হাদিসে উল্লেখিত ‘নজদ’ এর অর্থ: সঠিক ব্যাখ্যা জানুন এবং বিভ্রান্তি থেকে বাঁচুন।
প্রশ্ন: হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, “ফিতনা নজদ থেকে বের হবে অথবা দজ্জাল নজদের ভূমি থেকে বের হবে।” ‘নজদ’ শব্দের অর্থ কী? এই হাদিসের উদ্দেশ্য কী? নজদ কী? এবং (আরবের) নজদ কি অন্য কোনও হাদিসে উল্লেখ হয়েছে? আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।
উত্তর: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, এবং সালাত ও সালাম আল্লাহর রসুল এবং তাঁর পরিবার ও সাহাবীদের ওপর। অতঃপর:
ইমাম বুখারি তাঁর সহীহ গ্রন্থে ‘কিতাবুল ফিতান’ অধ্যায়ে ইবনে উমর রা. এর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন:
“الفتنة ها هنا، الفتنة ها هنا، من حيث يطلع قرن الشيطان، أو قال: قرن الشمس”
“ফিতনা এখান থেকে আসবে, ফিতনা এখান থেকে আসবে, যেখান থেকে শয়তানের শিং উদিত হয়।” অথবা তিনি বললেন: “সূর্যের শিং উদিত হয়।” অন্য এক বর্ণনায় তাঁর থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পূর্ব দিকে মুখ করে বলতে শুনেছেন:
“ألا إن الفتنة ها هنا من حيث يطلع قرن الشيطان”
“ সাবধান! ফিতনা এখান থেকে আসবে, যেখান থেকে শয়তানের শিং উদিত হয়।”
– আরেকটি বর্ণনায় তাঁর থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি (ইবনে উমর রা.) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:
“اللهم بارك لنا في شامنا، اللهم بارك لنا في يمننا”
“ হে আল্লাহ! আমাদের শামে বরকত দিন, হে আল্লাহ! আমাদের ইয়েমেনে বরকত দিন।” লোকেরা বলল: “وفي نجدنا؟” “এবং আমাদের নজদে?” তিনি বললেন: “اللهم بارك لنا في شامنا، اللهم بارك لنا في يمننا” “হে আল্লাহ! আমাদের শামে বরকত দিন, হে আল্লাহ! আমাদের ইয়েমেনে বরকত দিন।” লোকেরা আবার বলল: “يا رسول الله، وفي نجدنا؟” “হে আল্লাহর রসুল! এবং আমাদের নজদে?”
বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা, তৃতীয়বার তিনি বললেন:
“هناك الزلازل، والفتن، وبها يطلع قرن الشيطان”
“ সেখানে ভূমিকম্প, ফিতনা এবং সেখান থেকেই শয়তানের শিং বের হবে।”
❑ ইমামদের ব্যাখ্যা:
◈ হাফিজ ইবনে হাজার ফাতহুল বারীতে বলেছেন:
«وقال الخطابي: نجد من جهة المشرق، ومن كان بالمدينة كان نجده بادية العراق، ونواحيها، وهي شرق أهل المدينة، وأصل النجد: ما ارتفع من الأرض وهي خلاف الغور، فإنه ما انخفض من الأرض، وتهامة كلها من الغور، ومكة من تهامة. انتهى.»
“ইমাম খাত্তাবি বলেন: নজদ পূর্ব দিক থেকে। যে মদিনায় ছিল, তার জন্য নজদ ছিল ইরাকের মরুভূমি এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল, যা মদিনা বাসীর পূর্ব দিকে অবস্থিত। নজদের মূল অর্থ: যা ভূমি থেকে উঁচু আর এটি ‘গাওর’-এর বিপরীত, যা ভূমি থেকে নিচু। পুরো তিহামা গাওর-এর অন্তর্ভুক্ত এবং মক্কা তিহামার অন্তর্ভুক্ত।”
«وعرف بهذا وهاء ما قاله الداودي إن نجدًا من ناحية العراق، كأنه توهم أن نجدًا موضع مخصوص، وليس كذلك، بل كل شيء ارتفع بالنسبة إلى ما يليه يسمى نجدًا، والمنخفض غورًا. اهـ.»
