Thursday, September 12, 2024

মৃতদের স্মরণে অগ্নি প্রজ্বলন বা মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালানো জঘন্য হারাম এবং নিরেট অজ্ঞতা পূর্ণ কুসংস্কার

 মৃতদের স্মরণে অগ্নি প্রজ্বলন বা মোমবাতি/প্রদীপ জ্বালানো জঘন্য হারাম এবং নিরেট অজ্ঞতা পূর্ণ কুসংস্কার: এর ৭ কারণ।

মানুষ অন্ধকারে আলো জ্বালাবে-এটা স্বাভাবিক। একসময় বিদ্যুৎ ছিল না। তখন মানুষ অন্ধকারে চেরাগ/কুপি, হারিকেন বা মোমবাতি জ্বালাত। প্রয়োজনে এখনো জ্বালাবে। তাতে কোনও সমস্যা নাই। তবে বর্তমানে আধুনিক যুগে বৈদ্যুতিক বাতির আলোর ঝলকানিতে বিশ্ব আলোকিত। কিন্তু এই উজ্জ্বল আলোর নিচে দাঁড়িয়ে কেউ যখন মৃত/শহিদদের স্মরণে বা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে কিংবা তাদের আত্মার শান্তির প্রত্যাশায় ঘটা করে মোমবাতি জ্বালাবে, মোমবাতির সামনে নীরবতা পালন করবে অথবা মোমবাতির সামনে মৃতদের ছবি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে তখন সুস্থ বিবেকের সামনে তার যৌক্তিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়। তৎসঙ্গে একজন মুসলিম হিসেবে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ তা কতটুকু সঠিক বা কতটুকু ইসলাম সমর্থিত তা বিচার-বিশ্লেষণ করা আবশ্যক।

নিম্নে ইসলাম ও যুক্তির নিরিখে মৃতদের স্মরণে অগ্নি প্রজ্বলন বা মোমবাতি/প্রদীপ জ্বালানো বিষয়টি ৭টি পয়েন্টে উপস্থাপন করা হলো:

❂ ১. ইসলামের দৃষ্টিতে মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে অগ্নি প্রজ্বলন বা মোমবাতি/প্রদীপ জ্বালানো বিদআত (ইসলামে নব সংযোজন বা ধর্মের নামে অধর্ম):

প্রকৃতপক্ষে মানুষ মারা গেলে তার প্রতি জীবিতদের কী করণীয় সে ব্যাপারে ইসলামে বিস্তর দিকনির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ইসলামে মৃতদের উদ্দেশ্য অগ্নি প্রজ্বলন, মোমবাতি/প্রদীপ জ্বালানো এবং তার সামনে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন সম্পর্কে কোনও নির্দেশনা নেই। এবং ইসলামের সোনালী যুগ তথা সাহাবি ও তাবেয়ীদের যুগে মুসলিমদের মধ্যে এ ধরণের কাজের কোনও অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।
অতএব ইসলামের দৃষ্টিতে তা জঘন্য বিদআত-তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আর বিদআত মানেই ভ্রষ্টতা। আর প্রতিটি ভ্রষ্টতার পরিণতি জাহান্নাম।

❖ আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ

“যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করল যে ব্যাপারে আমার নির্দেশনা নেই তা আল্লাহর কাছে পরিত্যাজ্য।” [বুখারী ও মুসলিম]

❖ অন্য বর্ণনায় এসেছে:

مَنْ أَحْدَثَ فِى أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ

“যে ব্যক্তি আমাদের এই দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছুর উদ্ভব ঘটাল, যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত।” [বুখারী ও মুসলিম]

❖ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর এক খুতবায় বলেছেন,
إِنَّ أَصْدَقَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللهِ وَأَحْسَنَ الْهَدْيِ هَدْيُ مُحَمَّدٍ وَشَرُّ الأُمُوْرِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلُّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلُّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ وَكُلُّ ضَلاَلَةٍ فِي النَّارِ. رواه مسلم والنسائى واللفظ للنسائى.
‘‘নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব এবং সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদের আদর্শ। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল (দ্বীনের মধ্যে) নব উদ্ভাবিত বিষয়। আর নব উদ্ভাবিত প্রত্যেক বিষয় বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআত হল ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম। [সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১৫৩৫ ও সুনান আন-নাসায়ী, হাদিস নং ১৫৬০, হাদিসের শব্দ চয়ন নাসায়ী থেকে।]

