1: নিষিদ্ধ দৃশ্য থেকে চোখ হেফাজত করা আত্মরক্ষার প্রথম প্রাচীর; এটাই বহু গুনাহ থেকে বাঁচার মূল চাবিকাঠি।…………………..!
.
আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
وَالنَّظَرُ أَصْلُ عَامَّةِ الْحَوَادِثِ الَّتِي تُصِيبُ الْإِنْسَانَ، فَالنَّظْرَةُ تُوَلِّدُ خَطْرَةً، ثُمَّ تُوَلِّدُ الْخَطْرَةُ فِكْرَةً، ثُمَّ تُوَلِّدُ الْفِكْرَةُ شَهْوَةً، ثُمَّ تُوَلِّدُ الشَّهْوَةُ إِرَادَةً، ثُمَّ تَقْوَى فَتَصِيرُ عَزِيمَةً جَازِمَةً، فَيَقَعُ الْفِعْلُ وَلَا بُدَّ، مَا لَمْ يَمْنَعْ مِنْهُ مَانِعٌ، وَفِي هَذَا قِيلَ: الصَّبْرُ عَلَى غَضِّ الْبَصَرِ أَيْسَرُ مِنَ الصَّبْرِ عَلَى أَلَمِ مَا بَعْدَهُ.
“মানুষের ওপর আপতিত অধিকাংশ দুর্ঘটনার মূল উৎসই হচ্ছে দৃষ্টি।কেননা দৃষ্টি চিন্তার জন্ম দেয়, চিন্তা কল্পনার জন্ম দেয়, কল্পনা কামনার জন্ম দেয়, কামনা থেকে আসে ইচ্ছা, ইচ্ছা প্রবল হয়ে তা বাস্তবায়িত হয়—যদি না কোনো বাধা তাকে থামিয়ে দেয়। এজন্যই বলা হয়:চোখ নামিয়ে রাখার ধৈর্য পরবর্তীতে যে কষ্ট আসতে পারে তা সহ্য করার চেয়েও সহজ”।(ইবনু ক্বাইয়িম, আল-জাওয়াবুল কাফী লিমান সাআলা আনিদ দাওয়াইশ শাফী, পৃষ্ঠা: ১৫৩)
2: নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের সব ধরনের দুর্বলতাকে খুব ভালোভাবে জানে, আর নারী হল তার প্রধান অস্ত্র।
.
আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
أن الله سبحانه ابتلى…الإنسان بعدُوٍّ لا يفارقه طرفة عين، ينام ولا ينام عنه، ويغفل ولا يغفل عنه، يراه هو وقبيلُه من حيث لا يراه، يبذل جهده في معاداته في كل حال، ولا يدع أمرًا يكيده به يقدر على إيصاله إليه إلا أوصله، ويستعين عليه ببني أبيه من شياطين الجن وغيرهم من شياطين الإنس، قد نصب له الحبائل…والفخاخ والشباك، وقال لأعوانه:… اقعدوا على طرق المعاصي، فحسِّنوها في أعين بني آدم، وزيِّنوها في قلوبهم، واجعلوا أكبر أعوانكم على ذلك النساء، فمن أبوابهن فادخلوا عليهم، فنعم العون هن لكم.
“নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা মানুষকে এমন এক শত্রুর মাধ্যমে পরীক্ষা করেছেন যে শত্রু এক পলক চোখ বন্ধ করার সময়ও তার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে না। মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে, কিন্তু সে ঘুমায় না।মানুষ গাফেল হয়ে যায়, কিন্তু সে কখনও গাফেল হয় না।সে এবং তার সঙ্গীসাথীরা এমন দিক থেকে মানুষকে দেখে, যেখান থেকে মানুষ তাকে দেখতে পায় না।সে প্রত্যেক মুহূর্তে, প্রতিটি পরিস্থিতিতে মানুষকে বিপথে নেবার সর্বাত্মক চেষ্টা করে।মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার এমন কোনো কৌশল নেই যা সে প্রয়োগ করে না। সে নিজের বংশধরদের যারা জিনদের শয়তান এবং মানুষরূপী শয়তানদেরকে কাজে লাগায়,তাদের নিয়ে বিছিয়ে রাখে ফাঁদ, চক্রান্তের দড়ি আর প্রবঞ্চনার জাল।সে তার সহযোগীদের বলে দিয়েছে: “আদম সন্তানের জন্য গুনাহর পথগুলোতে বসে থাকো। এই পথগুলোকে তাদের চোখে করে তোলো আকর্ষণীয়, তাদের অন্তরে সৃষ্টি করো লালসা ও মোহের আগুন।আর এ কাজে নারীদের করো তোমাদের প্রধান অস্ত্র। তাদের মাধ্যমেই মানুষের হৃদয়ে প্রবেশ করো।কারন নারীরা তোমাদের সকল চক্রান্তে হবে শ্রেষ্ঠ সহায়ক!”(ইমাম ইবনু কাইয়্যিম,যাদুল মা‘আদ, খণ্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ৪৫৬)
3: ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ,(রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমাদের শাইখ শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ)-কে বলতে শুনেছি:
: العارف لا يرى له على أحد حقًّا، ولا يشهد على غيره فضلًا،
ولذلك لا يعاتب، ولا يطالب، ولا يضارب”
“আল-আরিফ (আল্লাহর সঠিক পরিচয়প্রাপ্ত ব্যক্তি) কখনো কারো প্রতি নিজের কোনো হক দাবি করে না, এবং অন্যের প্রতি (নিজের) কোনো বিশেষ মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বও স্বীকার করে না। এ কারণে সে কাউকে তিরস্কার করে না, কারো কাছে নিজের পাওনা দাবি করে না, এমনকি কারো সঙ্গে বিরোধেও লিপ্ত হয় না।”(ইবনু ক্বাইয়িম, মাদারিজুস সালেকীন খণ্ড: ১,পৃষ্ঠা: ৫১৯)
4: “মাযহাবের কিছু সমস্যা ৭০০ হিজরীর খাঁটি হানাফিরা বুঝলেও, আজকের প্রচলিত হানাফিদের
অনেকেই তা উপলব্ধি করতে পারেননি।”…………….!
.
ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেন:আমি আমাদের শায়েখ (শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ) রাহিমাহুল্লাহ-কে বলতে শুনেছি—তিনি বলছিলেন:
: جاءني بعض الفقهاء من الحنفية
فقال: أستشيرك في أمر.
قلت: ما هو؟
قال: أريد أن أنتقل عن مذهبي.
قلت له: ولم؟
قال: لأني أرى الأحاديث الصحيحة كثيرًا تخالفه، واستشرت في هذا بعض أئمة أصحاب الشافعي.
فقال لي: لو رجعت عن مذهبك لم يرتفع ذلك من المذهب، وقد تقرَّرت المذاهب، ورجوعك غير مفيد، وأشار عليَّ بعض مشايخ التصوف بالافتقار إلى الله والتضرع إليه، وسؤال الهداية لما يحبه ويرضاه، فماذا تشير به أنت عليَّ؟
قال: فقلت له: اجعل المذهب ثلاثة أقسام، قسم الحق فيه ظاهر بين موافق للكتاب والسنة، فاقضِ به وأفتِ به طيب النفس منشرحَ الصدر، وقسم مرجوح ومخالفه معه الدليل، فلا تُفتِ به ولا تحكم به، وادْفَعه عنك، وقسم من مسائل الاجتهاد التي الأدلة فيها متجاذبة، فإن شئت أن تفتي به وإن شئت أن تدفعَه عنك.
فقال: جزاك الله خيرًا، أو كما قال؛).
“একবার কয়েকজন হানাফি ফকীহ আমার কাছে এলেন এবং বললেন:
‘আমরা একটি বিষয়ে আপনার পরামর্শ চাই।’
আমি বললাম, ‘কি বিষয়?’
তারা বললেন:
‘আমি আমার মাযহাব (হানাফি মাযহাব) ত্যাগ করতে চাই।’
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কেন?’
তিনি বললেন:
‘কারণ আমি দেখতে পাচ্ছি, বহু সহীহ হাদীস আমার মাযহাবের বিপরীত কথা বলছে।
আমি এ বিষয়ে শাফিঈ মাযহাবের কয়েকজন ইমামের সাথে পরামর্শ করেছিলাম।
তারা বলেছেন:
“তুমি যদি তোমার মাযহাব ত্যাগ করো, তাতে মাযহাবের কিছুই ক্ষতি হবে না।
মাযহাবসমূহ সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত।
তোমার এই প্রত্যাবর্তন (সত্যের প্রতি) এমন কিছু নয়, যা কার্যকর হবে বা দৃশ্যমান ফল বয়ে আনবে।”
অন্যদিকে, কিছু সূফি শায়েখ আমাকে উপদেশ দিয়েছেন:
‘আল্লাহর দরবারে নিজের অক্ষমতা ও অজ্ঞতা স্বীকার করে কান্নাকাটি করো।
তাঁর মহব্বত ও সন্তুষ্টির পথে হিদায়াত চাও।’
আপনি কী বলেন?”
