আল্লাহ তুমি অপরুপ
Saturday, October 28, 2023
আল্লাহ তুমি অপরুপ
জানিনা কত সুন্দর তুমি আল্লাহ
👉 জানিনা কত সুন্দর তুমি আল্লাহ
দুনিয়া সুন্দর, মানুষ সুন্দরআসমান সুন্দর, জমিন সুন্দর
সুন্দরে সুন্দরে পাল্লা
জানিনা কত সুন্দর তুমি আল্লাহ
ঝরণা ছুটে চলে এঁকেবেঁকে
পৃথিবীর পটে কত ছবি এঁকে
নদীর কলতানে
সাগরের গর্জনে
ঢেউয়ে ঢেউয়ে দেয় পাল্লা
জানিনা কত সুন্দর তুমি আল্লাহ
বাগানে ফুটে ফুল রাশি রাশি
রাতেরই তারা ভরা চাঁদের হাসি
গুণগুণ গানে ডেকে
মৌমাছি মধু চাকে
ফুলে ফুলে করে হল্লা
জানিনা কত সুন্দর তুমি আল্লাহ
দখিনা বাতাস গায়ে পরশ বুলে
টানটানে পাল তুলে নৌকা চলে
তোমারি নামে মনে
ভাটিয়ালি সুরের তানে
দাঁড় টেনে যায় মাঝি মাল্লা
জানিনা কত সুন্দর তুমি আল্লাহ
আমি কোরানের সুর মাঝে শুনেছি যে নাম
আমি কোরানের সুর মাঝে শুনেছি যে নাম
প্রভু তুমি বলেছো রাসূল দেবে না
👉 প্রভু তুমি বলেছো রাসূল দেবে না
Monday, October 23, 2023
সর্বোত্তম স্ত্রী কে
যে নারী তার স্বামীকে দ্বীন পালনে এবং আখিরাতের কাজে সাহায্য করে সেই সর্বোত্তম স্ত্রী। এ বিষয়ে কতিপয় হাদিস বর্ণিত হয়েছে। যেমন:
◈ আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
رَحِمَ اللَّهُ رَجُلاً قَامَ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّى وَأَيْقَظَ امْرَأَتَهُ فَصَلَّتْ فَإِنْ أَبَتْ رَشَّ فِي وَجْهِهَا الْمَاءَ رَحِمَ اللَّهُ امْرَأَةً قَامَتْ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّتْ وَأَيْقَظَتْ زَوْجَهَا فَصَلَّى فَإِنْ أَبَى رَشَّتْ فِي وَجْهِهِ الْمَاءَ
◈ সাওবান রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন কুরআনের এ আয়াতটি নাজিল হলো: (আল্লাহ তাআলা বলেন,)
وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ
لِيَتَّخِذْ أَحَدُكُمْ قَلْبًا شَاكِرًا وَلِسَانًا ذَاكِرًا وَزَوْجَةً مُؤْمِنَةً تُعِينُ أَحَدَكُمْ عَلَى أَمْرِ الْآخِرَةِ
যুবকদের প্রতি ৭৫টি নসিহত
সকল প্রশংসা সেই আল্লাহ তাআলার জন্য যিনি বলেন,
দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর ও রসূল মুহাম্মদের উপর। যিনি বলেন,
أُوصيكم بتقوى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ والسمعِ والطاعةِ
“আমি তোমাদেরকে নসিহত করছি আল্লাহ ভীতির জন্য (মুসলিম শাসকদের) কথা শোনা ও তাঁর আনুগত্য করার জন্য।” [আবু দাউদ, তিরমিজি-সহিহ]
তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি হল, তাঁর আদেশ মেনে চলা এবং নিষেধ থেকে দূরে থাকা। তাকওয়াই হল দুনিয়া ও আখিরাতে সৌভাগ্যের চাবিকাঠি।
নিম্নে কতিপয় মূল্যবান ইসলামি নসিহত সন্নিবেশিত করা হল। নসিহতগুলো দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। যেমন: ইবাদত-বন্দেগি, লেনদেন, আদব-শিষ্টাচার, চরিত্র ও আচার-ব্যবহার ইত্যাদি। যে মুসলিম যুবক প্রয়োজনীয় ও উপকারী বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী, আমরা সে যুবকের প্রতি তার স্মরণের উদ্দেশ্যে এ নসিহতগুলো পেশ করছি। আর স্মরণ মুমিনদের উপকারে আসবে। আমরা আল্লাহর দরবারে আশা রাখি, যে ব্যক্তি এগুলো শুনবে বা পাঠ করবে আল্লাহ তাকে উপকৃত করুন। যে ব্যক্তি এগুলো লিখবে বা প্রচার করবে বা আমল করবে তাকে সুমহান প্রতিদান ও পুরস্কারে ভূষিত করুন। তিনি আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই সর্বোত্তম কর্ম সম্পাদনকারী।
