আলহামদুলিল্লাহ, ওয়াস সলাতু ওয়াস সালামু আলা রসূলিল্লাহ।
লেখার প্রারম্ভে আমরা কুরআনে #মধু সম্পর্কে মহান আল্লাহর কালাম ও তাফসীরটি মনোযোগ দিয়ে পড়বো,তাফসীর করা হয়েছে শায়েখ আবুবকর জাকারিয়ার কুরআনুল কারীম হতেঃ
তাফসীর পড়ার পরেই আর কিছু বাস্তব যুক্তি মিলিয়ে আমরা ইনশাল্লাহ অবগত হয়ে যাবো যে খাঁটি মধু মানেই খয়েরী ঘন হবে, চাষের মধু, চাকের মধু ইত্যাদি সহ আরো নানা শোনা কথা যা আমরা কাকে কান নিয়ে গেছে শুনলে কানে হাত দিয়ে যাচাই করার আগেই দৌড় দেই কাকের পিছে এর শামিল।
16:68
وَأَوْحٰى رَبُّكَ إِلَى النَّحْلِ أَنِ اتَّخِذِى مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا وَمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُونَ
অর্থঃ তোমার রাব্ব মৌমাছির অন্তরে ইঙ্গিত দ্বারা নির্দেশ দিয়েছেনঃ তুমি গৃহ নির্মাণ কর পাহাড়, বৃক্ষ এবং মানুষ যে গৃহ নির্মাণ করে তাতে।
তাফসীরঃ আর আপনার রব মৌমাছিকে তার অন্তরে ইঙ্গিত দ্বারা নির্দেশ দিয়েছেন [১], ‘ঘর তৈরী কর পাহাড়ে, গাছে ও মানুষ যে মাচান তৈরী করে তাতে;
[১] অহীর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, এমন সূক্ষ্ম ও গোপন ইশারা, যা ইশারাকারী ও ইশারা গ্রহনকারী ছাড়া তৃতীয় কেউ টের পায় না। এ সম্পর্কের ভিত্তিতে এ শব্দটি ইলকা বা মনের মধ্যে কোন কথা নিক্ষেপ করা ও ইলহাম বা গোপনে শিক্ষা ও উপদেশ দান করার অর্থে ব্যবহৃত হয়। এখানে ওহী করার অর্থ ইলহাম,
16:69
ثُمَّ كُلِى مِن كُلِّ الثَّمَرٰتِ فَاسْلُكِى سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا ۚ يَخْرُجُ مِنۢ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوٰنُهُۥ فِيهِ شِفَآءٌ لِّلنَّاسِ ۗ إِنَّ فِى ذٰلِكَ لَءَايَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
#অর্থঃ এর পর প্রত্যেক ফল হতে কিছু কিছু আহার কর, অতঃপর তোমার রবের সহজ পথ অনুসরণ কর। ওর উদর হতে নির্গত হয় বিবিধ বর্ণের পানীয়, যাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিষেধক। অবশ্যই এতে রয়েছে নিদর্শন চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য।
তাফসীর‘এরপর প্রত্যেক ফল হতে কিছু কিছু খাও, অতঃপর তোমার রবের সহজ পথ অনুসরণ কর [১]’। তার পেট থেকে নির্গত হয় বিভিন্ন রঙ এর পানীয় [২]; যাতে মানুষের জন্য রয়েছে আরোগ্য [৩]। নিশ্চয় এতে রয়েছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন [৪]।
[১] ‘রবের সহজ পথ’ এর কয়েকটি অর্থ হতে পারে। এক, তুমি অনুগত হয়ে সে পথে চল যে পথ তোমার রব তোমাকে শিখিয়েছেন এবং বুঝিয়েছেন। রবের রাস্তা বলা হয়েছে এজন্যে যে, সে রবই তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং এ পথে চলা শিখিয়েছেন। সুতরাং তুমি তোমার রবের শিখিয়ে পথগুলোতে বিভিন্ন স্থানে রিযিকের খোজে বেরিয়ে পড়। পাহাড়ে, গাছের ফাঁকে ফাঁকে। অথবা আয়াতের অর্থ, হে মৌমাছি! তুমি যা খেয়েছ তা তোমার রবের নির্দেশক্রমে ও তাঁর শক্তিতে তোমার শরীরের মধ্য দিয়ে মধু তৈরীর প্রক্রিয়া পরিণত কর। অথবা আয়াতের অর্থ, হে মৌমাছি। যখন তুমি দূরে কোন স্থানে মধু আহরণের জন্য যাবে, তখন সেটা সংগ্রহ করে আবার তোমার গৃহে ফিরে আস, তোমার প্রভুর শিখিয়ে দেয়া পথসমূহ অবলম্বন করে। পথ হারিয়ে ফেলো না। [ফাতহুল কাদীর] মূলত: তিনটি অর্থই উদ্দেশ্য হওয়া সম্ভব।
[৪] নিশ্চয় এ ছোট প্রাণীটিকে সঠিক পথে সহজভাবে চলার ইলহাম করা, বিভিন্ন গাছ থেকে মধু নেয়ার পদ্ধতি শিখিয়ে দেয়া, তারপর সেটাকে মোমের মধ্যে ও মধুর জন্য ভিন্ন ভিন্নভাবে রাখা যা অন্যতম উত্তম বস্তু হিসেবে বিবেচিত। অবশ্যই চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে বড় নিদর্শন রয়েছে। যা তার সৃষ্টিকর্তার মহত্বতার উপর প্রমাণবহ। এর দ্বারা তারা এটার উপর প্রমাণ গ্রহণ করবেন যে, তিনি সব করতে সক্ষম, প্রাজ্ঞ, জ্ঞানী, দাতা, দয়ালু। [ইবন কাসীর]
♦ এ পর্যায়ে আমরা জানবোঃ
– আল্লাহই শিখিয়ে দিয়েছেন তাকে চলার পদ্ধতি, মধু সংগ্রহ ও অতঃপর মোমের ভেতর রাখা।
♦ অনেকে বলেন, খাঁটি মধু জমেনা! তাহলে সরিষা মধু জমে কেন? সরিষা মধু কি খাঁটি নয়??
