মিসরের ব্রাদারহুড নেতা সাইয়েদ কুতুব-এর নামে প্রচলিত “এক কালেমায় রুটি-রুজি আর এক কালেমায় ফাঁসি” শীর্ষক কথাটির বাস্তবতা কতটুকু?
জামায়াতে ইসলামী পন্থীদের মধ্যে এটি খুবই প্রসিদ্ধ কথা। দাবি করা হয় যে, মিসরের ব্রাদারহুড নেতা সাইয়েদ কুতুবের ফাঁসির ১ ঘণ্টা আগে জেলখানার ইমাম এসে যখন তাকে কালিমা পড়তে বলেন, তখন তিনি নাকি তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “আমাকে কালিমা পড়ানো লাগবে না। আমি তা জানি। যে কালিমা পড়ানোর কারণে সরকার তোমাকে বেতন দেয় সেই কালিমার কারণে আজ আমাকে ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে।” জামায়াতে ইসলামীর বিখ্যাত বক্তা মিজানুর রহমান আজহারি এভাবেই তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন। এ কথাটি মোহাম্মদ রহমত উল্লাহর কথামালা এবং শিল্পী মশিউর রহমান-এর কণ্ঠের গানে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে। যা আমার দেখা মতে, দেলোয়ার হোসেন সাইদির ছেলে মাসউদ সাঈদি, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার সহ অনেকেই শেয়ার করেছেন। শুধু তাই নয়, জামায়াত পন্থী বহু বক্তাও এ কথাটা উল্লেখ করার মাধ্যমে যে সব আলেমগণ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিকে সমর্থন করেন না তাদের কালিমাকে কটাক্ষ ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে থাকে।
◍ এবার দেখা যাক, এ বিষয়টির বাস্তবতা কতটুকু?
প্রকৃত পক্ষে জামায়াতে ইসলামী ও শিবির নেতা-কর্মী এবং সমর্থকদের পক্ষ থেকে উক্ত কথাটি সাইয়েদ কুতুবের নামে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হলেও এর সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় না। বরং বলা হয়ে থাকে, যে, ইতালীয় দখলদার কর্তৃক লিবিয়ার কিংবদন্তী নেতা ও মুজাহিদ ওমর আল-মুখতার রহ. এর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে তিনি প্রায় এমন একটি কথা বলেছিলেন।
গবেষকগণ বলেন, সাইয়েদ কুতুবের ফাঁসি কার্যকর করার তারিখ ও সময় সম্পর্কে কয়েকজন দায়িত্ব রত সরকারী কর্মকতা, আর্মি ও পুলিশ অফিসার ছাড়া কাউকে জানতে দেওয়া হয়নি। সাইয়েদ কুতুব নিজেও জানতেন না কখন তার ফাঁসি হবে। কারণ খুবই গোপনীয়তার সাথে তা বাস্তবায়ন করা হয়। যার কারণে কোনও মসজিদের ইমাম বা আজহার থেকে কোনও আলেমকেও কালিমা পড়ানোর জন্য ডাকা হয়নি। কোনও নির্ভরযোগ্য ইতিহাস বা ডকুমেন্টে এমন তথ্য পাওয়া যায় না।
«سيد قطب لم يفتح فمه بكلمة واحدة منذ أن تسلمته من السجن الحربى وحتى تنفيذ حكم الإعدام فيه داخل سجن الاستئناف، وكنت أجلس بجواره طوال الطريق» وتابع: «عندما سأله وكيل النيابة انت عايز حاجة ؟ لم يرد عليه، وتمتم بكلمات غير مفهومة»
No comments:
Post a Comment