❂ ২. অন্ধ অনুসরণ:

মৃতদের স্মরণে মোমবাতি বা প্রদীপ প্রজ্বলন করা খৃ*ষ্টা*ন, অগ্নি*পূজক ইত্যাদি অমুসলিমদের সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ। কেননা খ্রি**স্টান ধর্মাবলম্বীরা তাদের কবরস্থানে মোমবাতি জ্বালিয়ে মৃতদের উদ্দেশ্যে বিশেষ প্রার্থনা করে থাকে। “অগ্নি উপাসকরা তাদের সকল পূজার সময় বা পূজার প্রারম্ভে অগ্নিকে সাক্ষী রেখে কাজ শুরু করে এবং অগ্নিকে সর্বাধিক পবিত্র বলেই মেনে থাকে।” [অশোক চক্রবর্তী-মহাভারতের জানা অজানা FB page] আর ইসলামে অমুসলিমদের ‘সাদৃশ্য অবলম্বন’ কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ।

❖ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ

“যে ব্যক্তি অন্য সম্প্রদায়ের (বিধর্মীদের ধর্ম, সংস্কৃতি ও রীতি-নীতির ক্ষেত্রে) সাদৃশ্য অবলম্বন করে সে তাদেরই দলভুক্ত।“ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪০৩১, সহীহুল জামে-আলবানী, হা/২৮৩১]

❖ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন,

لَتَتَّبِعُنَّ سَنَنَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ شِبْرًا بِشِبْرٍ وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ حَتَّى لَوْ دَخَلُوا فِي جُحْرِ ضَبٍّ لاَتَّبَعْتُمُوهُمْ ‏”‏ ‏.‏ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ آلْيَهُودَ وَالنَّصَارَى قَالَ ‏”‏ فَمَنْ

“তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের নীতি-পদ্ধতি পুরাপুরি ভাবে অনুসরণ করবে, বিঘতে বিঘতে ও হাতে হাতে, এমনকি তারা যদি তিনি দব (গুই সাপ সদৃশ মরুভূমিতে থাকা এক প্রকার হালাল প্রাণী) এর গর্তে প্রবেশ করে থাকে তাহলেও তোমরা তাদের অনুসরণ করবে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসুল, পূর্ববর্তী উম্মত বলতে কি ইহুদি ও খ্রিষ্টানরাই উদ্দেশ্য?
তিনি বললেন, তাহলে আর কারা?”
[সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), অধ্যায়: ৪৯/ ইলম (জ্ঞান), পরিচ্ছেদ: ৩. ইহুদি ও খৃষ্টানদের রীতি-নীতি অনুসরণ]

অথচ আমাদের তথাকথিত শিক্ষিত সমাজ বানরের মত অনুকরণপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা ভালো-মন্দ বাছ-বিচার ছাড়াই বিধর্মীদের অন্ধ অনুকরণে লিপ্ত হতে এতটুকু দ্বিধা করে না!
সত্য বলতে, বর্তমানে অধিকাংশ মুসলিম ইসলামের মহান আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে অমুসলিমদের অন্ধ অনুসরণের ফলেই মুসলিম জাতি অধঃপতনের অতল তলে নিপতিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা মুসলিমদেরকে এই অন্ধ অনুকরণের মোহ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।

❂ ৩. অগ্নিপূজক/শিরক:

মৃতদের উদ্দেশ্যে অগ্নি প্রজ্বলন, স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সৈনিকদের স্মৃতির উদ্দেশ্য শিখা অনির্বাণ স্তম্ভ, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্থানটিতে দাঁড়িয়ে ভাষণ প্রদান করেছিলেন সে স্থানে নির্মিত শিখা চিরন্তন স্তম্ভ ইত্যাদি অগ্নিপূজার শামিল। আগুনকে অনির্বাণ (যা কখনো নিভে না) বা চিরন্তন বিশ্বাস করা যেমন একদিক থেকে শিরক তেমনি তার সামনে মাথা নত করে দাঁড়িয়ে থাকা ও সেখানে নীরবতা পালন করা এবং সেনাবাহিনী কর্তৃক স্যালুটের মাধ্যমে সম্মান জানানো ইত্যাদি কর্মকাণ্ড নিঃসন্দেহে শিরক। এরূপ কাজ যারা করে তাদেরকে বলা হয় মাজুস বা অগ্নিপূজক। তওবা না করে মৃত্যুবরণ করলে তারা স্থায়ীভাবে জাহান্নামী হবে। কেননা আল্লাহ শিরক কারীকে ক্ষমা করবেন না।

❖ আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا

“নিঃসন্দেহে আল্লাহ তার সাথে শিরক করাকে ক্ষমা করেন না। কিন্তু এর নিম্ন পর্যায়ের পাপরাশী ক্ষমা করেন যাকে ইচ্ছা। যে আল্লাহর সাথে শিরক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়।” [সূরা নিসা: ৪৮]

❖ তিনি আরও বলেন,

وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَكَأَنَّمَا خَرَّ مِنَ السَّمَاءِ فَتَخْطَفُهُ الطَّيْرُ أَوْ تَهْوِي بِهِ الرِّيحُ فِي مَكَانٍ سَحِيقٍ

“এবং যে কেউ আল্লাহর সাথে শিরক করল সে যেন আকাশ থেকে ছিটকে পড়ল, অতঃপর (মৃতভোজী) পাখী তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল অথবা বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে কোন দূরবর্তী স্থানে নিক্ষেপ করল।” [সূরা হাজ্জ: ৩১]

❂ ৪. অনর্থক কাজ:

এই মোমবাতি প্রজ্বলনে মৃতদের বিন্দুমাত্র উপকার হয় না। সুতরাং নিতান্ত অনর্থক ও অহেতুক কাজ।

❖ আল্লাহ তাআলা সফল মুমিনদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,

وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ

“যারা অনর্থক কার্যক্রম থেকে মুখ ফিরিয়ে চলে।” [সূরা মুমিনুন: ৩]

❖ আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,

وَالَّذِينَ لَا يَشْهَدُونَ الزُّورَ وَإِذَا مَرُّوا بِاللَّغْوِ مَرُّوا كِرَامًا

“এবং যারা ভ্রান্ত কর্মে যোগদান করে না এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয়, তখন সেখান থেকে সসম্মানে প্রস্থান করে।” [সূরা ফুরকান: ৭২]

❖ আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

مِنْ حُسْنِ إسْلَامِ الْمَرْءِ تَرْكُهُ مَا لَا يَعْنِيهِ

“অনর্থক বিষয় ত্যাগ করাই একজন ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্য।” [তিরমিযী: ২৩১৮, ইবনে মাজাহ: ৩৯৭৬-হাদিসটি হাসান।
মৃত মানুষের উদ্দেশ্য বাতি জ্বালানো মূর্খতা সুলভ অহেতুক মিথ্যা আবেগ ছাড়া কিছু নয়।

❂ ৫. অর্থ অপচয়:

মৃতদের উদ্দেশ্যে অগ্নি প্রজ্বলন করা, মোমবাতি/প্রদীপ জ্বালানো অর্থ অপচয়ের শামিল। আমাদের সমাজে বিভিন্ন উপলক্ষে নিহতদের স্মরণে বা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনার্থে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়। যেমন: খবরে প্রকাশ, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে ‘একুশের আলো’ সংগঠনের উদ্যোগে ভাষা শহীদদের স্মরণে প্রজ্বলন করা হয় এক লাখ মোমবাতি! [২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭]

এই অনর্থক কাজে তা অর্থ অপচয় ও আল্লাহ নিয়ামতের অপব্যবহার ছাড়া কিছু নয়। কারণ এতে না জীবিত মানুষের কোনও উপকার হয়, না মৃতদের উপকার হয়।

