প্রশ্ন: স্বামী ধূমপান করে। কিন্তু স্ত্রী তাকে বুঝানোর পরেও তা পরিত্যাগ করে না। এমন স্বামীর সাথে ঘরসংসার করা কি জায়েজ?
❑ ধূমপানের পরোক্ষ ক্ষতি:
স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীগণ বলে, “একটা সিগারেটের গোড়া (ফিলটার) পুড়তে থাকার সময় যে ধোঁয়া বের হয় তা ধূমপায়ীর টেনে নেওয়া ধোঁয়াটুকুর চেয়ে ক্ষতিকর, কেননা এই ধোঁয়াটুকু কোনো রকম ছাঁকাছাঁকির ভেতর দিয়ে যায় না। আর এই ধোঁয়ায় থাকা বস্তুকণাগুলোও অনেক ছোট হয়। ফলে সেগুলো অনেক বেশি সময় ধরে বাতাসে ভেসে বেড়ায় এবং মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করে।’ এভাবেই পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিকর প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দিলেন ভারতের কোকিলাবেন ধিরুভাই আম্বানি হাসপাতাল এবং মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক এসপি রায়।
এই জাতীয় পরোক্ষ ধূমপান ফুসফুসের ক্যানসার, হৃদরোগ, শ্বাসনালীসংক্রান্ত হাঁপানি, স্থায়ী শ্বাসকষ্ট, নানা ধরনের অ্যালার্জি এবং ফুসফুসের অন্যান্য রোগের জন্যও দায়ী বলে জানিয়েছেন গ্লোবাল হসপিটালসের মেডিকেল অঙ্কোলজি বিভাগের চিকিত্সক নিলেশ লোকেশ্বর। ধূমপায়ীদের স্ত্রী বা স্বামী এবং কর্মক্ষেত্রে ধূমপানের ক্ষেত্রে সহকর্মীরা এ ধরনের অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে বেশি থাকেন। এ ছাড়া নারী ও শিশুরা বরাবরই ধূমপান জনিত রোগের ঝুঁকিতে বেশি পড়ে।”
প্রতিবেদনে আও বলা হয়,
‘বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর প্রায় ৬০ লাখ মানুষ মারা যায় কোনো না কোনোভাবে তামাকজনিত নানা অসুস্থতার কারণে। আর এর মধ্যে প্রায় ছয় লাখ মানুষ ধূমপায়ী না হয়েও মারা যায় পরোক্ষ ধূমপানজনিত কারণে।” [দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা]
➤ ২য়ত: ধূমপায়ী স্বামীকে এর ভয়াবহতা, ক্ষয়-ক্ষতি ও ইসলামে তা হারাম হওয়ার বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করতে হবে, ধূমপানে নিষেধ করতে হবে এবং নানাভাবে তা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে। অত:পর সে যদি এই বদভ্যাস পরিত্যাগ করে এবং তার আচার-আচরণ ভালো হয় ও দীনমূখী হয় তাহলে তার সাথে সংসার অব্যাহত রাখায় আপত্তি নাই। কিন্তু সে যদি তা পরিত্যাগ না করে বরং আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত থাকে এবং তার সাথে ঘর সংসার করার কারণে স্ত্রী তার নিজের ও সন্তানদের স্বাস্থ্যগত, দীনদারিত্ব ও চারিত্রিক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করে এবং নানা চেষ্টার পরও তাকে এ পথ থেকে ফেরানো সম্ভব না হয় তাহলে খোলা তালাকের মাধ্যমে তার থেকে সংসার ভঙ্গ করা জায়েজ আছে।
No comments:
Post a Comment