দুশ্চিন্তা-মুসিবত ও পেরেশানী দূর করার উপায়
==================================================================
পার্থিব জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ও স্বাভাবিক ব্যাপার হচ্ছে দুঃখ, দুঃশ্চিন্তা ও পেরেশানী। কারণ, দুনিয়া কষ্ট, মুসিবত ও সঙ্কটপূর্ণ স্থান। দুনিয়া এবং জান্নাতের মধ্যে পার্থক্য এখানেই। জান্নাতে নেই কোন দুঃখ, দুশ্চিন্তা ও বিষণ্নতা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
لَا يَمَسُّهُمْ فِيهَا نَصَبٌ وَمَا هُمْ مِنْهَا بِمُخْرَجِينَ
‘সেখানে তাদেরকে ক্লান্তি স্পর্শ করবে না এবং তারা সেখান থেকে বহিষ্কৃতও হবে না।’ ( সূরা হিজর : ৪৮)
জান্নাতবাসীদের অন্তর কখনো কলুষিত হবে না এবং কষ্টদায়ক কোন শব্দ তাদের কানে পৌঁছবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন,
لَا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا تَأْثِيمًا ﴿25﴾ إِلَّا قِيلًا سَلَامًا سَلَامًا ﴿26﴾
‘তারা সেখানে শুনতে পাবে না কোন বেহুদা কথা, এবং না পাপের কথা; শুধু এই বাণী ছাড়া, ‘সালাম, সালাম।’ ( সূরা ওয়াকেয়া : ২৫-২৬)
পক্ষান্তরে দুনিয়াবী জীবনের প্রকৃতি হচ্ছে, দুর্ভোগ, যন্ত্রণা ও অসচ্ছলতা। কী গরীব, কী ধনী; কী মুসলিম, কী অমুসলিম; সবাই এর ভুক্তভোগী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন,
لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي كَبَدٍ
‘নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি কষ্ট-ক্লেশের মধ্যে।’ ( সূরা বালাদ : ৪)
• নিম্নে আমরা কুরআন-হাদীসের আলোকে চিন্তা ও পেরেশানী দূর করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে আলোচনা করছি :
‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব।’ (সূরা গাফের : ৬০)
২. তদ্রূপ আল্লাহর জিকির ও কুরআন তিলাওয়াত করা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
أَلا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ ” (الرعد: من الآية28)
‘জেনে রাখ, আল্লাহর স্মরণ দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়।’ ( সূরা রাদ : ২৮)
কুরআন মুমিনদের জন্য শিফা স্বরূপ। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَالذَّاكِرِينَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتِ أَعَدَّ اللَّهُ لَهُمْ مَغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا” الأحزاب: من الآية35
‘আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন।’ (সূরা আহযাব : ৩৫)
শয়তান চায় বান্দাদের আল্লাহর জিকির থেকে গাফেল রাখতে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلاةِ فَهَلْ أَنْتُمْ مُنْتَهُونَ” المائدة:91
‘শয়তান শুধু মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চার করতে চায়। আর (চায়) আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে তোমাদের বাধা দিতে। অতএব, তোমরা কি বিরত হবে না?’ ( সূরা মায়েদা : ৯১)
‘আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জন্য হবে নিশ্চিত এক সংকুচিত জীবন এবং আমি তাকে কেয়ামত দিবসে উঠাবো অন্ধ অবস্থায়।’ (সূরা তাহা : ১২৪)