নসিহতগুলো নিম্নরূপ:
বারসিসার ঘটনা এবং শিক্ষা
নারী ফিতনায় পড়ে বনি ইসরাইলের এক ধর্মপরায়ণ ব্যক্তি যেভাবে নানা পাপাচারে ডুবে শেষ পর্যন্ত মুশরিকে পরিণত হয়েছিল
❑ বারসিসার ঘটনা:
শয়তান বলল” আমাকে সেজদা কর আমি তোমাকে রক্ষা করবো” তো বাঁচার জন্য মরিয়া হয়ে বারসিসা শয়তানকে সিজদা করল এবং কাফের হয়ে গেল। সিজদা করার সাথে সাথে শয়তান তাকে বলল, ‘আমি এখন তোমার থেকে মুক্ত। আমি আল্লাহকে ভয় করি যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক’। এই বলে শয়তান সেখান থেকে পালাল এবং বারসিসার শিরশ্ছেদ করা হল। কেয়ামতের দিন বারসিসাকে যখন জীবিত করা হবে তখন সে শয়তানকে সিজদা করতে করতে উঠে দাঁড়াবে!
❑ ঘটনার সত্যতা কতটুকু?
বারসিসার এই ঘটনাটি কতিপয় তাফসির গ্রন্থে উল্লেখিত হয়েছে। যেমন: তাফসিরে কুরতুবি, তাফসিরে বাগাবি। তারা কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতটির ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে উত্তর ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
كَمَثَلِ الشَّيْطَانِ إِذْ قَالَ لِلْإِنسَانِ اكْفُرْ فَلَمَّا كَفَرَ قَالَ إِنِّي بَرِيءٌ مِّنكَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ رَبَّ الْعَالَمِينَ
“তারা শয়তানের মত, যে মানুষকে কাফের হতে বলে। অতঃপর যখন সে কাফের হয়, তখন শয়তান বলে, তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি বিশ্ব পালনকর্তা আল্লাহ তাআলাকে ভয় করি। [সূরা হাশর: ১৬]।
কিন্তু হাদিস বিশারদগণের দৃষ্টিতে উক্ত ঘটনাটি কোনও হাদিসের কিতাবে পাওয়া যায়নি। এটি মূলত: বনি ইসরাইল তথা ই হুদি-খ্রি স্টানদের থেকে নেওয়া। সুতরাং তা সত্য-মিথ্যা উভয়টি হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।
তবে ইসরাইলি ঘটনবালীর মধ্যে কোনও ঘটনা উপকারী ও শিক্ষণীয় হলে এবং তাতে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু না থাকলে মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্য তা বর্ণনা করতে কোনও দোষ নেই। কেননা আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“ بَلِّغُوا عَنِّي وَلَوْ آيَةً وَحَدِّثُوا عَنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَلاَ حَرَجَ وَمَنْ كَذَبَ عَلَىَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ ”
“আমার নিকট থেকে একটি আয়াত হলেও তা প্রচার করে দাও আর বনি ইসরাইলদের ঘটনাবলীও বর্ণনা করো। এতে কোন দোষ নেই। কিন্তু যে ব্যক্তি আমার উপর স্বেচ্ছায় মিথ্যারোপ করবে সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামকে বানিয়ে নেয়।” [সহিহ বুখারি] আউনুল মাবুদের গ্রন্থকার আল্লামা শামসুল হক আজিমাবাদি বলেন,
