প্রশ্ন: ঈদের রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি করার ব্যাপারে ইসলামে কী দিকনির্দেশনা রয়েছে বা এ রাতের ফজিলত কী?▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর: ঈদ মানেই প্রাণে প্রাণে আনন্দের হিল্লোল। ঈদ মানেই ঘরে ঘরে খুশির আমেজ। ঈদের আগমনে মুমিন হৃদয়গুলো আনন্দে উদ্বেলিত হয়। ঈমানদারগণ আল্লাহর প্রতি প্রফুল্ল চিত্তে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং তাকবির ধ্বনির মাধ্যমে তার শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্বের ঘোষণা দেয়। বিশেষ করে ঈদের রাত থেকেই শুরু হয় আগামীকাল একটি সুন্দর সকালে ঈদকে বরণ করার প্রস্তুতি। কিন্তু ঈদের রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি করার ব্যাপারে কোন হাদিস বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত নয়। বরং এই রাতে বিশেষভাবে কিয়ামুল লাইল করা সংক্রান্ত বর্ণিত হাদিসকে অনেক আলেম বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলেছেন। অনুরূপভাবে দুই ঈদের রাতে দুআ কবুল হওয়া প্রসঙ্গে বর্ণিত হাদিসটিও বানোয়াট।
তাই এ রাতে তাকবির পাঠ ছাড়া বিশেষ কোনও নামাজ, ইবাদত-বন্দেগি বা অন্য কোনও আমল নেই। তবে যারা নিয়মিত তাহাজ্জুদ সালাতে অভ্যস্ত তারা যথারীতি তা পড়তে পারে।
শাইখ উসাইমিন রহ. বলেন, “দু ঈদের রাত জেগে ইবাদত করার ফজিলতের হাদিসগুলো জঈফ (দুর্বল)। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো এ দু রাত জেগে ইবাদত করতেন না। তিনি সারা রাত জেগে ইবাদত করেছেন কেবল রমজানের শেষ দশকের রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর (শবে কদর) পাওয়ার আশায়। যখনই শেষ দশক শুরু হত, তিনি সবগুলো রাত জেগে ইবাদত করতেন।”
◍ ঈদের রাতের ফজিলতে বর্ণিত একটি প্রসিদ্ধ জাল/জঈফ বর্ণনা:
এ হাদিসটি সহিহ নয়।
● নওবী রহ. এ হাদিসটিকে মারফু ও মাওকুফ উভয় সূত্রে জইফ বলেছেন।
মোটকথা, দু ঈদে সারা রাত জেগে বিশেষ কোনও সালাত, জিকির-আজকার, মিলাদ, করব জিয়ারত ইত্যাদি করার ব্যাপার শরিয়তে বিশুদ্ধ সূত্রে কোনও নির্দেশনা আসে নি। তবে অন্যান্য সময় যেমন ইবাদত-বন্দেগি, দুআ-জিকির, কবর জিয়ারত, কুরআন তিলাওয়াত, তাহাজ্জুদ সালাত আদায় ইত্যাদি করা জায়েজ তেমনি এ দু রাতেও সেগুলো জায়েজ। কিন্তু তা এ রাতের বিশেষ ফজিলত মনে করে করা শরিয়ত সম্মত নয়। আল্লাহু আলাম।
No comments:
Post a Comment