“মানুষের জীবনে তার নামের প্রভাব পড়ে।” কতটুকু সত্যি? ইসলামের দৃষ্টিতে মানব জীবনে ইতিবাচ শব্দ প্রয়োগের গুরুত্ব।
ومحاولة تعرف الشخص على مستقبله عن طريق اسمه أو بأية وسيلة أخرى يدخل في باب الكهانة. وبالتالي فهو حرام.
ولكن الشرع رغب في الأسماء الحسنة من باب التفاؤل، وكان النبي صلى الله عليه وسلم يتفاءل بالأسماء الحسنة، ويغير الاسم المشتمل على محظور شرعي أو ما لا يستحسن، وقد أثبتت الدراسات النفسية أن للاسم السيئ تأثيرا سلبيا على صاحبه
➧ খারাপ নামের মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব থাকতে পারে” এ কথার পক্ষে আলেমগণ নিম্নোক্ত হাদিসটি দ্বারা দলিল গ্রহণ করেছেন:
➧ শিক্ষণীয় বিষয়:
❑ শুধু নাম নয় বরং ইতিবাচক শব্দ মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে:
এ মর্মে কায়েকটি হাদিস পেশ করা হলো:
❂ আবু উমামা ইবনে সাহল ইবনে হুনাইফ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের কেউ যেন না বলে,
لاَ يَقُولَنَّ أَحَدُكُمْ خَبُثَتْ نَفْسِي وَلْيَقُلْ لَقِسَتْ نَفْسِي
“আমার মন বা আত্মা খারাপ বা দুর্বিষহ হয়ে গেছে’ (খবুসাত নাফসি); বরং তার বলা উচিত, “আমার মন বা আত্মা অবসাদগ্রস্ত ও ভারাক্রান্ত হয়েছে” (লাকিসাত নাফসি)।”
[সুনান আউ দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), অধ্যায়: ৩৬/ আদব, পরিচ্ছেদ: ৮২. নিজের নাফসকে খাবিস (খারাপ) না বলা সম্পর্কে]
এই হাদিসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের শেখাচ্ছেন ভাষার ব্যবহার ও ইতিবাচক শব্দ চয়নের গুরুত্ব। “খবুসা” (খারাপ বা দুর্বিষহ) শব্দটি নেতিবাচক এবং আত্মার প্রতি খারাপ ধারণা তৈরি করতে পারে। আর “লাকিসা” (ভারাক্রান্ত বা ক্লান্ত) শব্দটি বেশি নমনীয় এবং ইতিবাচক। এটি ইসলামের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির একটি শিক্ষা।
ইমাম ইবনুল কাইয়েম রাহ. বলেন,
فكره رسول الله ﷺ لفظ الخبث؛ لبشاعته، وأرشدهم إلى العدول إلى لفظ هو أحسن منه
“রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম “খুবস” (দুর্বিষহ, খারাপ বা অপবিত্র) শব্দকে অপছন্দ করেছেন, কারণ এটি অসুন্দর। তিনি তাদের এমন একটি শব্দ ব্যবহারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন, যা এর চেয়ে উত্তম।” [আত তুরুকুল হাকিমাহ, পৃষ্ঠা নং ৪১]
❂ ইবনে উমর রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম “আসিয়া” عاصية (পপিষ্ঠ বা অবাধ্য নারী) নাম পরিবর্তন করেন এবং বলেন, তুমি জামীলা (সুন্দরী)।” [আল-আদাবুল মুফরাদ, অধ্যায়: অর্থপূর্ণ নাম রাখা এবং কদর্য নাম পরিবর্তন, পরিচ্ছেদ: ৩৬১- আছিয়া নাম পরিবর্তন করা-সহিহ]
❂ ইমাম আবু দাউদ বলেন,
“وغيّر رسول الله اسم العاص، وعزيز، وعتلة، وشيطان، والحكم، وغراب، وشهاب، وحباب، فسماه هاشماً، وسمى حرباً سلماً، وسمى المضطجع المنبعث، وأرضاً يقال لها: عفرة خضرة، وشعب الضلالة سماه شعب الهدى، وبنو الزينة سماهم بني الرشدة، وسمي بني مغوية بني رشدة”] سنن أبي داود (2/ 707 [.
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আস (অবাধ্য), আযীয (পরাক্রমশালী), আতলাহ (কর্কশ), শয়তান, হাকাম (বিচারক), গুরাব (কাক), হুবাব (সাপ) ও শিহাব (উল্কা) নামকে পরিবর্তন করে রেখেছেন যথাক্রমে হিশাম (বিধ্বস্তকারী)। তিনি হারব (যুদ্ধ)-এর পরিবর্তে সালাম (শান্তি), মুনবাইছ (জাগ্রত)-কে মুযতাজি‘ (শয়নকারী), আফিরাহ (অনুর্বর) নামক এলাকাকে খাযিরাহ (সবুজ-শ্যামল), দ্বালালাহ (বিপথ ও ভ্রষ্টতা) উপত্যকাকে আল-হুদা (সুপথ), বনু যানিয়াহ (জারজ সন্তান)-এর নাম বনুর-রিশদাহ (নির্মল সন্তান) এবং বনু মুগবিয়াহ (বিপথগামী নারীর সন্তান)-এর বনু রিশদা (হিদায়াতপ্রাপ্ত নারীর সন্তান) নামকরণ করেছেন। [আবুদাউদ, ২/৭০৭]
এমন আরও অনেক হাদিস রয়েছে যেগুলোতে দেখা যায়, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খারাপ অর্থ বোধক বা নেতিবাচক ইঙ্গিত বাহী নামগুলোকে ভালো ও সুন্দর অর্থ বোধক শব্দ দ্বারা পরিবর্তন করে দিয়েছেন।
তাই আমাদের কর্তব্য, সবসময় ইতিবাচক ও সুন্দর শব্দ প্রয়োগ করা।
❑ নেতিবচক শব্দের পরিবর্তে ইতিবাচক শব্দ প্রয়োগের আরও কয়েকটি উদাহরণ:
প্রকৃতপক্ষে ভালো ও ইতিবাচক শব্দ শুনলে মানুষ মানসিকভাবে ভালো অনুভব করে ও প্রশান্তি পায়। আর খারাপ ও নেতিবচাক শুনলে মনের মধ্যে বাজে ফিলিংস তৈরি হয় এবং মানসিকভাবে অশস্তি অনুভব করে। এটা মানবিক স্বভাবগত বিষয়।
No comments:
Post a Comment