وقال مالك: المراد جواز التحدث عنهم بما كان من أمر حسن، أما ما علم كذبه فلا، قاله في الفتح
“আর মালেক বলেছেন যে, এ হাদিসের উদ্দেশ্য হল, তাদের ভালো বিষয়গুলো বর্ণনা করা বৈধ। কিন্তু যে বিষয় মিথ্যা বলে জানা যাবে তা বর্ণনা করা যাবে না। এমনটি রয়েছে ফাতহুল বারি গ্রন্থে।”
◆ ১. পুরুষের জন্য নারী ফিতনা অনেক ভয়াবহ বিষয়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মর্মে সতর্ক করে বলেন,
مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِي النَّاسِ فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنَ النِّسَاءِ
“আমি আমার পর লোকদের মাঝে পুরুষদের জন্য মেয়েদের চেয়েও ক্ষতিকর আর কোন ফিতনা রেখে যাইনি।” [বুখারি ও মুসলিম]।
◆ ২. নারীর ফিতনায় পড়ে একজন আল্লাহ ওয়ালা, বুজুর্গ ও ধর্মপরায়ণ মানুষও ধ্বংসের গহীন খাদে নিপতিত হতে পারে। নবি ইসরাইলের মধ্যে সর্বপ্রথম ফিতনা ছিল নারী কেন্দ্রিক। অত:এব এ বিষয়ে সাবধানতা অপরিহার্য।
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
فَاتَّقُوا الدُّنْيَا وَاتَّقُوا النِّسَاء فإنَّ أَوَّلَ فِتْنَةِ بَنِي إسرائيلَ كَانَتْ في النِّسَاءِ
“অতএব তোমরা দুনিয়ার ধোঁকা থেকে বাঁচ এবং নারীর (ফিতনা থেকে) বাঁচ। কারণ, বানি ইসরাইলের সর্বপ্রথম ফিতনা নারীকে কেন্দ্র করেই হয়েছিল।” [সহিহ মুসলিম]।
◆ ৩. নারী-পুরুষ নির্জন কক্ষে অবস্থান করার পরিণতি খুবই ভয়াবহ। আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
لا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ وَلا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ
وَأَمَّا إِذَا خَلَا الْأَجْنَبِيّ بِالْأَجْنَبِيَّةِ مِنْ غَيْر ثَالِث مَعَهُمَا، فَهُوَ حَرَام بِاتِّفَاقِ الْعُلَمَاء
“তৃতীয় ব্যক্তি ছাড়া পরপুরুষ পরনারীর সাথে নির্জনতা অবলম্বন করা আলেমদের সর্বসম্মতিক্রমে হারাম।”
◆ ৪. শয়তান মানুষকে ক্রমান্বয়ে ছোট থেকে বড় পাপের দিকে ধাবিত করে। এটা শয়তানের এক কুটকৌশল। আর তাই তো আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ وَمَن يَتَّبِعْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ فَإِنَّهُ يَأْمُرُ بِالْفَحْشَاءِ وَالْمُنكَرِ
এজন্যই সর্বদা শয়তানের কুমন্ত্রণার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার পাশাপাশি সতর্কতা অবলম্বন করা মুমিনের জন্য অপরিহার্য। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَ اِمَّا یَنۡزَغَنَّکَ مِنَ الشَّیۡطٰنِ نَزۡغٌ فَاسۡتَعِذۡ بِاللّٰهِ ؕ اِنَّهٗ هُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ
“আর যদি শয়তানের পক্ষ থেকে কোন কুমন্ত্রণা কখনো তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে তুমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।” [সূরা ফুসসিলাত: ৩৬]।
◆ ৬. “মদ অনিষ্টের চাবি।”-এ হাদিসের সত্যতা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
