1: বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ গুলা কি কি?
.
বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায আন-নাজদী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল:আপনার দৃষ্টিতে বিবাহ পরবর্তী তালাক সংঘটিত হওয়ার কারণগুলো কী কী?
উত্তরে শাইখ বলেন:
الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله، وبعد:للطلاق أسباب كثيرة منها : عدم الوئام بين الزوجين بألا تحصل محبة من أحدهما للآخر ، أو من كل منهما ، ومنها سوء خلق المرأة ، أو عدم السمع والطاعة لزوجها في المعروف ومنها سوء خلق الزوج وظلمه للمرأة وعدم إنصافه لها ، ومنها عجزه عن القيام بحقوقها أو عجزها عن القيام بحقوقها ، ومنها وقوع المعاصي من أحدهما أو من كل واحد منهما ، فتسوء الحال بينهما بسبب ذلك ، حتى تكون النتيجة الطلاق ، ومن ذلك تعاطي الزوج المسكرات أو التدخين ، أو تعاطي المرأة ذلك ، ومنه سوء الحال بين المرأة ووالدي الزوج أو أحدهما ، وعدم استعمال السياسة الحكيمة في معاملتهما أو أحدهما ، ومنها عدم عناية المرأة بالنظافة والتصنع للزوج باللباس الحسن والرائحة الطيبة والكلام الطيب والبشاشة الحسنة عند اللقاء والاجتماع .
“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য,দুরূদ ও সালাম প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি। এরপর তালাকের অনেকগুলো কারণ রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ নিম্নরূপ:
(১).স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিল-মহব্বতের অভাব,যেমন এক পক্ষের পক্ষ থেকে অপর পক্ষের প্রতি ভালোবাসা না থাকা, কিংবা উভয়ের পক্ষ থেকেই না থাকা।
(২).স্ত্রীর চরিত্রগত সমস্যা যেমন—স্বামীর প্রতি আনুগত্যে অবহেলা করা বা স্বামীর বৈধ (শরিয়তসম্মত) নির্দেশ মান্য না করা।
(৩).স্বামীর দুর্ব্যবহার বা মন্দ চরিত্র—যার মধ্যে স্ত্রীর প্রতি জুলুম করা এবং তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা।”
.
(৪).স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীর হক আদায়ে অক্ষমতা বা স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর হক আদায়ে ব্যর্থতা।
(৫).স্বামী বা স্ত্রী, অথবা উভয়ের পক্ষ থেকেই গুনাহের কাজ করা—যার ফলে সম্পর্কের মাঝে ফাটল ধরে এবং তা ক্রমেই তালাক পর্যন্ত গড়ায়।
(৬).স্বামীর পক্ষ থেকে নেশা করা, মাদক গ্রহণ বা ধূমপান করা, অথবা স্ত্রীর পক্ষ থেকেও এ ধরনের গর্হিত কাজে জড়িয়ে পড়া।
(৭).স্বামী বা স্ত্রীর বাবা-মায়ের সঙ্গে অথবা তাদের একজনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন।”
(৮).স্ত্রীর নিজের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বামীর জন্য নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলার ক্ষেত্রে অবহেলা করা—যেমন:স্বামীর জন্য সুন্দর পোশাক পরা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, কোমল ভাষায় কথা বলা, এবং সাক্ষাতের সময় হাস্যোজ্জ্বল থাকা ইত্যাদি অবহেলা করা।”(আল ফাতাওয়া আল্জামি‘আহ লিল মারআতিল মুসলিমাহ (মুসলিম নারীর জীবন ঘনিষ্ট ফতোয়াসমগ্র); খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৬৬৬; ইসলাম সাওয়াল জবাব ফাতওয়া নং: ১৩২৪৩) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
__________________________
2: রমজানকে স্বাগত জানানোর জন্য মুসলিমদের জন্য কোনো নির্দিষ্ট আমল নির্ধারিত আছে কি?
▬▬▬▬▬▬▬▬✿▬▬▬▬▬▬▬▬
.
বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায আন-নাজদী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: রমজানকে স্বাগত জানানোর জন্য মুসলিমদের জন্য কোনো নির্দিষ্ট আমল নির্ধারিত আছে কি?
.
জবাবে আমাদের ইমাম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:
شهر رمضان هو أفضل شهور العام؛ لأن الله سبحانه وتعالى اختصه بأن جعل صيامه فريضة وركنًا رابعًا من أركان الإسلام، وشرع للمسلمين قيام ليله كما قال النبي ﷺ: بني الإسلام على خمس: شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدًا رسول الله، وإقام الصلاة، وإيتاء الزكاة، وصوم رمضان، وحج البيت[1] متفق عليه.وقال عليه الصلاة والسلام: من قام رمضان إيمانًا واحتسابًا غفر له ما تقدم من ذنبه متفق عليه[2].