আর ইসলামের দৃষ্টিতে অনর্থক কাজে অর্থ অপচয় করা নিষিদ্ধ ও গুনাহের কাজ।

❖ আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ

“তোমরা খাও এবং পান করো তবে অপচয় করো না। তিনি অপচয় কারীদের ভালোবাসেন না।” [সূরা আরাফ: ৩১]

❖ তিনি আরও বলেন,

إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ

“নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই।” [সূরা বনী ইসরাইল: ২৭]

আমাদের ভুলে যাওয়া উচিৎ নয় যে, মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন মানুষের অর্থ-সম্পদ তথা তার যাবতীয় আয়-ব্যয়ের হিসাব নিবেন।

অথচ এই অর্থ যদি সেই নিহতের পরিবারের জন্য খরচ করা হতো তাহলে তারা কতই না উপকৃত হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, দরিদ্রের ঘরে বাতি জ্বলে না কিন্তু বৈদ্যুতিক লাইটের নিচে দাঁড়িয়ে মূর্খরা প্রদীপ জ্বালায়!

❂ ৬. কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাস:

মৃতদের উদ্দেশ্যে মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালালে তাদের আত্মা শান্তি পাবে-এমনটা মনে করা নিতান্তই ভ্রান্ত অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কার।
অন্ধ বিশ্বাস থেকেই তারা জন্মদিনে মোমবাতি নিভিয়ে দেয়। আর বিশ্বাস করে, মোমবাতি নিভানোর পর হালকা একটা ধোঁয়া উপরের দিকে উড়ে যায়। সেই ধোঁয়ার সাথে জন্মদিনের করা সব ইচ্ছেগুলো ঈশ্বরের কাছে পৌঁছে যায়। ফলে তিনি সে সব প্রার্থনা পূর্ণ করবেন। অথবা এ বিশ্বাস করা হয় যে, ধোঁয়ার অদৃশ্য হওয়ার সাথে সাথে, জীবনের সমস্ত নেতিবাচক বিষয়গুলো অদৃশ্য হয়ে যাবে।

প্রকৃতপক্ষে মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালানো বা নিভানোর সাথে মানুষের জীবনের কল্যাণ-অকল্যাণ বা আত্মার সুখ-শান্তির বা কারও প্রতি শ্রদ্ধা-অশ্রদ্ধার ন্যূনতম কোনও সম্পর্ক নেই। থাকতে পারে না।

সুতরাং মোমবাতি জ্বালালে মৃত ব্যক্তির আত্মা শান্তি পাবে-এহেন ভ্রান্ত কথা কোনও সুস্থ বিবেক গ্রহণ করতে পারে না।
তথাকথিত মুক্তমনা ও বিজ্ঞান মনস্করা এমন অবৈজ্ঞানিক ও অন্ধবিশ্বাসকে কীভাবে গ্রহণ করে তা সত্যি বিস্ময়কর। অথচ তারাই কথায় কথায় ইসলামের বিধিবিধানকে নানাভাবে কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ইত্যাদি বলে কটূক্তি করে থাকে। এসব শিক্ষিত মূর্খদেরকে আল্লাহ দ্বীনের প্রকৃত জ্ঞান দান করুন। আমিন।

❂ ৭. মনোবাসনা পূরণের উদ্দেশ্যে মোমবাতি জ্বালানো হারাম/শিরক:

মনোবাসনা পূরণের জন্য মাজারে মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে মোমবাতি জ্বালানো হারাম। কখনো তা এটা শিরক পর্যায়ের অপরাধ। কেননা সব মনোবাসনা পূরণ করার ক্ষমতা রাখেন কেবল আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। মৃত ব্যক্তি কখনো কিছু দিতে পারেন না। মৃতের কাছে কিছু চাওয়া মানে আল্লাহর সাথে বড় শিরক। আর শিরক হলো, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে ঘৃণিত ও ক্ষমাহীন অপরাধ। মহান আল্লাহ আমাদের দ্বীনের প্রকৃত জ্ঞান দান করুন। ভ্রষ্টতা, মূর্খতা, অন্ধ অনুকরণ এবং মিথ্যা আবেগ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।

লেখক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।

No comments:

Post a Comment

Translate