আপনি হলফ করে বলতে পারেন যে আপনার বাসার পাশের গাছে হওয়া মৌমাছির চাকে একটা মৌমাছিও পাশের মহল্লার সরিষা ক্ষেতে যায় নি?? একটা মৌমাছিও যদি গিয়ে আহরন করে আর মধু মিশে সে #মধু জমবেই।
আমরা কেউ চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারবোনা এটা ১০০% কালোজিরা ফুলের মধু, ১০০% সরিষার বা ১০০% লিচু কিংবা বড়ই ফুলের মধু! ধারনা করতে পারি যে, হ্যাঁ, এর ৭০-৮০% এই বড়ই গাছগুলোর বা লিচু বাগানের বা ক্ষেতের।
♦ আরেকটা ভ্রান্ত ধারনাঃ খুলনা বা সুন্দরবন ছাড়া মধু খাঁটি হয়না। আর এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা দেয় দাম বাড়িয়ে। বেশী বুদ্ধিমান বুদ্ধিজীবি ভাই-বোনেরা তখন চড়াদাম দিয়ে সে মধু কিনে মহাখুশি। আল্লাহ কি বলেছেন আলাদা কোন অঞ্চল বা এলাকা বা এর গুনাগুনের ভিন্নতার কথা??
♦ খাঁটি মধু পানিতে মেশেনা নাড়লেও, কথাটা ঠিক। তবে ব্যাখাটি জানুন আগে। পানিইতো পানির সাথে মিশবে, তেলতো আর মিশে না তাইনা। মধুতে জলীয় অংশ এবং পানিও রয়েছে। উদাহরনঃ ১গ্লাস বা প্লেটে ১/২ চামচ মধু ঢালুন এর পর পানি ঢালুন হালকা নাড়ুন, পানি খান বা ফেলে দিন দেখুন পানি শেষ তবে মধু রয়ে যাবে। আবার এই প্রক্রিয়ায় যদি চামচ দিয়ে প্রক্রিয়ায় ২০/৩০সেকেন্ড নারুন চামচ দিয়ে বা দীর্ঘক্ষন রেখে দিন মধু মিশে যাবে পানিতে। শুধু ২লাইন শুনেই আমরা অন্তরে যেকোন কুধারনার বীজ বপন করি, যাচাই করিনা।
♦ মধু ডিফ ফ্রীজে রাখলে জমেনা এ কথা ঠিক, তবে সরিষা মধু এমনিতেই জমে যায়, তলানি পড়ে।
♦ জেনে অবাক হবেন, চিনিশিল্প এলাকায় চিনিও তো খাচ্ছে মৌমাছি! এ চিনিকি মিশছেনা কোন এক চাকে বা চাষের বক্সে আসা বহিরাগত কোন মৌমাছিগুলো হতে?? অবশ্যই আসছে। তাহলে ঐ চাকে বা বক্সে কি ভেজাল ঢুকে গেল? নাহ্ একদমই না। বললাম না কুআনেই বলা হয়েছেঃ সে রবের নির্দেশেই খেয়েছে।
♦♦♦ উপদেশঃ
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য, শতকরা ৮৫ ভাগের উপর পুরুষ আনফিট আমাদের দেশে, যারা স্ত্রীর কাছে অবস্থান কালে উভয়ে সন্তুষ্ট হতে অক্ষম। অনেকেই আমার কাছে পরামর্শ চায় বা ইনডাইরেক্টলি শেয়ার করেন। বিশেষ করে প্রবাসে অবস্থানরতরা। এসব হতেই ঈমানী দুর্বলতার কারনে জন্ম নেয় পরকীয়া ও বহুগামীর মত ঘৃন্ন কিছু অপরাধ। এমনও অনেক স্ত্রী আছেন যারা হয়তো তাকওয়ার কারনে ধৈর্য ধরে আছেন। কিন্তু আপনারও কিছু করনীয় আছে। নিয়মিত #মধু খান শুধু এটুক বলবো। হোক চাষের বা হোক চাকের! খেতে থাকুন। মধু একদম বের করা অবস্থায় পাতলা থাকে পরে ঘন হয় ধীর ধীরে। এর ফজীলত বলে শেষ করা যাবেনা।বুঝে নিবেন আশা করি।
[ অসাধু অসৎ ব্যবসায়ীদের হতে লেনদেনে বিরত হোন ]
No comments:
Post a Comment