শায়েখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) উত্তরে বললেন:“তুমি তোমার মাযহাবকে তিন ভাগে বিভক্ত করো:
➀ একাংশ: যা স্পষ্টভাবে সত্য, এবং কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সেসব বিষয়ে তুমি আত্মার প্রশান্তি ও অন্তরের প্রশস্ততা সহকারে ফতোয়া দাও ও বিচার ফয়সালা করো।
➁ দ্বিতীয় অংশ: যা দুর্বল, এবং যার বিপরীতে সহীহ দলীল রয়েছে এসবের ভিত্তিতে তুমি ফতোয়া দিও না, বিচার ফয়সালা করো না; বরং তা বর্জন করো।
➂ তৃতীয় অংশ: যেসব মাসআলা ইজতিহাদভিত্তিক, এবং যেখানে দলীলসমূহ পরস্পরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক (উভয় দিকেই দলিল আছে)।সেক্ষেত্রে চাইলে (মাযহাব অনুসরণ করে) ফতোয়া দিতে পারো, আবার চাইলে বিরত থাকতে পারো।”
তিনি (ওই ব্যক্তি) বললেন: “আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।” অথবা তিনি এর অনুরূপ কোনো কথা বলেছিলেন।”(ইবনুল ক্বাইয়িম, ই‘লামুল মুওয়াক্কি‘ঈন খণ্ড: ৪; পৃষ্ঠা: ১৮২)
.
5: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
قَالَ أَحْمَدُ بْنُ عَاصِمٍ: مَنْ كَانَ بِاللَّهِ أَعْرَفَ كَانَ لَهُ أَخْوَفَ، وَيَدُلُّ عَلَى هَذَا قَوْلُهُ تَعَالَى: {إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ} [فاطر: 28]
“আহমাদ ইবনু আসেম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহকে বেশি চেনে,“সে-ই তাঁর প্রতি অধিক ভীত হয়,একথার প্রমাণ হলো আল্লাহ তাআলার এই বাণী “আল্লাহকে তাঁর বান্দাদের মধ্যে কেবল আলেমগণই (সত্যিকারভাবে) ভয় করে”।(সূরা ফাতির; ৩৫/২৮; ইবনু কাইয়ুম; মাদারিজুস সালিকীন: খণ্ড: ৩; পৃষ্ঠা: ৩৭৬)
6: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
إذا أصبح العبد وأمسى وليس همه إلا الله وحده تحمّل الله عنه سبحانه حوائجه كلها، وحمل عنه كلّ ما أهمّه، وفرّغ قلبه لمحبته، ولسانه لذكره، وجوارحه لطاعته ، وإن أصبح وأمسى والدنيا همه حمّله الله همومها وغمومها وأنكادها ووكَلَه إلى نفسه ، فشغل قلبه عن محبته بمحبة الخلق ، ولسانه عن ذكره بذكرهم، وجوارحه عن طاعته بخدمتهم وأشغالهم، فهو يكدح كدح الوحوش في خدمة غيره.. فكلّ من أعرض عن عبودية الله وطاعته ومحبته بُلِيَ بعبودية المخلوق ومحبته وخدمته. قال تعالى : ومن يعْشُ عن ذكر الرحمن نقيض له شيطاناً فهو له قرين
“যদি বান্দা সকালে বা সন্ধ্যায় এ অবস্থায় উপনীত হয় যে, তার একমাত্র ভাবনা এক আল্লাহ তখন আল্লাহ তার সমস্ত প্রয়োজনের ভার বহন করেন, তার সকল দুঃশ্চিন্তার ভার তিনি গ্রহণ করেন, তার হৃদয়কে খালি করে দেন যাতে তাঁর ভালোবাসায় সেটি পূর্ণ হয়, তার জিহ্বাকে তাঁর যিকিরে ব্যস্ত রাখেন, তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে তাঁর আনুগত্যে নিয়োজিত করেন। আর যদি বান্দা সকালে বা সন্ধ্যায় এ অবস্থায় উপনীত হয় যে, তার একমাত্র ভাবনা দুনিয়া তখন আল্লাহ তার উপর সমস্ত দুঃশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনার ভার চাপিয়ে দিয়ে তাকে তার নিজের দিকে সমর্পণ করেন। সে আল্লাহকে ভালোবাসার বদলে মানুষকে ভালোবাসে, তার জিহ্বা আল্লাহকে স্মরণ করার বদলে মানুষের স্মরণে ব্যস্ত থাকে, তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আল্লাহর আনুগত্যের বদলে মানুষের সেবায় ও চাকরিতে ব্যস্ত থাকে। অন্যের কাজ করতে গিয়ে সে বন্য পশুর মতো পরিশ্রম করতে থাকে … এভাবে প্রত্যেক যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত, আনুগত্য ও ভালোবাসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় সে সৃষ্টির দাসত্ব, ভালোবাসা ও আজ্ঞাবহ হওয়ার পরীক্ষায় পড়ে। আল্লাহ তায়ালা বলেন: “যে ব্যক্তি করুণাময় আল্লাহর স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় আমি তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করি, অতঃপর সে-ই হয় তার সহচর।”(সূরা যুখরুফ: ৩৬; আল-ফাওয়াইদ পৃষ্ঠা: ১৫৯)
.
7: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
القلب في سَيره إلى الله عز وجل: بمنزلة الطائر:
فالمحبة: رأسه . والخوف والرجاء: جناحاه .فمتى سلم الرأس والجناحان: فالطائر جيد الطيران .ومتى قطع الرأس: مات الطائر .ومتى فُقد الجناحان: فهو عرضة لكل صائد وكاسر .
ولكن السلف استحبوا أن يقوى في الصحة جناح الخوف على جناح الرجاء ، وعند الخروج من الدنيا: يقوى جناح الرجاء على جناح الخوف . هذه طريقة أبي سليمان وغيره، قال: ينبغي للقلب أن يكون الغالب عليه الخوف، فإن غلب عليه الرجاء فسد .وقال غيره : أكمل الأحوال : اعتدال الرجاء والخوف، وغلبة الحب، فالمحبة هي المركب، والرجاء حاد، والخوف سائق، والله الموصل بمنه وكرمه ”
“আল্লাহর দিকে (সফর) চলার পথে অন্তর একটি পাখির ন্যায়। ভালোবাসা (মুহাব্বাত) হলো তার মাথা,আর ভয় (খাওফ) ও আশা (রাজা)—এ দুটো হলো তার দুই ডানা।যখন মাথা ও উভয় ডানা অক্ষত থাকে,তখন পাখিটি সুন্দরভাবে উড়তে পারে। আর যদি মাথা কেটে ফেলা হয়, তবে পাখিটি মারা যায়।আর যদি দুই ডানা না থাকে, তবে তা শিকারি ও ভাঙনের জন্য উপযুক্ত হয়ে পড়ে। সালাফগণ পছন্দ করতেন যে—সুস্থ অবস্থায় ‘ভয়ের ডানা’ যেন ‘আশার ডানা’র চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়।আর মৃত্যুকালে তথা দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়ার সময় ‘আশার ডানা’ যেন ‘ভয়ের ডানা’র চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়।এটাই ছিল আবু সুলাইমান (রাহিমাহুল্লাহ) ও অন্যদের পথ। তিনি বলতেন:“উচিত হচ্ছে অন্তরে যেন ভয়ই প্রাধান্য পায়। কেননা,যদি কেবল আশাই প্রাধান্য পায়, তাহলে অন্তর দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে।” অন্যজন বলেছেন:“পূর্ণাঙ্গ অবস্থা হলো—আশা ও ভয় উভয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকা এবং মুহাব্বাতের আধিক্য থাকা।কারণ মুহাব্বাত (ভালোবাসা) হচ্ছে বাহন, আশা হচ্ছে গীতিকার (যে যাত্রাকে উদ্দীপিত করে), আর ভয় হচ্ছে চালক। আর আল্লাহই হচ্ছেন গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা গ্রহণকারী—তাঁর অনুগ্রহ ও করুণায়।”(ইবনু ক্বাইয়িম,মাদারিজুস সালেকীন; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৫১৪)
.
8: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
” فمن أهمل تعليم ولده ما ينفعه ، وتركه سدى : فقد أساء غاية الإساءة ، وأكثر الأولاد إنما جاء فسادهم من قبَل الآباء ، وإهمالهم لهم ، وترك تعليمهم فرائض الدين وسنُنه ، فأضاعوهم صغاراً ، فلم ينتفعوا بأنفسهم ، ولم ينفعوا آباءهم كباراً ”
“যে ব্যক্তি নিজের সন্তানকে উপকারী জ্ঞান শিক্ষা দিতে অবহেলা করে এবং তাকে তার অবস্থায় ছেড়ে দেয়, সে চরম অন্যায় ও জুলুম করে। অধিকাংশ সন্তানের বিপথগামিতার মূল কারণ হচ্ছে তাদের পিতা-মাতার অবহেলা। তারা সন্তানদেরকে দ্বীনের ফরয ও সুন্নাহ অনুযায়ী শিক্ষা দেয়নি। ফলে তারা শৈশবেই পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে। তারা নিজেদের উপকারে আসেনি, বরং বড় হয়ে তারা পিতা-মাতার উপকারেও আসেনি।”(ইবনু কাইয়্যিম, তুহফাতুল মাওদুদ, পৃষ্ঠা: ২২৯)
.
