প্রশ্ন: বর্তমানে বউয়েরা শাশুড়িদের প্রতি ছোট ছোট বিষয় নিয়ে বিদ্বেষ পোষণ করে এবং ঝগড়া-ঝাটিতে লিপ্ত হয়। এ ক্ষেত্রে শাশুড়িরাও পিছিয়ে নেই। সুতরাং এ বিষয়ে ইসলামের দিক-নির্দেশনা কি?
সুতরাং কোন মুসলিমের জন্য অপর মুসলিমের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা, তার সাথে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হওয়া, গালাগালি করা, খারাপ ব্যবহার করা জায়েয নাই- চাই সে বউ হোক, শ্বশুর হোক, শাশুড়ি হোক, স্বামী হোক, স্ত্রী হোক বা অন্য কেউ হোক। ইসলামের বিধান সকলের জন্য সমান।
কেউ যদি অন্যায়ভাবে কাউকে গালি দেয়, কষ্ট দেয়, কারও সাথে খারাপ আচরণ করে বা ঝগড়া-ঝাটি করে তাহলে সে তার প্রতি জুলুম করল। আর আখিরাতে জুলুমের পরিণাম খুবই খারাপ।
নিম্নে এ বিষয়টি হাদিসের আলোক তুলে ধরা হল:
🌀 নিম্নোক্ত হাদিসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ:
عَنْ أَبي هُرَيرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ إِيَّاكُمْ وَالظَّنَّ فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الحَدِيثِ وَلاَ تَحَسَّسُوا وَلاَ تَجَسَّسُوا وَلاَ تَنَافَسُوا، وَلاَ تَحَاسَدُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْوَاناً كَمَا أَمَرَكُمْ المُسْلِمُ أَخُو المُسْلِمِ لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يَخْذُلُهُ وَلاَ يَحْقِرُهُ التَّقْوَى هاهُنَا التَّقْوَى هاهُنَا وَيُشِيرُ إِلَى صَدْرِهِ بِحَسْبِ امْرِىءٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ المُسْلِمَ كُلُّ المُسْلِمِ عَلَى المُسْلِمِ حَرَامٌ : دَمُهُ وَعِرْضُهُ وَمَالُهُ إِنَّ اللهَ لاَ يَنْظُرُ إِلَى أَجْسَادِكُمْ وَلاَ إِلَى صُوَرِكُمْ وَلكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ وَفِي رواية لاَ تَحَاسَدُوا، وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَجَسَّسُوا وَلاَ تَحَسَّسُوا وَلاَ تَنَاجَشُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْواناً وفي رواية لاَ تَقَاطَعُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَحَاسَدُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْواناً وَفِي رِواية وَلاَ تَهَاجَرُوا وَلاَ يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ رواه مسلم بكلّ هذِهِ الروايات، وروى البخاريُّ أَكْثَرَهَا
💠 আর এক বর্ণনায় আছে, ‘‘তোমরা পরস্পর সম্পর্ক-ছেদ করো না, একে অপরের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন হইয়ো না, পরস্পরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করো না, পরস্পর হিংসা করো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা, ভাই ভাই হয়ে যাও।’’
💠 অন্য আরও এক বর্ণনায় আছে, ‘‘তোমরা একে অন্যের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করো না এবং অপরের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় করো না।’’ (এ সবগুলি মুসলিম বর্ণনা করেছেন ৬৭০১-৬৭০৫ এবং এর অধিকাংশ বর্ণনা করেছেন বুখারী ৫১৪৩, ৬০৬৪, ৬০৬৬, ৬৭২৪)
🌐 জুলুমের পরিণাম:
পরিশেষ বলব, প্রতি মুসলিমের জন্য আবশ্যক হল, অপর মুসলিমের মান-সম্মান হেফাজত করা, তাকে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা ও তিরস্কৃত না করা, হেয় না করা, তার প্রতি কোনভাবেই জুলুম-নির্যাতন না করা এবং কষ্ট না দেয়া। কেউ যদি তা করে তাহলে আখিরাতে তাকে আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। সেখানে তিনি অবশ্যই সুবিচার করবেন। তিনি জালিমের সওয়াবগুলো কর্তন করে মাজলুম ব্যক্তিকে দান করবেন এবং মাজলুমের গুনাহগুলো জালিমের কাঁধে তুলে দিবেন।
No comments:
Post a Comment