Thursday, July 25, 2024

আশুরার শোক উদযাপন বিদআত কেন

 মুহররম মাসের দশ তারিখ আশুরার দিন হিসেবে পরিচিত। ৬১ হিজরির ১০ মুহররম তারিখে আল্লাহ রব্বুল আলামিন হুসাইন রা. কে শাহাদাতের মর্যাদায় ভূষিত করেছিলেন। এই শাহাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তার মর্যাদা অনেক উন্নীত করেছেন। কারণ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাসান ও হুসাইন রা.-এর ব্যাপারে এ শুভ সংবাদ প্রদান করে গেছেন যে, তারা হবেন জান্নাতের যুবকদের নেতা।

আর এ কথা চির সত্য, যে যত বড় মর্যাদা লাভ করে তাকে তত বড় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করা হল,

أيُّ النَّاسِ أشدُّ بلاءً؟ قال: الأنبياءُ ثمَّ الأمثلُ فالأمثَلُ، فيُبتلى الرَّجلُ على حسْبِ دينِه، فإن كانَ في دينهِ صلبًا اشتدَّ بلاؤُهُ، وإن كانَ في دينِهِ رقَّةٌ ابتليَ على حسْبِ دينِه، فما يبرحُ البلاءُ بالعبدِ حتَّى يترُكَهُ يمشي على الأرضِ ما عليْهِ خطيئةٌ

“মানব জাতির মধ্যে কে সব চেয়ে বেশি পরীক্ষা ও বিপদাপদের সম্মুখীন হয়েছিলেন? তিনি বললেন, নবিগণ, তারপর আল্লাহর নেককার বান্দাগণ।তারপর অন্যদের মধ্যে যারা যে পরিমাণ ঈমান ও পরহেজগারিতার অধিকারী তারা সে পরিমাণ পরীক্ষা সম্মুখীন হয়েছেন। মানুষ তার দ্বীনদারি অনুযায়ী পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। কেউ যদি মজবুত দ্বীনের অধিকারী হয় তবে সে বেশি পরিমাণ পরীক্ষার মুখোমুখি হয়। আর কারো দ্বীনদারিতে কমতি থাকলে তার বিপদাপদ কম আসে এবং পরীক্ষাও কম হয়। মুমিন বান্দা যতদিন পৃথিবীতে চলা ফেরা করে ততদিন তার উপর বিপদাপদ পতিত হতে থাকে এবং এভাবে তার আর কোন গুনাহ বাকী থাকে না।” [মুসনাদ আহমদ ও তিরমিযি-সনদ হাসান]

আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তাদের এই মর্যাদা পূর্বেই নির্ধারণ করে রাখা হয়েছিল। তারা তাদের পূর্বপুরুষদের মতই বিপদাপদের সম্মুখীন হয়েছেন। ইসলামের মর্যাদা নিয়েই তারা দুনিয়াতে আগমন করেছেন এবং ইসলাম প্রদত্ত মর্যাদা সহকারে তারা প্রতিপালিত হয়েছেন। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সংস্পর্শ, স্নেহ-মমতা, আদর ও ভালবাসা পেয়ে তাদের জীবন সৌভাগ্য মণ্ডিত হয়েছে। যার কারণে মুসলিমগণ তাদের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করে থাকেন।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইহজগৎ ত্যাগ করেন তখন তাঁরা ভালোমন্দ বুঝার বয়সে উপনীত হননি।

আল্লাহ তাআলা তাদেরকে এমন নিয়ামত দিয়েছেন যার মাধ্যমে তারা তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে গিয়ে মিলিত হতে পারে। কারণ তাদের চেয়ে যিনি বেশি মর্যাদার অধিকারী তথা তাদের পিতা আলি রা. ও শহিদ অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছেন।

হুসাইন রা.-এর নিহত হওয়ার ঘটনায় জনমানুষের মাঝে ফেতনা-ফ্যাসাদের বিস্তার ঘটে। যেভাবে উসমান রা.-এর নিহত হওয়ার ঘটনা বিরাট বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। যার কারণে আজ পর্যন্ত মুসলিম জাতি বিভক্ত।

❖ হুসাইন রা.-এর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড:

খারেজি সম্প্রদায়ের আব্দুর রহমান বিন মুলজিম আলি রা. কে হত্যা করার পর সাহাবিদের একাংশ হাসান রা. এর হাতে বয়াত নিলেন। তার ব্যাপারে আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

