ইসলামের দৃষ্টিতে অশ্লীলতা, গান, বাদ্যযন্ত্র বা মিউজিকের ব্যবহার সম্পূর্ণ হারাম এবং আল্লাহর আজাবের কারণ। কুরআন হাদিসে এ ব্যাপারে পর্যাপ্ত সতর্ক বাণী উচ্চারিত হয়েছে।
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সতর্ক করে দিয়েছেন যে, কিয়ামতের পূর্বে এমন একটি সময় আসবে যখন মানুষ গান-বাজনাকে হালাল মনে করবে। তিনি বলেন,
لَيَكُوْنَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّوْنَ الْحِرَ وَالْحَرِيْرَ وَالْخَمْرَ وَالْمَعَازِفَ
“আমার উম্মতের মধ্য থেকে এমন কিছু লোক আসবে যারা জিনা-ব্যভিচার, রেশমি কাপড়, মদ এবং বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে।” [বুখারি, হা/৫৫৯০-আবু মালেক আল আশআরী রা. হতে বর্ণিত]
তিনি আরও বলেন,
فِي هَذِهِ الْأُمَّةِ خَسْفٌ وَمَسْخٌ وَقَذْفٌ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَتَى ذَاكَ قَالَ إِذَا ظَهَرَتِ الْقَيْنَاتُ وَالْمَعَازِفُ وَشُرِبَتِ الْخُمُورُ
لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ جَسَدٌ غُذِّيَ بِالْحَرَامِ
“হারাম দ্বারা পরিপুষ্ট শরীর জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” [বায়হাক্বী, মিশকাত/২৭৮৭; সিলসিলা সহীহাহ হা/২৬০৯।]
◈ এ সকল লোক নিজেরা যেমন পাপ দ্বারা তাদের জীবনকে কুলষিত করে তেমনি সমাজকেও তারা কুলষিত করে। চতুর্দিকে পাপাচার ছড়িয়ে দেয়। এরা সকলেই যুবক-যুবতীদের চরিত্র ধ্বংস এবং অশ্লীলতা ছড়ানোর জন্য দায়ী।
এ সমস্ত লোকের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَن تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ
“যারা পছন্দ করে যে, ইমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতা প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহা ও পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” [সূরা নূর: ১৯]
যারা কেবল অশ্লীলতার প্রসার লাভ করাকে পছন্দ করে তাদের জন্য যদি এই শাস্তির হুমকি হয় তাহলে যারা এগুলো উৎপাদন ও প্রচার-প্রসার করে তাদের কী পরিণতি হবে তা সহজেই অনুমেয়। আল্লাহ তুমি ক্ষমা করো। আমীন।
◈ আরও আতঙ্কজনক বিষয় হল, বর্তমান ইউটিউব আর ফেসবুকের যুগে এ সকল গান-বাজনা ও নাটক-সিনেমা থেকে যত মানুষ গুনাহ কামাবে, যুগযুগান্তরে যতদিন এগুলো টিভিতে প্রদর্শিত হবে, সোশ্যাল মিডিয়া ও নেট জগতে শেয়ার, আপলোড-ডাউনলোড ইত্যাদি হতে থাকবে, মোবাইল ম্যামরি থেকে ম্যামরিতে কপি-পেস্ট হতে থাকবে ততদিন এর সংশ্লিষ্ট সকলের আমলনামায় অবিরত ধারায় গুনাহ জমা হতেই থাকবে। এমনকি এরা মারা যাওয়ার পরও এ গুনাহের ধারা অব্যাহত থাকবে। (আল্লাহ ক্ষমা করুন)
জারির রা. বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
مَنْ سَنَّ فِيْ الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً كَانَ عَلَيْهِ وِزْرُهَا وَ وِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يُّنْقَصَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئٌ
مَنْ سَنَّ سُنَّة سَيِّئَة فعَلَيْهِ مِثْل وِزْر كُلّ مَنْ عمل بِهَا إِلَى يَوْم الْقِيَامَة
”যে ব্যক্তি কোন খারাপ রীতি-নীতি চালু করলো কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ সে কাজ করবে তাদের সমপরিমাণ গুনাহ তার উপর পতিত হতে থাকবে।” [সহিহ মুসলিম: ১৬৯১]
No comments:
Post a Comment