لاَ تَشْرَبِ الْخَمْرَ فَإِنَّهَا مِفْتَاحُ كُلِّ شَرٍّ
এমন আরও বহু মূল্যবান শিক্ষা নিহীত রয়েছে উপরোক্ত ঘটনায়।
মোটকথা, বারসিসার ঘটনাটি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পূর্বযুগে ঘটে যাওয়া একটি প্রসিদ্ধ ঘটনা। যা একটি ইসরাইলি বর্ণনা তথা ইহুদি-খৃষ্টানদের থেকে নেওয়া। কোনও হাদিসের কিতাবে এর বিবরণ পাওয়া যায় না। কিন্তু তা শিক্ষণীয় হওয়ায় তা অনেক আলেম তা তাদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন। আর সত্যি এর মধ্যে আমাদের জন্য রয়েছে অনেক বড় শিক্ষা। আল্লাহ আমাদেরকে শয়তানের কুমন্ত্রণা এবং সব ধরণের ফিতনা-ফ্যাসাদ থেকে, বিশেষ করে নারী ফিতনা থেকে হেফাজত করুন। আমিন। আল্লাহু আলাম।
কয়েকটি ভিত্তিহীন ও বানোয়াট হাদিস
উম্মতে মোহাম্মদির একটি সেজদা জিবরাঈল আ. এর তিরিশ হাজার বছরের সেজদার থেকে উত্তম, আরশের গায়ে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ লেখা থাকা এবং এই উম্মতের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য মুসা আ. এর কান্না বা আশা-আকাঙ্ক্ষা সংক্রান্ত হাদিসগুলো ভিত্তিহীন ও বানোয়াট:
জিবরাঈল আ. আল্লাহ তাআলার দিকে মুতাহজ্জির হয়ে রইলেন। কিন্তু আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে কোন খুশির বাণী জানান হল না। জিবরাঈল আ. আল্লাহ তাআলা কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহ, আমি যে এত লম্বা সেজদা করলাম কিন্তু আপনি কি আমার সেজদার প্রতি খুশি হননি?
আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দিলেন: জিবরাঈল, তোমার জবাব আমি দেব। তার আগে তুমি একটু আরশে আজিমের দিকে তাকাও। জিবরাঈল আ. তাকিয়ে দেখলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরশে আল্লাহর কুদরতি নূর দ্বারা লিখা রয়েছে, ”লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।” জিবরাইল আ. জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহ, আমার সেজদার সংগে এই কালিমার কী সম্পর্ক?
আল্লাহ তাআলা বললেন, ও জিবরাইল, শোন, আমি আল্লাহ এ দুনিয়া তৈরি করব। ওই দুনিয়ার মানব জাতি ও জিন জাতির হেদায়াতের জন্য লক্ষাধিক নবি-রাসূলকে পাঠাব। সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে পাঠাব। এই নবির উম্মতের উপরে আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করব। আর প্রতি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে সতেরটা করে রাকাত আমার জন্য ফরজ করব। প্রত্যেকটা রাকাতের মধ্যে দুটি করে সেজদা হবে। আর প্রত্যেকটা সেজদার মধ্যে ওই নবির উম্মত তিনবার করে “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” পাঠ করবে।
জিবরাইল, তুমি জেনে রাখ, আমার ওই মাহবুব নবির উম্মত যখন সেজদায় গিয়ে “সুবহা-না রাব্বিয়াল আলা” বলে আমাকে ডাক দিবে। জিবরাইল তুমি ৩০ হাজার বছর সেজদা করে যে নেকি পেয়েছ, আমি আল্লাহ আমার বান্দার আমলনামায় এর থেকেও ৪০ হাজার গুণ বেশি নেকি লিখে দিব। সুবহানাল্লাহ!