إنَّ ابْنِي هذا سَيِّدٌ، ولَعَلَّ اللَّهَ أنْ يُصْلِحَ به بيْنَ فِئَتَيْنِ عَظِيمَتَيْنِ مِنَ المُسْلِمِينَ

“আমার এই ছেলে (নাতি) একজন নেতা। সম্ভবত: সে মুসলিমদের দুটি বড় বড় (বিবদমান) দলের মধ্যে সমাধান করবেন।” [সহিহ বুখারি-আবু বকরা বিন নুফাই রা. থেকে বর্ণিত]।

তিনি রাষ্ট্র ক্ষমতা ছেড়ে দিলেন। এর মাধ্যমে মুয়াবিয়া এবং হাসান রা.-এর সমর্থক দু দলের মধ্যে সমাধান হল। অতঃপর তিনি ইহজগৎ ত্যাগ করলেন। এরপর বেশ কিছু মানুষ হুসাইন রা.-এর নিকট চিঠির পর চিঠি লেখা শুরু করল। তারা বলল, যদি হুসাইন রা. ক্ষমতা গ্রহণ করেন তবে তাঁকে তারা সাহায্য-সহযোগিতা করবে। অথচ তারা এ কাজের যোগ্য ছিল না।

অতঃপর হুসাইন রা. যখন তাদের নিকট তার চাচাত ভাই মুসলিম ইবনে আকিল ইবনে আবু তালিবকে পাঠালেন তখন তারা তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তার দুশমনকে তাকে প্রতিহত করতে এবং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করল।

এদিকে বিচক্ষণ সাহাবিগণ এবং হুসাইন রা. হিতাকাঙ্ক্ষীগণ-যেমন: ইবনে আব্বাস, ইবনে উমর রা. প্রমুখ তারা সবাই হুসাইন রা. কে ঐ সকল লোকদের ডাকে না যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিলেন। তারা বললেন, হুসাইন রা.-এর সেখানে যাওয়াতে কোন লাভ নেই। এতে কোন কল্যাণ বয়ে আসবে না। পরে ঘটনা যা ঘটার তাই ঘটল। আল্লাহর ইচ্ছাই বাস্তবায়িত হল।

হুসাইন রা. বিজ্ঞ সাহাবিগণের পরামর্শ উপেক্ষা করে যখন বের হলেন তখন দেখলেন, অবস্থা পরিবর্তন হয়ে গেছে। তিনি তাদের নিকট আবেদন করলেন, তাকে ছেড়ে দেওয়া হোক। তিনি যেন তিনি মদিনায় ফিরে যেতে পারেন অথবা কোন সীমান্ত প্রহরায় অংশ গ্রহণ করতে পারেন। অথবা তাকে যেন ইয়াজিদের সাথে সাক্ষাত করতে দেওয়া হয়। কিন্তু তারা তার কোন প্রস্তাব গ্রহণ করল না। বরং তাকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলে যুদ্ধ করতে বাধ্য করল। তিনি এবং তার সঙ্গীগণ যুদ্ধ করে পরিশেষে শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করলেন।

এই শাহাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ তাকে মর্যাদার সুউচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করলেন এবং তাঁর অন্যান্য পূত-পবিত্র পরিবারবর্গের সাথে মিলিত করলেন এবং তাঁর উপর যারা এহেন নিষ্ঠুর আচরণ করল তাদেরকে লাঞ্ছিত করলেন।

ইতিহাসের এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড জনমানুষের মধ্যে অত্যন্ত খারাপ প্রভাব ফেলল। মানুষ দু ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল। এ নিয়ে অনেক মানুষ মুনাফেকি, মূর্খতা এবং গোমরাহির মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগল। একদল মানুষ এই আশুরার দিন কে মাতম, আহাজারি, কান্নাকাটি এবং শোক দিবস হিসেবে গ্রহণ করল। তারা সেদিন জাহেলি জামানার বিভিন্ন আচরণ প্রদর্শনী শুরু করল। তারা সে দিন, শোক র‍্যালি, কালো পতাকা মিছিল, নিজের শরীরে চাবুক-তলোয়ার ইত্যাদি ধারাল অস্ত্র দ্বারা দিয়ে জখম, নিজেদের গালে আঘাত, শরীরের কাপড় ছেড়া, জামার পকেট ছেড়া, চুল ছেড়া ইত্যাদি বিভিন্ন জাহেলি প্রথা অনুযায়ী শোক দিবস পালন করে থাকে। যা আজ পর্যন্ত পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। প্রতিবছর আশুরার দিন তারা ইসলামি শরিয়তের সম্পূর্ণ বিপরীত এহেন কার্যকলাপ করে থাকে। তারা মনে করে, এ সব কাজ করার মাধ্যমে তারা হুসাইন রা. এবং তার আহলে বাইত তথা পরিবারবর্গের প্রতি ভালবাসা এবং সমবেদনা প্রকাশ করে!!