ولا أعلم شيئًا معينًا لاستقبال رمضان سوى أن يستقبله المسلم بالفرح والسرور والاغتباط وشكر الله أن بلغه رمضان، ووفقه فجعله من الأحياء الذين يتنافسون في صالح العمل، فإن بلوغ رمضان نعمة عظيمة من الله، ولهذا كان النبي ﷺ يبشر أصحابه بقدوم رمضان مبينًا فضائله وما أعد الله فيه للصائمين والقائمين من الثواب العظيم، ويشرع للمسلم استقبال هذا الشهر الكريم بالتوبة النصوح، والاستعداد لصيامه وقيامه بنية صالحة وعزيمة صادقة[3].
“মাহে রমযান বছরের সবচেয়ে উত্তম মাস। কেননা আল্লাহ্ তাআলা এ মাসে সিয়ামকে ফরয করে, ইসলামের চতুর্থ রুকন বানিয়ে এ মাসকে বিশেষত্ব দিয়েছেন। এ মাসের রাতে কিয়াম পালন করার বিধান জারী করেছেন। যেমনটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর নির্মিত: এই সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহ্র রাসূল (বার্তাবাহক), নামায প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা, রমযানের রোযা রাখা এবং বায়তুল্লাহ্র হজ্জ আদায় করা।”[সহিহ বুখারী হা/৮ও সহিহ মুসলিম] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন: “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবপ্রাপ্তির আশায় রমযান মাসে কিয়াম পালন করবে তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।”[সহিহ বুখারী হা/২০১৪ ও সহিহ মুসলিম]
রমযান মাসকে স্বাগত জানানোর জন্য বিশেষ কিছু আছে মর্মে আমি জানি না। তবে একজন মুসলিম রমযানকে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সাথে, আগ্রহ-উদ্দীপনার সাথে এবং আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সাথে গ্রহণ করবে; যেহেতু তিনি তাকে রমযান পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন, তাওফিকপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং জীবিতদের মধ্যে রেখেছেন যারা নেক আমলের ক্ষেত্রে পরস্পর প্রতিযোগিতা করে। যেহেতু রমযানে উপনীত হতে পারা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একটি মহান নেয়ামত। এ কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে রমযান আগমনের সুসংবাদ দিতেন রমযানের মর্যাদা তুলে ধরার মাধ্যমে এবং আল্লাহ্ তাআলা রোযাদার ও নামাযগুজারদের জন্য যে মহান সওয়াব প্রস্তুত রেখেছেন তা বর্ণনা করার মাধ্যমে। শরিয়ত একজন মুসলিমের জন্য অনুমোদন করে যে, তিনি এই মহান মাসটিকে স্বাগত জানাবেন খালিস তাওবার মাধ্যমে, সিয়াম ও কিয়ামের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করার মাধ্যমে, নেক নিয়ত ও দৃঢ় সংকল্পের সাথে।(মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতুম মুতানাওয়্যা‘আহ, খণ্ড: ৫; পৃষ্ঠা: ১৫) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
3: বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হিজরী./১৯৯৯ খ্রি.], -কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: একদল মুসলমান খ্রিস্টানদের সাথে তাদের (ধর্মীয়) উৎসবগুলোতে অংশগ্রহণ করে; এ ব্যাপারে আপনার দিক-নির্দেশনা কি?
জবাবে তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:
لا يجوز للمسلم ولا المسلمة مشاركة النصارى أو اليهود أو غيرهم من الكفرة في أعيادهم ، بل يجب ترك ذلك ؛ لأن ” مَن تشبَّه بقوم فهو منهم ” ، والرسول عليه الصلاة والسلام حذرنا من مشابهتهم والتخلق بأخلاقهم ، فعلى المؤمن وعلى المؤمنة الحذر من ذلك ، ولا تجوز لهما المساعدة في ذلك بأي شيء لأنها أعياد مخالفة للشرع ، فلا يجوز الاشتراك فيها ، ولا التعاون مع أهلها ، ولا مساعدتهم بأي شيء لا بالشاي ولا بالقهوة ولا بغير ذلك كالأواني وغيرها ؛ ولأن الله سبحانه يقول : ( وتعاونوا على البر والتقوى ولا تعاونوا على الإثم والعدوان واتقوا الله إن الله شديد العقاب ) فالمشاركة مع الكفرة في أعيادهم نوع من التعاون على الإثم والعدوان .