▪️উত্তর: এই ঘটনা এবং তার মধ্যে যেসব কথা বলা হয়েছে সবকিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এগুলো হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামে মিথ্যাচার। বিদআতি ওয়াজ ব্যবসায়ী বক্তারা এইসব ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কিচ্ছা-কাহিনী ওয়াজ মাহফিলগুলোতে মূর্খ শ্রোতাদের সামনে খুব সুর দিয়ে বয়ান করে থাকে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এর কোনও ভিত্তি নেই।
– আল্লাহর আরশের গায়ে, পায়ে বা জান্নাতের দরজায় কিংবা জান্নাতের গাছের পাতায় পাতায় “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” লেখা থাকার ব্যাপারে যত হাদিস বলা হয়, সেগুলোর কোনটাই সঠিক নয়। সবগুলোই জাল-জয়ীফ।
সময়কে গালমন্দ করা আল্লাহকে গালমন্দ করা ও তাঁকে কষ্ট দেওয়ার নামান্তর
আল্লাহর এক অমোঘ নিয়মে রাতের পরে দিন ও দিনের পরে রাতের আবির্ভাব ঘটে। এভাবে দিন, সপ্তাহ, মাস, বছর, যুগ এবং শতাব্দীর পর শতাব্দী অবিরত ধারায় বয়ে চলেছে। এ সময় আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন। তার নিজস্ব কোনও ইচ্ছা ও ক্ষমতা নেই। সময় তার নিজস্ব ইচ্ছা বলে কোনও কিছু করতে সক্ষম নয়। সে মানুষের জীবনে কল্যাণ বা অকল্যাণ কোনও কিছুই করতে পারে না। সময়ের গতি-প্রকৃতি পরিবর্তিত না হলেও সময়ের সাথে মানুষের প্রকৃতি, আচার-আচরণ ও রীতি-নীতি ইত্যাদি পাল্টে যায়। তাই মানুষ খারাপ হতে পারে; সময় নয়। সুতরাং সময় খারাপ, যুগ খারাপ, দিনটা খারাপ, রাতটা খারাপ ইত্যাদি বাক্য বলা কিংবা সময়কে লানত বা অভিশাপ দেওয়াও জায়েজ নয়।
আর যেহেতু সময় আল্লাহর নির্দেশক্রমে আবর্তিত হয় তাই সময়কে গালি দেওয়া আল্লাহকে গালি দেওয়ার নামান্তর। আর আল্লাহকে গালি দেওয়া মানে তাকে কষ্ট দেওয়া। সুতরাং তা হারাম।
❑ বহু হাদিসে সময়কে গালমন্দ করতে নিষেধ করা হয়েছে। যেমন:
◆ ১. আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
لاَ تَسُبُّوا الدَّهْرَ فَإِنَّ اللهَ هُوَ الدَّهْرُ
“তোমরা সময়কে গালমন্দ করো না। কারণ আল্লাহই সময়।” [সহিহ মুসলিম, হা/৬০০৩]
◆ ২. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন,
قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يَسُبُّ ابْنُ آدَمَ الدَّهْرَ وَأَنَا الدَّهْرُ بِيَدِيَ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ
“আল্লাহ তাআলা বলেন (হাদিসে কুদসি), আদম সন্তান সময়কে গালমন্দ করে। অথচ আমি তো সময়। আমার হাতেই রাত ও দিন (এর বিবর্তন সাধিত হয়)।” [মুসলিম, হা/৬০০৩]
◆ ৩. হাদিসে কুদসিতে আরও বর্ণিত হয়েছে,
قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يُؤْذِينِي ابْنُ آدَمَ يَسُبُّ الدَّهْرَ وَأَنَا الدَّهْرُ أُقَلِّبُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ
“আল্লাহ বলেছেন, আদম সন্তান আমাকে কষ্ট দেয়। সে সময়কে গালি দেয় অথচ আমিই তো সময়। আমি রাত-দিন আমিই আবর্তিত করে থাকি।” [সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), অধ্যায়: ৪২/ শব্দচয়ন ও শব্দ প্রয়োগে শিষ্টাচার, পরিচ্ছেদ: ১. সময় ও কালকে গালমন্দ করা নিষিদ্ধ]
◆ এর দিন-রাতের পরিবর্তন প্রসঙ্গে একমাত্র আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন বিষয়। মহাগ্রন্থ কুরআনে আল্লাহ তাআলা এ প্রসঙ্গে বলেন,
يُقَلِّبُ اللَّهُ الَّيْلَ وَالنَّهَارَ ۚ إِنَّ فِى ذٰلِكَ لَعِبْرَةً لِّأُولِى الْأَبْصٰرِ
“আল্লাহ রাত ও দিনের আবর্তন ঘটান। নিশ্চয় এতে শিক্ষা রয়েছে অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্নদের জন্য।” [সূরা নূর: ৪৪]
তাফসিরে বিন সাদিতে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, “অর্থাৎ তিনি (আল্লাহ) ঠাণ্ডা থেকে গরম, আবার গরম থেকে ঠাণ্ডা, দিন থেকে রাত আবার রাত থেকে দিন তিনিই পরিবর্তন করেন। অনুরূপভাবে তিনিই বান্দাদের মধ্যে দিনগুলো ঘুরিয়ে আনেন। যারা সত্যিকার বান্দা, বুদ্ধি ও বিবেকবান, তারা এগুলোর প্রতি দৃষ্টি দিয়ে এগুলো কেন সৃষ্টি করা হয়েছে সেটা সহজেই বুঝতে পারে। কিন্তু তারা ব্যতিক্রম, যারা পশুদের মত এগুলোর দিকে তাকায়।” [তাফসিরে সাদী]
আর তাফসিরে আহসানুল বয়ানে বলা হয়েছে, “আল্লাহ তাআলা কখনো দিন বড়, রাত ছোট, আবার কখনো এর বিপরীত করে থাকেন। অথবা কখনো দিনের উজ্জ্বলতাকে কালো মেঘের (ছায়ায়) অন্ধকার দিয়ে এবং রাতের অন্ধকারকে চাদের জ্যোৎস্না দিয়ে বদলে দেন।”
◍ জাহেলি যুগের আরব মুশরিকরা সময় সম্পর্কে বিরূপ কথা বলত এবং সময়কে গালমন্দ করত। তাদের বিশ্বাস ছিল যে, শুধু সময়ই তাদেরকে মৃত্যু দেয়:
◆ মহান আল্লাহ এ প্রসঙ্গে বলেন,
وَقَالُوا مَا هِيَ إِلَّا حَيَاتُنَا الدُّنْيَا نَمُوتُ وَنَحْيَا وَمَا يُهْلِكُنَا إِلَّا الدَّهْرُ ۚ وَمَا لَهُم بِذَٰلِكَ مِنْ عِلْمٍ ۖ إِنْ هُمْ إِلَّا يَظُنُّونَ
“তারা (কা ফের-মুশ রিকরা) বলে, শুধু পার্থিব জীবনই আমাদের জীবন। আমরা এখানেই মরি ও বাঁচি। সময় ছাড়া অন্যকিছুই আমাদেরকে ধ্বংস করতে পারে না। তারা কেবল অনুমান করে কথা বলে।” [সূরা জাসিয়া: ২৪]
অর্থাৎ তাদের বিশ্বাস ছিল, রাত-দিনের বিবর্তনে মানুষের বয়স শেষ হয়ে গেলে মানুষ এক সময় মরে যায়। অর্থাৎ মানুষের মৃত্যুর পেছনে একমাত্র অনুঘটক হল, সময়। আল্লাহ মানুষের জীবন-মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ করে না, মৃত্যুর পরবর্তী জীবন বা আখিরাত বলেও কিছু নেই। কিন্তু তা তাদের ভ্রান্ত ধারণা ছাড়া অন্য কিছু নয়। প্রকৃতপক্ষে সময়ের নিজস্ব কোনও শক্তি নেই। সে কারও উপকার করতে পারে না, কোনও ক্ষতি করতে পারে না। বরং এ বিশ্ব চরাচরের নিয়ন্ত্রণ, সময়ের এ গতিধারার নিয়ন্ত্রণ, মানুষে জীবন, মৃত্যু সব কিছু আল্লাহর হাতে ন্যস্ত। জীবনের উত্থান-পতন, ভালো-মন্দ যা কিছু ঘটে সবই আল্লাহর আওতাধীন।