❖ শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন,

“হুসাইন রা.-এর হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে শয়তান মানুষের মধ্যে দুটি বিদআত আবিষ্কার করল। একটি হল, আশুরার দিন শোক ও কান্নাকাটি করার বিদআত। যে দিন শরীরে আঘাত করা, চিৎকার করে কান্নাকাটি করা, পিপাসার্ত থাকা, মর্সিয়া পালন ইত্যাদি কার্যক্রম করা হয়ে থাকে। শুধু তাই নয় বরং এ দিন পূর্বপুরুষদেরকে গালাগালি করা হয়, তাদের উপর অভিশাপ দেওয়া হয় এবং এমন সব লোকদেরকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হয় যারা প্রকৃতপক্ষে অপরাধী নয় এবং হুসাইন রা. এর মৃত্যু সংক্রান্ত এমন সব কাহিনী বয়ান করা হয় যেগুলো অধিকাংশই মিথ্যা এবং বানোয়াট।

যারা এসবের সূচনা করেছিল তাদের উদ্দেশ্য ছিল ফেতনা-ফ্যাসাদের দরজা উন্মুক্ত করা এবং মুসলিম উম্মাহকে বিভক্ত করা। এসব কাজ তো মুসলিমদের ঐকমত্যে ওয়াজিব নয় মোস্তাতাহাবও নয় বরং এতে শুধু অতীতে ঘটে যাওয়া বিপদাপদকে কেন্দ্র করে ধৈর্য হীনতা এবং কান্নাকাটি নতুন করে উজ্জীবিত করা হয়। অথচ তা আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রসুল কর্তৃক শক্তভাবে নিষিদ্ধ জিনিস।”

ধৈর্য হীনতা প্রকাশ করা বা চিৎকার-কান্নাকাটি করা ইসলামি শরিয়তের পরিপন্থী। বিপদে-মসিবতে আল্লাহ ও তাঁর রসুলের নির্দেশ হল, ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া, ‘ইন্নাল্লিাহি ওয়া ইন্নালিল্লাইহি রাজিঊন’ পাঠ করার পাশাপাশি আত্ম সমালোচনা করা। যেমন:

▪ আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَبَشِّرِالصَّابِرِينَ – الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّـهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ ولَـٰئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِّن رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ ۖ وَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُونَ

“আর ধৈর্য ধারণকারীদেরকে শুভ সংবাদ দাও। যারা বিপদ এলে বলে, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন’ (আমরা আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন এবং তাঁর নিকটই প্রত্যাবর্তনকারী)। এদের উপরই আল্লাহর পক্ষ থেকে দয়া ও করুণা বর্ষিত হয় এবং এরাই সুপথে প্রতিষ্ঠিত।” [সূরা বাকারা: ১৫৫]

▪ সহিহ বুখারিতে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন,

لَيْسَ مِنّا مَنْ ضَرَبَ الْخُدُودَ، وَشَقَّ الْجُيُوبَ، وَدَعا بِدَعْوى الْجاهِلِيَّةِ

“যে ব্যক্তি গালে চপেটাঘাত করে, জামার পকেট ছিঁড়ে এবং জাহেলিয়াতের মত আহবান করে তারা আমাদের দলভুক্ত নয়।” [মজমু ফাতাওয়া শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া ২৫/৩০২, ৩০৭]

▪ নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

أَنا بَرِيءٌ مِمَّنْ بَرئَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَرِئَ مِنَ الصَّالِقَةِ وَالْحالِقَةِ وَالشَّاقَّةِ

“যে মহিলা (বিপদে-মসিবতে) চিৎকার করে, মাথার চুল মুণ্ডন করে, কাপড় ছেঁড়ে তার থেকে আমি সম্পর্ক মুক্ত।” [সহিহ মুসলিম]

▪ নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন,

النَّائِحَةُ إذا لَمْ تَتُبْ قَبْلَ مَوْتِها، تُقامُ يَومَ القِيامَةِ وعليها سِرْبالٌ مِن قَطِرانٍ، ودِرْعٌ مِن جَرَبٍ