9: ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন:
الرجال أغير على البنات من النساء، فلا تستوي غيرة الرجل على ابنته وغيرة الأم أبدًا. وكم من أم تساعد ابنتها على ما تهواه! ويحملها على ذلك ضعف عقلها، وسرعة انخداعها، وضعف داعي الغيرة في طبعها، بخلاف الأب
“কন্যা সন্তানের প্রতি নারীদের চাইতে পুরুষদের গাইরত (ঈর্ষাশীল এবং সম্মান রক্ষায় সচেতন) বেশি হয়। তাই মেয়ের প্রতি বাবার গাইরত আর মায়ের গাইরত কখনো সমান হয় না।এমন কত মা আছে যারা তার মেয়েকে যা ইচ্ছা তাই করতে সাহায্য করে! এ কারণ হলো মায়ের বুদ্ধিমত্তার দুর্বলতা, সহজে ধোঁকায় পড়ার প্রবণতা এবং স্বভাবতই গাইরতের অভাব,যেটা কিনা বাবার স্বভাবের বিপরীত।”(ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ, খণ্ড: ৫; পৃষ্ঠা: ৪৭৪)
.
10: ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
أصول السعادة : -أصول التعاسة :
• التوحـــيد. • الشـــــــرك
• الســنــــة • البدعــــــة
• الطاعــــة • المعصيـــة
(ক).সৌভাগ্যের ভিত্তি:
(১).তাওহীদ: (আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস ও ইবাদতে তাঁর প্রতি একনিষ্ঠতা)
.
(২).সুন্নাহ: (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পথ ও আদর্শ অনুসরণ)
.
(৩).আনুগত্য: (আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ-নিষেধ মান্য করা)
.
(খ).দুর্ভাগ্যের ভিত্তি:
.
(১).শির্ক: (আল্লাহর তাওহীদের তিনটি অংশের সাথে অন্যকিছু শরিক করা)
.
(২).বিদআত: (দ্বীনে নতুন কিছু সংযোজন করা যা রাসূল (ﷺ) ও সাহাবিরা করেননি)
.
(৩).অবাধ্যতা: (আল্লাহর আদেশ অমান্য করা ও গোনাহে লিপ্ত হওয়া)। (ইবনু কাইয়্যিম, আল-ফাওয়াইদ; পৃষ্ঠা: ৭৬)
11: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন:
سمعتُ شيخ الإسلام ابن تيمية يقول : “إنَّ في الدنيا جنَّة مَن لم يدخلها : لا يدخل جنة الآخرة ” ، وقال لي مرة : ” ما يصنع أعدائي بي ؟ أنا جنَّتي وبستاني في صدري ، إن رحتُ فهي معي لا تفارقني ، إنَّ حبْسي خلوة ، وقتلي شهادة ، وإخراجي من بلدي سياحة” .
আমি শাইখুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহকে বলতে শুনেছি:“নিশ্চয়ই এই দুনিয়াতেও এক জান্নাত আছে; যে এতে প্রবেশ করেনি, সে আখিরাতের জান্নাতেও প্রবেশ করতে পারবে না।”তিনি একবার আমাকে বলেছিলেন: “আমার শত্রুরা আমার সাথে কীই বা করতে পারবে? আমার জান্নাত ও আনন্দ-বাগান তো আমার (অন্তরে) বুকের ভিতরে। আমি যেখানেই যাই না কেন, এটা আমার সঙ্গেই থাকে, কখনো আলাদা হয় না। যদি তারা আমাকে বন্দী করে, তবে তা আমার জন্য নিঃসঙ্গ ইবাদতের সুযোগ। যদি হত্যা করে, তবে তা আমার জন্য শাহাদত। আর যদি আমাকে দেশ থেকে নির্বাসনে পাঠায়, তবে তো সেটা আমার জন্য (আল্লাহর পথে নিরন্তর) সফর”।(ইবনু তায়মিয়াহ, আল-মুস্তাদরাক ‘আলা মাজমূ‘উল ফাতাওয়া; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ১৫৩; ইবনু ক্বাইয়িম,আল-ওয়াবিলুস সাইয়িব পৃষ্ঠা: ৪৮; (কায়রো: দারুল হাদীস ৩য় মুদ্রণ, ১৯৯৯ হি.)
.
12: প্রত্যেক মুসলিমের জন্য এটি আবশ্যক হলো:আল্লাহর প্রকৃত পরিচয় জানা।
.
আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
وليست حاجةُ الأرواح قطُّ إلى شيء أعظمَ منها إلى معرفة بارئها وفاطرها، ومحبته، وذكره، والابتهاج به، وطلب الوسيلة إليه، والزلْفى عنده. ولا سبيل إلى هذا إلّا بمعرفة أوصافه وأسمائه، فكلّما كان العبد بها أعلَم كان بالله أعرَف، وله أطلَب، وإليه أقرَب. وكلّما كان لها أنكَر كان بالله أجهَل، وإليه أكرَه، ومنه أبعَد
“স্রষ্টার পরিচয় জানা, তাঁকে ভালবাসা, তাকে স্মরণ করা, তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকা, তার কাছে অসীলা ও নৈকট্য কামনা করার চেয়ে রূহের জন্য অতীব প্রয়োজনীয় কোন বস্তু নেই। আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর পরিচয় জানা ছাড়া এগুলো অর্জনের কোন উপায় নেই। বান্দা যত বেশী আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর পরিচয় জানবে, সে তত বেশী আল্লাহকে চিনতে পারবে, তার প্রিয় বান্দা হতে পারবে এবং তার নৈকট্য হাছিল করতে পারবে। আর আল্লাহর নাম ও গুণাবলী সম্পর্কে যত কম জানবে, সে আল্লাহ সম্পর্কে তত বেশী অজ্ঞতার মধ্যে ডুবে থাকবে, তার অপ্রিয় বান্দায় পরিণত হবে এবং তার থেকে দূরে সরে যাবে”।(ইবনু ক্বাইয়িম, নূনিয়াতু ইবনু ক্বাইয়িম আল-কাফিয়াহ আশ-শাফিয়াহ (রিয়াদ : দারু আত্বা‘আতিল ইলম, ৪র্থ সংস্করণ, ১৪৪০ হি./২০১৯ খৃ.), পৃষ্ঠা: ৯)
13: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] এক মুমিন ব্যক্তির তার অপর মুমিন ভাইয়ের প্রতি সমবেদনা (সহানুভূতি প্রকাশের) ধরণগুলিকে সুন্দরভাবে সংক্ষেপে উল্লেখ করে বলেন:
: المواساة للمؤمن أنواع : مواساة بالمال ومواساة بالجاه ومواساة بالبدن والخدمة ومواساة بالنصيحة والإرشاد ومواساة بالدعاء والاستغفار لهم ومواساة بالتوجّع لهم ، وعلى قدر الإيمان تكون هذه المواساة فكلما ضعف الإيمان ضعفت المواساة وكلما قوي قويت وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم أعظم الناس مواساة لأصحابه بذلك كله فلأتباعه من المواساة بحسب اتباعهم له
“মুমিন ভাইয়ের প্রতি সমবেদনা ও সান্ত্বনার ধরণ ভিন্ন রকম হয়ে থাকে— “অর্থ দিয়ে সান্ত্বনা, সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে সান্ত্বনা, শরীর (শক্তি সমর্থন) ও সেবা দিয়ে সান্ত্বনা, উপদেশ ও দিক-নির্দেশনা দিয়ে সান্ত্বনা, দোয়া করা ও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে সান্ত্বনা এবং তাদের জন্য শোক প্রকাশ করে সান্ত্বনা দেওয়া (ইত্যাদি)। আর এই সমবেদনাগুলো ঈমান অনুপাতে হয়ে থাকে। ঈমান যত দুর্বল, সান্ত্বনা তত দুর্বল, আর ঈমান যত শক্তিশালী, সান্ত্বনা ততোই শক্তিশালী। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই সকল বিষয়ে তাঁর সাহাবীদের প্রতি সান্ত্বনা ও সমবেদনা দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব ছিলেন। তাই সাহাবিরা তাঁর অনুসরণ অনুপাতে সহানুভূতির গুণাবলি অর্জন করে থাকেন।”(ইবনুু ক্বাইয়িম, আল-ফাওয়ায়েদ, খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ১৭১)
14: ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা, (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন:
وكان أجود الناس وأجود ما يكون في رمضان يكثر فيه من الصدقة والإحسان وتلاوة القرآن والصلاة والذكر والاعتكاف.
“নবী (ﷺ) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে উদার। আর রামাযান মাসে তিনি আরও বেশি উদার হয়ে উঠতেন। এই মাসে তিনি অধিক পরিমাণে সাদাক্বাহ, ইহসান, কুরআন তেলাওয়াত, সালাত, যিকির এবং ই‘তিকাফে লিপ্ত থাকতেন।”(ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ৩২)
15: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
لله ملك السماوات والأرض؛ واستقرض منك حبة، فبخلت بها! وخلق سبعة أبحر، وأحب منك دمعة، فقحطت عينك بها!
“আকাশ ও পৃথিবীর সার্বভৌম রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি তোমার কাছে একটি শস্যদানা ঋণ চাইলেন,অথচ তুমি তা নিয়ে কৃপণতা করলে! তিনি সাতটি সমুদ্র সৃষ্টি করেছেন, আর তোমার কাছ থেকে মাত্র এক ফোঁটা অশ্রু চেয়েছিলেন, কিন্তু তোমার চোখ তা বর্ষণ করতে কার্পণ্য করল! হায়!”(ইবনুল কাইয়্যিম আল-ফাওয়াইদ, পৃষ্ঠা: ৮৪)
.