কুরআন শোনার সঙ্গে সঙ্গে মুমিনের অবস্থা পরিবর্তন হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
‘মুমিন তো তারা, যাদের অন্তরসমূহ কেঁপে উঠে যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয়। আর যখন তাদের ওপর তার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারা তাদের রবের ওপরই ভরসা করে।’ (সূরা আনফাল : ২)
যাদের অন্তর আল্লাহর জিকির শূন্য তাদেরকে শাসিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন,
أَفَمَنْ شَرَحَ اللَّهُ صَدْرَهُ لِلْإِسْلامِ فَهُوَ عَلَى نُورٍ مِنْ رَبِّهِ فَوَيْلٌ لِلْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُمْ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ أُولَئِكَ فِي ضَلالٍ مُبِينٍ” الزمر:22
‘আল্লাহ ইসলামের জন্য যার বক্ষ খুলে দিয়েছেন ফলে সে তার রবের পক্ষ থেকে নূরের ওপর রয়েছে, (সে কি তার সমান, যে এরূপ নয়?) অতএব ধ্বংস সে লোকদের জন্য যাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গেছে আল্লাহর স্মরণ থেকে । তারা স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে নিপতিত।’ ( সূরা যুমার : ২২)
৩. দুশ্চিন্তা ও পেরেশানী মুক্ত হওয়ার জন্য সকাল-সন্ধ্যার জিকিরগুলো খুব যত্নের সঙ্গে পড়া। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নিরাপত্তা লাভ করা যায়।
৪. গুনা থেকে দূরে থাকা, কারণ গুনা অন্তরে অশান্তি ও পেরেশানীর সৃষ্টি করে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
“وَمَنْ يَعْشُ عَنْ ذِكْرِ الرَّحْمَنِ نُقَيِّضْ لَهُ شَيْطَانًا فَهُوَ لَهُ قَرِينٌ * وَإِنَّهُمْ لَيَصُدُّونَهُمْ عَنِ السَّبِيلِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ مُهْتَدُونَ * حَتَّى إِذَا جَاءَنَا قَالَ يَا لَيْتَ بَيْنِي وَبَيْنَكَ بُعْدَ الْمَشْرِقَيْنِ فَبئسَ الْقَرِينُ * وَلَنْ يَنْفَعَكُمُ الْيَوْمَ إِذْ ظَلَمْتُمْ أَنَّكُمْ فِي الْعَذَابِ مُشْتَرِكُونَ” (الزخرف: 36 -39
‘আর যে পরম করুণাময়ের জিকির থেকে বিমুখ থাকে আমি তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করি, ফলে সে হয়ে যায় তার সঙ্গী। আর নিশ্চয় তারাই (শয়তান) মানুষদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বাধা দেয়। অথচ মানুষ মনে করে তারা হিদায়েত প্রাপ্ত। আর আজ তা {তোমাদের এই অনুতাপ} তোমাদের কোন উপকারেই আসবে না। যেহেতু তোমরা জুলুম করেছিলে। নিশ্চয় তোমরা আজাবে পরস্পর অংশীদার হয়ে থাকবে। অবশেষে যখন সে আমার নিকট আসবে তখন সে {তার শয়তান সঙ্গীকে উদ্দেশ্য করে} বলবে, হায়, আমার ও তোমার মধ্যে যদি পূর্ব-পশ্চিমের ব্যবধান থাকত। সুতরাং কতইনা নিকৃষ্ট সে সঙ্গী!’ ( সূরা যুখরুফ : ৫৬-৩৯)
৫. উঁচু হিম্মত ও অন্তরে দুর্দান্ত সাহস রাখা। ছোট-খাট কোন বিষয় নিয়ে মাথা না ঘাবড়ানো। যেমন পারিবারিক বিষয় অথবা সামাজিক বিষয়। বরং সম্ভব হলে এগুলো সংশোধন করার চেষ্টা করা এবং স্বীয় কাজ ও দায়িত্বের স্তূপ না করা।
৬. ধৈর্যধারণ করা ও সালাতে মগ্ন হওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلاةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الْخَاشِعِينَ” البقرة:45 .