“কোন মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য ইহুদি-খ্রিস্টান কিংবা অন্য কোন বিধর্মীদের (কাফেরদের) উৎসবে যোগদান করা জায়েয নয়। বরং এগুলো বর্জন করা ফরয। কেননা “যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদেরই দলভুক্ত”।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে তাদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করা কিংবা তাদের বেশ ধরা থেকে সাবধান করেছেন। তাই প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর কর্তব্য হচ্ছে- এ ব্যাপারে সাবধান থাকা। এবং মুসলিম নর-নারীর জন্য এসব কাজে বিধর্মীদেরকে কোন ধরণের সহযোগিতা করা নাজায়েয। কেননা এসব উৎসব ইসলামী শরিয়ত বিরোধী। তাই এগুলোতে অংশগ্রহণ করা কিংবা তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া নাজায়েয। এমনকি চা, কপি, কিংবা অন্য কিছু যেমন- পাত্র ইত্যাদি দিয়ে তাদেরকে সহযোগিতা করা নাজায়েয। কেননা আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “তোমরা নেকী ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করা; পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কেউ কাউকে সহযোগিতা করবে না। আল্লাহ্কে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ্ কঠিন শাস্তিদাতা”।[সূরা মায়িদা, আয়াত:২] বিধর্মীদের সাথে তাদের উৎসবে যোগ দেয়া পাপ ও সীমালঙ্ঘনের কাজে তাদেরকে সহযোগিতা করারই নামান্তর”।(ইমাম বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতুম মুতানাওয়্যা‘আহ, খণ্ড: ৬; পৃষ্ঠা: ৪০৬)
.
4: ফি-লি-স্তিনি মু-জা-হি-দ-দেরকে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানিয়ে,বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.]- বলেন:
.
সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্য। দরুদ ও শান্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি বর্ষিত হোক।হে সকল স্তরের মুসলিম ভাইয়েরা ! আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। মহান আল্লাহ্ সূরা সফ-এর ১০-১৩ নং আয়াতে বলেছেন: “হে ঈমানদারগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন ব্যবসা সম্পর্কে অবহিত করবো, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দিবে (১০) তোমরা আল্লাহ্ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে এবং তোমাদের জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জি-হা-দ করবে, এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর যদি তোমরা বুঝো। (১১) আল্লাহ্ তোমাদের গুনাহগুলো মাফ করে দিবেন এবং তোমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার তলদেশ দিয়ে নহর প্রবাহিত হবে, আদন নামক জান্নাতে সুখকর বাসস্থানে প্রবেশ করাবেন, এটাই মহান সফলতা। (১২)তোমরা অন্য কিছু পছন্দ করো, আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয় সন্নিকটে, (হে নবী!) আপনি মুমিনদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দেন। (১৩) মহান আল্লাহ আরো বলেছেন:অভিযানে বের হয়ে পড়, হালকা অবস্থায় হোক বা ভারি অবস্থায় এবং জি-হা-দ কর আল্লাহ্র পথে তোমাদের সম্পদ ও জীবন দ্বারা। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।(সূরা তওবা:৯/৪১) অপর আয়াতে বলেন,নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য আছে জান্নাত। তারা আল্লাহ্র পথে যু-দ্ধ করে, অতঃপর তারা মারে ও মরে তাওরাত, ইঞ্জীল ও কুরআনে এ সম্পর্কে তাদের হক ওয়াদা রয়েছে। আর নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহর চেয়ে শ্রেষ্ঠতর কে আছে? সুতরাং তোমরা যে সওদা করেছ সে সওদার জন্য আনন্দিত হও। আর সেটাই তো মহাসাফল্য।(সুরা তওবা ১১১) নু‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পারস্পরিক দয়া, ভালবাসা ও সহানুভূতি প্রদর্শনে তুমি মু’মিনদের একটি দেহের মত দেখবে। যখন শরীরের একটি অঙ্গ রোগে আক্রান্ত হয়, তখন শরীরের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রাত জাগে এবং জ্বরে অংশ নেয়।(সহীহ বুখারী হা/৬০১১ মুসলিম ৪৫/১৭, হাঃ ২৫৮৬ মুসনাদে আহমাদ ১৮৪০১) অপর হাদীসে আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক মু’মিন আর এক মু’মিনের জন্য ইমারত তুল্য, যার এক অংশ আর এক অংশকে সুদৃঢ় করে। আর তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর এক হাতের আঙ্গুল আর এক হাতের আঙ্গুলে প্রবেশ করিয়ে দেখালেন।(
বুখারী ২৪৪৬, মসলিম ২৫৮৫)আনাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে নিজেদের সম্পদ, জীবন ও কথার দ্বারা জিহাদ করো(আবু দাউদ: ২৫০৪)
.