“এর মাধ্যমে দাউদির কথা দুর্বল প্রমাণিত হয় যে, নজদ ইরাকের দিক থেকে। যেন তিনি ধারণা করেছিলেন যে, নজদ একটি নির্দিষ্ট স্থান। কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। বরং যা কিছু তার পাশের স্থানের তুলনায় উঁচু তাকে নজদ বলা হয়। আর নিচু স্থানকে গাওর বলা হয়।”
সুনানের হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, ফিতনা প্রাচ্য থেকে বেশি আসে এবং ইতিহাসও এর সাক্ষী।
◈ হাফিজ ইবনে হাজার ফাতহুল বারীতে আরও বলেছেন:
«وقال غيره ـ أي: غير الخطابي ـ كان أهل المشرق يومئذ أهل كفر، فأخبر صلى الله عليه وسلم أن الفتنة تكون من تلك الناحية، كما أخبر، وأول الفتن كان من قبل المشرق، فكان ذلك سببًا للفرقة بين المسلمين، وذلك ما يحبه الشيطان، ويفرح به، وكذلك البدع نشأت من تلك الجهة. اهـ.»
“অন্যরা (অর্থাৎ খাত্তাবি ছাড়া) বলেছেন: সেই সময়ে প্রাচ্যের অধিবাসীরা কাফের ছিল। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খবর দিয়েছিলেন যে, ফিতনা সেই দিক থেকে আসবে-যেমনটি তিনি খবর দিয়েছিলেন। আর প্রথম ফিতনা প্রাচ্য থেকেই এসেছিল এবং তা মুসলিমদের মধ্যে বিভেদের কারণ হয়েছিল। শয়তান এটিই পছন্দ করে এবং এতে আনন্দিত হয়। একইভাবে, বিদআতও সেই দিক থেকেই উদ্ভূত হয়েছিল।”
◈ ইমাম নববী বলেছেন:
«والمراد بذلك اختصاص المشرق بمزيد من تسلط الشيطان، ومن الكفر، كما قال في حديث آخر: “رأس الكفر نحو المشرق”، وكان ذلك في عهده صلى الله عليه وسلم حين قال ذلك، ويكون حين يخرج الدجال من المشرق، وهو فيما بين ذلك منشأ الفتن العظيمة، ومثار لكفرة الترك الفاسقة العاتية الشديدة البأس. اهـ.»
“এর উদ্দেশ্য হল, প্রাচ্যের ওপর শয়তানের অধিক আধিপত্য এবং কুফর। যেমন তিনি অন্য হাদিসে বলেছেন: رأسُ الكفْرِ نحوَ المشرِقِ “কুফরের কেন্দ্র প্রাচ্য মুখী।” [বুখারি ও মুসলিম]। এটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে যখন তিনি এ কথা বলেছিলেন এবং এটি ঘটবে যখন দাজ্জাল প্রাচ্য থেকে বের হবে। এর মধ্যবর্তী সময়েও এটি বড় বড় ফিতনার উৎস এবং বিদ্রোহী ও শক্তিশালী তুর্কি কাফেরদের উত্থান স্থল।”
◈ ইমাম কাসতাল্লানি বলেছেন:
«إنما أشار عليه الصلاة والسلام إلى المشرق؛ لأن أهله يومئذ أهل كفر، فأخبر أن الفتنة تكون من تلك الناحية، وكذا وقع، فكان وقعة الجمل، ووقعة صفين، ثم ظهور الخوارج في أرض نجد، والعراق، وما وراءها، وكان أصل ذلك كله وسببه قتل عثمان بن عفان -رضي الله عنه-، وهذا علم من أعلام نبوته صلى الله عليه وسلم، وشرف، وكرم.»
