কাউকে খারাপ বা মন্দ নামে ডাকার বিধান কি?
এ কথা কি ঠিক যে, যার নাম “মুহাম্মদ” এবং মরিয়ম হবে সে জান্নাতী হবে এবং তাঁকে গালি দেওয়া ও প্রহার করা যাবে না?
কারোর নিজের জন্য রাজাধিরাজ বা শাহেনশাহ উপাধি ধারণ করা্র বিধান কি?
‘‘এমন ব্যক্তির উপর আল্লাহ্ তা‘আলা অনেক বেশি রাগান্বিত হবেন যে নিজকে রাজাধিরাজ মনে করে। অথচ সত্যিকার রাজা একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলাই’’। (আহমাদ ২/৪৯২; ’হা’কিম ৪/২৭৫; স’হীহুল্ জা’মি’ ৯৮৮)
কিয়ামতে প্রত্যেক সন্তানকে কি তাঁর মায়ের নাম জুড়ে ডাকা হবে নাকি পিতার নাম ধরে?
লেখক/সংকলকঃ আবদুল হামীদ ফাইযী
মুসলিম নেতারা কাউকে তার কাজের কারণে এরূপ পদবী দিলে তাতে কোন বাধা নেই। যেমন রাসূল (ছাঃ) আবুবকর (রাঃ)-কে ‘ছিদ্দীক’ ও ওমর (রাঃ)-কে ‘ফারূক’ উপাধি প্রদান করেছিলেন (হাকেম হা/৪৪০৭; ছহীহাহ হা/৩০৬; তাফসীরে কুরতুবী ৫/২৬৪)। অনুরূপভাবে রাসূল (ছাঃ) মুতার যুদ্ধবিজয়ী সেনাপতি খালেদকে দো‘আ করে অশ্রুসজল নেত্রে বলেছিলেন, এবারে ঝান্ডা হাতে নিয়েছে ‘আল্লাহর তরবারি সমূহের অন্যতম ‘তরবারী’ (বুখারী হা/৪২৬২)। অর্থাৎ খালেদ নিজে ‘সায়ফুল্লাহ’ নাম গ্রহণ করেননি, বরং রাসূল (ছাঃ) তাকে ঐ লকব দিয়েছিলেন। রাসূল (ছাঃ)-এর নিজের ছেলে আব্দুল্লাহর লকব ছিল ত্বাইয়িব ও ত্বাহির (পবিত্র)। অতএব পিতা-মাতা তার সন্তানের জন্য দো‘আ হিসাবে উক্ত গুণবাচক নাম সমূহ রাখতে পারেন। তবে তা যেন অহংকার প্রকাশক না হয়।
প্রশ্নঃ আকিকার হুকুম কি, কখন করতে হয়? আকিকার মাংস কে খেতে পারে? গরু দিয়ে আকিকা করা যাবে কি?কোরবানীর সাথে ভাগে আকীকা দেয়া যাবে কি?
প্রতিটি সন্তানই আকীকার বিনিময়ে আটক থাকে”। (আহমাদ, তিরমিজী ও অন্যান্য সুনান গ্রন্থ)
২-আকীকা করার সময়ঃ -আকীকার জন্য উত্তম সময় হলো সন্তান ভুমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিবস। সপ্তম দিনে আকীকা করার সাথে সাথে সন্তানের সুন্দর নাম রাখা, মাথার চুল কামানো এবং চুল এর সমপরিমাণ ওজনের রৌপ্য ছাদকাহ করাও মুস্তাহাব। (তিরমিজী)
বিনা কারণে আকীকা দেওয়াতে বিলম্ব করা সুন্নাতের বিরোধীতা করার অন্তর্ভুক্ত। দারিদ্র বা অন্য কোন কারণে যদি ৭ দিনে আকীকা করতে অক্ষম হয়, তবে যখনই অভাব দূর হবে, তখনই আকীকা করা জায়েজ আছে।
৩-কোন ধরণের পশু দিয়ে আকীকা করতে হবে? সংখ্যা কয়টি?
আকীকার ক্ষেত্রে সুন্নাত হলো, ছেলে সন্তান হলে দু‘টি দুম্বা বা ছাগল আর মেয়ে সন্তান হলে একটি দুম্বা বা ছাগল দিয়ে আকীকা করা। কেননা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ
“ছেলে সন্তানের পক্ষ থেকে দু‘টি সমবয়সের ছাগল এবং মেয়ে সন্তানের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দিয়ে আকীকা দিতে হবে। (আহমাদ ও তিরমিজী) আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে যদি ছেলে সন্তানের পক্ষ থেকে দু‘টি ছাগল দিয়ে আকীকা দিতে না পারে, তবে একটি দিয়ে আকীকা দিলেও চলবে।
৪-আকীকার গোশত কে খেতে পারে?
আকীকার গোশত কুরবানীর গোশতের মতই। তা নিজে খাবে, আত্মীয় স্বজনকে খাওয়াবে এবং গরীব-মিসকীনকে ছাদকা করবে। আকীকার গোশতও কুরবানির মত তিন ভাগ করা জরুরী নয়। আকীকার গোশত যদি সম্পূর্ণটাই রান্না করে এবং আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব এবং অন্যান্য মুসলমানদেরকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ায় তাতেও যথেষ্ট হবে।
৫-গরু দিয়ে আকীকা করাঃ
কোন হাদীসেই গরু দিয়ে আকীকা করার কথা উল্লেখ হয়নি। অথচ রাসূলুল্লাহ(সাঃ) এর যুগে সবধরণের পশুই বিদ্যমান ছিল। সুতরাং উত্তম হচ্ছে ছাগল বা দুম্বা দিয়েই আকীকা করা।
৬-কোরবানীর সাথে ভাগে আকীকা দেয়াঃ
আমাদের দেশে সাতভাগে গরু দিয়ে কুরবানী করার ক্ষেত্রে আকীকার অংশীদার হওয়ার নিয়ম ব্যপকভাবে প্রচলিত আছে। এটি হাদীছ সম্মত নয়। আকীকা যেহেতু একটি এবাদত, তাই হাদীছে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে সেভাবেই পালন করা উচিত।
-লেখক: আব্দুল্লাহ শাহেদ আল মাদানী[দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদী আরব।]
No comments:
Post a Comment