Wednesday, September 3, 2025

ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশ-শাফিঈ আল-মাক্কী রাহিমাহুল্লাহ এর কিছু নাসীহাহ

 1: শাইখুল ইসলাম নাসিরুল হাদীস ফাক্বীহুল মিল্লাত ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশ-শাফি‘ঈ আল-মাক্কী (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৫০ হি: মৃত: ২০৪ হি.] বলেছেন:

صَحِبْتُ الصُّوفِيَّةَ. فَمَا انْتَفَعْتُ مِنْهُمْ إِلَّا بِكَلِمَتَيْنِ، سَمِعْتُهُمْ يَقُولُونَ: الْوَقْتُ سَيْفٌ. فَإِنْ قَطَعْتَهُ وَإِلَّا قَطَعَكَ. وَنَفْسُكَ إِنْ لَمْ تَشْغَلْهَا بِالْحَقِّ، وَإِلَّا شَغَلَتْكَ بِالْبَاطِلِ.

“আমি সূফীদের সঙ্গ পেয়েছি, কিন্তু তাদের থেকে দুটি বাক্য ছাড়া কোনো উপকার পাইনি। আমি তাদের বলতে শুনেছি—
.
(১).সময় হলো একটি তলোয়ার; তুমি যদি তাকে কাটতে পারো, তাহলে তো ভালো। অন্যথা সে-ই তোমাকে কেটে ফেলবে।
.
(২).তোমার মনকে যদি তুমি সঠিক কাজে ব্যস্ত না রাখো, তবে তা বৃথা কাজে তোমাকে ব্যস্ত করে ফেলবে।”(ইবনু ক্বাইয়িম,মাদারিজুস সালিকীন বায়না ইয়্যাকা না‘বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতা‘ঈন; খণ্ড: ৩; পৃষ্ঠা: ১২৪-১২৫)

2: শাইখুল ইসলাম নাসিরুল হাদীস ফাক্বীহুল মিল্লাত ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশ-শাফি‘ঈ আল-মাক্কী (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৫০ হি: মৃত: ২০৪ হি.] থেকে বর্ণিত অন্যতম সুন্দর একটি বর্ণনা হলো যা তার ছাত্র রবী ইবনে সুলাইমান তার থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: আমি মুহাম্মাদ ইবনে ইদরীস আশ-শাফেয়ীর কাছে উপস্থিত হয়ে দেখলাম তার কাছে একখন্ড মাটির টুকরোতে প্রশ্ন এসেছে: ‘আল্লাহর এই বাণী:
کَلَّاۤ اِنَّهُمۡ عَنۡ رَّبِّهِمۡ یَوۡمَئِذٍ لَّمَحۡجُوۡبُوۡنَ
“কিছুতেই (তাদের কথা সঠিক) নয়, সেদিন তারা তাদের প্রভু থেকে অবশ্যই আড়াল থাকবে।”[সূরা মুতাফফিফীন: ১৫]-এর ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?’ ইমাম শাফেয়ী বললেন: لما أن حجب هؤلاء في السخط، كان في هذا دليلٌ على أن أولياءه يرونه في الرضى“যেহেতু তিনি (আল্লাহ) অসন্তুষ্ট হয়ে তাদের (কাফেরদের) থেকে নিজেকে আড়াল করেছেন, এর থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে তিনি সন্তুষ্ট থাকার কারণে তাঁর মিত্ররা (মুমিনরা) তাঁকে দেখতে পাবে।”(ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১৪৫২৫)

3: শাইখুল ইসলাম নাসিরুল হাদীস ফাক্বীহুল মিল্লাত ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশ-শাফি‘ঈ আল-মাক্কী (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৫০ হি: মৃত: ২০৪ হি.] বলেছেন,

: ” وكان الإجماع من الصحابة والتابعين ومن بعدهم ومن أدركناهم يقولون: الإيمان قول وعمل ونية لا يجزئ واحد من الثلاثة إلا بالآخر ”

“সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাদের পরে যারা এসেছেন এবং যাদের সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করেছি সকলের ঐকমত্য ছিল এই বিষয়ে যে, ঈমান হল: কথা (বক্তব্য), আমল (কর্ম) ও নিয়ত (উদ্দেশ্য)। এই তিনটির মধ্যে কোনো একটি এককভাবে যথেষ্ট নয়;বরং তিনটিই একত্রে থাকা আবশ্যক।”(লালাকাই,শারহু উসুলিল ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাহ, খণ্ড: ৫; পৃষ্ঠা: ৯৫৬; ইবনু তাইমিয়্যাহ মাজমুউ ফাতাওয়া, খণ্ড: ৭; পৃষ্ঠা: ২০৯)
.
4: শাইখুল ইসলাম নাসিরুল হাদীস ফাক্বীহুল মিল্লাত ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশ-শাফি‘ঈ আল-মাক্কী (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৫০ হি: মৃত: ২০৪ হি.] কত চমৎকারই না বলেছেন:

كَمْ مِن صحيحٍ ماتَ مِن غيرِ عِلَّةٍ * وكَمْ مِن عَليلٍ عَاشَ حِينَاً مِن الدَهرِ وكَمْ مِن فَتَى يُمسي ويُصبح ضاحكاً * وأكفانه في الغيب تُنسج وهو لا يدري

‘এমন বহু সুস্থ ব্যক্তি আছে,যারা কোনো রোগ ছাড়াই আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করে, আবার অনেক অসুস্থ ব্যক্তি অনেক বছর ধরে বেঁচে থাকে। কত তরুণ দিনের শুরু এবং শেষ হাসি-খুশি কাটায়, অথচ সে জানে না যে, তার কাফনের কাপড় অনাদরে প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা তার অগোচরে তৈরি হয়ে যাচ্ছে।” (দীওয়ানে ইমাম শাফেঈ)
.
5: শাইখুল ইসলাম নাসিরুল হাদীস ফাক্বীহুল মিল্লাত ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশ-শাফি‘ঈ আল-মাক্কী (রাহিমাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৫০ হি: মৃত: ২০৪ হি.] বলেছেন,

أَشَدُّ الأَعْمَالِ ثَلاثَةٌ: الْجُودُ مِنْ قِلَّةٍ، وَالْوَرَعُ فِي خَلْوَةٍ وَكَلِمَةُ حَقٍّ عِنْدَ مَنْ يُرْجَى وَيُخَافُ، ‘

সবচেয়ে কঠিন আমল তিনটি।

(১).সম্পদ কম হওয়া সত্ত্বেও দান-সাদাক্বাহ করা,
(২).নির্জনে-নিভৃতে আল্লাহকে ভয় করা ও
(৩).যার কাছে কিছু প্রত্যাশা করা হয় ও যাকে দেখলে ভীতির সঞ্চার হয়, তার সামনে হক কথা বলা”।(ইবনুল জাওযী, আত-তাবসিরাহ; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৩০৪; সিফাতুস সাফওয়া; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৪৩৫)

No comments:

Post a Comment

Translate