16: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
” من علامات السعادة والفلاح: أنَّ العبد كُلَّما زيدَ في عِلْمِه زِيْدَ في تواضعهِ ورَحْمَتِهِ، وكُلَّما زِيدَ في عملهِ زِيدَ في خَوْفِهِ وحذَرِهِ، وكُلَّما زِيدَ في عمرهِ نَقَصَ مِنْ حِرْصِهِ، وكُلَّما زِيدَ في مالهِ زِيْدَ في سَخَائِهِ وبذلهِ، وكُلَّما زيدَ في قَدْرِهِ وَجَاهِهِ زيدَ في قُرْبِهِ مِنَ النَّاسِ وقضاءِ حوائجهم والتَّواضع لهم ”
“সৌভাগ্য ও সফলতার লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো— বান্দার জ্ঞান যত বৃদ্ধি পায়, তার বিনয় ও দয়া তত বৃদ্ধি পায়; তার আমল যত বৃদ্ধি পায়, তার (তাকওয়া) ভয় ও সতর্কতা তত বৃদ্ধি পায়; তার বয়স যত বৃদ্ধি পায়, তার লোভ লালসা তত কমে যায়; তার সম্পদ যত বৃদ্ধি পায়, তার উদারতা ও দানশীলতা তত বৃদ্ধি পায়; এবং তার মর্যাদা ও সামাজিক অবস্থান যত বৃদ্ধি পায়, সে মানুষের প্রতি তত বেশি অনুগ্রহশীল হয়, তাদের প্রয়োজন মেটাতে এগিয়ে আসে এবং তাদের প্রতি বিনয়ী হয়।”(ইবনু কাইয়ুম; আল-ফাওয়ায়েদ; পৃষ্ঠা: ১৫৫)-
.
17: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
مِنْ أَعْظَمِ الْأَشْيَاءِ ضَرَراً عَلَىَ الْعَبْدِ بِطَالَتُهُ وَفَرَاغُهُ، فَإِنَّ النَّفْسَ لاَ تَقْعُدُ فَارِغَةً، بَلْ إِنْ لَمْ يُشَغِّلْهَا بِمَا يَنْفَعُهَا شَغَّلَتْهُ بِمَا يَضُرُّه وَلَا بُدَّ،
“বান্দার জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর বিষয় হলো বেকারত্ব ও অবসর। কারণ, নফস কখনো নিষ্ক্রিয় (অবসর) থাকে না। যদি তাকে উপকারী কাজে ব্যস্ত না রাখা হয়, তবে সে অবশ্যই ক্ষতিকর কাজে লিপ্ত হয়ে পড়বে।”
(ইবনু ক্বাইয়িম, ত্বরীকুল হিজরাতাইন, পৃষ্ঠা: ২৭৫)
.
18: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
إِذَا جَرَّى عَلَى الْعَبْد مَقْدُور يَكْرَههُ؛ فَلَهُ فِيهُ سِتَّة مَشَاهِد:
◇أَحُدّهَا: مَشْهَد التَّوْحِيد، وَأَنَّ الله هُوَ الَّذِي قَدَرهُ وَشَّاءهُ وَخَلْقهُ، وَمَا شَاء الله كَانَ، وَمَا لَمْ يَشَأ لَمْ يَكْن.
◇الثَّانِي: مَشْهَد الْعَدْل، وَأَنَّهُ مَاض فِيهُ حُكْمهُ، عَدْل فِيهُ قَضَاؤهُ.
◇الثَّالِث: مَشْهَد الرَّحْمَة، وَأَنَّ رَحْمَتهُ فِي هَذَا الْمَقْدُور غَالِبَة لِغَضَبه وَاِنْتِقَامه وَرَحْمَتهُ حَشُّوهُ.
◇الرَّابِع: مَشْهَد الْحِكْمَة، وَأَنَّ حِكْمَتهُ سُبْحَانَهُ اِقْتَضَت ذَلِكَ، لَمْ يُقَدِّرهُ سُدَى وَلَا قَضَّاهُ عَبَثا،
◇الْخَامِس: مَشْهَد الْحَمْد، وَأَنَّ لَهُ سُبْحَانَهُ الْحَمْد التَّامّ عَلَى ذَلِكَ مِنْ جَمِيع وُجُوهه.
◇السَّادِس: مَشْهَد الْعُبُودِيَّة، وَأَنَّهُ عَبْد مَحْض مِنْ كَلّ وَجَّه، تَجْرِي عَلَيْهُ أَحُكَّام سَيِّده وَأَقْضِيَتهُ بِحُكْم كَوْنه مُلْكهُ وَعَبْدهُ فَيُصَرِّفهُ تَحْتَ أَحْكَامه الْقُدْرِيَّة كَمَا يَصْرِفهُ تَحْتَ أَحْكَامه الدِّينِيَّة؛ فَهُوَ مَحَلّ لجَرَيانِ هَذِهِ الْأَحْكَام عَلَيْهُ.
“যদি কোনো বান্দার জীবনে এমন কিছু ঘটে, যা সে অপছন্দ করে, তবে তার উচিত এ বিষয়ে ছয়টি দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করা:
.
◇ প্রথম: তাওহিদের দৃষ্টিভঙ্গি— এ কথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা যে, এটি আল্লাহ তাআলাই নির্ধারণ করেছেন, তাঁর ইচ্ছাতেই এটি সংঘটিত হয়েছে এবং তিনিই একে সৃষ্টি করেছেন। যা আল্লাহ চান, তাই ঘটে, আর যা তিনি না চান, তা কখনোই সংঘটিত হয় না।
.
◇ দ্বিতীয়: ন্যায়বিচারের দৃষ্টিভঙ্গি— যে,এতে আল্লাহর বিধান কার্যকর হয়েছে এবং তাঁর সিদ্ধান্ত ন্যায়সঙ্গত।
.
◇ তৃতীয়: রহমতের দৃষ্টিভঙ্গি— যে, এই ঘটনায় আল্লাহর দয়া ও করুণা নিহিত রয়েছে। কারণ, তাঁর রহমত তাঁর ক্রোধ ও শাস্তির ওপর প্রাধান্য পায়। ফলে, এতে অবশ্যই কোনো কল্যাণ ও মঙ্গল লুকিয়ে আছে।
.
◇ চতুর্থ: হিকমাহ (জ্ঞান ও প্রজ্ঞা)-এর দৃষ্টিভঙ্গি— উপলব্ধি করা যে, আল্লাহ তাআলা অযথা কিছু নির্ধারণ করেন না। বরং তাঁর অপরিসীম জ্ঞান ও প্রজ্ঞার কারণেই এটি ঘটেছে। তিনি অনর্থক কোনো কিছু নির্ধারণ করেন না এবং উদ্দেশ্যহীনভাবে কোনো ফয়সালা দেন না।
.
◇ পঞ্চম: প্রশংসার দৃষ্টিভঙ্গি— এই বিশ্বাস রাখা যে, আল্লাহ তাআলা তাঁর নির্ধারিত সমস্ত বিষয়ে পরিপূর্ণ প্রশংসার যোগ্য। কারণ, তাঁর ফয়সালা সর্বদা হিকমাহ, রহমত ও ন্যায়বিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
.
◇ ষষ্ঠ: দাসত্বের দৃষ্টিভঙ্গি— উপলব্ধি করা যে, বান্দা পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর দাস। তার ওপর তাঁর মালিকের বিধান ও ফয়সালা কার্যকর হবে। আল্লাহ তাকে তাঁর কদরী (তাকদিরসংক্রান্ত) বিধানের মাধ্যমে পরিচালিত করেন, যেমন তিনি তাঁকে তাঁর শরয়ী (ধর্মীয়) বিধানের মাধ্যমেও পরিচালিত করেন। বান্দা হল সেই স্থান, যেখানে এই সমস্ত বিধান কার্যকর হয়। সুতরাং, বান্দার জন্য আবশ্যক হলো বিনীতভাবে আল্লাহর হুকুমের প্রতি আত্মসমর্পণ করা”।(ইবনু ক্বাইয়িম, আল-ফাওয়ায়েদ, পৃষ্ঠা: ৩৬)
.
19: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
أصُوْلُ الْخَطَايَا كُلِّهَا ثَلاَثَةٌ: الْكِبْرُ وَهُوَ الَّذِيْ أصَارَ إِبْلِيسَ إِلَى مَا أصاره، والْحِرْصُ وَهُوَ الَّذِي أخرج آدم من الْجنَّة، والْحَسَدُ وَهُوَ الَّذِي جرأ أحد بني آدم على أَخِيه، فَمن وقِي شَرَّ هَذِه الثَّلاَثَة فقد وقى الشَّرَّ كله- فالكفر من الْكبر والمعاصي من الْحِرْص وَالْبَغي وَالظُّلم من الْحَسَد-
সমস্ত পাপের মূল উৎস হল তিনটি :
(১) অহংকার,যা ইবলীসকে তার পতনের দিকে ঠেলে দিয়েছিল।
(২) লোভ, যা জান্নাত থেকে আদম (আঃ)-কে বের করে দিয়েছিল।
(৩) হিংসা, যা “আদম (আঃ)-এর এক সন্তানের বিরুদ্ধে অপর সন্তানকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তুলেছিল।”
.
যে ব্যক্তি উক্ত তিনটি বস্তুর অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকতে পারবে সে যাবতীয় অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকতে পারবে।
কেননা, কুফরীর মূল উৎস হল অহংকার, পাপকর্মের মূল কারণ হল লোভ,আর বিদ্রোহ ও সীমালংঘনের উৎস হল ‘হিংসা”(ইবনুল ক্বাইয়িম, আল-ফাওয়ায়েদ (বৈরূত: দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, ১৩৯৩/১৯৭৩) পৃষ্ঠা: ৫৮)
.
