নিঃসন্দেহে আরাফাত দিবস মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মানব জাতির প্রতি বছরের শ্রেষ্ঠ অফার। অধিকাংশ আলেমের মতে, এটি বছরের শ্রেষ্ঠ দিন। হাজিগণ এ দিন ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে উপস্থিত থাকবেন-যা হজের একটি রোকন। এ দিন আল্লাহ নিচের আসমানে নেমে এসে আরাফায় উপস্থিত হাজিদেরকে নিয়ে গর্ব করবেন এবং এত বিশাল পরিমাণ হাজিকে জাহান্নামের আগুণ থেকে মুক্তি ঘোষণা করবেন যা বছরের আর কখনো করেন না।
◈ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
مَا مِنْ يَوْمٍ أَكْثَرَ مِنْ أَنْ يُعْتِقَ اللَّهُ فِيهِ عَبْدًا مِنَ النَّارِ مِنْ يَوْمِ عَرَفَةَ وَإِنَّهُ لَيَدْنُو ثُمَّ يُبَاهِي بِهِمُ الْمَلاَئِكَةَ فَيَقُولُ مَا أَرَادَ هَؤُلاَءِ
“আরাফা দিবসের তুলনায় এমন কোন দিন নেই যেদিন আল্লাহ তাআলা সর্বাধিক সংখ্যক লোককে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করেন। আল্লাহ তাআলা নিকটবতী হন, অতঃপর বান্দাদের সম্পর্কে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করেন এবং বলেন, তারা কী চায়?” [সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী), অধ্যায়: ১৬। হজ, পরিচ্ছেদ: ৭৯. হজ, উমরা ও আরাফা দিবসের ফজিলত]
হাজিগণ সে দিন রোজা রাখবেন না। কিন্তু যার হজে যাবে না তাদের করণীয় সে দিন রোজা রাখবেন। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদের পেছনের এবং সামনের মোট দু বছরের গুনাহ মোচন করেন। সুবহানাল্লাহ!
তাই আমাদের কর্তব্য, এ দিনে রোজা রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করা। যেমন: হাদিসে এসেছে:
◈ আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ وَالَّتِي بَعْدَهُ
“আমি আল্লাহর নিকট আরাফাত দিবসের রোযার এই সওয়াব আশা করি যে, তিনি তাঁর বিনিময়ে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন।” [সহীহ ইবনে মাজাহ হা/১৭৩০]
◈ আরাফা দিবসে দ্বীন ইসলামকে পূর্ণতা দান করা হয়েছে:
মহান আল্লাহ বলেন,
الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا
“আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।” [মায়িদা: ৩]
ব্যাখ্যা:
তারিক ইবনু শিহাব রহ. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ইহুদি ব্যক্তি উমর রা. এর নিকট এসে বললো, হে আমিরুল মুমিনিন! আপনাদের কিতাবের মধ্যে এমন একটি আয়াত আপনারা পাঠ করে থাকেন। যদি তা আমাদের ইহুদি সম্প্রদায় সম্পর্কে নাজিল হত তাহলে ঐ দিনটিকে আমরা উৎসব দিবস হিসাবে গ্রহণ করতাম। উমার রা. জিজ্ঞেস করলেন, আয়াতটি কী? সে বলল, আয়াতটি হল,
الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا
“আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং পূর্ণ করে দিলাম তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহকে।”
এ কথা শুনে উমার রা. বললেন, যে দিন, যে স্থানে আয়াতটি নাজিল হয়েছে অবশ্যই আমি তা জানি। আয়াতটি জুমার দিন আরাফাতের ময়দানে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। [সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), ৫৭/ তাফসির]
No comments:
Post a Comment