‘আর তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় তা বিনয়ী ছাড়া অন্যদের ওপর কঠিন।’ (সূরা বাকারা : ৪৫)
আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلاةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ” البقرة:153
‘হে মুমিনগণ, ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সূরা বাকারা : ১৫৩)
৭. একাকিত্ব ও নির্জনতা ত্যাগ করা। কারণ এ সময় শয়তান অধিক প্রবঞ্চনা দিয়ে থাকে।
৮. অবাস্তব জিনিস নিয়ে বেশি চিন্তা না করা। যেমন, কতক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে ভাবা, যা বাস্তবায়ন করা খুবই কষ্টকর বা দুঃসাধ্য। বিশেষ করে ঘুমের সময়। আর চোখে ঘুম না থাকলে বিছানায় না যাওয়া। কারণ, এ পরিস্থিতি চিন্তা ও অন্তর ভাবনা বাড়িয়ে দেয়, যার সূত্র ধরে চিন্তা ও পেরেশানীর জন্ম হয়।
৯. সৎ-সঙ্গ অন্বেষণ করা এবং আলেম ও বিজ্ঞজনদের মজলিসে অংশগ্রহণ করা।
১০. সত্যবাদী, বিশ্বস্ত, আমানতদার ও গোপনীয়তা রক্ষাকারী বন্ধু গ্রহণ করা, যে আপনাকে সাহায্য করবে, ভাল পথ দেখাবে এবং আপনার মুসিবত দূর করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।
১১. সম্ভাব্য ও সাধ্যের নিরিখে একটি বাস্তবধর্মী রুটিন তৈরি করা ও সে অনুসারে পরিচালিত হওয়া। এবং অবসর সময় কাটানোর জন্য পারিবারিক বা অন্য কোন আমল নির্দিষ্ট করে নেয়া।
১২. দুশ্চিন্তা ও পেরেশানী দূর করার কিছু দোয়া নিম্নে উল্লেখ করা হল :
(ক) বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম মুসিবতের সময় বলতেন :
لا إله إلا الله العظيم الحليم، لا إله إلا الله رب العرش العظيم، لا إله إلا الله رب السموات ورب الأرض رب العرش الكريم
(খ) তিরমিজিতে আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম আবু উমামাকে বলেন, আমি কি তোমাকে এমন একটি কালেমা শিক্ষা দেব, তুমি যখন তা বলবে, আল্লাহ তোমার দুশ্চিন্তা দূর করে দেবেন এবং তোমাকে ঋণ মুক্ত করে দেবেন। তুমি সকাল-সন্ধ্যায় বল :
اللهم إني أعوذ بك من الجُبن والبخل، وأعوذ بك من غلبة الدين وقهر الرجال
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের কথার ওপর আমল করেছি, আল্লাহ তাআলা আমার দুশ্চিন্তা দূর করে দিয়েছেন এবং আমাকে ঋণ মুক্ত করে দিয়েছেন।
(ঙ) ভবিষ্যতের ব্যাপারে উদ্বিগ্নতা দূর করার জন্য নিম্নের দোয়াটি খুব কার্যকর। আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম এর মাধ্যমে দোয়া করতেন :
اللَّهُمَّ أَصْلِحْ لِي دِينِي الَّذِي هُوَ عِصْمَةُ أَمْرِي وَأَصْلِحْ لِي دُنْيَايَ الَّتِي فِيهَا مَعَاشِي وَأَصْلِحْ لِي آخِرَتِي الَّتِي فِيهَا مَعَادِي وَاجْعَلِ الْحَيَاةَ زِيَادَةً لِي فِي كُلِّ خَيْرٍ وَاجْعَلِ الْمَوْتَ رَاحَةً لِي مِنْ كُلِّ شَرٍّ رواه مسلم رقم 2720.
আর যদি মুসিবত এসে যায় এবং ব্যক্তি তাতে আক্রান্ত হয়, তবে তো দোয়ার দরজা খোলা রয়েছেই। আল্লাহর দরবারে নক করা হলে ও তার নিকট প্রার্থনা করা হলে, তিনি ডাকে সারা দেবেন এবং প্রার্থনা কবুল করবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِي وَلْيُؤْمِنُوا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ
‘আর যখন আমার বান্দাগণ তোমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে, আমি তো নিশ্চয় নিকটবর্তী। আমি আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে। আশা করা যায় তারা সঠিক পথে চলবে।’ ( সূরা বাকারা : ১৮৬)
(চ) মুসনাদে আহমদ রয়েছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম কোন বিষয়ে দুশ্চিন্তায় পতিত হলে, সালাতের দিকে দৌড়ে ছুটতেন।
ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের সূত্রে বর্ণনা করা হয়,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম মুসিবতের সময় বলতেন,
لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَرَبُّ الأَرْضِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ رواه البخاري، الفتح رقم 6346
(জ) আসমা বিনতে উমাইস রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম আমাকে বলেন, ‘আমি তোমাকে এমন কিছু বাক্য শিখাবো, যা তুমি মুসিবতের সময় বলবে? অতঃপর তিনি বলেন, তুমি মুসিবতের সময় বলবে,
اللَّهُ اللَّهُ رَبِّي لا أُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا. رواه أبو داود كتاب الصلاة : باب في الاستغفار، وهو في صحيح الجامع 2620
اللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو فَلا تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ وَأَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ لا إِلَهَ إِلا أَنْتَ.. رواه أبوداود في كتاب الأدب رقم 5090.وحسنه في صحيح الجامع 3388 وفي صحيح سنن أبي داود رقم 4246.