“তিনি অর্থাৎ নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রাচ্যের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। কারণ সেই সময়ে সেখানকার অধিবাসীরা কাফের ছিল। তাই তিনি জানিয়েছিলেন যে, ফিতনা সেই দিক থেকে আসবে। এবং তেমনই ঘটেছে। ওয়াকেয়ায়ে জামাল (উটের ঘটনা/উষ্ট্রের যুদ্ধ) ও সিফফিন যুদ্ধ, তারপর নজদ, ইরাক এবং তার বাইরের অঞ্চলে খারেজিদের আবির্ভাব। এই সবকিছুর মূল কারণ ছিল, উসমান ইবনে আফফান রা. এর হত্যা। এটি তাঁর নবুয়তের অন্যতম নিদর্শন, সম্মান ও মর্যাদা।” এই ইমামদের কথাকে সমর্থন করে যে, অধিকাংশ ফিতনা ও বিদআত প্রাচ্য থেকে এসেছে। যেমন: কাদিয়ানি, বাহাই, বাবিয়া, নুসাইরিয়া, দ্রজ, শিয়া-রাফেজি, মঙ্গলীয় ফিতনা, কারামিতা এবং অন্যান্য। সহীহ বুখারী ও মুসলিমে আছে:
“رأس الكفر نحو المشرق، والفخر، والخيلاء في أهل الخيل، والإبل، الفدادين أهل الوبر، والسكينة في أهل الغنم.”
“কুফরের কেন্দ্র প্রাচ্য মুখী। অহংকার ও দাম্ভিকতা ঘোড়া ও উটওয়ালাদের মধ্যে যারা রূঢ়ভাষী পশমওয়ালা লোক আর প্রশান্তি বকরীওয়ালাদের মধ্যে।”
◈ হাফিজ ইবনে হাজার তার ফাতহুল বারী গ্রন্থে ‘কিতাবুল বাদউল খালক (সৃষ্টির সূচনা) অধ্যায়ে বলেছেন:
«وفي ذلك إشارة إلى شدة كفر المجوس؛ لأن مملكة الفرس، ومن أطاعهم من العرب، كانت من جهة المشرق بالنسبة إلى المدينة، وكانوا في غاية القوة، والتكبر، والتجبر؛ حتى مزق ملكهم كتاب النبي صلى الله عليه وسلم، كما سيأتي في موضعه، واستمرت الفتن من قبل المشرق، كما سيأتي واضحًا في الفتن. اهـ.»
“এতে অগ্নি উপাসকদের কুফরের তীব্রতার ইঙ্গিত রয়েছে। কারণ পারস্য সাম্রাজ্য এবং তাদের অনুগত আরবরা মদিনার দিক থেকে প্রাচ্যে ছিল। তারা চরম শক্তি, অহংকার ও জুলুমে লিপ্ত ছিল। এমনকি তাদের রাজা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চিঠি ছিঁড়ে ফেলেছিল, যে বিষয়ে আলোচনা যথাস্থানে আসবে। এবং ফিতনা প্রাচ্য থেকেই অব্যাহত ছিল, যেমনটি ‘ফিতান’ অধ্যায়ে স্পষ্ট হবে।”
❑ সারসংক্ষেপ:
মোটকথা: ‘নজদ’ বলতে কোনও নির্দিষ্ট স্থানকে বোঝানো হয়নি। বরং ভূমির যে কোনও উঁচু অংশই ‘নজদ’। কিন্তু হাদিস অনুযায়ী, প্রাচ্য দিকটিই এই হাদিসগুলোতে উদ্দেশ্য। আর যারা এটিকে ইরাকের নজদের সাথে সম্পর্কিত করেছেন, তা সেখানকার ফিতনার আধিক্যের কারণে। ইবনে আব্বাস রা. এর হাদিস এর প্রমাণ। তিনি বলেন:
«دعا نبي الله صلى الله عليه وسلم، فقال: اللهم بارك لنا في صاعنا، ومدنا، وبارك لنا في شامنا، ويمننا. فقال رجل من القوم: يا نبي الله، وعراقنا؟ قال: إن بها قرن الشيطان، وتهيج الفتن، وإن الجفاء بالمشرق. رواه الطبراني في الكبير، ورواته ثقات.»
“আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুআ করলেন এবং বললেন: হে আল্লাহ! আমাদের সা’ ও মুদ্দ-এ বরকত দিন এবং আমাদের শামে ও ইয়েমেনে বরকত দিন। তখন লোকদের মধ্য থেকে একজন বলল: হে আল্লাহর নবী! এবং আমাদের ইরাকে?
তিনি বললেন: সেখানে শয়তানের শিং এবং ফিতনা তীব্র হয় আর কঠোরতা প্রাচ্যে।” [এটি তাবারানি তাঁর ‘আল কাবির’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন এবং এর বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য।]
– মুসলিম তাঁর সহীহ গ্রন্থে ফুযাইল ইবনে গাজওয়ানের সূত্রে বর্ণনা করেছেন: তিনি বলেন, আমি সালিম ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. কে বলতে শুনেছি:
«يا أهل العراق، ما أسألكم عن الصغيرة، وأركبكم للكبيرة! سمعت أبي، يقول: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: “إن الفتنة تجيء من ها هنا، وأومأ بيده نحو المشرق، من حيث يطلع قرن الشيطان”.»
“হে ইরাক বাসীরা! আমি তোমাদের ছোট বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসা করি না, আর তোমরা বড় বিষয় নিয়ে জড়িয়ে পড়ো!
আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “ফিতনা এখান থেকে আসবে,” এবং তিনি তাঁর হাত দিয়ে প্রাচ্যের দিকে ইশারা করলেন, “যেখান থেকে শয়তানের শিং উদিত হয়।”
এটি জেনে রাখা উচিত যে, এর অর্থ এই নয় যে, এই ভূখণ্ডে বসবাসকারী বা জন্ম নেওয়া প্রত্যেককে নিন্দা করা হচ্ছে। কোনও বুদ্ধিমান ব্যক্তি এমন কথা বলবে না। কত বড় বড় জ্ঞানী, মুহাদ্দিস, ফকিহ এবং আবেদ এই অঞ্চল থেকে উঠে এসেছেন! তাঁদের মধ্যে আবু হানিফা, আহমদ, সুফিয়ান সাওরী এবং অন্যান্য অনেক মহান ব্যক্তি রয়েছেন। কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে তার স্থানের মর্যাদা বা নিকৃষ্টতার ভিত্তিতে প্রশংসা বা নিন্দা করা হয় না। বরং তার কথা ও কাজের ভিত্তিতেই বিচার করা হয়। কত মানুষ আছে যারা মক্কা, মদিনা ও শামের মতো সম্মানিত স্থানে বসবাস করেও কোনও ফজিলত, জ্ঞান, এমনকি ইমানও রাখে না। আল্লাহু আলাম। আল্লাহই সর্বজ্ঞ। [সোর্স: islamweb]
❑ শাইখ আব্দুল আজিজ বিন বায রাহ. এর ফতোয়া:
শইখের নিকট প্রশ্ন করা হয়, হাদিসে এসেছে, “হে আল্লাহ, আমাদের জন্য আমাদের শাম (সিরিয়া) ও ইয়েমেনে বরকত দিন” তারা বলল: “আর আমাদের নজদেও?” তিনি নীরব রইলেন। শয়তানের শিং কি সত্যিই নজদ থেকে বের হবে?
উত্তরে তিনি বলেন,
هذا صحيح، حديث صحيح اللهم بارك لنا في شامنا ويمننا قالوا: وفي نجدنا، فأعادها مرات، ثم قال: هناك قرن الشيطان يعني في الشرق، وأنه في نجد، وفي الشرق كله، ونجد بين الرسول ﷺ أن هناك مضر وربيعة عندهم من الشر والجفاء، قال: أصحاب الإبل.
