Wednesday, September 3, 2025

ইবনু রজব আল-হাম্বালী আল-বাগদাদী রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ

 1: ❖ বুদ্ধিমানদের জন্য গান-বাজনার ফিতনা থেকে সতর্কবার্তা……!

.
হাফিয যাইনুদ্দীন আবুল ফারজ ‘আব্দুর রহমান বিন শিহাব—যিনি ইবনু রজব আল-হাম্বালী আল-বাগদাদী নামে প্রসিদ্ধ—রাহিমাহুল্লাহ [জন্ম: ৭৩৬ হি. মৃত: ৭৯৫ হি:] বলেছেন,

واعلم أن سماع الأغاني يضاد سماع القرآن من كل وجه، فإن القرآن كلام الله، ووحيه ونوره الذي أحيا الله به القلوب الميتة، وأخرج العباد به من الظلمات إلى النور، والأغاني وآلاتها مزامير الشيطان ، فإن الشيطان قرآنه الشعر، ومؤذنه المزمار، ومصائده النساء كذا قال قتادة وغيره من السلف.

জেনে রেখো, গান শ্রবণ করা কুরআন শ্রবণের সম্পূর্ণ বিপরীত। কারণ, কুরআন হলো আল্লাহর কালাম, তাঁর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ ওহি, এমন এক আলোকধারা যার মাধ্যমে আল্লাহ মৃত অন্তরসমূহকে জীবিত করেছেন এবং বান্দাদের অন্ধকার থেকে আলোতে এনেছেন।পক্ষান্তরে গান ও তার যন্ত্রপাতি হলো শয়তানের বাদ্যযন্ত্র। কারণ শয়তানের কুরআন হলো কবিতা,তার মুয়াজ্জিন হলো বাঁশি এবং তার ফাঁদ হলো নারীরা। এমনটাই বলেছেন কাতাদাহ ও অন্যান্য সালাফগণ।”(ইবনু রজব; মাজমু‘উর রসাঈল; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৪৭১)
.

2: ❖ সত্যিকারের ইলম মানে অধিক কথাবার্তা বা তর্ক-বিতর্কে জয়ী হওয়া নয়…..!
.
হাফিয ইবন রজব হাম্বালী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর মূল্যবান রিসালা “ফাদলু ইলমিস সালাফ আলা ইলমিল খালাফ” অর্থাৎ পরবর্তীদের জ্ঞানের উপর পূর্ববর্তীদের জ্ঞানের মর্যাদা” নামক গ্রন্থের (পৃষ্ঠা নং-৫)-এ বলেন:

وقد فتن كثير من المتأخرين بهذا ، فظنوا أن من كثر كلامه وجداله وخصامه في مسائل الدين : فهو أعلم ممن ليس كذلك !!وهذا جهل محض ؛ وانظر إلى أكابر الصحابة وعلمائهم ، كأبي بكر وعمر وعلي ومعاذ وابن مسعود وزيد بن ثابت ؛ كيف كانوا : كلامهم أقل من كلام ابن عباس ، وهم أعلم منه .وكذلك كلام التابعين أكثر من كلام الصحابة ، والصحابة أعل منهم .وكذلك تابعوا التابعين ، كلامهم أكثر من كلام التابعين ، والتابعون أعلم منهم .فليس العلم بكثرة الرواية ، ولا بكثرة المقال ؛ ولكنه نور يقذف في القلب يفهم به العبد الحق ، ويميز به بينه وبين الباطل ، ويعبر عن ذلك بعبارات وجيزة محصلة للمقاصد ”

“পরবর্তী যামানার অনেক মানুষ এ ক্ষেত্রে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। তারা ধারণা করেছেন যে, দ্বীনি বিষয়ে যিনি বেশি কথা বলতে পারেন, বেশি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে পারেন তিনি অন্যের চেয়ে বড় জ্ঞানী!!এটি নিরেট মূর্খতা। আবু বকর (রাঃ), উমর (রাঃ), আলী (রাঃ), মুয়ায (রাঃ), ইবনে মাসউদ (রাঃ), যায়েদ বিন ছাবেত (রাঃ) প্রমুখ বড় বড় আলেম সাহাবীদের দিকে তাকিয়ে দেখুন; তাঁরা কেমন ছিলেন: তাঁদের কথাবার্তার পরিমাণ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর চেয়ে কম ছিল। কিন্তু, তাঁরা ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর চেয়ে বড় আলেম ছিলেন। তাবেয়ীদের কথা সাহাবীদের চেয়ে বেশি ছিল; অথচ সাহাবীরা তাবেয়ীদের চেয়ে বড় আলেম ছিলেন।তাবে-তাবেয়ীদের অবস্থাও একই রকম। তাবেয়ীদের চেয়ে তাদের কথা বেশি ছিল; অথচ তাবেয়ীরা তাদের চেয়ে বড় আলেম ছিলেন। সুতরাং, বেশি বেশি বর্ণনা করতে পারা, কথা বলতে পারা ইলম নয়। বরং ইলম হচ্ছে- এমন একটি নূর যা অন্তরে ঢেলে দেওয়া হয়; যার মাধ্যমে বান্দা হককে বুঝতে পারে, হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করতে পারে এবং ঈপ্সিত উদ্দেশ্য অর্জিত হয় এমন সংক্ষিপ্ত কথার মাধ্যমে সেটা প্রকাশ করতে পারে।”(ইবনু রজব; ফাদলু ইলমিস সালাফ আলা ইলমিল খালাফ; পৃষ্ঠা: ৫)
.
3: ❖ সত্যিকারের ইলম মানে অধিক কথাবার্তা বা তর্ক-বিতর্কে জয়ী হওয়া নয়…..!
.
হাফিয ইবন রজব হাম্বালী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর মূল্যবান রিসালা “ফাদলু ইলমিস সালাফ আলা ইলমিল খালাফ” অর্থাৎ পরবর্তীদের জ্ঞানের উপর পূর্ববর্তীদের জ্ঞানের মর্যাদা” নামক গ্রন্থের (পৃষ্ঠা নং-৫)-এ বলেন:

وقد فتن كثير من المتأخرين بهذا ، فظنوا أن من كثر كلامه وجداله وخصامه في مسائل الدين : فهو أعلم ممن ليس كذلك !!وهذا جهل محض ؛ وانظر إلى أكابر الصحابة وعلمائهم ، كأبي بكر وعمر وعلي ومعاذ وابن مسعود وزيد بن ثابت ؛ كيف كانوا : كلامهم أقل من كلام ابن عباس ، وهم أعلم منه .وكذلك كلام التابعين أكثر من كلام الصحابة ، والصحابة أعل منهم .وكذلك تابعوا التابعين ، كلامهم أكثر من كلام التابعين ، والتابعون أعلم منهم .فليس العلم بكثرة الرواية ، ولا بكثرة المقال ؛ ولكنه نور يقذف في القلب يفهم به العبد الحق ، ويميز به بينه وبين الباطل ، ويعبر عن ذلك بعبارات وجيزة محصلة للمقاصد ”

“পরবর্তী যামানার অনেক মানুষ এ ক্ষেত্রে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। তারা ধারণা করেছেন যে, দ্বীনি বিষয়ে যিনি বেশি কথা বলতে পারেন, বেশি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে পারেন তিনি অন্যের চেয়ে বড় জ্ঞানী!!এটি নিরেট মূর্খতা। আবু বকর (রাঃ), উমর (রাঃ), আলী (রাঃ), মুয়ায (রাঃ), ইবনে মাসউদ (রাঃ), যায়েদ বিন ছাবেত (রাঃ) প্রমুখ বড় বড় আলেম সাহাবীদের দিকে তাকিয়ে দেখুন; তাঁরা কেমন ছিলেন: তাঁদের কথাবার্তার পরিমাণ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর চেয়ে কম ছিল। কিন্তু, তাঁরা ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর চেয়ে বড় আলেম ছিলেন। তাবেয়ীদের কথা সাহাবীদের চেয়ে বেশি ছিল; অথচ সাহাবীরা তাবেয়ীদের চেয়ে বড় আলেম ছিলেন।তাবে-তাবেয়ীদের অবস্থাও একই রকম। তাবেয়ীদের চেয়ে তাদের কথা বেশি ছিল; অথচ তাবেয়ীরা তাদের চেয়ে বড় আলেম ছিলেন। সুতরাং, বেশি বেশি বর্ণনা করতে পারা, কথা বলতে পারা ইলম নয়। বরং ইলম হচ্ছে- এমন একটি নূর যা অন্তরে ঢেলে দেওয়া হয়; যার মাধ্যমে বান্দা হককে বুঝতে পারে, হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করতে পারে এবং ঈপ্সিত উদ্দেশ্য অর্জিত হয় এমন সংক্ষিপ্ত কথার মাধ্যমে সেটা প্রকাশ করতে পারে।”(ইবনু রজব; ফাদলু ইলমিস সালাফ আলা ইলমিল খালাফ; পৃষ্ঠা: ৫)
.

4: ❖ ইবনু রজব আল-হাম্বালী আল-বাগদাদী (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম: ৭৩৬ হি.মৃত:৭৯৫ হি:] বলেছেন,

وكثيراً ما يمدح مَنْ لا يستحق المدح، ويلعن من لا يستحق اللّعن.
“অনেক সময় এমন ব্যক্তির প্রশংসা করা হয়, যে প্রশংসার যোগ্য নয়; এবং এমন ব্যক্তিকে অভিশাপ দেওয়া হয়, যে অভিশাপের যোগ্য নয়।”(মাজমূ রাসায়েল ইবনু রজব; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ১১০; শারহু হাদিস লাব্বাইক: পৃষ্ঠা: ৪৭)।

5: ❖ ইমাম ইবনু রজব আল-হাম্বালী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৯৫ হি.] বলেছেন,

,أن العبد إذا اشتد عليه الكرب فإنَّه يحتاج حينئذٍ إِلَى مجاهدة الشيطان؛ لأنّه يأتيه فيقنطه ويسخطه، فيحتاج العبد إِلَى مجاهدته ودفعه، فيكون ثواب مجاهدة عدوه ودفعه: دفع البلاء عنه ورفعه،

“যখন বান্দার উপর বিপদ ঘনীভূত হয়, তখন তাকে শয়তানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। কেননা শয়তান এসে তাকে (কুমন্ত্রণা দিয়ে) নিরাশ ও রাগান্বিত করে তোলে। তাই বান্দাকে সংগ্রাম করে শয়তানকে প্রতিহত করতে হয়। অবশেষে শত্রুর বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও তাকে দমন করার পুরস্কার স্বরূপ বান্দার উপর থেকে সেই বিপদ উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়”।(ইবনু রজব; নূরুল ইক্বতিবাস; পৃষ্ঠা: ১৫১)

No comments:

Post a Comment

Translate