প্রশ্ন: যাদের গর্ভের বাচ্চা ২/৩ মাসে মিসক্যারেজ হয়। এই বাচ্চাদের কি জান্নাত দেওয়া হবে এবং তারা তাদের পিতা-মাতার জন্য শুপারিশ করবে?▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬
إِنَّ أَحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ فِي بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا ، ثُمَّ يَكُونُ عَلَقَةً مِثْلَ ذَلِكَ ، ثُمَّ يَكُونُ مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ ، ثُمَّ يَبْعَثُ اللَّهُ مَلَكًا ، يُؤْمَرُ بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ ، وَيُقَالُ لَهُ : اكْتُبْ عَمَلَهُ ، وَرِزْقَهُ ، وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ ، ثُمَّ يُنْفَخُ فِيهِ الرُّوحُ … ) رواه البخاري (3208) ، ومسلم (2643)
“নিশ্চয় তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপাদান নিজ নিজ মাতৃগর্ভে চল্লিশ দিন পর্যন্ত বীর্যরূপে অবস্থান করে। অতঃপর তা জমাট বাঁধা রক্তে পরিণত হয়। ঐভাবে চল্লিশ দিন অবস্থান করে। অতঃপর তা মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়ে (আগের মত চল্লিশ দিন) থাকে। অতঃপর আল্লাহ একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন। আর তাঁকে চারটি বিষয়ে আদেশ দেওয়া হয়। তাঁকে লিপিবদ্ধ করতে বলা হয়, তার ‘আমল, রিজিক, আয়ু এবং সে কি সৌভাগ্যবান হবে নাকি হতভাগ্য হবে। অতঃপর তার মধ্যে আত্মা ফুঁকে দেওয়া হয়।” [সহিহ বুখারি ও মুসলিম]
চার মাস পূর্ণ হওয়ার আগে তা প্রাণহীন একটি মাংসপিণ্ড মাত্র। এটি মানব সৃষ্টির সূচনা। তাই তার উপর পূর্ণ মানুষের বিধান প্রযোজ্য হবে না। এ কারণে যদি মাতৃগর্ভে ভ্রূণের মধ্যে আত্মার সঞ্চার ঘটার পূর্বে মিসক্যারেজ (অকাল গর্ভপাত) হয়ে যায় তাহলে তার ওপর মৃত মানুষের বিধি-বিধান প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ তাকে গোসল, জানাজা, কাফন, দাফন ইত্যাদি দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
অনুরূপভাবে সে পরকালে জান্নাতবাসী হবে না, কিয়ামতের দিন তার মায়ের জন্য শাফায়াত করবে না বা নাড়ির সাথে টেনে জান্নাতে নেবে না। কারণ প্রাণের সঞ্চার ঘটার পূর্বেই তা নষ্ট হয়ে গেছে।
তবে আত্মার সঞ্চার ঘটার পরে এমনটি হলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহর-এর আলেমদের মাঝে কোনও দ্বিমত নেই। অনুরূপভাবে আশা করা যায়, কিয়ামতের দিন সে তার পিতা-মাতার জন্য শাফায়াত করবে।
▪️ইমাম নাওয়াবি রাহ. বলেন,
أجمع من يعتد به من علماء المسلمين على أن من مات من أطفال المسلمين فهو من أهل الجنة ؛ لأنه ليس مكلفا . أ.هـ ” شرح مسلم ” (16 / 207)
”মুসলিমদের নিকট যে সকল আলেম নির্ভরযোগ্য হিসেবে পরিগণিত হয় তাদের সর্বসম্মত অভিমত হল, মুসলিমদের যেসব শিশু মৃত্যু বরণ করবে সে জান্নাতবাসী হবে। কারণ তার উপর শরিয়তের বিধান প্রযোজ্য ছিল না।” [শারহে মুসলিম, ১৬/২০৭]
এ বিষয়ে হাদিস হলো:
তিনি বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই।
তবে অকাল গর্ভপাত যখনই হোক না কেন তা একজন মায়ের জন্য অনেক দুঃখ ও কষ্টের কারণ। এ ক্ষেত্রে ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহ তাকে সওয়াব দান করবেন ইনশাআল্লাহ।
“মুসলিম ব্যক্তির উপর যে কষ্ট-ক্লেশ, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানি আসে, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে ফুটে, এ সবের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন।” [সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন), অধ্যায়: ৭৫/ রুগী, পরিচ্ছেদ: ৭৫/১. রোগের কাফফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং সহিহ মুসলিম ৪৫/১৪, হা/২৫৭৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫২৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১২৬)]। আল্লাহু আলম।
No comments:
Post a Comment