“বিলাপকারিণী মহিলা যদি তওবা করার আগে মৃত্যু বরণ করে তবে সে কিয়ামতের দিন আলকাতরা মাখানো পায়জামা আর ঘা বিশিষ্ট বর্ম পরিহিত অবস্থায় উঠবে।” [সহিহ মুসলিম, জানাজা অধ্যায়]

▪ সহিহ বুখারিতে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,

ما مِن عبدٍ تُصيبُه مُصيبةٌ، فيقولُ: إنَّا لله وإنَّا إليه راجعونَ، اللهُمَّ أْجُرْني في مُصِيبتِي، وأَخْلِفْ لي خيرًا منها، إلَّا أَجَرَه اللهُ في مُصِيبته، وأَخْلَفَ له خيرًا منها

“যে আল্লাহর বান্দা বিপদে অপতিত হলে বলে: ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইল্লাইহি রাজিঊন, “আল্লাহুম্মা আজিরনী ফী মুসীবাতী ওয়াখলুফ লাহু খাইরান মিনহা” (নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য নিবেদিত এবং তার কাছেই ফিরে যাব। হে আল্লাহ, বিপদে আমাকে প্রতিদান দাও এবং এর থেকে উত্তম বিকল্প দান কর)।” আল্লাহ তাকে তার বিপদে উত্তম প্রতিদান দিবেন এবং তার চেয়ে ভালো বিকল্প ব্যবস্থা করবেন।” [সহিহ মুসলিম, জানাজা অধ্যায়]

▪ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

أَرْبَعٌ في أُمَّتي مِن أمْرِ الجاهِلِيَّةِ، لا يَتْرُكُونَهُنَّ: الفَخْرُ في الأحْسابِ، والطَّعْنُ في الأنْسابِ، والاسْتِسْقاءُ بالنُّجُومِ، والنِّياحَةُ

“আমার উম্মতের মধ্যে চারটি জিনিস জাহেলিয়াত বা মূর্খতা সুলভ কাজ যেগুলো তারা ছাড়বে না। বংশ আভিজাত্য নিয়ে গর্ব করা, অন্যের বংশকে দোষারোপ করা, তারকার সাহায্যে বৃষ্টি প্রার্থনা করা এবং মানুষের মৃত্যুতে বিলাপ করা।” [সহিহ মুসলিম, জানাযা অধ্যায়]
সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি হুসাইন রা.-এর নিহত হওয়ার ঘটনায় অন্য মুমিন-মুসলিমদের প্রতি জুলুম-অত্যাচার করে, তাদেরকে গালাগালি করে বা তাদের উপর অভিশাপ দেয় এবং দ্বীনের দুশমন ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কাজে সাহায্য করা সহ নানা অন্যায় কাজে জড়িত হয় তাদের পরিণতি কী হতে পারে?!

শয়তান গোমরাহ লোকদের জন্যে আশুরার দিনকে শোক ও মাতম প্রকাশের দিন হিসেবে সুসজ্জিত ভাবে তুলে ধরেছে। যার কারণে এ সব লোক আশুরা আসলে কান্নাকাটি, দুঃখের কাওয়ালি গাওয়া, বানোয়াট কিচ্ছা-কাহিনী বর্ণনা ইত্যাদি কার্যক্রম শুরু করে দেয়। এতে কি কিছু লাভ হয়? হ্যাঁ, এতে যা হয় তা হল, মানুষের মাঝে হিংসা-বিদ্বেষ এবং গোঁড়ামির বিষ বাষ্প ছড়ানো, মুসলিমদের মাঝে ফেতনা-ফ্যাসাদ উজ্জীবিত করা এবং অতীত কালের মানুষদের গালাগালি করা। এভাবে দ্বীনের মধ্যে অসংখ্য ফেতনা ছড়ানো হয় এবং মিথ্যার পরিচর্যা করা হয়।

ইসলামের ইতিহাসে এত ফেতনা-ফ্যাসাদ, দ্বীনের নামে মিথ্যাচার এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফেরদেরকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে এ শিয়া সম্প্রদায়টির চেয়ে অগ্রগণ্য আর কোন মানুষ দেখা য়ায়নি। (সমাপ্ত)
▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
উৎস: শাইখ আব্দুল আজিজ বিন আহমদ আত তুওয়াইজিরি রাহ. কর্তৃক রচিত ‘আল বিদা আল হাওলিয়া’ (মাস্টার্স এর থিসিস)
অনুবাদ: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি। দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।

No comments:

Post a Comment

Translate