بين -عليه الصلاة والسلام- أن قبائل العرب عندها من الجهل، وعندها من الشر ما عندها، إلا من هداه الله، وليس المقصود نجد فقط، المقصود به الشرق هاهنا من حيث يطلع قرن الشيطان، يعني من الشرق كله، شرق المدينة، وشرق الدنيا كلها، لأنه هناك وجد أصناف البدع، وأصناف الشرور، وظهرت الشيوعية، وظهر الفساد هناك في الشرق.
وكذلك يوجد في الجزيرة هذه من الشرور، وارتد كثير من العرب بعد موته ﷺ وشر في بني حنيفة، وبني أسد، وفي بني تميم، وادعى بعضهم النبوة، مسيلمة في بني حنيفة، وسجاح في بني تميم، وطليحة في بني أسد، وعماها شر كبير، ثم هداهم الله، ودخلوا في دين الله، ولكن الشر من جهة خراسان، ومن جهة ما وراء ذلك من جهة الصين، ومن جهة البلاد …. فيها شر كثير
“এটি সহিহ (বিশুদ্ধ) হাদিস। নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন: “হে আল্লাহ, আমাদের জন্য আমাদের শাম (সিরিয়া) ও ইয়েমেনে বরকত দিন।” তখন সাহাবারা বললেন: “আর আমাদের নজদেও?” তিনি কয়েকবার এর পুনরাবৃত্তি করলেন, তারপর বললেন: “সেখানে শয়তানের শিং (বা দল) বের হবে।” অর্থাৎ পূর্ব দিক থেকে এবং তা নজদে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্পষ্ট করে বলেছেন যে, নজদে এবং সমগ্র পূর্ব দিকে শয়তানের শিং বের হবে। তিনি আরও বলেছেন যে মুদার ও রাবিয়া গোত্রের মধ্যে মন্দ ও কঠোরতা বিদ্যমান এবং তিনি তাদের “উট পালনকারী” বলে উল্লেখ করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও স্পষ্ট করেছেন যে, আরবের বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে অজ্ঞতা ও মন্দ বিদ্যমান। তবে আল্লাহ যাকে হেদায়েত দিয়েছেন সে ব্যতীত। এখানে কেবল নজদকে উদ্দেশ্য করা হয়নি বরং সমগ্র পূর্ব দিক থেকে শয়তানের শিং বের হওয়ার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ মদিনার পূর্ব দিক এবং পৃথিবীর সমগ্র পূর্ব দিক। কারণ সেই পূর্ব দিকে বিভিন্ন ধরনের বিদআত ও মন্দ দেখা গেছে এবং সেখানে কমিউনিজম ও নানা বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছে।
তেমনিভাবে, এই উপদ্বীপেও অনেক মন্দ বিদ্যমান ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মৃত্যুর পর অনেক আরব মুরতাদ (ধর্মত্যাগী) হয়ে গিয়েছিল। বনু হানিফা, বনু আসাদ এবং বনু তামিম গোত্রের মধ্যে মন্দ ছড়িয়ে পড়েছিল। তাদের কেউ কেউ নবুয়তের দাবি করেছিল, যেমন: বনু হানিফাতে মুসায়লামা, বনু তামিমে সাজাহ এবং বনু আসাদে তুলাইহা। এর ফলে বড় ধরনের মন্দ দেখা দিয়েছিল।
পরবর্তীতে আল্লাহ তাদের হেদায়েত দান করেন এবং তারা আল্লাহর দ্বীনে ফিরে আসে। তবে খোরাসান থেকে এবং এর বাইরে, যেমন চীন ও অন্যান্য দেশ থেকে অনেক মন্দ এসেছে, যেখানে অনেক মন্দ বিদ্যমান ছিল।”
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬
অনুবাদক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি।
জুবাইল দাওয়াহ অ্যাসোসিয়েশন, সৌদি আরব।
No comments:
Post a Comment