Wednesday, September 3, 2025

শাইখুল ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ

 1: নবীদের পারস্পরিক মর্যাদার সূক্ষ্ম তাত্ত্বিক দিক…..!

.
ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: আমি আমাদের শাইখ শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ)-
কে বলতে শুনেছি:

وكذلك لطم موسى عين ملك الموت ففقأها، ولم يعتب عليه ربُّه، وفي ليلة الإسراء عاتب ربه في النبي صلى الله عليه وسلم إذ رفعه فوقه، ورفع صوته بذلك، ولم يعتبه الله على ذلك، قال: لأن موسى عليه السلام قام تلك المقامات العظيمة التي أوجبت له هذا الدلال، فإنه قاوَم فرعون أكبر أعداء الله تعالى، وتصدَّى له ولقومه، وعالج بني إسرائيل أشدَّ المعالجة، وجاهد في الله أعداءَ الله أشدَّ الجهاد، وكان شديد الغضب لربه، فاحتمل له ما لم يحتمله لغيره، وذو النون لما لم يكن في هذا المقام، سجَنه في بطن الحوت من غضبه، وقد جعل الله لكل شيء قدرًا”

“অনুরূপভাবে মূসা (আলাইহিস সালাম) যখন মৃত্যুর ফেরেশতার চোখে থাপ্পড় মেরে তা উপড়ে ফেলেন, তখন তার প্রতিপালক তাকে এজন্য কোন ভর্ৎসনা করেননি।এবং মি‘রাজের রাতে যখন তিনি (মূসা) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)–কে নিজের ওপর (মর্যাদায়) উত্তম দেখলেন, তখন তিনি তাঁর প্রতিপালকের নিকট এতে আপত্তি জানালেন এবং এ বিষয়ে উচ্চ কণ্ঠে কথা বলেছিলেন,তাতেও আল্লাহ্‌ তাআলা তাঁকে কোনো ভর্ৎসনা করেননি। অতঃপর [ইবনু তাইমিয়াহ বলেন:] কারণ মূসা (আলাইহিস সালাম) এমন সব মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে উপনীত হয়েছিলেন, যার কারণে তাঁর জন্য ইনআম’ (ছাড়, সহনশীলতা, মার্জনা) নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।তিনি ছিলেন আল্লাহর সবচেয়ে বড় শত্রু—ফিরআউন—এর বিরুদ্ধে একাকী দাঁড়ানো যোদ্ধা। তিনি একাই ফিরআউন ও তার কওমের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করেছেন। বনি ইসরাইলের কঠোরতা ও অবাধ্যতা সহ্য করে আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়নে অবিচল থেকেছেন। তিনি আল্লাহর রাস্তায় আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে কঠিনতম জিহাদ করেছেন। তিনি ছিলেন এমন একজন, যিনি আল্লাহর জন্য রাগান্বিত হতেন। এইসব গুণাবলির কারণে তাঁর পক্ষ থেকে এমন কিছু সহ্য করা হয়েছে যা অন্যদের থেকে সহ্য করা হয়নি। অপরদিকে, যুন-নূন (ইউনুস আলাইহিস সালাম) যেহেতু এই মর্যাদার স্তরে পৌঁছাননি,ফলে (আল্লাহর হুকুমের অপেক্ষা না করে নিজস্ব ইজতিহাদের ভিত্তিতে ইউনুস (আঃ) যখন নিজ কওমকে ছেড়ে হিজরতে বেরিয়েছিলেন এই ভুলের জন্য) আল্লাহ্‌ তাঁর প্রতি রাগান্বিত হয়ে তাঁকে মাছের পেটের মধ্যে বন্দি করে রেখেছিলেন।আর নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক জিনিসের জন্য একটি পরিমাণ (কদর) নির্ধারণ করে রেখেছেন”।(ইবনুল কাইয়্যিম; মাদারিজুস সালিকীন; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৪২৭)

2: ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেন:

من رَفَقَ بعبادِ الله رَفَقَ الله به، ومن رحمَهمْ رحمَه، ومن أحسن إليهم أحسن إليه، ومن جاد عليهم جاد الله عليه، ومن نفعهم نفعه، ومن سترهم ستره، ومن منعهم خيره منعه خيره، ومن عامل خلقه بصفةٍ عامله الله بتلك الصِّفة بعينها في الدنيا والآخرة، فالله تعالى لعبده حسب ما يكون العبد لخلقه