❑ সময়ের অবস্থা বর্ণনা করা জায়েজ; গালমন্দ করা জায়েজ নয়:
আনাস ইবনে মালিক রা. এর নিকট হাজ্জাজ কর্তৃক মানুষ যে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে সে সম্পর্কে অভিযোগ পেশ করা হলে তিনি বললেন,
اصْبِرُوا؛ فإنَّه لا يَأْتي علَيْكُم زَمَانٌ إلَّا الذي بَعْدَهُ شَرٌّ منه، حتَّى تَلْقَوْا رَبَّكُمْ. سَمِعْتُهُ مِن نَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ
“ধৈর্য ধর। কেননা, মহান প্রতিপালকের সাথে মিলিত হবার পূর্ব পর্যন্ত (অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্বে) তোমাদের উপর এমন কোন যুগ অতীত হবে না, যার পরের যুগ তার চেয়েও বেশি খারাপ নয়। তিনি বলেন, এ কথাটি আমি তোমাদের নবী থেকে শুনেছি।” [সহিহুল বুখারি]
তিনি আরও আরও বলেন,
إِنَّا أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِيحًا صَرْصَرًا فِي يَوْمِ نَحْسٍ مُّسْتَمِرٍّ
“নিঃসন্দেহে আমরা তাদের উপরে এক চরম দুর্ভাগ্যের দিনে পাঠিয়েছিলাম এক প্রচণ্ড ঝড়-তুফান।” [সূরা কামার: ১৯]
❑ আল্লামা বিন বায রাহ. বলেন,
فلا يجوز للمسلم أن يسبَّ الدهر، ولكن يُجاهد نفسه في طاعة الله ورسوله، وترك ما نهى الله عنه ورسوله، فما أصابه من الأذى هو بأسباب أعماله السيئة، لا بأسباب الدهر، الدهر ما له تصرُّفٌ، لكن وصفه بالشدة لا يضرُّ، يقول: هذا زمان شديد، أو هذا زمان حارٌّ أو بارد، ما يضرُّ هذا.
“অত:এব কোনও মুসলিমের জন্য সময়কে গালি দেওয়া জায়েজ নাই। বরং তার কর্তব্য, আল্লাহর ও রসুলের আনুগত্যের ক্ষেত্রে প্রচুর চেষ্টা-সাধনা করা এবং আল্লাহ ও তাঁর রসুল যা নিষেধ করেছেন তা থেকে দূরে থাকা। সে যে সব কষ্ট-শ্লেষের সম্মুখীন হয় তা তার অপকর্মের কারণে; সময়ের কারণে নয়। সময়ের নিজস্ব কোনও কর্মক্ষমতা নেই। তবে সময়কে কঠিন বলায় সমস্যা নেই। যেমন: মানুষ বলে, সময়টা কঠিন বা সময়টা গরম বা ঠাণ্ডা। এতে কোনও ক্ষতি নেই।”
প্রথম রোজার সংবাদ দিলে জাহান্নামের আগুন হারাম মর্মে বর্ণিত হাদিসটি বানোয়াট ও জাল
প্রশ্ন: “যে ব্যক্তি প্রথম রোজার সংবাদ দিবে তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যাবে” বর্তমানে ফেসবুকে এই কথাটা বেশ প্রচার হচ্ছে। কুরআন ও সহিহ হাদিসের আলোকে এ বিষয়ে আপনার একটি পোস্ট চাই। যাতে করে সবাই সঠিকটা জানতে পারে।
উত্তর: এ কথা সত্য যে, রমজান ঘনিয়ে এলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই জাতীয় হাদিসটি প্রচারের হিড়িক পড়ে যায়। প্রচার করা হয় যে, এ বছর অমুক তারিখ থেকে রমজান মাসের রোজা শুরু হবে। অথচ তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কথা। অর্থাৎ এটি হাদিসের নামে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামে মিথ্যাচার ছাড়া কিছু নয়। তাছাড়া রমজান মাসের সূচনা চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল-যা জানার জন্য সরকার নির্ধারিত চাঁদ দেখা কমিটি বা আদালতের ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করতে হয় । সুতরাং তা গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির হিসেবে অগ্রিম সংবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং কেউ যদি অনেক আগে থেকে এই ঘোষণা প্রচার করে তাহলে তা হবে আরেকটি মিথ্যাচার।