20: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
ارض عن الله في جميع ما يفعله بك، فإنه ما منعك إلا ليعطيك، ولا ابتلاك إلا ليعافيك، ولا أمرضك إلا ليشفيك، ولا أماتك إلا ليحييك، فإياك أن تفارق الرضى عنه طرفة عين، فتسقط من عينه، ‘
“আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা কিছু আরোপিত হয়, তার সবকিছুতে তুমি সন্তুষ্ট থাক। কারণ তোমাকে বিশেষ কিছু প্রদান করার জন্যই তিনি কোন কিছু পাওয়া থেকে তোমাকে বিরত রাখেন।তিনি তোমাকে বিপদে ফেলেন শুধু তোমাকে মুক্ত করার জন্য, তিনি তোমাকে অসুস্থ করেন শুধুমাত্র তোমাকে সুস্থ করার জন্য, তিনি তোমাকে মৃত্যু দেন শুধুমাত্র তোমাকে জীবিত করার জন্য। তাই সাবধান! কখনোই আল্লাহর সন্তুষ্টির সীমা থেকে এক মুহূর্তের জন্যও বিচ্যুত হয়ো না, কারণ তা হলে তুমি তাঁর দৃষ্টি থেকে হারিয়ে যাবে।”।(ইবনু ক্বাইয়িম, মাদারিজুস সালেকীন: ২/২১৬)
.
21: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ, ইমাম ইবনু ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
لَو علم النَّاس مَا فِي قِرَاءَة الْقُرْآن بالتدبر لاشتغلوا بهَا عَن كل مَا سواهَا فَإِذا قَرَأَهُ بتفكر حَتَّى مر بِآيَة وَهُوَ مُحْتَاجا إِلَيْهَا فِي شِفَاء قلبه كررها وَلَو مائَة مرّة وَلَو لَيْلَة فقراءة آيَة بتفكر وتفهم خير من قِرَاءَة ختمة بِغَيْر تدبر وتفهم وأنفع للقلب وأدعى الى حُصُول الايمان وذوق حلاوة الْقُرْآن،
“মানুষ যদি জানতো অনুধাবন (গভীর চিন্তাভাবনা) করে কুরআন তেলাওয়াতের মাঝে কত কল্যাণ নিহিত আছে, তাহলে তারা সব কাজ ফেলে রেখে কুরআন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ত। যখন সে চিন্তা-ভাবনা করে তেলাওয়াত করবে, তখন একটা আয়াত অতিক্রম না করতেই সে তার অন্তরের রোগমুক্তির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবে। একই আয়াত বারবার তেলাওয়াত করবে। হয়ত আয়াতটি একশ’ বার পড়বে। সারা রাত ধরে পড়বে। সুতরাং অনুধাবন না করে ও না বুঝে কুরআন খতম করার চেয়ে চিন্তা-ভাবনা করে বুঝে বুঝে একটি আয়াত তেলাওয়াত করা অধিকতর উত্তম। এটাই হবে তার হৃদয়ের জন্য অধিক উপকারী এবং ঈমান প্রাপ্তি ও কুরআনের স্বাদ আস্বাদনে অধিকতর উপযোগী”।(ইবনুল ক্বাইয়িম, মিফতাহু দারিস সা‘আদাত: ১/১৮৭)
22: ইমাম ইবনু ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
كثر الخلق إذا نالوا الرئاسات تغيرت أخلاقهم ومالوا إلى الكبر وسرعة الانفعال، فمن الغلط أن تطالبه بالأخلاق التي كان يعامل بها قبل الرئاسة،
“(সমাজে) এমন অনেক মানুষ রয়েছে যখন তারা নেতৃত্ব (ক্ষমতা) লাভ করে, তখন তাদের চরিত্র পরিবর্তন হয়ে যায় এবং তারা তাদের অহংকার প্রকাশ করে। পাশাপাশি অল্পতেই তাদের রাগ বা ক্রোধ প্রকাশ করে। তাই (জনগণের) সবচেয়ে বড় ভুল হলো যে নেতৃত্ব লাভের পূর্বে সে (নেতা) যে চরিত্রের উপরে ছিল, তাকে নেতৃত্ব লাভের পরেও সেই চরিত্রের উপরে পাওয়ার আশা করা”। (আব্দুল মালিক কাসিম, মিফতাহু দা‘ওয়াতির রাসূল (ﷺ) পৃষ্ঠা: ৩০)
23: ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেন;
«وَالطَّرِيق طَرِيق تَعب فِيهِ آدم وناح لأَجله نوح وَرمي فِي النَّار الْخَلِيل وأضجع للذبح إِسْمَاعِيل وَبيع يُوسُف بِثمن بخس ولبث فِي السجْن بضع سِنِين وَنشر بِالْمِنْشَارِ زَكَرِيَّا وَذبح السَّيِّد الحصور يحيى وقاسى الضّر أَيُّوب وَزَاد على الْمِقْدَار بكاء دَاوُد وَسَار مَعَ الْوَحْش عِيسَى وعالج الْفقر وأنواع الْأَذَى مُحَمَّد ﷺ»
(হে সংকল্পকে গোপনকারী, তুমি কোথায় রয়েছো!) অথচ দাওয়াতের পথটা এমন কষ্টার্জিত পথ,যে পথে আদম (আলাইহিস সালাম) দাওয়াত দিতে গিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন। নূহ (আলাইহিস সালাম) এই দাওয়াতের জন্য কত কান্না করেছেন। ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) অগ্নিকুন্ডে নিক্ষিপ হয়েছেন। ঈসমাইল (আলাইহিস সালাম) জবাই হওয়ার জন্য শায়িত হয়েছেন। ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-কে সামান্য দামে বিক্রি করা হয়েছে এবং তিনি কয়েক বছর কারারুদ্ধ হয়েছেন। যাকারিয়া (আলাইহিস সালাম)-কে (করাত দ্বারা) চিরে ফেলা হয়েছে। নেতা ও নারী সম্ভোগমুক্ত (সচ্চরিত্রবাণ) ইয়াহিয়া (আলাইহিস সালাম)-কে জবেহ করা হয়েছে, এবং আইয়ুব (আলাইহিস সালাম) রোগ-বালাইতে অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন এবং দাউদ (আলাইহিস সালাম) মাত্রারিক্ত কান্না করেছেন। ঈসা (আলাইহিস সালাম) একাকীত্ব ও দারিদ্রের কবলে পড়েছেন। আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় বান্দা, সর্বশেষ ও সর্বশেষ্ঠ রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিভিন্ন ধরনের কষ্ট সহ্য করেছেন। অথচ তুমি আমোদ-প্রমোদ এবং খেল-তামাশায় মত্ত ও আনন্দিত”।(ইবনুল কাইয়্যিম আল ফাওয়ায়েদ: পৃষ্ঠা/৪২)
.
24: কাফের,মুশরিকদের উৎসবগুলোতে উপস্থিত হওয়া ও তাদেরকে শুভেচ্ছা জানানোর হুকুম সম্পর্কে ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] কে জিজ্ঞেস করা হলে জবাবে তিনি বলেন :
ولا يجوز للمسلمين حضور أعياد المشركين باتفاق أهل العلم الذين هم أهله . وقد صرح به الفقهاء من أتباع المذاهب الأربعة في كتبهم . . . وروى البيهقي بإسناد صحيح عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه أنه قال : (لا تدخلوا على المشركين في كنائسهم يوم عيدهم فإن السخطة تنزل عليهم) . وقال عمر أيضاً : (اجتنبوا أعداء الله في أعيادهم) . وروى البيهقي بإسناد جيد عن عبد الله بن عمرو أنه قال : (من مَرَّ ببلاد الأعاجم فصنع نيروزهم ومهرجانهم وتشبه بهم حتى يموت وهو كذلك حشر معهم يوم القيامة)
“আলেমদের সর্বসম্মতিক্রমে মুসলমানদের জন্য মুশরিকদের উৎসবগুলোতে উপস্থিত হওয়া নাজায়েয। চার মাযহাবের ফিকাহবিদগণ তাঁদের গ্রন্থসমূহে এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন…।ইমাম বাইহাকী উমর বিন খাত্তাব (রাঃ) থেকে ‘সহিহ-সনদ’ এ বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন: “মুশরিকদের উৎসবের দিনে তোমরা তাদের উপাসনালয়ে প্রবেশ করো না। কেননা তাদের উপর আল্লাহ্র অসন্তুষ্টি (আযাব) নাযিল হতে থাকে”। তিনি আরও বলেন: “তোমরা আল্লাহ্র শত্রুদেরকে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে এড়িয়ে চলবে”। ইমাম বাইহাকী আব্দুল্লাহ্ বিন আমর (রাঃ) থেকে ‘জায়্যিদ-সনদ’ এ বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি বিধর্মীদের দেশে গিয়ে তাদের নওরোজ ও মেলা পালন করেছে, তাদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করেছে এবং মৃত্যু পর্যন্ত এভাবে কাটিয়েছে কিয়ামতের দিন তাদের সাথে তার হাশর হবে।”(আহকামু আহলিয যিম্মাহ্ খন্ড:১; পৃষ্ঠা: ৭২৩-৭২৪)
25: ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
اَلْقَلْبُ الْحَيُّ هُوَ الَّذِي يَعْرِفُ الْحَقَّ وَيَقْبَلُهُ وَيُحِبُّهُ وَيُؤْثِرُهُ عَلَى غَيْرِهِ فَإِذَا مَاتَ الْقَلْبُ لَمْ يَبْقَ فِيهِ إِحْسَاسٌ وَلَا تَمْيِيْزَ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ
“জীবন্ত অন্তর হচ্ছে, যা হক চিনে, সেটা গ্রহণ করে ও পছন্দ করে এবং সকল কিছুর উপর হককে প্রাধান্য দেয়। কিন্তু অন্তর যখন মরে যায়, তখন সেখানে হক ও বাতিলের পার্থক্য করার অনুভূতিও অবশিষ্ট থাকে না”।
(ইবনুল কবাইয়িম, শিফাউল ‘আলীল, পৃষ্ঠা ১০৪)
.
26: ইমাম ইবনুল জাওযী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
مَنِ اسْتَعْمَلَ فَرَاغَهُ وَصِحَّتَهُ فِيْ طَاعَةِ اللهِ فَهُوَ الْمَغْبُوْطُ وَمَنِ اسْتَعْمَلَهُمَا فِيْ مَعْصِيَةِ اللهِ فَهُوَ الْمَغْبُوْنُ.
“যে ব্যক্তি তার সচ্ছলতা ও সুস্বাস্থ্যকে আল্লাহর আনুগত্যের কাজে লাগায়, সে ব্যক্তি হল ঈর্ষণীয়। আর যে ব্যক্তি ঐ দু’টি বস্তুকে আল্লাহর অবাধ্যতায় কাজে লাগায়, সে ব্যক্তি হল ধোঁকায় পতিত”।(ইবনু হাজার ফাৎহুল বারী শারহু সহীহিল বুখারী (বৈরূত: দারুল মা‘আরিফ, ১৩৭৯ হি.), পৃষ্ঠা: ২৩০)
27: ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেন,
الجوارح السبعة وهى العين، والأذن، والفم، واللسان والفرج، واليد، والرجل: هى مراكب العطب والنجاة،…فحفظها أساس كل خير، وإهمالها أساس كل شر،
“সাতটি অঙ্গ মুক্তি ও ধ্বংসের মূল বাহন। সেগুলো হ’ল- চোখ, কান, মুখ, জিহবা, লজ্জাস্থান, হাত ও পা। এই অঙ্গগুলোর হেফাযত সকল কল্যাণের ভিত্তি। আর এগুলোর নিয়ন্ত্রণহীনতা সব অনিষ্টের মূল” (ইবনুল ক্বাইয়িম, ইগাছাতুল লাহফান: খন্ড: ১; পৃষ্ঠ: ৮০)
28: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
أصول الخطايا كُلّهَا ثلاثة الكبر وَهُوَ الَّذِي أصار إبلَيْس إلي ما أصاره والحرص وَهُوَ الَّذِي أخرج آدم من الجنة والحسد وَهُوَ الَّذِي جرأ أحد ابني آدم عَلَى أخيه فمن وقي شر هذه الثلاثة فقَدْ وقي الشر فالكفر من الكبر والمعاصي من الحرص والبغي والظلم من الحسد
‘সমস্ত পাপের উৎস হল তিনটি। (১) অহংকার, যা ইবলীসের পতন ঘটিয়েছিল। (২) লোভ, যা জান্নাত থেকে আদম (আলাইহিস সালাম)-কে বের করে দিয়েছিল। (৩) হিংসা, যা আদম (আলাইহিস সালাম)-এর এক সন্তানের বিরুদ্ধে অপর সন্তানকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তুলেছিল।
.
যে ব্যক্তি উক্ত তিনটি বস্তুর অনিষ্ট হতে বেঁচে থাকতে পারবে সে যাবতীয় অনিষ্ট হতে বাঁচতে পারবে। কেননা কুফরীর মূল উৎস হল অহংকার। পাপকর্মের উৎস হল লোভ। আর বিদ্রোহ ও সীমালংঘনের উৎস হল হিংসা’।(ইবনুল ক্বাইয়িম, আল-ফাওয়ায়েদ খন্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৫৮) (প্রকাশনী বৈরূত: দরুল কুতুবিল ‘ইলমিয়াহ, ২য় সংস্করণ, ১৯৭৩ খ্রি.)। আল্লাহই ভাল যানেন।
29: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
فَإِنَّ الْعَالَمَ إِذَا زَرَعَ عِلْمَهُ عِنْدَ غَيْرِهِ ثُمَّ مَاتَ؛ جَرَى عَلَيْهِ أَجْرُهُ وَبَقِيَ لَهُ ذِكْرُهُ، وَهُوَ عُمْرٌ ثَانٍ وَحَيَاةٌ أُخْرَى،
“আলেম যখন অন্যের মাঝে জ্ঞানের চাষাবাদ (বিতরণ) করে মারা যান, তখন তার জন্য এর নেকী চলমান থাকে এবং তার সুনাম-সুখ্যাতি অক্ষুণ্ণ থাকে। ফলে সেটা হয় তার জন্য দ্বিতীয় জীবন এবং আরেকটি হায়াত” (ইবনুল ক্বাইয়িম, মিফতাহু দারিস সা‘আদাত; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৪৬১)
30: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা, (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
الْجِهَاد نَوْعَيْنِ جِهَاد بِالْيَدِ والسنان وَهَذَا المشارك فِيهِ كثير وَالثَّانِي الْجِهَاد بِالْحجَّةِ وَالْبَيَان وَهَذَا جِهَاد الْخَاصَّة من اتِّبَاع الرُّسُل وَهُوَ جِهَاد الائمة وَهُوَ افضل الجهادين لعظم منفعَته وَشدَّة مُؤْنَته وَكَثْرَة اعدائه-
‘জি!হাদ দুই প্রকার। (১) হাত ও অ!স্ত্রের দ্বারা জি!হাদ, যেখানে বহু সাথী পাওয়া যায়। (২) দলীল ও বক্তব্যের মাধ্যমে জি!হাদ, এটা নবী-রাসূলদের অনুগামীদের জি!হাদ এবং প্রথমটি রাষ্ট্রনেতাদের জি!হাদ। উভয় প্রকার জিহা!দের মধ্যে দ্বিতীয়টিই অধিকতর উত্তম, এর উপকারিতার আধিক্য, দুর্লভতা এবং শত্রুর সংখ্যাধিক্যের কারণে। (ইবনুল কাইয়ুম মিফতাহু দারিস সা‘আদাহ খন্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৭০)
31: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
,فَإِنَّ الْعَالَمَ إِذَا زَرَعَ عِلْمَهُ عِنْدَ غَيْرِهِ ثُمَّ مَاتَ؛ جَرَى عَلَيْهِ أَجْرُهُ وَبَقِيَ لَهُ ذِكْرُهُ، وَهُوَ عُمْرٌ ثَانٍ وَحَيَاةٌ أُخْرَى،
“আলেম যখন অন্যের মাঝে জ্ঞানের চাষাবাদ (বিতরণ) করে মারা যান, তখন তার জন্য এর (ইলম বিতরণের) নেকী চলমান থাকে এবং তার সুনাম-সুখ্যাতি অক্ষুণ্ণ থাকে। ফলে সেটা হয় তার জন্য দ্বিতীয় জীবন এবং আরেকটি হায়াত”। (ইবনুল ক্বাইয়িম, মিফতাহু দারিস সা‘আদাত খন্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৪৬১)
32: ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা, (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
” الإيمان نصفان : نصف شكر ونصف صبر ”
“ঈমানের দুটি অংশ: অর্ধেক হল কৃতজ্ঞতা এবং অর্ধেক হল ধৈর্য।” (ইবনুল ক্বাইয়িম, মাদারিজুস সালেকীন, খন্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৪২)
33: সালাফি/আহালুল হাদীসদের বিরোধিতা কারীদের সম্পর্কে আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] তার ‘ক্বাসীদা নুনিয়া’তে লিখেছেন,
يا مبغضا أهل الحديث وشاتما + أبشر بعقد ولاية الشيطان-
“হে আহলে হাদীসদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ও গালি প্রদানকারী! তুমি শয়তানের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপনের সু-সংবাদ গ্রহণ কর”।
(আল-কাফিয়াতুশ শাফিয়াহ ফিল ইনতিসার লিল ফিরক্বাতিন নাজিয়াহ, পৃষ্ঠা:১৯৯)
34: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেন,
الْقَنَاعَةُ تُثْمِرُ الرِّضَاءَ،
“অল্পে তুষ্টির মাধ্যমে রেযামন্দি হাছিল হয়”।অর্থাৎ অল্পে তুষ্ট থাকার উপহার হল আল্লাহ সন্তুষ্টি লাভ।(ইবনুল ক্বাইয়্যিম; মাদারিজুস সালেকীন, খন্ড: ২; পৃষ্ঠা; ২৯)
.
একবার ইয়াহইয়া বিন মু‘আয (রাহিমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করা হল বান্দা কখন রেযামন্দি বা আল্লাহর সন্তুষ্ট লাভের পর্যায়ে পৌঁছে?
তখন তিনি বললেন,
إِذَا أَقَامَ نَفْسَهُ عَلَى أَرْبَعَةِ أُصُولٍ فِيمَا يُعَامِلُ بِهِ رَبَّهُ، فَيَقُولُ: إِنْ أَعْطَيْتَنِي قَبِلْتُ. وَإِنْ مَنَعْتَنِي رَضِيتُ. وَإِنْ تَرَكْتَنِي عَبَدْتُ. وَإِنْ دَعَوْتَنِي أَجَبْتُ،
“যখন সে আল্লাহর সাথে চারটি নীতির ওপর অটল থেকে বলবে, (হে আল্লাহ!) যদি আপনি আমাকে দেন, আমি গ্রহণ করব; যদি দেওয়া থেকে বিরত থাকেন, সন্তুষ্ট থাকব; যদি আমাকে ত্যাগ করেন, তবুও আপনার ইবাদত করব; যদি আমাকে ডাকেন, (আপনার ডাকে) সাড়া দেব”।(ইবনুল কাইয়ুম, মাদারিজুস সালেকীন, খন্ড: ২; পৃষ্ঠা: ১৭২) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
35: লাভজনক ব্যবসায় লেগে থাকুন।
__________________________________
.
ইমাম ইবনুল জাওযী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
من احب الا يَنْقَطِع عمله بعد مَوته فلينشر الْعلم بالتدوين والتعليم،
“যে ব্যক্তি কামনা করে যে, মৃত্যুর পরেও তার আমলের ধারা অব্যাহত থাকুক, সে যেন লেখালেখি এবং দরস-তাদরীসের মাধ্যমে ইলমের প্রচার-প্রসার ঘটায়। (ইবনুল জাওযী,আত-তাযকিরাহ ফিল ওয়ায, পৃষ্ঠা: ৫৫)
36: প্রখ্যাত সাহাবী আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) [মৃত: ৪০ হি.] বলেন,
العلمُ خيرٌ مِن المالِ، العلمُ يحرُسُكَ، وأنتَ تحرُسُ المال، المالُ يُنقِصُه النفقةُ، والعلمُ يزكو على الإنفاقِ،
.
অর্থ-সম্পদের চেয়ে জ্ঞান উত্তম। জ্ঞান আপনাকে রক্ষা করে, আর আপনি সম্পদকে রক্ষা করেন। অর্থ ব্যয় করলে কমে যায় আর জ্ঞান ব্যয় করলে বৃদ্ধি পায়”।(ফাযলুল ইলম ওয়াল ওলামা, পৃষ্ঠা: ১৫৬; ইবনে আসাকির,তারিখ দিমাশক, খন্ড: ৫০; পৃষ্ঠা: ৫৭১; গাযালী, ইহইয়া উলূমুদ্দীন; খন্ড: ১; পৃষ্ঠা: ১৭-১৮)
.
আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা,(রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেন,অনেক দিক থেকে সম্পদের চেয়ে ইলমের মর্যাদা বেশী। যেমন-
.
(১). ইলম হল নবীগণের মীরাস, আর সম্পদ হল ধনীদের মীরাস।
.
(২).নিশ্চয়ই ইলম তার মালিককে পাহারা দেয়, কিন্তু সম্পদ মালিককে পাহারা দেয় না, বরং মালিককে তার সম্পদ পাহারা দিতে হয়।
.
(৩).সম্পদ খরচ করলে কমে যায়, আর ইলম খরচ করলে বৃদ্ধি পায়।
.
(৪).নিশ্চয়ই মালের মালিক মারা গেলে তার থেকে মাল পৃথক হয়, আর ইলম তার মালিকের সাথে কবরে প্রবেশ করবে।
.
(৫).সম্পদের উপর ইলমের হুকুম প্রযোজ্য হয় কিন্তু ইলমের উপর সম্পদের হুকুম প্রযোজ্য হয় না।
.
(৬).সম্পদ মুমিন-কাফের ও ভালো-মন্দ সকলে অর্জন করতে পারে। কিন্তু উপকারী ইলম মুমিন ছাড়া কেউ অর্জন করতে পারে না।
.
(৭).সম্পদ মানুষকে অবাধ্যতা, অহংকার ও হিংসার দিকে নিয়ে যায় আর ইলম মানুষকে বিনয় ও আল্লাহর ইবাদতের দিকে নিয়ে যায়।
.
(৮). সম্পদের মালিকের দরিদ্র হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিন্তু ইলমের মালিকের দরিদ্র হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
.
(৯). নিশ্চয় ইলম মানুষকে আল্লাহর দিকে ধাবিত করে আর সম্পদ মানুষকে দুনিয়ার দিকে ধাবিত করে।
.
(১০).সম্পদশালী মৃত্যুকে অপসন্দ করে আর আলেম আল্লাহর সাক্ষাতের আশা করে।(ইবনুল কাইয়ুম, ফাযলুল ইলম ওয়াল ওলামা, পৃষ্ঠা: ৯-২২৪। তিনি প্রায় চল্লিশটি দিক উল্লেখ করেছেন।(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
37: ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
.
مَنْ أَسَاءَ إِلَيْكَ. ثُمَّ جَاءَ يَعْتَذِرُ مِنْ إِسَاءَتِهِ، فَإِنَّ التَّوَاضُعَ يُوجِبُ عَلَيْكَ قَبُولَ مَعْذِرَتِهِ، حَقًّا كَانَتْ أَوْ بَاطِلًا. وَتَكِلُ سَرِيرَتُهُ إِلَى اللهِ تَعَالَى
“কেউ যদি আপনার সাথে মন্দ/খারাপ আচরণ করে, তারপর তার অপরাধের জন্য ক্ষমা চাইতে আসে; তাহলে বিনয়ের দাবী হল তার ওযর গ্রহণ করা। (এবার) তার ওযর সত্য হৌক কিংবা মিথ্যা। আর তার অন্তরের বিষয়টা আল্লাহ তা‘আলার দিকে ন্যস্ত করা”।(ইবনুল ক্বাইয়্যিম,মাদারিজুস সালেকীন, খন্ড :২; পৃষ্ঠা: ৩২১)
38: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
.
الْحَقُّ مَنْصُوْرٌ ومُمْتَحَنٌ فَلاََ تَعْجَب فَهَذِي سُنَّةُ الرَّحْمَنِ
.
“হক সবসময় বিজয়ী এবং পরীক্ষিত। সুতরাং আল্লাহর এই দু’টি চিরন্তন রীতির ব্যাপারে বিস্মিত হওয়ার কিছুই নেই”।(ইবনুল ক্বাইয়িম, মাতনুল ক্বাসীদাহ নূনীয়াহ খন্ড: ২; পৃষ্ঠা: ১৭)।
.
39: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
من رَفَقَ بعبادِ الله رَفَقَ الله به
অর্থ :”যে ব্যক্তি আল্লাহর বান্দাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করে, আল্লাহও তার প্রতি কোমল হন।
.
ومن رحمَهمْ رحمَه
যে তাদের প্রতি দয়া করে, আল্লাহও তার প্রতি দয়া করেন।
.
ومن أحسن إليهم أحسن إليه
যে তাদের প্রতি অনুগ্রহ করে, তিনিও তার উপর অনুগ্রহ করেন।
.
ومن جاد عليهم جاد الله عليه,
যে তাদেরকে দান করে, তিনিও তাকে দান করেন।
.
ومن نفعهم نفعه,
যে তাদেরকে উপকার করে, তিনিও তাকে উপকৃত করেন।
.
ومن سترهم ستره,
যে তাদের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখে, তিনিও তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখেন।
.
ومن منعهم خيره منعه خيره,
যে তাদেরকে কল্যাণে পথে বাধা দান করে, তিনিও তাকে কল্যাণের পথে বাধাপ্রাপ্ত করেন।
.
ومن عامل خلقه بصفةٍ عامله الله بتلك الصِّفة بعينها في الدنيا والآخرة،
আর কোন ব্যক্তি আল্লাহর সৃষ্টিকূলের সাথে যেমন আচরণ করে, দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহও তার সাথে সেইরূপ আচরণ করেন।
.
فالله تعالى لعبده حسب ما يكون العبد لخلقه।
সুতরাং সৃষ্টিকূলের সাথে বান্দার ব্যবহারের মাত্রা অনুযায়ী তার প্রতি আল্লাহর ব্যবহারের ধরণ নির্ণিত হয়।
.
(ইবনুল ক্বাইয়িম,আল-ওয়াবিলুস সাইয়িব,পৃষ্ঠা: ৩৫)
.
40: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেন,
أركان الكفر أربعةٌ: الكبرُ، والحسد، والغضب، والشهوة؛ فالكبر يمنعه الانقيادَ، والحسد يمنعه قبولَ النصيحة وبذلها، والغضبُ يمنعه العدلَ، والشهوة تمنعه التفرُّغَ للعبادة،
“কুফরির ভিত্তি চারটি”:
(১).অহংকার,
(২).হিংসা-বিদ্বেষ,
(৩).রাগ এবং
(৪).প্রবৃত্তি পরায়ণতা।
.
▪️অহংকার বান্দাকে আল্লাহর অনুগত হতে বাধা দেয়।
.
▪️হিংসা তাকে নসীহত গ্রহণ ও প্রদান করা থেকে বিরত রাখে।
.
▪️রাগ তাকে ন্যায়বিচার করতে বাধা দেয়।
.
▪️আর প্রবৃত্তিপরায়ণতা তাকে ইবাদতের জন্য অবসর হ’তে বাধা দেয়।
.
(ইবনুল ক্বাইয়িম, আল-ফাওয়ায়েদ,খন্ড:১ পৃষ্ঠা: ২৩১)
41: প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আবশ্যক হলো:আল্লাহর প্রকৃত পরিচয় জানা।
.
আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা, (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
وليست حاجةُ الأرواح قطُّ إلى شيء أعظمَ منها إلى معرفة بارئها وفاطرها، ومحبته، وذكره، والابتهاج به، وطلب الوسيلة إليه، والزلْفى عنده. ولا سبيل إلى هذا إلّا بمعرفة أوصافه وأسمائه، فكلّما كان العبد بها أعلَم كان بالله أعرَف، وله أطلَب، وإليه أقرَب. وكلّما كان لها أنكَر كان بالله أجهَل، وإليه أكرَه، ومنه أبعَد
“স্রষ্টার পরিচয় জানা, তাঁকে ভালবাসা, তাকে স্মরণ করা, তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকা, তার কাছে অসীলা ও নৈকট্য কামনা করার চেয়ে রূহের জন্য অতীব প্রয়োজনীয় কোন বস্তু নেই। আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর পরিচয় জানা ছাড়া এগুলো অর্জনের কোন উপায় নেই। বান্দা যত বেশী আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর পরিচয় জানবে, সে তত বেশী আল্লাহকে চিনতে পারবে, তার প্রিয় বান্দা হতে পারবে এবং তার নৈকট্য হাছিল করতে পারবে। আর আল্লাহর নাম ও গুণাবলী সম্পর্কে যত কম জানবে, সে আল্লাহ সম্পর্কে তত বেশী অজ্ঞতার মধ্যে ডুবে থাকবে, তার অপ্রিয় বান্দায় পরিণত হবে এবং তার থেকে দূরে সরে যাবে”।(ইবনু ক্বাইয়িম,নূনিয়াতু ইবনু ক্বাইয়িম আল-কাফিয়াহ আশ-শাফিয়াহ (রিয়াদ: দারু আত্বা‘আতিল ইলম, ৪র্থ সংস্করণ, ১৪৪০ হি./২০১৯ খৃ.), পৃষ্ঠা: ৯)
42: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ,আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওজিয়্যা, (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
قَالَ أَحْمَدُ بْنُ عَاصِمٍ: مَنْ كَانَ بِاللَّهِ أَعْرَفَ كَانَ لَهُ أَخْوَفَ، وَيَدُلُّ عَلَى هَذَا قَوْلُهُ تَعَالَى: {إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ} [فاطر: 28]
“আহমাদ ইবনু আসেম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহকে বেশি চেনে,“সে-ই তাঁর প্রতি অধিক ভীত হয়,একথার প্রমাণ হলো আল্লাহ তাআলার এই বাণী— “আল্লাহকে তাঁর বান্দাদের মধ্যে কেবল আলেমগণই (সত্যিকারভাবে) ভয় করে”।(সূরা ফাতির; ৩৫/২৮; ইবনু কাইয়ুম; মাদারিজুস সালিকীন: খণ্ড: ৩; পৃষ্ঠা: ৩৭৬)
43: “জাল জয়ীফ হাদিস প্রচারে সাবধান”
হাদীসের নামে জাল বানোয়াট বর্ননা চেনার সূত্র সম্পর্কে আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
.
والأحاديث الموضوعة عليها ظلمة وركاكة ومجازفات باردة تنادي على وضعها واختلاقها على رسول الله صلى الله عليه وسلم ”
.
“মাওজু বা জাল হাদিসগুলোর মধ্যে রয়েছে অন্ধকারাচ্ছন্নতা, ভাষাগত দুর্বলতা ও শীতল অতিরঞ্জন; যে কারণগুলো উক্ত বাণীগুলোকে বানোয়াট ঘোষণা করে।(ইবনুল ক্বাইয়্যিম, আল-মানার আল-মুনিফ’ পৃষ্ঠা: ৫০)
.
44: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
.
الْحَقُّ مَنْصُوْرٌ ومُمْتَحَنٌ فَلاََ تَعْجَب فَهَذِي سُنَّةُ الرَّحْمَنِ
.
“হক সবসময় বিজয়ী এবং পরীক্ষিত। সুতরাং আল্লাহর এই দু’টি চিরন্তন রীতির ব্যাপারে বিস্মিত হওয়ার কিছুই নেই”।(ইবনুল ক্বাইয়িম, মাতনুল ক্বাসীদাহ নূনীয়াহ খন্ড: ২ পৃষ্ঠা: ১৭)।
.
45: আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
من رَفَقَ بعبادِ الله رَفَقَ الله به
অর্থ :”যে ব্যক্তি আল্লাহর বান্দাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করে, আল্লাহও তার প্রতি কোমল হন।
.
ومن رحمَهمْ رحمَه
যে তাদের প্রতি দয়া করে, আল্লাহও তার প্রতি দয়া করেন।
.
ومن أحسن إليهم أحسن إليه
যে তাদের প্রতি অনুগ্রহ করে, তিনিও তার উপর অনুগ্রহ করেন।
.
ومن جاد عليهم جاد الله عليه,
যে তাদেরকে দান করে, তিনিও তাকে দান করেন।
.
ومن نفعهم نفعه,
যে তাদেরকে উপকার করে, তিনিও তাকে উপকৃত করেন।
.
ومن سترهم ستره,
যে তাদের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখে, তিনিও তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখেন।
.
ومن منعهم خيره منعه خيره,
যে তাদেরকে কল্যাণে পথে বাধা দান করে, তিনিও তাকে কল্যাণের পথে বাধাপ্রাপ্ত করেন।
.
ومن عامل خلقه بصفةٍ عامله الله بتلك الصِّفة بعينها في الدنيا والآخرة،
আর কোন ব্যক্তি আল্লাহর সৃষ্টিকূলের সাথে যেমন আচরণ করে, দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহও তার সাথে সেইরূপ আচরণ করেন।
.
فالله تعالى لعبده حسب ما يكون العبد لخلقه।
সুতরাং সৃষ্টিকূলের সাথে বান্দার ব্যবহারের মাত্রা অনুযায়ী তার প্রতি আল্লাহর ব্যবহারের ধরণ নির্ণিত হয়।
.
(ইবনুল ক্বাইয়িম,আল-ওয়াবিলুস সাইয়িব,পৃষ্ঠা: ৩৫)
(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
46: প্রখ্যাত সাহাবী ‘আব্দুল্লাহ বিন মাস‘ঊদ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) [মৃত: ৩২ হি.] বলেছেন:
, اَلْغِنَاءُ يُنْبِتُ النِّفَاقَ فِي الْقَلْبِ
“গান অন্তরে মুনাফিকী উৎপন্ন করে”।(শু‘আবুল ঈমান ১০/২২৩)
.
আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-মুহাদ্দিস, আল-মুফাসসির, আল-ফাক্বীহ, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭৫১ হি.] বলেছেন,
.
তার কারণ, মুনাফিকীর মূল কথাঃ মানুষের বাইরের দিক হবে ভেতর দিক থেকে আলাদা আর গায়ক দু’টি হুকুমের মাঝে অবস্থানকারী। হয় সে গান গাওয়ায় নির্লজ্জ হবে, সে ক্ষেত্রে সে হবে ফাসিক বা পাপাচারী; নয় সে গানের মাধ্যমে ইবাদত-বন্দেগী যাহির করবে, সে ক্ষেত্রে সে হবে মুনাফিক। কারণ গানের মধ্যে সে উপর উপর আল্লাহর প্রতি ভালবাসা ও আখিরাতের প্রতি টান ফুটিয়ে তুললেও তার মনটা কামনার আগুনে টগবগ করে ফোটে; যে গানের কথা ও সুর এবং বাদ্য-বাজনা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট অপ্রিয়, তাই তার নিকট প্রিয় লাগে এবং গানের বিষয়বস্ত্তর প্রতি সে ঝুঁকে পড়ে। তার অন্তর এগুলোতে ভরপুর হয়ে যায়; তাতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর প্রিয় জিনিসগুলোর প্রতি ভালবাসা এবং অপ্রিয় জিনিসগুলোর প্রতি ঘৃণার জন্য একটু জায়গাও খালি থাকে না। আর এটাই তো নিরেট মুনাফিকী। মুনাফিকীর অন্যান্য চিহ্নের মধ্যে রয়েছে আল্লাহর যিকির বা স্মরণ কম করা, ছালাতের প্রতি আলসেমি এবং দায়সারা গোছের ছালাত আদায় করা। ব্যতিক্রম ছাড়া অধিকাংশ গানে আসক্ত ব্যক্তিকে আপনি দেখবেন এসব রোগে আক্রান্ত। তাছাড়াও মুনাফিকী মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত। আর গান চূড়ান্ত মিথ্যা কথা। কেননা গান খারাপ ও কদর্য জিনিসকে সুন্দর ও সুশোভিত করে দেখায় এবং তা করতে আদেশ দেয়। অন্যদিকে সুন্দরকে কুৎসিত আকারে তুলে ধরে এবং তা থেকে বিরত থাকতে বলে। এটাও সরাসরি মুনাফিকী। তাছাড়াও মুনাফিকী হ’ল ধোঁকাবাজি, চক্রান্ত ও প্রতারণার নাম। আর গানের ভিত্তিও এগুলো।(ইবনুল কাইয়ুম ইগাছাতুল লাহফান; খন্ড: ১; পৃষ্ঠা: ২৫০)। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
No comments:
Post a Comment