –
ويتبين فهم الصبي وعلو همته وتقصيرها باختياراته لنفسه؛ وقد تجتمع الصبيان للعب فيقول العالي الهمة: من يكون معي، ويقول القاصر: مع من أكون. ومتى علت همته آثر العلم،
,من يريد تعجيل الإجابة، ويتذمر إن لم تتعجل، فذاك ضعيف الإيمان، ويرى أن له حقًّا في الإجابة، وكأنه يتقاضى أجرة عمله
إِخْوَانِي: تَفَكَّرُوا لِمَاذَا خُلِقْتُمْ فَالتَّفَكُّرُ عِبَادَةٌ،
“হে আমার ভাইয়েরা! কেন তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা কর। (মনে রেখ!) এই চিন্তা-ভাবনা করাও এক ধরনের ইবাদত”। (ইবনুল জাওযী; আত-তাবসিরাহ: ২/৭২)
كان ملِك كثيرَ المال ، وكانت له ابنة لم يكن له ولد غيرها ، وكان يحبها حبّاً شديداً ، وكان يلهيها بصنوف اللهو ، فمكث كذلك زماناً ، وكان إلى جانب الملك عابدٌ ، فبينا هو ذات ليلة يقرأ إذ رفع صوته وهو يقول يا أيها الذين آمنوا قوا أنفسكم وأهليكم ناراً وقودها الناس والحجارة فسمعت الجارية قراءته ، فقالت لجواريها : كفوا ، فلم يكفوا ، وجعل العابد يردد الآية والجارية تقول لهم : كفوا ، فلم يكفوا ، فوضعت يدها في جيبها فشقت ثيابها ، فانطلقوا إلى أبيها فأخبروه بالقصة ، فأقبل إليها ، فقال : يا حبيبتي ما حالك منذ الليلة ؟ ما يبكيك ؟ وضمها إليه ، فقالت : أسألك بالله يا أبت ، لله عز وجل دار فيها نار وقودها الناس والحجارة ؟ قال : نعم ، قالت : وما يمنعك يا أبت أن تخبرني ، والله لا أكلتُ طيِّباً ، ولا نمتُ على ليِّنٍ حتى أعلم أين منزلي في الجنة أو النار .
“এক রাজা ছিলেন বিপুল সম্পদের অধিকারী। তার কোনো ছেলে সন্তান না থাকলেও একজন মেয়ে সন্তান ছিল। মেয়েকে তিনি খুবই ভালোবাসতেন। তাকে নানান খেল-তামাশায় ব্যস্ত রাখতেন। এভাবে বেশ কিছু সময় কেটে গেল। রাজার পাশে একজন ইবাদতগুজার মানুষ থাকতেন। এক রাতে তিনি কুরআন পড়তে গিয়ে এই আয়াতটা জোরে পড়লেন: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে (জাহান্নামের) আগুন থেকে রক্ষা করো যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর।” ঐ মেয়ে তার পড়া শুনতে পাচ্ছিল। সে তার দাসীদেরকে বলল: তোমরা থামো। তারা থামছিল না। এদিকে ইবাদতগুজার লোকটা বারবার আয়াতটা পড়ছিল। আর মেয়েটা দাসীদেরকে বলে যাচ্ছিল: তোমরা থামো। তারা থামল না। মেয়েটা তার বুকের জামায় হাত দিয়ে সেটা ছিঁড়ে ফেলল। দাসীরা তার বাবার কাছে গিয়ে ঘটনাটি বলল। মেয়ের বাবা তাকে বলল: ‘মামনি, গত রাত থেকে তোমার কী হয়েছে? তুমি কী জন্য কাঁদছ?’ তিনি তাকে জড়িয়ে ধরলেন। মেয়ে বলল: আব্বু! আমি আল্লাহর ওয়াস্তে আপনাকে জিজ্ঞাসা করছি, ‘আল্লাহর কি এমন একটা আগুনের স্থান আছে যেটার জ্বালানী হবে: মানুষ এবং পাথর?’ তিনি বললেন: হ্যাঁ। মেয়ে বলল: ‘বাবা, এটা আমাকে জানাতে কীসে তোমাকে নিষেধ করল? আল্লাহর কসম! আমি আর কখনো ভালো কিছু খাবো না, নরম বিছানায় ঘুমাব না যতক্ষণ না আমি জানতে পারছি আমার বাসস্থান কোথায় হবে? জান্নাতে; নাকি জাহান্নামে?”।(সিফাতুস সাফওয়াহ; খণ্ড; ৪; পৃষ্ঠা; ৪৩৭-৪৩৮) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
12: ইমাম ইবনুল জাওযী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,নিশ্চয়ই জ্ঞানই (দ্বীনের) মূল স্তম্ভ এবং সবচেয়ে বড় আলোকবর্তিকা। কখনো কখনো (দ্বীনী জ্ঞানার্জনের নিমিত্তে) বইয়ের পাতাগুলো উল্টানো নফল সিয়াম, সালাত,হজ্জ এবং জিহাদ অপেক্ষা উত্তম হয়ে থাকে। এমন অনেক মানুষ আছে,যে ইলম থেকে বিমুখ থাকার কারণে নিজের ইবাদতে প্রবৃত্তির অনুসরণে ডুবে থাকে। সে নফল ইবাদত করতে গিয়ে অনেক অকাট্য ফরয ইবাদতকে নষ্ট করে দেয়। স্পষ্ট ওয়াজিবকে তরক করে তার ধারণাপ্রসূত উত্তম (?) কাজ করে (অথচ শরী‘আতে সেটা উত্তম কাজ নয়)। হায়! যদি তার নিকটে সঠিক জ্ঞানের আলোকবর্তিকা থাকত,তাহলে অবশ্যই সে সঠিক পথের দিশা লাভ করত।(ইবনুল জাওযী; সায়দুল খাত্বের পৃষ্ঠা: ১১৩)