◆ এ প্রসঙ্গে বিশ্ব বিখ্যাত ফতোয়া বিষয়ক ওয়েবসাইট Islamqa-এ বলা হয়েছে,
لم يذكره من صنف في فضل رمضان من العلماء، ولو من باب التنبيه على عدم صحته، كما لم يذكره من صنف في الأحاديث الضعيفة والموضوعة؛ لذلك يبدو أنه وُضع حديثًا.
◆ কারা এসব বানোয়াট হাদিস প্রচার করে? অজ্ঞতা বশত: কেউ তা করে থাকলে তার জন্য করণীয়:
প্রকৃতপক্ষে, খোঁজ নিলে দেখা যাবে, যারা শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় ও বিভিন্ন গ্রুপে মেসেজ ফরওয়ার্ড করে শর্টকাট পদ্ধতিতে জান্নাতে যেতে চায় এটি তাদের বানানো হাদিস। আর ধর্মীয় বিভিন্ন বক্তব্যের প্রতি মানুষের এক ধরণের দুর্বলতা রয়েছে। সেই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে সস্তা লাইক-কমেন্ট কামানোর ধান্ধায় এসব কথা হাদিস বলে প্রচার করে এক শ্রেণির লোক। এভাবেই শয়তান দ্বীনের সঠিক জ্ঞান বঞ্চিত মানুষের সাথে ধর্মের নামে ধোঁকাবাজি করে চলেছে।
যাহোক কেউ যদি অজ্ঞতাবশত এই জাতীয় হাদিস ইতোপূর্বে প্রচার করে থাকে তাহলে তার জন্য আবশ্যক হলো, অনতিবিলম্বে তা ডিলিট করা এবং এটি যে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন কথা সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা।
✪ আল্লাহর রসুলের নামে মিথ্যাচারে ভয়াবহতা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস প্রচারের পূর্বে সতর্কতা অবলম্বন অপরিহার্য:
মনে রাখা কর্তব্য যে, মানুষের সাথে সাধারণ মিথ্যা কথা এবং আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নামে মিথ্যা কথা এক নয়। সাধারণ মিথ্যা কথা হারাম, কবিরা গুনাহ এবং মুনাফেকির বৈশিষ্ট্য। কিন্তু হাদিসের নামে মিথ্যাচার করার পরিণতি এর থেকেও ভয়াবহ। কেউ জেনে বুঝে তা করলে তার পরিণতি জাহান্নাম।
إنَّ كَذِبًا عَلَيَّ ليسَ كَكَذِبٍ علَى أَحَدٍ، مَن كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا، فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ
“আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আমার প্রতি মিথ্যারোপ করা তোমাদের কারো প্রতি মিথ্যারোপ করার মত নয়। যে ব্যক্তি জেনেশুনে ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার প্রতি মিথ্যারোপ করে সে যেন জাহান্নামে তার বাসস্থান নির্ধারণ করে নেয়।” [সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)। মুকাদ্দামাহ (ভূমিকা), পরিচ্ছেদ: ২. রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর মিথ্যারোপ গুরুতর অপরাধ]