জি-হা-দের ফজিলত,এতে (জি-হা-দে) ব্যয় করা এবং জিহাদের জন্য উৎসাহিত করা সম্পর্কে অনেক আয়াত ও হাদিস রয়েছে । জান মাল দ্বারা আল্লাহ্র পথে মু-জা-হি-দীনদের সাহায্য করা সর্বশ্রেষ্ঠ সৎ কাজের একটি এবং তারা যাকাত ও অন্যান্য জিনিস ব্যতীত অন্যান্য সাহায্যের সবচেয়ে বেশি যোগ্য। ইসলামে যাকাত এবং দানের একটি হিকমত হল যে একজন মুসলমানের এমন একটি বন্ধন অনুভব করা উচিত যা তাকে তার ভাইয়ের প্রতি আকৃষ্ট করে অর্থাৎ নিজের ভাইয়ের মতো আচরণ করা। কারণ তাকে যা দেওয়া হয় সে কিন্তু কষ্ট অনুভব করে । সে বুঝতে পারে তার বিপদের কথা। কিন্তু তাকে এমন ভাবে দিতে হবে যাতে করে সে মনে করে যে তার নিজের ভাই তাকে এ সমস্ত জিনিস দিচ্ছে। যাতে করে তার ঈমানের মন মানসিকতা প্রফুল্ল থাকে আর আল্লাহর নিয়ামতের প্রতি সে যেন সন্তুষ্ট থাকে।ফি-লি-স্তি-নের অভ্যন্তরে মু-জা-হি-দীনরা (আল্লাহ তাঁদের সকলকে সফলতা দান করুন) ইসলামের শ-ত্রু-দের বিরুদ্ধে তাদের জি-হা-দে অনেক সমস্যায় পড়েছেন এবং তারা তাদের সাথে ধৈর্য্য ধারণ করেছেন, যদিও তাদের শত্রু এবং ইসলাম ধর্মের শত্রুদের সাথে তারা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তারা আল্লাহর পতাকাকে সমুন্নত করার লক্ষ্যে ধৈর্য ধারণ সহকারে জি-হা-দ চালিয়ে যাচ্ছেন। যেমন তাঁদের সম্পর্কে খবরে বা সংবাদপত্রে প্রচার করা হচ্ছে এবং যারা তাদের সাথে জি-হা-দে অংশগ্রহণ করেছিল তারা বলেছে যে,তারা দুর্বল হয়নি। তবে তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ইসলাম এবং মুসলিমদের শ-ত্রু-দের বিরুদ্ধে জান মাল দ্বারা তাদের মুসলিম ভাইদের সমর্থন করা, এবং কা-ফে-র-দের হাত থেকে তাদের দেশ অর্থাৎ ফি-লি-স্তি-নকে পবিত্র করা। এগুলো মু-জা-হিদ ভাইদের জন্য খুব বেশি প্রয়োজন। জি-হা-দ চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আল্লাহ তাআলা তাদের সকলকে একত্রিত হওয়ার তৌফিক দান করেছেন। আমাদের জন্য আবশ্যক হলো মুসলিম ভাইদের প্রতি দোয়া করা, তাদেরকে সহযোগিতা করা , সাহায্য করা যতদিন পর্যন্ত জি-হা-দ শেষ না হবে। আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করা যে তাদেরকে যেন ইসলামের শ-ত্রু-দের উপরে বিজয় দান করেন। আমি আমার সকল মুসলিম ভাইদের প্রতি আহ্বান জানাই; ইসলামী সরকার প্রধানগন এবং অন্যান্য ধনী ব্যক্তিদেরা যেন ফি-লি-স্তি-নের মু-জা-হিদ ভাইদের দিকে এগিয়ে আসে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে যা অনুগ্রহ করেছেন তার মাধ্যমে। যাকাতের মাল আট শ্রেণীর ব্যক্তি পাবে তন্মধ্যে এক শ্রেণীর ব্যক্তি হলো মু-জা-হিদ। ফি-লি-স্তিনি মু-জা-হিদদের প্রতি এই অংশটি দেওয়ার জন্য আমি বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।আল্লাহ তাবারাক ওয়া তায়ালা ধনীদের মালে মুসলিম ভাইদের জন্য কুরআনুল কারীমের অনেক আয়াতে নির্দিষ্ট অংশ ফরজ করেছেন। যেমন আল্লাহ বলেন,আর যাদের সম্পদে নির্ধারিত হক রয়েছে, ভিক্ষুক ও বঞ্চিতের।(সূরা মারিজ ২৪-২৫) তিনি আরো বলেছেন, তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন এবং আল্লাহ তোমাদেরকে যা কিছুর উত্তরাধিকারী করেছেন তা হতে ব্যয় কর। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও ব্যয় করে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।,(সূরা হাদিদ;৭) আরো বলেছেন, যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে তাদের উপমা একটি বীজের মত, যা সাতটি শীষ উৎপাদন করে, প্রত্যেক শীষে একশ শস্যদানা। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছে বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেন। আর আল্লাহ সর্বব্যাপী প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।(বাকারা ২৬১ ও ১৯৫) আরো বিস্তারিত সুরা মুযযাম্মিল: ২০, সুরা সাবা: ৩৯, মুসলিম: ২৫৮৮, তিরমিযী: ৬১৪, বুখারী: ১৪১৭, মুসলিম: ১০১৬)
.
