উম্মতে মোহাম্মদির একটি সেজদা জিবরাঈল আ. এর তিরিশ হাজার বছরের সেজদার থেকে উত্তম, আরশের গায়ে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ লেখা থাকা এবং এই উম্মতের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য মুসা আ. এর কান্না বা আশা-আকাঙ্ক্ষা সংক্রান্ত হাদিসগুলো ভিত্তিহীন ও বানোয়াট:
জিবরাঈল আ. আল্লাহ তাআলার দিকে মুতাহজ্জির হয়ে রইলেন। কিন্তু আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে কোন খুশির বাণী জানান হল না। জিবরাঈল আ. আল্লাহ তাআলা কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহ, আমি যে এত লম্বা সেজদা করলাম কিন্তু আপনি কি আমার সেজদার প্রতি খুশি হননি?
আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দিলেন: জিবরাঈল, তোমার জবাব আমি দেব। তার আগে তুমি একটু আরশে আজিমের দিকে তাকাও। জিবরাঈল আ. তাকিয়ে দেখলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরশে আল্লাহর কুদরতি নূর দ্বারা লিখা রয়েছে, ”লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।” জিবরাইল আ. জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহ, আমার সেজদার সংগে এই কালিমার কী সম্পর্ক?
আল্লাহ তাআলা বললেন, ও জিবরাইল, শোন, আমি আল্লাহ এ দুনিয়া তৈরি করব। ওই দুনিয়ার মানব জাতি ও জিন জাতির হেদায়াতের জন্য লক্ষাধিক নবি-রাসূলকে পাঠাব। সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে পাঠাব। এই নবির উম্মতের উপরে আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করব। আর প্রতি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে সতেরটা করে রাকাত আমার জন্য ফরজ করব। প্রত্যেকটা রাকাতের মধ্যে দুটি করে সেজদা হবে। আর প্রত্যেকটা সেজদার মধ্যে ওই নবির উম্মত তিনবার করে “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” পাঠ করবে।
জিবরাইল, তুমি জেনে রাখ, আমার ওই মাহবুব নবির উম্মত যখন সেজদায় গিয়ে “সুবহা-না রাব্বিয়াল আলা” বলে আমাকে ডাক দিবে। জিবরাইল তুমি ৩০ হাজার বছর সেজদা করে যে নেকি পেয়েছ, আমি আল্লাহ আমার বান্দার আমলনামায় এর থেকেও ৪০ হাজার গুণ বেশি নেকি লিখে দিব। সুবহানাল্লাহ!
▪️উত্তর: এই ঘটনা এবং তার মধ্যে যেসব কথা বলা হয়েছে সবকিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এগুলো হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামে মিথ্যাচার। বিদআতি ওয়াজ ব্যবসায়ী বক্তারা এইসব ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কিচ্ছা-কাহিনী ওয়াজ মাহফিলগুলোতে মূর্খ শ্রোতাদের সামনে খুব সুর দিয়ে বয়ান করে থাকে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এর কোনও ভিত্তি নেই।
– আল্লাহর আরশের গায়ে, পায়ে বা জান্নাতের দরজায় কিংবা জান্নাতের গাছের পাতায় পাতায় “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” লেখা থাকার ব্যাপারে যত হাদিস বলা হয়, সেগুলোর কোনটাই সঠিক নয়। সবগুলোই জাল-জয়ীফ।
No comments:
Post a Comment