“যে ব্যক্তি আল্লাহর বান্দাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করে,আল্লাহও তার প্রতি কোমল হন। যে তাদের প্রতি দয়া করে, আল্লাহও তার প্রতি দয়া করেন। যে তাদের প্রতি অনুগ্রহ করে, তিনিও তার উপর অনুগ্রহ করেন। যে তাদেরকে দান করে, তিনিও তাকে দান করেন। যে তাদেরকে উপকার করে,তিনিও তাকে উপকৃত করেন। যে তাদের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখে, তিনিও তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখেন। যে তাদেরকে কল্যাণে পথে বাধা দান করে,তিনিও তাকে কল্যাণের পথে বাধাপ্রাপ্ত করেন। আর কোন ব্যক্তি আল্লাহর সৃষ্টিকূলের সাথে যেমন আচরণ করে, দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহও তার সাথে সেইরূপ আচরণ করেন। সুতরাং সৃষ্টিকূলের সাথে বান্দার ব্যবহারের মাত্রা অনুযায়ী তার প্রতি আল্লাহর ব্যবহারের ধরণ নির্ণিত হয়।(ইবনুল ক্বাইয়িম; আল-ওয়াবিলুস সাইয়িব; পৃষ্ঠা: ৩৫)

3: ইমাম ইবনু ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,

الحاسد شبيه بإبليس، وهو في الحقيقة من أتباعه؛ لأنه يطلب ما يحبه الشيطان من فساد الناس وزوال نعم الله عنهم، كما أن إبليس حسد آدم لشرفه وفضله، وأبى أن يسجد له حسدا، فالحاسد من جند إبليس

“হিংসুক ব্যক্তি ইবলীসের ন্যায়। সে শয়তানের অনুসারী। কেননা সে শয়তানের চাহিদা মতে সমাজে বিশৃংখলা ও অশান্তি সৃষ্টি করতে চায় এবং অন্যের উপর আল্লাহর নেমতসমূহের ধ্বংস কামনা করে। যেমন ইবলীস আদম (আঃ)-এর উচ্চ মর্যাদা ও তার শ্রেষ্ঠত্বকে হিংসা করেছিল এবং তাকে সিজদা করতে অস্বীকার করেছিল। অতএব হিংসুক ব্যক্তি ইবলীসের সেনাবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত” (ইবনুল ক্বাইয়িম; বাদায়ে‘উল ফাওয়ায়েদ; খন্ড: ২; পৃষ্ঠা: ২৩৪)

4: ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,

اَلْبِدْعَةُ أَحَبُّ إِلَى الشَّيْطَانِ لِمُنَاقَضَتِهَا الْدِّيْنِ وَدَفْعِهَا لِمَا بَعَثَ اللهُ بِهِ رَسُوْلَهُ وَصَاحِبُهَا لاَ يَتُوْبُ مِنْهَا وَلاَ يَرْجِعُ عَنْهَا بَلْ يَدْعُوْ الْخَلْقَ إِلَيْهَا وَلِتَضَمُّنِهَا الْقَوْلُ عَلَى اللهِ بِلاَ عِلْمٍ-

শয়তানের নিকট সবচেয়ে প্রিয় বস্ত্ত হল বিদ‘আত। কেননা তা দ্বীনকে ধ্বংস করে এবং রাসূল (ﷺ)-এর উপর আল্লাহর প্রেরিত বিধানকে নিষেধ করে। বিদ‘আতকারী কখনও তা থেকে তওবা করে না এবং তা থেকে ফিরে আসে না। বরং আল্লাহ সম্পর্কে ইলম বিহীন কথার মাধ্যমে মানুষকে বিদ‘আতের দিকে আহবান করে ও তার অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করে।(ইবনুল কাইয়িম; মাদারিকুস সালেহীন; খন্ড: ১; পৃষ্ঠা: ২২৩)

5: শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) এর অন্যতম প্রিয় ছাত্র,ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেন,
.
আপনি প্রত্যেক শিরকপন্থীকে আল্লাহকে অসম্মানকারী হিসাবে পাবেন। যদিও সে তার শিরকের মাধ্যমে আল্লাহকে সম্মান করার ধারণা করে এবং প্রত্যেক বিদ‘আতীকে আপনি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অসম্মানকারী হিসাবে পাবেন। যদিও সে তার বিদ‘আতের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্মান করার ধারণা করে। কেননা সে যদি জাহেল অন্ধবিশ্বাসী হয়, তাহলে সে বিদ‘আতকে সুন্নাত ধারণা করে। আর যদি সে তার বিদ‘আত সম্পর্কে স্পষ্ট হয়ে থাকে, তাহলে সে বিদ‘আত করার কারণে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিরোধিতাকারী। সুতরাং অসম্মানকারীরাই আল্লাহ তা‘আলা, তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর প্রিয় বান্দাদের নিকট অসম্মানী বলে গণ্য। আর তারা হল শিরকপন্থী ও বিদ‘আতী সম্প্রদায়’। অতঃপর তিনি বলেন যে, ‘এ কারণেই আল্লাহ কিতাবে বিদ‘আতের আলোচনা শিরকের সাথে সংযুক্ত আকারে রয়েছে’। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,قُلۡ اِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّیَ الۡفَوَاحِشَ مَا ظَہَرَ مِنۡہَا وَ مَا بَطَنَ وَ الۡاِثۡمَ وَ الۡبَغۡیَ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ وَ اَنۡ تُشۡرِکُوۡا بِاللّٰہِ مَا لَمۡ یُنَزِّلۡ بِہٖ سُلۡطٰنًا وَّ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا عَلَی اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ (হে নবী!) আপনি বলুন, আমার প্রতিপালক প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য অশ্লীলতা, পাপকাজ, অসংগত-বিরোধিতা ও বাড়াবাড়ি এবং আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করা, যার পক্ষে আল্লাহ কোন দলীল-প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি, আর আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা যে সম্বন্ধে তোমাদের কোন জ্ঞান নেই; (ইত্যাদি কাজ ও বিষয়সমূহ) হারাম করেছেন’ (সূরা আল-আ‘রাফ: ৩৩)।
.
সুতরাং পাপ ও অত্যাচার করা একটি প্রাসঙ্গিক সংযুক্ত বিষয়। অতঃপর তিনি আরো বলেন যে, ‘মুশরিক ব্যক্তি তাওহীদপন্থী ব্যক্তির উপর বিদ্বেষ পোষণ করে। কারণ হল যে, সে তাওহীদকে খাঁটিভাবে সাব্যস্ত করে। কোন শিরকের সাথে মিশ্রণ করে না। তেমনিভাবে বিদআতপন্থী ব্যক্তি সুন্নাহপন্থী ব্যক্তির উপর বিদ্বেষ পোষণ করে। কারণ হল যে, সে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসরণকে খাঁটিভাবে সাব্যস্ত করে, ব্যক্তিদের মতামত বা অনুসরণ বিরোধী কোন বিষয়ের সাথে মিশ্রণ করে না। শিরক ও বিদ‘আতপন্থীদের সমর্থন দেয়ার কারণে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বান্দার প্রতি নাখোশ হন। অতএব তাওহীদপন্থী, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসারী ব্যক্তি শিরক ও বিদআতপন্থীদের কষ্টের উপর ধৈর্যধারণ করা তার জন্য অতীব কল্যাণকর ও উপকারী হবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ঘৃণার পাত্র হওয়ার চেয়ে কষ্টের উপর ধৈর্যধারণ করা তার প্রতি বেশি সহজ হওয়া উচিত। ধৈর্যধারণ ছাড়া যদি কোন উপায় না থাকে, তাহলে সত্যের উপর ধৈর্যধারণ করুন। সেই ধৈর্যই পরিণামে প্রশংসনীয় হবে।( ইবনুল কাইয়ুম; ইগাসাতুল লাহফান; ১ম খণ্ড; পৃষ্ঠা: ৬২-৭৬)
.
6: ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,

كم ممن أشقى وَلَدَه وفلذةَ كبده في الدنيا والآخرة بإهماله وتركِ تأديبه وإعانته له على شهواته، ويزعم أنه يُكرمه وقد أهانه، وأنه يرحمه وقد ظَلَمَه وحرمه، ففَاتَهُ انتفاعُه بولده، وفوت عليه حظَّه في الدنيا والآخرة، وإذا اعتبرتَ الفسادَ في الأولاد رأيتَ عامَّتَه من قِبَل الآباء،

এমন কতক মানুষ আছে, যে তার কলিজার টুকরা সন্তানকে অযত্নে রেখে, আদব-কায়েদা না শিখিয়ে, প্রবৃত্তি চরিতার্থে সহায়তা করে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতে তাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। সন্তানকে অবজ্ঞা-অবহেলা করে মনে করে তাকে স্নেহ করছে। তার প্রতি যুলুম করে এবং তাকে বঞ্চিত করে মনে করে তার প্রতি দয়া করছে। ফলে দুনিয়া ও আখেরাতে সন্তানের মাধ্যমে উপকৃত হওয়ার সুযোগ তার হাত ছাড়া হয়ে যায়। তুমি যদি সন্তান-সন্ততিদের মাঝে উচ্ছৃঙ্খলতা লক্ষ্য কর,তাহলে দেখতে পাবে এর অধিকাংশই পিতা-মাতাদের কাছ থেকেই এসেছে।(ইবনুল ক্বাইয়িম; তুহফাতুল মাওলূদ; পৃষ্ঠা: ২৪২)