১৩. বিশেষ প্রয়োজন হলে মনোবিজ্ঞানী ও মনোচিকিৎসকদের শরণাপন্ন হওয়া।
১৪. তিরমিজিতে রয়েছে, সাদ রাদিআল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের সূত্রে বর্ণনা করেন,
দোয়ায়ে ইউনুস পড়ে, যে কোন মুসলিম যে কোন দোয়া করবে, তার দোয়া কবুল করা হবে।
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম বলেন,
আমি এমন একটি বাক্য জানি, যে কোন মুসিবতগ্রস্ত ব্যক্তি তা পড়বে, আল্লাহ তার মুসিবত দূর করে দেবেন, আর তা হচ্ছে আমার ভাই ইউনুস আলাইহিস সালামের দোয়া।
فَنَادَى فِي الظُّلُمَاتِ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
‘তারপর সে অন্ধকার থেকে ডেকে বলেছিল, আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আপনি পবিত্র মহান। নিশ্চয় আমি ছিলাম জালিম।’ ( সূরা আম্বিয়া : ৮৭)
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“وَإِنَّ يُونُسَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ إِذْ أَبَقَ إِلَى الْفُلْكِ الْمَشْحُونِ فَسَاهَمَ فَكَانَ مِنْ الْمُدْحَضِينَ فَالْتَقَمَهُ الْحُوتُ وَهُوَ مُلِيمٌ فَلَوْلا أَنَّهُ كَانَ مِنْ الْمُسَبِّحِينَ لَلَبِثَ فِي بَطْنِهِ إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ «
‘আর নিশ্চয় ইউনুসও ছিল রাসূলদের একজন। যখন সে একটি বোঝাই নৌযানের দিকে পালিয়ে গিয়েছিল। অতঃপর সে লটারীতের অংশগ্রহণ করল এবং তাতে সে হেরে গেল। তারপর বড় মাছ তাকে গিলে ফেলল। আর সে {নিজেকে} ধিক্কার দিচ্ছিল। আর সে যদি (আল্লার) তাসবীহ পাঠকারীদের অন্তর্ভুক্ত না হত, তাহলে সে পুরুত্থান দিবস পর্যন্ত তার পেটেই থেকে যেত।’ ( সূরা সাফ্ফাত : ১৩৯-১৪৪)
‘আর স্মরণ কর জুননুন (ইউনূস) এর কথা, যখন সে রাগান্বিত অবস্থায় চলে গিয়েছিল এবং মনে করেছিল যে, আমি তার ওপর ক্ষমতা প্রয়োগ করব না। তারপর সে অন্ধকার থেকে ডেকে বলেছিল, আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আপনি পবিত্র মহান। নিশ্চয় আমি ছিলাম জালিম।’ (সূরা আম্বিয়া : ৮৭)
لّا إِلَهَ إِلاَّ أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
ইউনুস আলাইহিস সালামকে মাছের পেটের অন্ধকার, সমুদ্রের গভীরতার অন্ধকার ও রাতের অন্ধকার থেকে মুক্ত করেছিল।
আর এভাবেই আমি মুমিনদের নাজাত দিয়ে থাকি।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে চিন্তা ও পেরেশানী থেকে মুক্ত করুন।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment