রজবের প্রথম রাত, অর্ধ শাবানের রাত, জুমার রাত, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার রাত- এই পাঁচ রাতে দুআ কবুল হওয়া সংক্রান্ত হাদিসটি বানোয়াট
‘পাঁচটি রাত এমন আছে, যেগুলোতে বান্দার দোয়া আল্লাহ তাআলা ফিরিয়ে দেন না। (অর্থাৎ অবশ্যই কবুল করেন।) রাতগুলো হল—রজবের প্রথম রাত, অর্ধ শাবানের রাত, জুমার রাত, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার রাত।’ [তারিখে দিমাস্ক- ইবনে আসাকির ১০/৪০৮, মুসনাদুল ফিরদাউস ২/১৯৬]
◆ এই মর্মে বর্ণিত হাদিসটিকে মুহাদ্দিসগণের দৃষ্টিতে (বানোয়াট)। শাইখ আলবানি বলেন, موضوع (বানোয়াট)। [সিলসিলা যঈফাহ/১৪৫২ এবং যঈফুল জামে/২৮৫২]
❑ বিশ্লেষণ:
এ হাদিসের মূল ভিত্তি হল, ইবরাহিম ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আবি ইয়াহিয়া (১৮৪ হি.) নামক একজন মুহাদ্দিস। ইমাম মালিক, আহমদ, বুখারি, ইয়াহিয়া ইবনে মাঈন, ইয়াহিয়া আল-কাত্তান, নাসাঈ, দারাকুতনী, যাহাবী, ইবনে হিববান ও অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ তাকে “রাফেজি শিয়া, মুতাজিলি ও ক্বাদরিয়া আকিদায় বিশ্বাসী” বলে অভিযুক্ত করার পাশাপাশি মিথ্যাবাদী এবং অপবিত্র হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
ইমাম শাফেঈ প্রথম বয়সে তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। বিধায় কোনও কোনও শাফেঈ মুহাদ্দিস তাঁর দুর্বলতা কিছুটা হাল্কা করার চেষ্টা করেন। তবে শাফেঈ মাজহাবের অভিজ্ঞ মুহাদ্দিসগণ এবং অন্যান্য সকল মুহাদ্দিস এক কথায় তাকে ‘মিথ্যাবাদী’ ও ‘পরিত্যক্ত’ বলে ঐকমত্য পোষণ করেছেন ইমাম শাফেঈ নিজেও তাঁর এ শিক্ষকের দুর্বলতা ও অগ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। তিনি পরবর্তী জীবনে তার সূত্রে কোনও হাদিস বললে তার নাম উল্লেখ না করে বলতেন, “আমাকে বলা হয়েছে”, বা “আমি শুনেছি” বা অনুরূপ কোনও বাক্য ব্যবহার করতেন। [ইবনে হিববান, আল-মাজরূহীন, ১/১০৫-১০৭; ইবনে ‘আদী, আল-কামিল, ১/৩৫৩-৩৬৭; ইবনুল জাওযী, আদ-দুয়াফা ১/৫১; যাহাবী, মীযানুল ইতিদাল, ১/১৮২-১৮৫; ইবনে হাজার, তাহযীব ১/১৩৭-১৩৯] এ ছাড়াও এর বর্ণনা সূত্রে আবু সাঈদ বুনদার বিন উমর (بندار بن عمر الروياني) নামে একজন বর্ণনাকারী আছে। যে মুহাদ্দিসগণের নিকট ‘মিথ্যাবাদী ও হাদিস জাল কারী’ বলে পরিচিত। [যাহাবি-মিযানুল ইতিদাল, ২/৭০, ইবনে হাজার-লিসানুল মিযান, ২/৬৪] [সূত্র: adithbd]
No comments:
Post a Comment