7: মু‘আয বিন জাবাল (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেন,তোমরা জ্ঞান অর্জন কর। কেননা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জ্ঞানার্জন করা পরহেযগারিতা, তা অন্বেষণ করা ইবাদত এবং এর পঠন-পাঠন তাসবীহ। আর জ্ঞান-গবেষণায় নিয়োজিত হওয়া জিহাদের অন্তর্ভুক্ত। যারা জানে না তাদেরকে ইলম শিক্ষা দান করা ছাদাক্বাহ এবং জ্ঞান আহরণে আগ্রহীদের কাছে তা বিতরণ করা আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম’।(ইবনুল ক্বাইয়িম; মাদারিজুস সালেকীন ৩/২৪৬)
.
ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেন,সকল অকল্যাণের মূল হ’ল প্রবৃত্তির অনুসরণ ও দীর্ঘ আশা-আকাঙ্ক্ষা। কেননা প্রবৃত্তির অনুরসরণ হক জানা ও বুঝার পরেও তাকে সে বিষয়ে অন্ধ করে রাখে। আর দীর্ঘ আশা আখেরাতকে ভুলিয়ে দেয় এবং পরকালের জন্য প্রস্ত্ততি গ্রহণ করা থেকে বিরত রাখে।(ইবনুল ক্বাইয়িম; আল-ফাওয়ায়েদ; পৃষ্ঠা: ৯৯)

8: ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেন:

من رَفَقَ بعبادِ الله رَفَقَ الله به، ومن رحمَهمْ رحمَه، ومن أحسن إليهم أحسن إليه، ومن جاد عليهم جاد الله عليه، ومن نفعهم نفعه، ومن سترهم ستره، ومن منعهم خيره منعه خيره، ومن عامل خلقه بصفةٍ عامله الله بتلك الصِّفة بعينها في الدنيا والآخرة، فالله تعالى لعبده حسب ما يكون العبد لخلقه

যে ব্যক্তি আল্লাহর বান্দাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করে,আল্লাহও তার প্রতি কোমল হন। যে তাদের প্রতি দয়া করে, আল্লাহও তার প্রতি দয়া করেন। যে তাদের প্রতি অনুগ্রহ করে, তিনিও তার উপর অনুগ্রহ করেন। যে তাদেরকে দান করে, তিনিও তাকে দান করেন। যে তাদেরকে উপকার করে,তিনিও তাকে উপকৃত করেন। যে তাদের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখে, তিনিও তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখেন। যে তাদেরকে কল্যাণে পথে বাধা দান করে,তিনিও তাকে কল্যাণের পথে বাধাপ্রাপ্ত করেন। আর কোন ব্যক্তি আল্লাহর সৃষ্টিকূলের সাথে যেমন আচরণ করে, দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহও তার সাথে সেইরূপ আচরণ করেন। সুতরাং সৃষ্টিকূলের সাথে বান্দার ব্যবহারের মাত্রা অনুযায়ী তার প্রতি আল্লাহর ব্যবহারের ধরণ নির্ণিত হয়।(ইবনুল ক্বাইয়িম; আল-ওয়াবিলুস সাইয়িব; পৃষ্ঠা: ৩৫)

9: ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন:
.
এই দুনিয়ায় সফল হওয়ার একটি সর্বোত্তম উপায় হল নিজেকে সর্বদা সেই কাজে ব্যস্ত রাখা যা আপনার জন্য সর্বোত্তম এবং আখিরাতে আপনার জন্য সবচেয়ে কল্যাণকর। সর্বোত্তম ইবাদত হল মহান আল্লাহকে খুশি করার জন্য সর্বদা চেষ্টা করা যা সবচেয়ে উপযুক্ত এবং যে কোনও নির্দিষ্ট সময়ে প্রত্যাশিত।(ইবনুল ক্বাইয়্যিম; মাদারিজুস সালিকীন: ১/৮৮)

10: ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম( রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,”প্রত্যেক মানুষের অন্তরেই রয়েছে অস্থিরতা, যা কেবল আল্লাহর কাছে ফিরে গেলেই ঠিক করা সম্ভব। প্রত্যেক মানুষের অন্তরে রয়েছে এক শূন্যতা, তা কেবল আল্লাহর কাছে ফিরে গেলেই দূর করা সম্ভব। প্রত্যেক মানুষের অন্তরে রয়েছে ভয় আর উৎকন্ঠা, যা কেবল আল্লাহর নিকট আশ্রয় নিলেই দূর করা সম্ভব। আর প্রত্যেক মানুষের অন্তরেই রয়েছে হতাশা, যেটা কেবল আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট হলেই দূর করা সম্ভব “[আল ওয়াবিলুস সাইয়্যিব: ১/৭১]

11: ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন, তোমার আত্মা (নফস) তোমার শত্রুর মতো। সে যখন তোমাকে সতর্ক দেখে, তখন তোমার আনুগত্য করে যায়। আর যখন তোমার মধ্যে দুর্বলতা দেখে, তখন তোমাকে কয়েদীর মতো নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। আল্লাহ বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই নফস (আত্মা) মন্দকর্মপ্রবণ। [সুরা ইউসুফ; আয়াত: ৫৩]

No comments:

Post a Comment

Translate