আমাদের সমাজে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের আল্লাহর নাফরমানি ও হারাম কার্যক্রম সংঘটিত হয়। সেগুলোর মধ্যে কিছু প্রকাশ্য পাপাচার আর কিছু গোপনীয় পাপাচার। এইসব পাপাচার ঈদের পবিত্রতা এবং রুহানিয়াতকে ধ্বংস করে এবং আল্লাহর ক্রোধকে অবিসম্ভাবী করে তোলে। তাই আমাদের উচিত, আল্লাহকে ভয় করা এবং ঈদের পবিত্রতা রক্ষার স্বার্থে সব ধরনের আল্লাহর নাফরমানি মূলক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমিন।
🔸নিম্নে মানুষকে সচেতন ও সতর্ক করার উদ্দেশ্যে আমাদের সমাজে প্রচলিত পাপাচারের উল্লেখযোগ্য ২০টি নমুনা তুলে ধরা হলো:
১. ঈদের রাত ও তার পরের কয়েকদিন নানা পাপাচার ও হারাম কার্যক্রমের মাধ্যমে উদযাপন করা। যেমন: তথাকথিত বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড ডেটিং, ঘুরাঘুরি, ধূমপান, মদ পান, বিভিন্ন নাইট ক্লাব বা ড্যান্স বারে আড্ডাবাজি করা, বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে পর্যটনে গিয়ে নানা পাপকর্মে লিপ্ত হওয়া ইত্যাদি।
২. যু্বতী মেয়েদের আঁট-সাঁট ও পাতলা পোশাক পরিধান করা এবং বিভিন্ন রংবেরঙের পোশাক পরে পর্দাহীনভাবে যত্রতত্র সৌন্দর্য প্রদর্শনী করে বেড়ানো।
৩. ঈদ উৎসব এবং আনন্দ বিনোদন ও ঈদ মেলার নামে নানা ধরনের উশৃংখলতা, অশ্লীলতা ও নোংরামি মূলক কার্যক্রম করা এবং অপসংস্কৃতিতে গা ভাসিয়ে দেওয়া।
৪. ঈদ শপিং-এর নামে মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা ও বিনা প্রয়োজনে ঘুরাঘুরি করা।
৫. ঈদ উপলক্ষে দাড়িতে ডিজাইন ও ফ্যাশন করা, দাড়ি কাট-ছাঁট করা বা শেভ করা।
৬. পুরুষদের টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে এবং মহিলাদের টাখনুর উপরে উঠিয়ে জামা-কাপড় পরিধান করা।
৭. বিভিন্ন কা/ফে/র-ফাসেক নায়ক-নায়িকা, মডেল ইত্যাদির অনুকরণে চুল কাটা বা জামা-কাপড় পরিধান করা বা এসব ক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের ফ্যাশন অনুসরণ করা। (যেমন: ছেঁড়া প্যান্ট পরা, নাভির নিচে ঝুলিয়ে প্যান্ট পরা, মেয়েদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রকাশিত হয় এমন ভাবে পোশাক পরা ইত্যাদি)
৯. যুবক-যুবতীদের অবাধ মেলামেশা, হইহুল্লোড় ও আড্ডাবাজিতে মেতে ওঠা।
১০. ছেলেদের হাতে, পায়ে বা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে মেহেদি বা রং এবং মেয়েদের সুগন্ধি ব্যবহার করা। উল্লেখ্য যে, ছেলেদের চুল ও দাড়িতে মেহেদি ব্যবহার করায় এবং মেয়েদের স্বামী, নারী অঙ্গন ও মাহারম পুরুষদের কাছে থাকা অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহারে কোন দোষ নেই।
১১. সাজ-সজ্জার নামে শরীরে উল্কি বা ট্যাটু অংকন করা।
১২. মিউজিক ও গান-বাজনা নিয়ে মেতে ওঠা।
১৩. সিনেমা হলে বা টিভি চ্যানেল, ইউটিউব-ফেসবুক ইত্যাদিতে ঈদের বিশেষ নাটক-সিনেমা, মিউজিক ভিডিও ইত্যাদি দেখা।
১৪. অতিথি আপ্যায়ন বা বিভিন্ন পার্টিতে কিংবা হোটেল, রেস্তোরাঁ, রেস্ট হাউস ইত্যাদিতে খাদ্য-পানীয় অপচয় করা। অনুরূপভাবে ঘরবাড়ি , মার্কেট, শপিং মল ইত্যাদি সাজাতে মাত্রাতিরিক্ত লাইটিং ও ডেকোরেশন করা যা অপচয়ের অন্তর্ভুক্ত।
১৫. সমাজের গরিব-অসহায় ও দুস্থ মানুষদের খোঁজ-খবর না নেওয়া।
১৬. ঈদের নানা আয়োজনে ব্যস্ত থাকার কারণে অথবা বিনা কারণে জামায়াতে সালাত পরিত্যাগ করা বা সালাতের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করা।
১৬. বিশেষ করে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন নাটক-সিনেমা, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে ফজরের সালাত মিস করা।
১৭. আল্লাহর জিকির, কুরআন তিলাওয়াত, দুআ, তাসবিহ ও ইলম চর্চা থেকে অমনোযোগী থাকা।
১৮. রমজান শেষে ইবাদত-বন্দেগি বাদ দিয়ে দেওয়া বা তাতে অলসতা করা।
১৯. ঈদ উৎসবকে অন্যান্য ধর্ম ও সাংস্কৃতিক উৎসবের মতো নিছক বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান সর্বস্ব মনে করা। প্রকৃতপক্ষে ঈদ হলো, আল্লাহর বড়ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময়। তাই প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তির দিকটি খেয়াল রাখা আবশ্যক।
No comments:
Post a Comment