হে মুসলমানগণ! তোমাদের মুজাহিদ ভাইয়েরা ক্ষুধা, ক্ষত বিক্ষত, হত্যা ও কঠিন শাস্তিতে ভুগছে, তাদের বস্ত্র ও খাদ্যের এবং ওষুধের ভীষণ প্রয়োজন, ঠিক যেমনভাবে তাদের ভীষণ প্রয়োজন অস্ত্রের যা দ্বারা আল্লাহর শ-ত্রু এবং তাঁদের শ-ত্রু-দের সাথে লড়াই করবে। অতএব হে মুসলমানগণ, আল্লাহ তোমাকে যা দিয়েছেন তা থেকে তাঁদের প্রতি উদার হও এবং তাঁদের প্রতি সদয় হও। আল্লাহ তোমাদের বরকত দান করুন, উত্তম পুরস্কৃত করুন এবং পুরষ্কার দ্বিগুণ করুন।যেমনভাবে সহিহ হাদিসের মধ্যে আবূ আমর জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমরা দিনের প্রথম ভাগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ছিলাম। অতঃপর তাঁর নিকট কিছু লোক এল, যাদের দেহ বিবস্ত্র ছিল, পশমের ডোরা কাটা চাদর (মাথা প্রবেশের মত জায়গা মাঝে কেটে) পরে ছিল অথবা ’আবা’ (আংরাখা) পরে ছিল, তরবারি তারা নিজেদের গর্দানে ঝুলিয়ে রেখেছিল। তাদের অধিকাংশ মুযার গোত্রের (লোক) ছিল; বরং তারা সকলেই মুযার গোত্রের ছিল। তাদের দরিদ্রতা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেল। সুতরাং তিনি (বাড়ির ভিতর) প্রবেশ করলেন এবং পুনরায় বের হলেন। তারপর তিনি বেলালকে (আযান দেওয়ার) আদেশ করলেন। ফলে তিনি আযান দিলেন এবং ইকামত দিলেন।অতঃপর তিনি নামায পড়ে লোকদেরকে (সম্বোধন ক’রে) ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন, ’’হে মানব সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন ও তা হতে তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যিনি তাদের দু’জন থেকে বহু নরনারী (পৃথিবীতে) বিস্তার করেছেন। সেই আল্লাহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট চাওয়া এবং জ্ঞাতি-বন্ধন ছিন্ন করাকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর তীক্ষণ দৃষ্টি রাখেন।’’ (সূরা নিসা ১) অতঃপর দ্বিতীয় আয়াত যেটি সূরা হাশরের শেষে আছে সেটি পাঠ করলেন, ’’হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আর প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক যে, আগামীকালের (কিয়ামতের) জন্য সে অগ্রিম কী পাঠিয়েছে। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত।’’ (সূরা হাশর ১৮)’’সুতরাং প্রত্যেক ব্যক্তি যেন নিজ দীনার (স্বর্ণমুদ্রা), দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা), কাপড়, এক সা’ গম ও এক সা’ খেজুর থেকে সাদকাহ করে।’’ এমনকি তিনি বললেন, ’’খেজুরের আধা টুকরা হলেও (তা যেন দান করে)।’’ সুতরাং আনসারদের একটি লোক (চাঁদির) একটি থলে নিয়ে এল, লোকটির করতল যেন তা ধারণ করতে পারছিল না; বরং তা ধারণ করতে অক্ষমই ছিল। অতঃপর (তা দেখে) লোকেরা পরস্পর দান আনতে আরম্ভ করল। এমনকি খাদ্য সামগ্রী ও কাপড়ের দু’টি স্তূপ দেখলাম। পরিশেষে আমি দেখলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা যেন সোনার মত ঝলমল করছে।অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’যে ব্যক্তি ইসলামে ভাল রীতি চালু করবে, সে তার নিজের এবং ঐ সমস্ত লোকের সওয়াব পাবে, যারা তার (মৃত্যুর) পর তার উপর আমল করবে। তাদের সওয়াবের কিছু পরিমাণও কম করা হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামে কোন মন্দ রীতির প্রচলন করবে, তার উপর তার নিজের এবং ঐ লোকদের গোনাহ বর্তাবে, যারা তার (মৃত্যুর) পর তার উপর আমল করবে। তাদের গোনাহর কিছু পরিমাণও কম করা হবে না।’’ (সহীহ মুসলিম ২৩৯৮, নাসাঈ ২৫৫৪, ত্বাবারানী ২২৬২, ইবনে মাজাহ ২০৩, তিরমিযী ২৬৭৫) অপর বর্ননায় আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহান আল্লাহ বলেন, তুমি ব্যয় কর, হে আদম সন্তান! আমিও তোমার প্রতি ব্যয় করব।(সহীহ বুখারী হা/৫৩৫২) আমরা আল্লাহর কাছে দু’আ করছি আল্লাহ তাদেরকে সাহায্য করুন,শান্তি দান করুন, যারা তার ভাইদের মুজাহিদিনদের সাহায্য করার জন্য অবদান রেখেছেন তাদের পুরস্কার দ্বিগুণ করুন।(কিছুটা পরিমার্জিত দেখুন বিন বায মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতুম মুতানাওয়্যা‘আহ, খণ্ড/১৮; পৃষ্ঠা: ৪০৮) (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
.
5: বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল প্রশ্ন: বর্তমান ফি-লি-স্তিনের জি-হা-দের ব্যাপারে ইসলামী শরীয়াহ কি বলে? এটা কি আল্লাহর রাস্তায় জি-হা-দ? নাকি কোনো ভূখণ্ডের বা স্বাধিকার সংগ্রাম? কোনো ভূখণ্ড দখলদার থেকে মুক্তকরন এটা কি আল্লাহর রাস্তায় জি-হা-দ?
.
উত্তরে শাইখ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:
: لقد ثبت لدينا بشهادة العدول الثقات أن الانتفاضة الفلسطينية والقائمين بها من خواص المسلمين هناك، وأن جهادهم إسلامي؛ لأنهم مظلومون من اليهود، ولأن الواجب عليهم الدفاع عن دينهم وأنفسهم وأهليهم وأولادهم، وإخراج عدوهم من أرضهم بكل ما استطاعوا من قوة.
وقد أخبرنا الثقات الذين خالطوهم في جهادهم وشاركوهم في ذلك عن حماسهم الإسلامي، وحرصهم على تطبيق الشريعة الإسلامية فيما بينهم، فالواجب على الدول الإسلامية وعلى بقية المسلمين تأييدهم ودعمهم ليتخلصوا من عدوهم وليرجعوا إلى بلادهم، عملا بقول الله عز وجل: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قَاتِلُوا الَّذِينَ يَلُونَكُمْ مِنَ الْكُفَّارِ وَلْيَجِدُوا فِيكُمْ غِلْظَةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ [التوبة:123] وقوله سبحانه: انْفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْْ تَعْلَمُونَ الآيات [التوبة:41] وقوله عز وجل: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَى تِجَارَةٍ تُنْجِيكُمْ مِنْْ عَذَابٍ أَلِيمٍ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْْ تَعْلَمُونَ يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ وَأُخْرَى تُحِبُّونَهَا نَصْرٌ مِنَ اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ [الصف:10-13] والآيات في هذا المعنى كثيرة.
وصح عن رسول الله ﷺ أنه قال: جاهدوا المشركين بأموالكم وأنفسكم وألسنتكم ولأنهم مظلومون، فالواجب على إخوانهم المسلمين نصرهم على من ظلمهم؛ لقول النبي ﷺ: المسلم أخوو المسلم لا يظلمه ولا يسلمه متفق على صحته، وقوله ﷺ: انصر أخاك ظالما أو مظلوما قالوا: يا رسول الله، نصرته مظلوما، فكيف أنصره ظالما؟ قال: تحجزه عن الظلم، فذلك نصرك إياه والأحاديث في وجوب الجهاد في سبيل الله ونصر المظلوم وردع الظالم كثيرة جدا.
فنسأل الله أن ينصر إخواننا المجاهدين في سبيل الله في فلسطين وفي غيرها على عدوهم، وأن يجمع كلمتهم على الحق، وأن يوفق المسلمين جميعا لمساعدتهم والوقوف في صفهم ضد عدوهم، وأن يخذل أعداء الإسلام أينما كانوا وينزل بهم بأسه الذي لا يرد عن القوم المجرمين إنه سميع قريب
অর্থাৎ বিশ্বস্ত সূত্রে এটা প্রমাণিত যে ফি-লি-স্তিন এলাকায় বসবাসকারীরা অধিকাংশই মুসলমান। তাদের জি-হা-দ ইসলামী জি-হা-দ। কেননা তারা ই-হু-দি জাতির দ্বারা নির্যাতিত। তাদের কর্তব্য হলো তাদের ধর্মকে, নিজেকে, পরিবারকে ও সন্তানাদিকে রক্ষা করা।তাদের ভূখণ্ড থেকে দখলদার শ-ত্রু-দেরকে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে বহিষ্কার করা।
.
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় যে ইসলামী সংগঠন হা-মাস ফি-লি-স্তিন জিহাদে সশস্ত্র অংশগ্রহণ করছে। ফি-লি-স্তিনের মানুষকে একটি স্বতন্ত্র ইসলামী শরীয়াহ ব্যবস্থা প্রদানে হা-মাস ভীষণ আগ্রহী। ইসলামী রাষ্ট্রসমূহের ও প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য হলো,ফি-লি-স্তি-নের মুসলমানদেরকে সহযোগিতা করা,সমর্থন দেওয়া যাতে তারা শত্রু থেকে মুক্ত হয়ে নিজের দেশে ফিরে আসতে পারে। আল্লাহর আদেশ পালনার্থে-তিনি বলেন:”হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের বাবা ও ভাইকে অভিভাবক বানাইয়োনা যদি তারা ঈমানের উপর কুফুরকে প্রাধান্য দেয়, তোমাদের যারাই তাঁদেরকে অভিভাবক বানাবে তারাই জালেম।(সূরা তওবাহ:৯/২) আল্লাহ্ আরো বলেছেন: “তোমরা ছোট দলে ও বড় দলে যু-দ্ধে-র জন্য বের হও, তোমাদের জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জি-হা-দ করো,এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর যদি তোমরা বুঝো।”(সূরা তওবাহ: ৪১)
.
মহান আল্লাহ্ সূরা সফ-এর ১০-১৪ নং আয়াতে বলেছেন: “হে ঈমানদারগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন ব্যবসা সম্পর্কে অবহিত করবো, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দিবে (১০) তোমরা আল্লাহ্ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে এবং তোমাদের জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জি-হা-দ করবে, এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর যদি তোমরা বুঝো। (১১) আল্লাহ্ তোমাদের গুনাহগুলো মাফ করে দিবেন এবং তোমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার তলদেশ দিয়ে নহর প্রবাহিত হবে, আদন নামক জান্নাতে সুখকর বাসস্থানে প্রবেশ করাবেন, এটাই মহান সফলতা। (১২)তোমরা অন্য কিছু পছন্দ করো, আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয় সন্নিকটে, (হে নবী!) আপনি মুমিনদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দেন। (১৩) হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও, যেমন ঈসা ইবনে মারয়াম আলাইহিস সালাম তার হাওয়ারীদেরকে বলেছিলেন,কে আমার সহযোগী হবে আল্লাহর রাস্তায়? হাওয়ারীরা বলেছিল, আমরা আল্লাহর সহযোগী, তখন বনী ইসরাঈলের এক দল ঈমান এনেছে আরেকদল কু-ফু-রি করেছে। আমি ঈমানদারদেরকে তাদের শ-ত্রু-দের বিরুদ্ধে শক্তিশালী করেছি ফলে তারা বিজয়ী হয়েছে।”(১৪) সূরা সফ:৬১/আয়াত:১০-১৪) এছাড়াও জি-হা-দ বিষয়ে অসংখ্য আয়াত রয়েছে।
.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ হাদিস বর্ণিত যে, তিনি বলেন: “তোমরা মু-শ-রি-কদের বিরুদ্ধে জান,মাল ও জবান দিয়ে জি-হা-দ করো, (আবূ দাঊদ ২৫০৪, নাসায়ী ৩০৯৬, মুসনাদ আহমাদ ১২২৪৬,সহীহ আল জামি‘ ৩০৯০) কেননা তোমরা মাজলুম।”তাই মুসলমান ভাইদের কর্তব্য হলো মাজলুমদের সহযোগিতা করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “মুসলিম মুসলিমের ভাই, কেউ কাউকে জু-লুম করবে না। অত্যাচার করবে না।”(সহীহ বুখারী হা/২৪৪২) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন:”তুমি তোমার ভাইকে জা-লেম ও মাজলুম উভয় অবস্থায় সাহায্য করো। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন,হে আল্লাহর রাসূল! তাকে আমি মাজলুম অবস্থায় সাহায্য করবো। কিন্তু কিভাবে জা-লে-ম অবস্থায় সাহায্য করবো? রাসূল (ﷺ) বললেন: তাকে জু-লুম থেকে বাধা দিবে। এটাই তাকে তোমার সাহায্য করা।”(সহীহ বুখারী হা/২২৮১) আল্লাহর রাস্তায় জি-হা-দ আবশ্যক হওয়া,মাজলুমকে সাহায্য করা ও জা-লে-মকে প্রতিহত করার ব্যাপারে অসংখ্য হাদিস রয়েছে।
.
অবশেষে,আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের মুজাহিদ ভাইদেরকে ফি-লি-স্তি-নে আল্লাহর রাস্তায় জি-হা-দে এবং পৃথিবীর সর্বত্রই শ-ত্রু-দের বিরুদ্ধে সাহায্য করেন।সত্যেরে উপর তাদেরকে এক করে দেন। সকল মুসলমানকে তাদের সহযোগিতা করার এবং শত্রুর বিরুদ্ধে তাদের কাতারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাওফীক দিয়ে দেন। ইসলামের শ-ত্রু-দেরকে সর্বত্র লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেন। তাদের উপর এমন শাস্তি পাঠান যা তিনি কখনো অপরাধী সম্প্রদায় থেকে ফিরিয়ে নেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা এবং সবথেকে নিকটে।
.
উক্ত ফাতওয়াটি * ৯/৮/১৪০৯ হিজরি তারিখের আদ দাওয়াতুস সাদিকা পত্রিকায় প্রকাশিত। শাইখ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ)-এর ফাতওয়া ও মাকালার সারাংশ: ৪র্থ খন্ড,২৯৫ পৃষ্ঠা) আরো দেখুন শাইখের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ফাতওয়া নং-১১৪৪৩৫)(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
6: বিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, সৌদি ফাতাওয়া বোর্ডের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতী, শাইখুল ইসলাম, ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন,‘
আল্লাহর দিকে আহবানকারী ও উপদেশ দানকারী ব্যক্তি হলো ডাক্তারের মতো; সে উপযুক্ত সময়, উপযুক্ত পরিমাণ ও উপযুক্ত পদ্ধতিতে প্রচেষ্টা চালাবে।’(বিন বায, মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতুম মুতানাওয়্যা‘আহ খন্ড: ৬; পৃষ্ঠা: ৩৫০)
.
7: বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন,
.
দাড়ি ক্লিন সেভ করা বা ছোট করা কোনটাই জায়েয নয়। আলহামদুলিল্লাহ সঊদী সরকার সৈনিকদের বা অন্য কাউকেই দাড়ি কাটার নির্দেশ দেয় না। কিন্তু কিছু দেশের সরকার তাদের সেনাবাহিনীদের দাড়ি কাটতে আদেশ করে। সেক্ষেত্রে তাদের এই শরী‘আত বিরোধী আদেশ মানা যাবে না এবং উত্তম পন্থায় তাদের বিরোধিতা করতে হবে।(মাজমূঊ ফাতাওয়া, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩৬৮; এবং ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩৭৪)।
8: বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন,
وأنا الحمد لله لست بمتعصب ولكني احكم الكتاب والسنة وابني فتاواي علي ما قاله الله ورسوله، لا علي تقليد الحنابلة ولا غيرهم.
‘আল-হামদুলিল্লাহ আমি গোঁড়া নই। কিন্তু আমি কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী ফায়ছালা দেই। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এর কথার উপর আমার ফাতওয়া সমূহের ভিত্তি নির্মাণ করি। হাম্বলী বা অন্যদের তাক্বলীদের উপরে নয়’।(আল-ইক্বনা‘, পৃষ্ঠা: ৯২)
9: বিগত শতাব্দীর সৌদি আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন,
وأنا الحمد لله لست بمتعصب ولكني احكم الكتاب والسنة وابني فتاواي علي ما قاله الله ورسوله، لا علي تقليد الحنابلة ولا غيرهم.
‘আল-হামদুলিল্লাহ আমি গোঁড়া নই। কিন্তু আমি কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী ফায়ছালা দেই। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এর কথার উপর আমার ফাতওয়া সমূহের ভিত্তি নির্মাণ করি। হাম্বলী বা অন্যদের তাক্বলীদের উপরে নয়’।(আল-ইক্বনা‘, পৃষ্ঠা: ৯২)
No comments:
Post a Comment